বিল ফারিমন্ড

ইংরেজ ক্রিকেটার
(Bill Farrimond থেকে পুনর্নির্দেশিত)

উইলিয়াম ফারিমন্ড (ইংরেজি: Bill Farrimond; জন্ম: ২৩ মে, ১৯০৩ - মৃত্যু: ১৫ নভেম্বর, ১৯৭৯) ল্যাঙ্কাশায়ারের ডেইজি হিল এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ইংরেজ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার ছিলেন। ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯৩০-এর দশকের শুরুরদিকে সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্যে ইংল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন।[১][২]

বিল ফারিমন্ড
১৯৩০ সালের সংগৃহীত স্থিরচিত্রে বিল ফারিমন্ড
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নামউইলিয়াম ফারিমন্ড
জন্ম২৩ মে, ১৯০৩
ডেইজি হিল, ল্যাঙ্কাশায়ার
মৃত্যু১৫ নভেম্বর, ১৯৭৯
ওয়েস্টহটন, বোল্টন, ল্যাঙ্কাশায়ার, ইংল্যান্ড
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
ভূমিকাউইকেট-রক্ষক
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ২৫৭)
১৩ ফেব্রুয়ারি ১৯৩১ বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা
শেষ টেস্ট২৯ জুন ১৯৩৫ বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট এফসি
ম্যাচ সংখ্যা ১৫৩
রানের সংখ্যা ১১৬ ২,৯০৮
ব্যাটিং গড় ১৬.৫৭ ২৩.৬৪
১০০/৫০ -/- ১/১৬
সর্বোচ্চ রান ৩৫ ১৭৪
বল করেছে - ১৮
উইকেট - -
বোলিং গড় - -
ইনিংসে ৫ উইকেট - -
ম্যাচে ১০ উইকেট - -
সেরা বোলিং - -
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ৫/২ ২৫২/৮০
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ১৩ জুলাই ২০২০

ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে ল্যাঙ্কাশায়ার দলের প্রতিনিধিত্ব করেন। দলে তিনি মূলতঃ উইকেট-রক্ষক হিসেবে খেলতেন। এছাড়াও, ডানহাতে নিচেরসারিতে ব্যাটিং করতেন বিল ফারিমন্ড

প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট সম্পাদনা

১৯২৪ সাল থেকে ১৯৪৫ সাল পর্যন্ত বিল ফারিমন্ডের প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান ছিল। দূর্লভ অভিজ্ঞতার সাথে স্বীয় নামকে জড়িয়ে রেখেছেন তিনি। কাউন্টি দলে চৌদ্দ বছর উইকেট-রক্ষকের দায়িত্ব পালনের পর অবশেষে দলে নিয়মিতভাবে খেলার সুযোগ পেয়েছিলেন। এছাড়াও, ৩৫ বছর ল্যাঙ্কাশায়ার দলের বিশ্বস্ত পেশাদার উইকেট-রক্ষক হিসেবে নিযুক্ত ছিলেন।

১৯২০-এর দশকের শেষদিক থেকে শুরু করে ১৯৩০-এর দশক জুড়ে ইংল্যান্ডের প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে দ্বিতীয় সেরা উইকেট-রক্ষক হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছিলেন। সেরা হিসেবে সতীর্থ ল্যাঙ্কাশায়ারীয় জর্জ ডাকওয়ার্থের সাথে তিনিও অনেকগুলো বছর শ্রেয়তর ব্যাটসম্যান লেসলি অ্যামিসের কারণে ইংল্যান্ড দলের বাইরে অবস্থান করতে বাধ্য হয়েছিলেন।[২] ফলশ্রুতিতে, ১৯২৫ থেকে ১৯৩৭ সাল পর্যন্ত প্রত্যেক মৌসুমে মাত্র একটি করে খেলায় অংশগ্রহণ করার সুযোগ পেয়েছিলেন। ডাকওয়ার্থের অবসর গ্রহণের পর অবশেষে ১৯৩৮ ও ১৯৩৯ সালে পূর্ণাঙ্গ দুই মৌসুম খেলেছিলেন বিল ফারিমন্ড।

১৯২৩ সালে দলটি তাদের সেরা উইকেট-রক্ষক হিসেবে জর্জ ডাকওয়ার্থকে পায়। ১৯২৪ সালে বিল ফারিমন্ডের আত্মপ্রকাশ ঘটে। ১৯৩৭ সালে ডাকওয়ার্থের আকস্মিক অবসর গ্রহণের পরই কেবল তার খেলার সুযোগ ঘটে। তবে, দুই মৌসুম খেলার পর দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কারণে তার খেলোয়াড়ী জীবনের সমাপ্তি ঘটে। তার এ দীর্ঘ খেলোয়াড়ী জীবনে অপরাপর কাউন্টি দলের কাছ থেকে প্রস্তাবনা পেলেও তিনি তা নাকচ করে দেন।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সম্পাদনা

সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে চারটিমাত্র টেস্টে অংশগ্রহণ করেছেন বিল ফারিমন্ড। ১৩ ফেব্রুয়ারি, ১৯৩১ তারিখে জোহেন্সবার্গে স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকা দলের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। ২৯ জুন, ১৯৩৫ তারিখে লর্ডসে একই দলের বিপক্ষে সর্বশেষ টেস্টে অংশ নেন তিনি।

ল্যাঙ্কাশায়ারের দ্বিতীয়সারির উইকেট-রক্ষক হিসেবে থাকা অবস্থাতেই চারটি টেস্ট খেলায় অংশগ্রহণের সুযোগ লাভ করেছিলেন তিনি। ১৯৩০-৩১ মৌসুমে দক্ষিণ আফ্রিকা গমনার্থে নিয়মিত উইকেট-রক্ষক জর্জ ডাকওয়ার্থের সহকারী হিসেবে তাকে দলে রাখা হয়। ডাকওয়ার্থ আহত হলে দুই টেস্টে অংশ নেন তিনি।[২] চার বছর পর ওয়েস্ট ইন্ডিজ গমন করেন ও সেখানে এক টেস্টে অংশ নেন। ঐ টেস্টে নিয়মিত উইকেট-রক্ষক লেস অ্যামিস শুধুই ব্যাটসম্যানের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন। ১৯৩৫ সালে স্বদেশে নিজস্ব একমাত্র টেস্টে অংশ নেন। লর্ডসে সফরকারী দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে অনুষ্ঠিত ঐ টেস্টে এবারও অ্যামিস ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলেন।

সর্বমোট চারবার ইংল্যান্ডের পক্ষে খেলার সুযোগ লাভ করেন। ১৯৩১ সালে ডাকওয়ার্থ অসুস্থ হলে দক্ষিণ আফ্রিকায় দুইটি টেস্ট, ১৯৩৫ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজে এক টেস্ট ও ঐ বছরই লর্ডসে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে আবারও খেলেন। তন্মধ্যে, শেষ দুই খেলায় অ্যামিস ব্যাটসম্যান ও ফিল্ডারের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন।

১৯৩০ সালে ওল্ড ট্রাফোর্ডে কেন্টের বিপক্ষে ইনিংসে সাতটি ডিসমিসাল ঘটিয়ে তৎকালীন বিশ্বরেকর্ডের সমকক্ষ হয়েছিলেন। তুলনামূলকভাবে ডাকওয়ার্থের তুলনায় শ্রেয়তর ব্যাটিংশৈলী প্রদর্শন করেছেন। দ্বিতীয় একাদশে বেশ ভালোমানের রান সংগ্রহ করেছেন। তবে, কাউন্টি দলের পক্ষে কোন সেঞ্চুরি করার সুযোগ পাননি। ১৯৩৪ সালে মাইনর কাউন্টিজের সদস্যরূপে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিপক্ষে ১৭৪ রান করেন।

দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে ৩০.৭০ গড়ে রান তুলেন। দীর্ঘদিন ও কার্যকরী ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শনের স্বীকৃতিস্বরূপ ১৯৩৯ সালে আর্থিক সুবিধা গ্রহণের খেলার জন্যে মনোনীত হন।

প্রচারবিমুখ উইকেট-রক্ষক ছিলেন ও ডাকওয়ার্থের বিপরীত ছিলেন। টাইগার স্মিথের পর দ্বিতীয় উইকেট-রক্ষক হিসেবে ইনিংসে সাতটি ডিসমিসালের সাথে নিজেকে নিয়ে যান। এ সংখ্যাটি ঐ সময় বিশ্বরেকর্ড হিসেবে পরিগণিত ছিল।[২] কার্যকর নিচেরসারির ব্যাটসম্যান ছিলেন তিনি। মাইনর কাউন্টিজ দলের সদস্যরূপে একমাত্র শতরানের ইনিংস খেলেন।

অবসর সম্পাদনা

১৯৪৫ সালে একটিমাত্র প্রথম-শ্রেণীর খেলায় অংশ নেন। গোলাপের প্রীতিখেলায় অংশ নিয়েছিলেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর নিয়মিতভাবে ক্রিকেট খেলা শুরু হলে ৪২ বছর বয়সী বিল ফারিমন্ডকে আর খেলায় অংশ নিতে দেখা যায়নি।

১৫ নভেম্বর, ১৯৭৯ তারিখে ৭৬ বছর বয়সে বোল্টনের ওয়েস্টহটন এলাকায় বিল ফারিমন্ডের দেহাবসান ঘটে।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "Bill Farrimond" । www.cricketarchive.com। সংগ্রহের তারিখ ২ সেপ্টেম্বর ২০১৭ 
  2. "Bill Farrimond"। www.espncricinfo.com। সংগ্রহের তারিখ ২ সেপ্টেম্বর ২০১৭ 

আরও দেখুন সম্পাদনা

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা