লালা হর দয়াল
লালা হর দয়াল (ইংরেজি: Lala Har Dayal; হিন্দি: लाला हरदयाल) ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের একজন সক্রিয় স্বাধীনতা সংগ্রামী ছিলেন। তিনি বিদেশে বসবাসকারী ভারতীয়দের ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে যোগদান করার জন্য প্রেরণা ও উৎসাহিত করেছিলেন । এরজন্য তিনি আমেরিকায় গিয়ে গদর পার্টীর[১] স্থাপন করেন। তিনি প্রবাসী ভারতীয়দের মধ্যে দেশভক্তির অনুভব জাগান যা পরবর্তি সময়ে গভীর হয়ে উঠে। কাকোরী কাণ্ডের পর ১৯২৭ সনের মে মাসে লালা হর দয়ালকে ভারতে ফিরে আনার প্রচেষ্টা চালানো হয় যদিও এতে ব্রিটিশ সরকার অনুমতি না থাকায় প্রয়াস ব্যর্থ হয় । কিন্তু ১৯৩৮ সনে তাকে ভারতে আনার পুনরায় চেষ্টা করলে ব্রিটিশ সরকার অনুমতি দেন কিন্তু ১৯৩৯ সনের ৪ মার্চ তারিখে আমেরিকার ফিলাডেলফিয়া নামক স্থানে রহস্যময় ভাবে তার মৃত্যু হয়।[২]
লালা হর দয়াল | |
---|---|
![]() | |
জন্ম | হর দয়াল ১৪ অক্টোবর ১৮৮৪ সন[১] চীরখানা দিল্লী ব্রিটিশ ভারত |
মৃত্যু | ৪ মার্চ ১৯৩৯ ফিলাডেলফিয়া আমেরিকা |
আখ্যা | এম.এ (Master of Letters) |
গুরু | লালা লাজপত রায় |
দর্শন | वसुधैव कुटुम्बकम |
সাহিত্য কর্ম | Thoughts on Education, Hints for Self Culture, Glimpses of World Religions and The Bodhisatva Doctrines in Buddhist Sanskrit Literature |
জন্মসম্পাদনা
নতুন দিল্লীতে অবস্থিত গুরুদুয়ারা শীশগঞ্জের পিছনে স্থিত চীরখানা মুহল্লে লালা হর দয়াল জন্মগ্রহণ করেন।
শিক্ষাসম্পাদনা
কেমব্রিজ মিশন স্কুল থেকে লালা হর দয়াল প্রাথমিক শিক্ষাগ্রহণ করেন। তিনি সেন্ট স্টেফেন্স কলেজ থেকে সংস্কৃত বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রী লাভ করেন। পাঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সংস্কৃত ভাষায় স্নাতকোত্তর ডিগ্রী লাভ করেন।
ইয়ঙ্গ ম্যান ইন্ডিয়া এসেসিয়েশনের স্থাপনাসম্পাদনা
লালা হর দয়াল লাহোরে এম.এ. অধ্যয়ণরত সময়ে লাহোরে যুবকের মনোরঞ্জনের জন্য একটি মাত্র ক্লাবের ব্যবস্থা ছিল। দুর্ভাগ্যবশতঃ একদিন ক্লাবের সচিবের সহিত লালার তুমুল ঝগড়া হয়। ফলে লালা ক্রোধিত হয়ে ইয়ঙ্গ ম্যান ইন্ডিয়া এসোসিয়েশন নামক ক্লাব স্থাপন করে। লালা হর দয়াল অধ্যয়ন করা কলেজে মোহম্মদ আল্লামা ইকবাল নামক একজন অধ্যক্ষ ছিলেন যিনি দর্শনশাস্ত্র পড়াতেন। তাদের দুইজনের সহিত সুগভির মিত্রতার সম্পর্ক ছিল। লালার অনুরোধে মোহম্মদ ইকবাল এসোসিয়েশনের উৎঘাটন সমারোহে অধ্যক্ষতা করার জন্য রাজী হন। এই সমারোহ অনুষ্ঠানে ইকবাল তার প্রসিদ্ধ রচনা সারে জহাঁ সে অচ্ছা গেয়ে শুনান। পরবর্তি সময়ে এই গান ভারতের রাষ্ট্রীয় গানের মর্যদা লাভ করে।
মৃত্যুসম্পাদনা
লালাজীকে ভারতে ফিরিয়ে নিয়ে আসার সকল প্রয়াস প্রায় অসফল হওয়ার পর ১৯২৭ সনে তিনি ইংল্যান্ডে থেকে যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। ইংল্যান্ডে তিনি ড্রাক্ট্রিন্স অফ বোধিসত্ব নামক পুস্তক রচনা করেন। লালাজী ভারতে ফিরে আসবেন কিনা এই সমন্ধে সকল ভারতীয়া নানান মন্তব্য প্রকাশ করেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশতঃ ১৯৩৮ সনের ৪ মার্চ তারিখে রহস্যজনক ভাবে লালাজীর মৃত্যু হয়। লালাজীর বাল্যবন্ধু লালা হনুমন্ত সহায় মৃত্যুর আগপর্যন্ত বলেছেন যে- লালা হর দয়ালের মৃত্যু স্বাভাবিক ছিলনা, তাকে বিষ প্রয়োগ করে মারা হয়েছে।[২]
তথ্যসূত্রসম্পাদনা
- ↑ ক খ http://www.indianpost.com/viewstamp.php/Serial%20Number/1231/LALA%20HARDAYAL
- ↑ ক খ क्रान्त (২০০৬)। स्वाधीनता संग्राम के क्रान्तिकारी साहित्य का इतिहास (Hindi ভাষায়)। 2 (1 সংস্করণ)। नई दिल्ली: प्रवीण प्रकाशन। পৃষ্ঠা 448-458। আইএসবিএন 81-7783-119-4।