ফিরোজ মিয়া সরকারি কলেজ

ফিরোজ মিয়া সরকারি কলেজ একটি উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান যা ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জে অবস্থিত। ১৯৯২ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর উপজেলা সদরে কলেজটি স্থাপিত হয়। এ কলেজটি বাংলাদেশ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত। ২০১৮ সালের ০৮ আগস্ট ফিরোজ মিয়া কলেজকে জাতীয়করণ করে নামকরণ করা হয় ফিরোজ মিয়া সরকারি কলেজ।

ফিরোজ মিয়া সরকারি কলেজ
নীতিবাক্যEnter to Learn -,Leave to Serve
ধরনসরকারি কলেজ
স্থাপিত১৯ সেপ্টেম্বর ১৯৯২
প্রতিষ্ঠাতামোঃ ফিরোজ মিয়া
অধ্যক্ষআহম্মদ উল্লাহ খন্দকার
শিক্ষার্থী২,৫২৯ জন
অবস্থান, ,
শিক্ষাঙ্গনশহর
অধিভুক্তিজাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়

কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ড

বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড,ঢাকা
ওয়েবসাইটwww.fmgc.edu.bd

কলেজের অবস্থান সম্পাদনা

ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের আশুগঞ্জ গোলচত্বর থেকে ১ কিলোমিটার দক্ষিণে,আশুগঞ্জ উপজেলা পরিষদ সংলগ্ন কোলাহলমুক্ত স্নিগ্ধ মনোরম পরিবেশে আশুগঞ্জ সদর ইউনিয়ন ও আড়াইসিধা ইউনিয়নের সংযোগস্থলে ৪.৪৬০০ একর ভূমির উপর ফিরোজ মিয়া সরকারি কলেজটি অবস্থিত।

প্রতিষ্ঠার ইতিহাস সম্পাদনা

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জ উপজেলা সদরে স্থাপিত ফিরোজ মিয়া সরকারি কলেজটি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার একটি ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। আশুগঞ্জ অঞ্চলে একটি কলেজ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আলমনগরীস্থ কলেজ প্রতিষ্ঠাতার মেসার্স শরীফ রাইস মিলে ১৯৯২ খ্রিষ্টাব্দের ১৯ সেপ্টেম্বর এলাকাবাসীদের এক সভায় কলেজ প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেয়া হয়। আশুগঞ্জের ধনাঢ্য ব্যক্তিত্ব মোঃ ফিরোজ মিয়ার দান ও স্বপ্নের আলোকে ফিরোজ মিয়া সরকারি কলেজটি গড়ে ওঠেছে। কলেজটি প্রতিষ্ঠার পেছনে প্রতিষ্ঠাতা মোঃ ফিরোজ মিয়ার স্বপ্ন ছিল আশুগঞ্জ তথা ব্রাহ্মণবাড়িয়া পশ্চিমাঞ্চলের ছাত্র-ছাত্রীদের উচ্চতর শিক্ষা লাভের সুযোগ সৃষ্টি করে দেয়া এবং নারীদের উচ্চশিক্ষার হার বৃদ্ধিতে সহায়তাকরণ। ২২ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত সুধীজনের এক সভায় কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের বিধি মোতাবেক কলেজ পরিচালনার জন্য খবির উদ্দিন আহমেদ,জেলা প্রশাসক,ব্রাহ্মণবাড়িয়াকে প্রধান করে ৭ সদস্যবিশিষ্ট একটি সাংগঠনিক কমিটি গঠিত হয়। ঐ বছরেরই ১৬ নভেম্বর জেলা প্রশাসক,ব্রাহ্মণবাড়িয়া কলেজটি দ্রুত বাস্তবায়নের লক্ষ্যে এলাকার সুধীজনদের নিয়ে ৩১ সদস্যবিশিষ্ট আরেকটি অর্গানাইজিং কমিটি গঠন করেন। তৎকালীন শিক্ষা সচিব শফিউল আলমের পৃষ্ঠপোষকতায় ১৯৯২ সালের ৩ অক্টোবর থেকে শুরু হয় ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি প্রক্রিয়া। ১৯৯২-১৯৯৩ শিক্ষাবর্ষে ১২৪ জন ছাত্র-ছাত্রী নিয়ে ৯ নভেম্বর থেকে শুরু হয় পাঠদান। কলেজের ১ম ব্যাচে ছাত্রীসংখ্যা ছিল ৪১ জন। কথাশিল্পী মিন্নাত আলী ছিলেন এ কলেজের প্রথম অধ্যক্ষ।

শিক্ষা কার্যক্রম সম্পাদনা

মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ড,কুমিল্লার অধীনে ১৯৯২-১৯৯৩ শিক্ষাবর্ষে উচ্চমাধ্যমিক স্তরে মানবিক, ব্যবসায় শিক্ষা ও বিজ্ঞান শাখায় বাংলা,ইংরেজি, পৌরনীতি ও সুশাসন,অর্থনীতি,যুক্তিবিদ্যা,ইসলামের ইতিহাস, সমাজবিজ্ঞান,ইসলাম শিক্ষা, হিসাববিজ্ঞান, ব্যাবস্থাপনা, অর্থনীতি ও বাণিজ্যিক ভূগোল,পদার্থবিদ্যা,রসায়ন,জীববিজ্ঞান,উচ্চতর গণিতসহ ১৫ টি বিষয় নিয়ে কলেজের যাত্রা শুরু হয়। পরবর্তীতে ১৯৯৪-১৯৯৫ শিক্ষাবর্ষে সাচিবিক বিদ্যা,২০০১-২০০২ শিক্ষাবর্ষে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি, ২০০৩-২০০৪ শিক্ষাবর্ষে ইতিহাস,২০১৩-২০১৪ শিক্ষাবর্ষে ফিন্যান্স উচ্চমাধ্যমিক স্তরে পঠিত বিষয় হিসেবে চালু হয়।

সাধারণ শাখার পাশাপাশি বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষাবোর্ডের অধীনে ২০০০-২০০১ শিক্ষাবর্ষে উচ্চমাধ্যমিক ব্যবসায় ব্যবস্থাপনা শিক্ষাক্রমে কম্পিউটার অপারেশন ও মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা স্পেশালাইজেশন চালু হয়।

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ১৯৯৭-১৯৯৮ শিক্ষাবর্ষে কলেজে ডিগ্রি (পাস) কোর্সে বি.এ ও বি.এস.এস শাখায় বাংলা,ইংরেজি,ইতিহাস,দর্শন,ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি,ইসলাম শিক্ষা, রাষ্ট্রবিজ্ঞান,সমাজবিজ্ঞান ও অর্থনীতি বিষয়গুলো অধিভুক্তি লাভ করে।১৯৯৮-১৯৯৯ শিক্ষাবর্ষে বি.বি.এস শাখায় হিসাববিজ্ঞান,ব্যবস্থাপনা ও মার্কেটিং বিষয়ে অধিভুক্তিসহ বর্তমানে ১২ টি বিষয়ে শিক্ষার্থীদের ডিগ্রি স্তরে পাঠদান হচ্ছে।

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ২০১০-২০১১ শিক্ষাবর্ষে কলেজে অনার্স কোর্সে ইতিহাস ও ব্যবস্থাপনা বিভাগ ,২০১২-২০১৩ শিক্ষাবর্ষে রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও হিসাববিজ্ঞান বিভাগ এবং ২০১৬-২০১৭ শিক্ষাবর্ষে বাংলা বিভাগ চালু হয়েছে।

অনুষদ ও বিষয় সম্পাদনা

অনার্স কোর্স:

  • কলা অনুষদঃ ইতিহাস,বাংলা
  • সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদঃ রাষ্ট্রবিজ্ঞান
  • ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদঃ হিসাববিজ্ঞান,ব্যবস্থাপনা

ডিগ্রি (পাস) কোর্স:

  • বি.এ
  • বি.এস.এস
  • বি.বি.এস

উচ্চ মাধ্যমিক স্তর :

  • মানবিক
  • ব্যবসায় শিক্ষা
  • বিজ্ঞান

উচ্চ মাধ্যমিক(বি.এম) স্তর:

  • কম্পিউটার অপারেশন
  • মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা

সহশিক্ষা কার্যক্রম সম্পাদনা

ফিরোজ মিয়া সরকারি কলেজে বিভিন্ন ধরনের সহশিক্ষা কার্যক্রম চালু রয়েছে:

  • রোভার স্কাউট- বাংলাদেশ স্কাউটস রোভার অঞ্চলের অধীনে এ কলেজে দুটি রোভার স্কাউট ইউনিট ও একটি গার্ল ইন রোভার ইউনিট রয়েছে।
  • রেড ক্রিসেন্ট- বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি এর অধীনে এ কলেজে একটি যুব রেড ক্রিসেন্ট ইউনিট রয়েছে।
  • বি.এন.সি.সি- ময়নামতি রেজিমেন্ট এর অধীনে এ কলেজে বাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্যাডেট কোর এর একটি যৌথ প্লাটুন (ছেলে-মেয়ে) প্রক্রিয়াধীন।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

১.অহর্নিশ,ফিরোজ মিয়া কলেজ বার্ষিকী (২০০৩-২০০৪) ২.সমতট,ইতিহাস বিভাগের ৮ম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী স্মারক(২০১০-২০১৮),ফিরোজ মিয়া কলেজ।

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা