আর্চিবল্ড পাম

দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেটার
(Archibald Palm থেকে পুনর্নির্দেশিত)

আর্চিবল্ড উইলিয়াম পাম (ইংরেজি: Archibald Palm; জন্ম: ৮ জুন, ১৯০১ - মৃত্যু: ১৭ আগস্ট, ১৯৬৬) কেপটাউনের রোন্দেবশ এলাকায় জন্মগ্রহণকারী দক্ষিণ আফ্রিকান আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার ছিলেন। দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯২০-এর দশকের শেষদিকে অত্যন্ত সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্যে দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন।[১]

আর্চিবল্ড পাম
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নামআর্চিবল্ড উইলিয়াম পাম
জন্ম৮ জুন, ১৯০১
রোন্দেবশ, কেপটাউন, কেপ প্রদেশ
মৃত্যু১৭ আগস্ট, ১৯৬৬
সমারসেট ওয়েস্ট, কেপ প্রদেশ, দক্ষিণ আফ্রিকা
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
ভূমিকাব্যাটসম্যান
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
একমাত্র টেস্ট
(ক্যাপ ১২০)
৩১ ডিসেম্বর ১৯২৭ বনাম ইংল্যান্ড
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট এফসি
ম্যাচ সংখ্যা ৪০
রানের সংখ্যা ১৫ ১৯৫৮
ব্যাটিং গড় ৭.৫০ ৩২.০৯
১০০/৫০ ০/০ ৩/১১
সর্বোচ্চ রান ১৩ ১৭৩
বল করেছে
উইকেট
বোলিং গড়
ইনিংসে ৫ উইকেট
ম্যাচে ১০ উইকেট
সেরা বোলিং
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ১/- ১২/-
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ১১ জুন ২০২০

ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেটে ওয়েস্টার্ন প্রভিন্স দলের প্রতিনিধিত্ব করেন আর্চিবল্ড পাম। দলে তিনি মূলতঃ ডানহাতি ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলতেন।

প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট সম্পাদনা

১৯২১-২২ মৌসুম থেকে ১৯৩৩-৩৪ মৌসুম পর্যন্ত আর্চিবল্ড পামের প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান ছিল।

আর্চিবল্ড পাম ডানহাতি মাঝারিসারির ব্যাটসম্যান ছিলেন। ১৯২১-২২ মৌসুম থেকে ১৯৩৩-৩৪ মৌসুম পর্যন্ত মাঝে-মধ্যে বিরতি নিয়ে ওয়েস্টার্ন প্রভিন্সের পক্ষে খেলেন। ১৯২২-২৩ মৌসুমে খেলেননি। তবে, পরবর্তী মৌসুমে গ্রিকুয়াল্যান্ড ওয়েস্টের বিপক্ষে অপরাজিত ১০৬ রানের ইনিংস খেলেছিলেন। এ পর্যায়ে দ্বিতীয় ইনিংসে দলের সংগ্রহ ২৭/৫ অবস্থায় মাঠে নামেন ও ষষ্ঠ উইকেটে মিক কোমেইলের সাথে নিরবিচ্ছিন্নভাবে ২৪৪ রান তুলেন।[২] এ সংগ্রহটি অদ্যাবধি ওয়েস্টার্ন প্রভিন্সের পক্ষে ষষ্ঠ উইকেটে সর্বোচ্চ রানের জুটি হিসেবে অক্ষত রয়েছে।[৩] তবে, ১৯২৭-২৮ মৌসুমে সফররত ইংরেজ একাদশের বিপক্ষে প্রতিনিধিত্বমূলক দলে অংশগ্রহণের পূর্বে আর কোন সেঞ্চুরির সন্ধান পাননি।

সাউথ আফ্রিকান এ একাদশের সদস্যরূপে এমসিসি’র বিপক্ষে প্রথম প্রতিনিধিত্বমূলক প্রথম-শ্রেণীর খেলায় অংশ নেন। দলটি তরুণ, উদীয়মান খেলোয়াড়দের নিয়ে গঠন করা হয়। যাচাই-বাছাইয়ে ছয়জন খেলোয়াড়ের অন্যতম ছিলেন ও তাকে টেস্ট খেলায় অংশগ্রহণের উদ্দেশ্যে দলে রাখা হয়। প্রথম ইনিংসে রান তুলে। কিন্তু, দ্বিতীয় ইনিংসে ৪১ রান তুলেছিলেন তিনি।[৪]

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সম্পাদনা

সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে একটিমাত্র টেস্টে অংশগ্রহণ করেছেন আর্চিবল্ড পাম। ৩১ ডিসেম্বর, ১৯২৭ তারিখে কেপটাউনে সফরকারী ইংল্যান্ড দলের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। এটিই তার একমাত্র টেস্টে অংশগ্রহণ ছিল। এরপর আর তাকে কোন টেস্টে অংশগ্রহণ করতে দেখা যায়নি।

সিরিজের প্রথম টেস্টে তাকে খেলানো হয়নি। তবে, দ্বিতীয় টেস্টে তাকে রাখা হয়। কেপটাউনের নিউল্যান্ডস ক্রিকেট গ্রাউন্ডে ঠিক ১০দিন পর তিনি খেলেন। ঐ টেস্টে তিনি তার নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেননি। ছয় নম্বরে ব্যাটিংয়ে নেমে মাত্র ২ রান তুলেন। তাসত্ত্বেও স্বাগতিক দল ১৭৭ রানে এগিয়ে যায়। এর প্রত্যুত্তরে ইংল্যান্ড দল তাদের দ্বিতীয় ইনিংসে ৪২৮ রান তুলে। তিনি ১৩ রান তুলেন ও দক্ষিণ আফ্রিকা দল ৮৭ রানে পরাজিত হয়। প্রথম উইকেট জুটিতে ১১৫ রান তুললেও তারা ২২৪ রানে গুটিয়ে যায়।[৫] ইংল্যান্ডের দ্বিতীয় ইনিংস চলাকালে ওয়ালি হ্যামন্ডের ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। পরের টেস্টে তাকে মাঠের বাইরে অবস্থান করতে হয় ও পরবর্তীতে তাকে আর দলে রাখা হয়নি।

দলে প্রত্যাখ্যান সম্পাদনা

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে প্রত্যাখ্যাত হবার পরও পরবর্তী ছয় মৌসুমে ওয়েস্টার্ন প্রভিন্সের পক্ষে কয়েকটি প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট খেলায় অংশ নিয়েছিলেন তিনি। ১৯২৯-৩০ মৌসুমে তিনি তার স্বর্ণালী মৌসুম অতিবাহিত করেন। সাত বছর পর আরেকটি প্রথম-শ্রেণীর সেঞ্চুরির সন্ধান পান। নাটালের বিপক্ষে অপরাজিত ১০০ রান তুলেন। আট নম্বরে ব্যাটিংয়ে নেমে সপ্তম উইকেট জুটিতে নিরবিচ্ছিন্নভাবে ২৬২ রান তুলেন। দলীয় সঙ্গী ডেনিস মরকেল তুলেন ২০৮ রান।[৬] তাদের সংগৃহীত এ জুটিটির রেকর্ডও অদ্যাবধি টিকে রয়েছে স্বমহিমায়।[৩]

পরের খেলায় তিনি গ্রিকুয়াল্যান্ড ওয়েস্টের বিপক্ষে ১৭৩ রান তুলেন। এটিই তার সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ সংগ্রহ ছিল। তাসত্ত্বেও দল ইনিংস ব্যবধানে পরাভূত হয়।[৭] এটিই তার সর্বশেষ সেঞ্চুরি ছিল। ১৯৩৩-৩৪ মৌসুমের পর আর কোন খেলায় অংশ নেননি তিনি।

১৭ আগস্ট, ১৯৬৬ তারিখে ৬৫ বছর বয়সে এলাকায় আর্চিবল্ড পামের দেহাবসান ঘটে।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "Archibald Palm"। www.cricketarchive.com। সংগ্রহের তারিখ ১২ জানুয়ারি ২০১২ 
  2. "Scorecard: Griqualand West v Western Province"। www.cricketarchive.com। ২২ ডিসেম্বর ১৯২২। সংগ্রহের তারিখ ১৫ জানুয়ারি ২০১২ 
  3. "Highest Partnership for each Wicket for Western Province"। www.cricketarchive.com। সংগ্রহের তারিখ ১৬ জানুয়ারি ২০১২ 
  4. "Scorecard: South African XI v MCC"। www.cricketarchive.com। ২০ ডিসেম্বর ১৯২৭। সংগ্রহের তারিখ ১৬ জানুয়ারি ২০১২ 
  5. "Scorecard: South Africa v England"। www.cricketarchive.com। ৩১ ডিসেম্বর ১৯২৭। সংগ্রহের তারিখ ১৬ জানুয়ারি ২০১২ 
  6. "Scorecard: Western Province v Natal"। www.cricketarchive.com। ৩১ ডিসেম্বর ১৯২৯। সংগ্রহের তারিখ ১৬ জানুয়ারি ২০১২ 
  7. "Scorecard: Griqualand West v Western Province"। www.cricketarchive.com। ২১ ফেব্রুয়ারি ১৯৩০। সংগ্রহের তারিখ ১৬ জানুয়ারি ২০১২ 

আরও দেখুন সম্পাদনা

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা