মারে ওয়েব

নিউজিল্যান্ডীয় ক্রিকেটার
(Murray Webb থেকে পুনর্নির্দেশিত)

মারে জর্জ ওয়েব (ইংরেজি: Murray Webb; জন্ম: ২২ জুন, ১৯৪৭) ইনভারকার্গিল এলাকায় জন্মগ্রহণকারী সাবেক নিউজিল্যান্ডীয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার ও ব্যঙ্গচিত্রবিদ। নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯৭১ থেকে ১৯৭৪ সময়কালে সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্যে নিউজিল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন।

মারে ওয়েব
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নামমারে জর্জ ওয়েব
জন্ম (1947-06-22) ২২ জুন ১৯৪৭ (বয়স ৭৬)
ইনভারকার্গিল, নিউজিল্যান্ড
উচ্চতা৬ ফুট ৪ ইঞ্চি (১.৯৩ মিটার)
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনডানহাতি ফাস্ট
ভূমিকাবোলার
সম্পর্করিচার্ড ওয়েব (ভ্রাতা)
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ১২২)
৫ মার্চ ১৯৭১ বনাম ইংল্যান্ড
শেষ টেস্ট১ মার্চ ১৯৭৪ বনাম অস্ট্রেলিয়া
ঘরোয়া দলের তথ্য
বছরদল
১৯৬৯–১৯৭৪ওতাগো
১৯৭২–১৯৭৩ক্যান্টারবারি
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট এফসি এলএ
ম্যাচ সংখ্যা ৩২
রানের সংখ্যা ১২ ২০২ ১২
ব্যাটিং গড় ৬.০০ ১০.০৯ -
১০০/৫০ ০/০ ০/০ ০/০
সর্বোচ্চ রান ১২ ২১ ৮*
বল করেছে ৭৩২ ৬৬৮৫ ৩২২
উইকেট ১৩৩
বোলিং গড় ১১৭.৭৫ ২৩.৩৯ ১৯.৮৭
ইনিংসে ৫ উইকেট ১০
ম্যাচে ১০ উইকেট
সেরা বোলিং ২/১১৪ ৭/৪৯ ৩/১৮
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ০/- ১১/- ১/-
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ১০ এপ্রিল ২০২০

ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর নিউজিল্যান্ডীয় ক্রিকেটে ক্যান্টারবারিওতাগো দলের প্রতিনিধিত্ব করেন। দলে তিনি মূলতঃ ডানহাতি ফাস্ট বোলার হিসেবে খেলতেন। এছাড়াও, ডানহাতে নিচেরসারিতে ব্যাটিং করতেন মারে ওয়েব

প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট সম্পাদনা

১৯৬৯-৭০ মৌসুম থেকে ১৯৭৩-৭৪ মৌসুম পর্যন্ত মারে ওয়েবের প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান ছিল। ছয় ফুট চার ইঞ্চি উচ্চতার অধিকারী তিনি।[১] ১৯৬৯-৭০ মৌসুম থেকে ১৯৭৩-৭৪ মৌসুম পর্যন্ত ওতাগো দলের সদস্যরূপে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে ফাস্ট বোলিং করতেন। নিউজিল্যান্ডের ঘরোয়া পর্যায়ের ক্রিকেটে অন্যতম সেরা দ্রুতগতিসম্পন্ন বোলারের মর্যাদা লাভ করেছেন তিনি।[২]

ওয়েলিংটনের বিপক্ষে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে প্রথমবারের মতো খেলেন। খেলায় তিনি ৫/৩৪ ও ৩/৪৩ বোলিং পরিসংখ্যান গড়েছিলেন। ঐ মৌসুমে ১৭.২৫ গড়ে ৩১ উইকেট লাভ করেন। এরফলে, প্লাঙ্কেট শীল্ডে ওতাগোর শিরোপা বিজয়ে প্রভূতঃ ভূমিকা পালন করেছিলেন তিনি। সফরকারী অস্ট্রেলিয়া দলের বিপক্ষে নিউজিল্যান্ডের সদস্যরূপে একটি খেলায় অংশ নেন। উইজডেনে তাকে অন্যতম ‘সেরা উদীয়মান ফাস্ট বোলার’ হিসেবে আখ্যায়িত করে।[৩] ১৯৭০-৭১ মৌসুমে সাউথ আইল্যান্ডের সদস্যরূপে নর্থ আইল্যান্ডের বিপক্ষে প্রস্তুতিমূলক খেলায় ৬/৫৬ পান।

তার বোলিংয়ের সহযোগিতা নিয়ে ওতাগো দল ১৯৭১-৭২ মৌসুমে আরও একবার প্লাঙ্কেট শীল্ডের শিরোপা জয়ে সমর্থ হয়। এ পর্যায়ে ওয়েলিংটনের বিপক্ষে ৭/৪৯ নিয়ে ব্যক্তিগত সেরা প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট পরিসংখ্যান গড়েন। ১৯৭২-৭৩ মৌসুমে ক্যান্টারবারির পক্ষে একটি খেলায় অংশগ্রহণ ব্যতিরেকে খেলার জগৎ থেকে দূরে ছিলেন। ১৯৭৩-৭৪ মৌসুমে ওতাগো দলে ফিরে আসেন। প্লাঙ্কেট শীল্ডে পাঁচ খেলায় অংশ নিয়ে ১৪.৬৫ গড়ে ৪০ উইকেট দখল করেন। ইনিংসে পাঁচবার পাঁচ বা ততোধিক উইকেট লাভ করেন তিনি। তন্মধ্যে, অকল্যান্ডের বিপক্ষে ব্যক্তিগত সেরা বোলিং পরিসংখ্যান ৬/৪৯ পান।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সম্পাদনা

সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে তিনটিমাত্র টেস্টে অংশগ্রহণ করেছেন মারে ওয়েব। ৫ মার্চ, ১৯৭১ তারিখে অকল্যান্ডে সফরকারী ইংল্যান্ড দলের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। ১ মার্চ, ১৯৭৪ তারিখে ওয়েলিংটনে সফরকারী অস্ট্রেলিয়া দলের বিপক্ষে সর্বশেষ টেস্টে অংশ নেন তিনি।

ঘরোয়া ক্রিকেটে সুন্দর ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শনের স্বীকৃতিস্বরূপ নিউজিল্যান্ডের পক্ষে টেস্টে অংশগ্রহণের সুযোগ পান। ১৯৭০-৭১ মৌসুমে ইংল্যান্ড দল নিউজিল্যান্ড গমন করে। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে দুই খেলার সিরিজে অংশ নেন। সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে অভিষেক ঘটে তার। খেলায় তিনি দুই উইকেট দখল করেন।

১৯৭১-৭২ মৌসুম শেষে নিউজিল্যান্ডের সদস্যরূপে ওয়েস্ট ইন্ডিজ গমন করেন। তবে, ছয়টি খেলায় অংশ নিয়ে মাত্র আট উইকেট পান ও একটি টেস্টে অংশ নিয়ে কোন উইকেটের সন্ধান পাননি।[৪]

১৯৭৩-৭৪ মৌসুমে ইয়ান চ্যাপেলের নেতৃত্বে অস্ট্রেলিয়া দলের নিউজিল্যান্ড গমন করে। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টেস্ট খেলার জন্যে নিউজিল্যান্ড দলের সদস্যরূপে মনোনয়ন লাভ করেন। ব্যাটসম্যানের উপযোগী পিচে তিনি কেবলমাত্র দুইটি উইকেট লাভ করতে পেরেছিলেন। খেলাটি ড্রয়ে পরিণত হয়েছিল।[৫] এ খেলার মাধ্যমেই তার প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবনের সমাপ্তি ঘটে। এ পর্যায়ে তার বয়স ছিল ২৬ বছর।

কর্মজীবন সম্পাদনা

ডুনেডিনে শিক্ষকতা পেশায় সংক্ষিপ্তকাল কর্মরত ছিলেন। ১৯৭০-এর দশকে ব্যঙ্গচিত্রবিদ হিসেবে নিজেকে পরিচিত করে তুলেন।[৬] এ পর্যায়ে তিনি রাজনীতিবিদ, ক্রীড়াব্যক্তিত্ব ও পাঠকের চোখে নিউজিল্যান্ড ও বিদেশের জনপ্রিয় ব্যক্তিদের নিয়ে কাজ করেন। পাশাপাশি সমসাময়িক মৃত্যুবরণকারী জনপ্রিয় ব্যক্তিদেরসহ ক্যাথরিন ম্যান্সফিল্ডের ছয়টি প্রতিকৃতি অঙ্কন করেছিলেন।[৭]

আলেকজান্ডার টার্নবুল লাইব্রেরি, নিউজিল্যান্ড ন্যাশনাল লাইব্রেরিতে তার সংগৃহীত আট শতাধিক চিত্র রয়েছে। এ সংখ্যাগুলোর অধিকাংশই একক ডিজিটাল প্রতিকৃতি। অকল্যান্ডের মনস্তত্ত্ববিদ শিক্ষাবিদ ব্যারি হিউজ লিখেছেন যে, মারে ওয়েবের ব্যঙ্গচিত্রগুলো সাধারণ্যের চক্ষে হয়তোবা তাদের স্থিরচিত্রের চেয়েও সত্যরূপে তুলে ধরা হয়েছে।[৮]

যোসেফ রোমানোস ও গ্রান্ট হার্ডিং ১৯৯১ সালে অকল্যান্ডের রাগবি প্রেস থেকে তার অঙ্কিত ‘১০০ গ্রেট রাগবি ক্যারেকটার’ শীর্ষক গ্রন্থ প্রকাশ করে। ওতাগো ডেইলি টাইমসের সম্পাদকীয় পৃষ্ঠাকে ওয়েবসাইট হিসেবে পরিচিত পেয়েছে ও এতে তিনি নিয়মিতভাবে অংশ নিতেন।[৯] বর্তমানে তিনি ব্যক্তিগত কাজে লিপ্ত রয়েছেন।[৬]

ব্যক্তিগত জীবন সম্পাদনা

মারে ওয়েবের দুই বোন ও রিচার্ড নামীয় ভ্রাতা রয়েছে। ১৯৬৮ সালে ওয়েলিংটন পোতাশ্রয়ে ডুবে যাওয়া ওয়াহাইনের আরোহী ছিলেন। এ পর্যায়ে তিনি ডুবন্ত অবস্থা থেকে একটি ক্ষুদে শিশুকে উদ্ধার করেছিলেন।[৬]

ওতাগো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকধারী হন। সেখানে তিনি ভূগোল বিষয়ে অধ্যয়ন করেন।[১০] বর্তমানে তিনি ডুনেডিনে বসবাস করছেন।[১১] ব্যক্তিগত জীবনে বিবাহিত তিনি। দুইবার পাণিগ্রহণ করেন ও তাদের তিন পুত্র ও এক কন্যা রয়েছে।[৬] তার কনিষ্ঠ ভ্রাতা রিচার্ড ওয়েব পেস বোলার হিসেবে ওতাগো দলসহ নিউজিল্যান্ডের সদস্যরূপে কেবলমাত্র একদিনের খেলায় অংশ নিয়েছিলেন।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Andy Quick, "Look Out Australia", Australian Cricket, January 1971, p. 47.
  2. Boock, Richard (৭ জুলাই ২০০২)। "Cricket: Clock turned back over pace claims"New Zealand Herald। সংগ্রহের তারিখ ২৩ মার্চ ২০২০ 
  3. Wisden 1971, p. 960.
  4. Wisden 1973, pp. 879-98.
  5. Wisden 1975, pp. 952-53.
  6. Dekker, Diana (২৩ নভেম্বর ২০১৩)। "Inside the mind of Murray Webb"stuff.co.nz। সংগ্রহের তারিখ ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ 
  7. Artistic representations Retrieved 30 December 2012.
  8. New Zealand Journal of Applied Psychology, Vol. 29, No. 2, December 2000, p. 93.
  9. Otago Daily Times, 17 January 2013, p. 11.
  10. Bio note at Nat Lib of NZ
  11. "Dunedin at Scubish.com"। ৪ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১০ এপ্রিল ২০২০ 

আরও দেখুন সম্পাদনা

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা