গুলাম পার্কার

ভারতীয় ক্রিকেটার
(Ghulam Parkar থেকে পুনর্নির্দেশিত)

গুলাম আহমেদ হাসান মোহাম্মদ পার্কার (উচ্চারণ; জন্ম: ২৫ অক্টোবর, ১৯৫৫) মহারাষ্ট্রের কালুস্তে এলাকায় জন্মগ্রহণকারী সাবেক ভারতীয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার। ভারত ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯৮০-এর দশকের সূচনালগ্নে সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্যে ভারতের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন।

গুলাম পার্কার
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নামগুলাম আহমেদ হাসান মোহাম্মদ পার্কার
জন্ম২৫ অক্টোবর, ১৯৫৫
কালুস্তে, মহারাষ্ট্র, ভারত
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনডানহাতি মিডিয়াম
ভূমিকাব্যাটসম্যান
সম্পর্কজুলফিকার আহমেদ হাসান পার্কার (ভ্রাতা)
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
একমাত্র টেস্ট
(ক্যাপ ১৫৭)
১০ জুন ১৯৮২ বনাম ইংল্যান্ড
ওডিআই অভিষেক
(ক্যাপ ৪১)
২ জুন ১৯৮২ বনাম ইংল্যান্ড
শেষ ওডিআই৩১ অক্টোবর ১৯৮৪ বনাম পাকিস্তান
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট ওডিআই
ম্যাচ সংখ্যা ১০
রানের সংখ্যা ১৬৫
ব্যাটিং গড় ৩.৫০ ১৮.৩৩
১০০/৫০ -/- -/৬
সর্বোচ্চ রান ৪২
বল করেছে
উইকেট
বোলিং গড়
ইনিংসে ৫ উইকেট
ম্যাচে ১০ উইকেট -
সেরা বোলিং
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ১/- ৪/-
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ১৮ আগস্ট ২০২০

ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ভারতীয় ক্রিকেটে মুম্বই দলের প্রতিনিধিত্ব করেন। দলে তিনি মূলতঃ ডানহাতি ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলতেন। এছাড়াও, ডানহাতে মিডিয়াম বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন গুলাম পার্কার

প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট সম্পাদনা

১৯৭৮-৭৯ মৌসুম থেকে ১৯৮৫-৮৬ মৌসুম পর্যন্ত গুলাম পার্কারের প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান ছিল। ঘরোয়া ক্রিকেটে কিছু সুন্দর খেলা উপহারের পর দর্শনীয় উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান ও অসাধারণ কভার ফিল্ডার গুলাম পার্কারকে ১৯৮২ সালে ইংল্যান্ড গমনার্থে ভারতীয় দলে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল।

ঘরোয়া ক্রিকেটে ৪২.০০ গড়ে ৪,১৬৭টি প্রথম-শ্রেণীর রান সংগ্রহ করেছেন। ১৯৮০-৮১ মৌসুমে নিজস্ব স্বর্ণালী সময় অতিবাহিত করেন। সেমি-ফাইনালে ৫৯ ও ১৪৬ এবং চূড়ান্ত খেলায় ১২১ রান তুলেন। পরের মৌসুমে রঞ্জী ট্রফিতে এক পর্যায়ে তিনি ১৪৮*, ৪০, ১৫৬, ৮৪ ও ৬৮ রানের ইনিংস খেলেছিলেন। তন্মধ্যে, তার সংগৃহীত ১৫৬ রানের ইনিংসটি বাংলার বিপক্ষে সুনীল গাভাস্কারের সাথে ৪২১ রানের উদ্বোধনী জুটিতে সম্পন্ন হয়েছিল।

১৯৮১-৮২ মৌসুমে বাংলার বিপক্ষে ৪২১ রানের উদ্বোধনী জুটিতে জড়িত ছিলেন। একই মৌসুমে অপরাজিত ১৪৮ রান করার পর এ সাফল্য পান। এরপর, সেমি-ফাইনালে কর্ণাটকের বিপক্ষে ৮৪ ও ৬৮ রান তুলেন। মৌসুম শেষে ৬২.৪০ গড়ে ৬২৪ রান করেন যা পূর্ববর্তী মৌসুমের ৪৯.৮১ গড়ে ৭৯৭ রান তুলেছিলেন।

বোম্বে দলকে রঞ্জী ট্রফির শিরোপা বিজয়ে দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ ছিলেন। অবশেষে, ১৯৮৪-৮৫ মৌসুমে তার দল এ কৃতিত্ব অর্জনে সক্ষম হয়। এ পর্যায়ে গাভাস্কার ব্যাটিং অবস্থান থেকে সড়ে দাঁড়ান ও তিনি উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান হিসেবে প্রথম বল মোকাবেলায় অগ্রসর হন। ঐ মৌসুমে একটি শতক ও পাঁচটি অর্ধ-শতক সহযোগে ৫৭.৫৩ গড়ে ৭৪৮ রান সংগ্রহ করেছিলেন তিনি। শেষ নয় মৌসুম নাগালের বাইরে থাকা শিরোপার স্বাদ আস্বাদন করান।

অশোক মানকড়ের অবসর গ্রহণের পর বোম্বে দলে প্রধান উদ্বোধনী ব্যাটসম্যানের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন। আক্রমণাত্মক ব্যাটিংশৈলী উপহার দিয়ে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে ৪২.০৯ গড়ে ৪,১৬৭ রান তুলেন। তন্মধ্যে, রঞ্জী ট্রফিতে ৪৯.৭৯ গড়ে ৩,০৮৭ রান সংগ্রহ করেছিলেন।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সম্পাদনা

সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে একটিমাত্র টেস্ট ও দশটিমাত্র একদিনের আন্তর্জাতিকে অংশগ্রহণ করেছেন গুলাম পার্কার। ১০ জুন, ১৯৮২ তারিখে লর্ডসে স্বাগতিক ইংল্যান্ড দলের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। এটিই তার একমাত্র টেস্টে অংশগ্রহণ ছিল। এরপর আর তাকে কোন টেস্টে অংশগ্রহণ করতে দেখা যায়নি। অন্যদিকে, ২ জুন, ১৯৮২ তারিখে লিডসে একই দলের বিপক্ষে একদিনের আন্তর্জাতিকে অভিষেক ঘটে তার। ৩১ অক্টোবর, ১৯৮৪ তারিখে শিয়ালকোটে স্বাগতিক পাকিস্তান দলের বিপক্ষে সর্বশেষ ওডিআইয়ে অংশ নেন তিনি।

তার টেস্ট খেলোয়াড়ী জীবন সংক্ষিপ্ত আকার ধারণ করে। ১৯৮২ সালে ইংল্যান্ড গমন করেছিলেন তিনি। এটিই তার সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনের একমাত্র টেস্টে অংশগ্রহণ ছিল। সুনীল গাভাস্কারের সাথে ব্যাটিং উদ্বোধনে নেমেছিলেন তিনি। বব উইলিসইয়ান বোথামের পেস ও সুনিয়ন্ত্রিত সুইংয়ে কাবু হয়ে পড়েন। ছয় ও এক রান সংগ্রহ করতে পেরেছিলেন তিনি। তবে, আক্রমণধর্মী ব্যাটিং ও দূর্দান্ত ফিল্ডিং সীমিত ওভারের খেলাগুলোর উপযোগী ছিল। কয়েকটি খেলায় সফলতার স্বাক্ষর রাখেন। ইংল্যান্ডের মাটিতে ৩৬ গড়ে ৪৩৩ রান তুলেন। তন্মধ্যে, ইয়র্কশায়ারের বিপক্ষে ১৪৬ ও এমসিসি’র বিপক্ষে ৯২ রান তুলেছিলেন।

এছাড়াও, ১৯৮২ থেকে ১৯৮৪-৮৫ মৌসুম পর্যন্ত ১০টি ওডিআইয়ে অংশ নেন। ১৮ গড়ে ১৬৫ রান তুলেছিলেন তিনি। তন্মধ্যে, ১৯৮২-৮৩ মৌসুমে গুয়াহাটিতে সুন্দর খেলা উপহার দিয়েছিলেন। ইংল্যান্ড থেকে দেশে প্রত্যাবর্তনের পর সফরকারী শক্তিধর ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দলীয় সংগ্রহ ১৭৮/৭ তুললে খেলায় হাল ধরেন। তিনি ৪২ রান করে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হন। তার খেলার মান অপরিবর্তিত অবস্থায় ছিল। প্রথম দুই মৌসুমে ৩৫ গড়ে থাকার পর ৩০ গড়ে চলে যায়।

খেলার ধরন সম্পাদনা

ঘরোয়া ক্রিকেটে বেশ কয়েক বছর বোম্বে দলের অন্যতম পরিচালন শক্তি ছিলেন। অনেকগুলো বছর সুনীল গাভাস্কারের সাথে একযোগে ব্যাটিং উদ্বোধনে নামেন। প্রথম ভারতীয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার হিসেবে চারটি নাম নিয়ে পরিচিত ছিলেন। মহারাষ্ট্রের কালুস্তে এলাকায় জন্মগ্রহণকারী গুলাম পার্কার কিশোর অবস্থাতেই দর্শনীয় উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন ও অসাধারণ ফিল্ডার ছিলেন। সচরাচর, কভার অঞ্চলে ফিল্ডিং করতেন তিনি। তবে, প্রায়শঃই অশোক মানকড়ের বোলিং কৌশলের কারণে মিড-অন এলাকায় অবস্থান নিতে হতো তাকে; যাতে, ব্যাটসম্যান অতিরিক্ত রান নেয়াকালে সরাসরি রান-আউট করতে পারেন।

পরিসংখ্যান সম্পাদনা

ওডিআইয়ে ম্যান অব দ্য ম্যাচ
ক্রমিক প্রতিপক্ষ মাঠ তারিখ অবদান ফলাফল
ওয়েস্ট ইন্ডিজ নেহরু স্টেডিয়াম, গুয়াহাটি ১৭ ডিসেম্বর, ১৯৮৩ ৪২ (৫০ বল: ৭x৪, ১x৬); ২ ক্যাচ; ১ রান-আউট   ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৬ উইকেটে বিজয়ী[১]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

আরও দেখুন সম্পাদনা

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা