২০১৯ ক্রিকেট বিশ্বকাপ ফাইনাল
২০১৯ ক্রিকেট বিশ্বকাপ ফাইনাল ২০১৯ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপের একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত খেলাবিশেষ। ১৪ জুলাই, ২০১৯ তারিখে ইংল্যান্ডের লন্ডনে অবস্থিত লর্ডস ক্রিকেট গ্রাউন্ডে নিউজিল্যান্ড এবং ইংল্যান্ডের মধ্যে অনুষ্ঠিত হয়।[১] এরফলে, পঞ্চমবারের মতো লর্ডস মাঠটি ক্রিকেট বিশ্বকাপ প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত খেলা আয়োজনের সম্মাননা লাভ করে। এ সংখ্যাটি অন্য যে-কোন মাঠের তুলনায় সর্বাধিকসংখ্যক।[২]
প্রতিযোগিতা | ২০১৯ ক্রিকেট বিশ্বকাপ | ||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
| |||||||||
সুপার ওভার: ইংল্যান্ড ১৫/০, নিউজিল্যান্ড ১৫/১ ইংল্যান্ড ৯ বাউন্ডারি ব্যবধানে বিজয়ী হয় | |||||||||
তারিখ | ১৪ জুলাই, ২০১৯ | ||||||||
মাঠ | লর্ডস, লন্ডন | ||||||||
ম্যাচসেরা | বেন স্টোকস (ইংল্যান্ড) | ||||||||
আম্পায়ার | কুমার ধর্মসেনা মারাইজ ইরাসমাস | ||||||||
উপস্থিত দর্শক | ৩০,০০০ | ||||||||
← ২০১৫ ২০২৩ → |
উভয় দল ২৪১ রান করলে ম্যাচ টাই হয়, টাই ভঙ্গকারী হিসেবে সুপার ওভার অনুষ্ঠিত হয় যেটিও টাই হয়। সুপার ওভারের শেষ বলে নিউজিল্যান্ড, মার্টিন গাপটিল ১ রান নিয়ে ইংল্যান্ডের সমান ১৫ করার পর দ্বিতীয় রান নেয়ার জন্য দৌড় শুরু করেন কিন্তু তিনি রান সম্পন্ন করার আগেই ইংল্যান্ডের উইকেট-রক্ষক জস বাটলার তাকে রান আউট করে দেন। যার ফলে সুপার ওভারও টাই হয়। মূল ম্যাচে নিউজিল্যান্ড ১৭টি বাউন্ডারি মারে, অন্যদিকে ইংল্যান্ড ২৬টি বাউন্ডারি মারে; ফলে বাউন্ডারি গণনা নিয়মে ইংল্যান্ড জয়লাভ করে। এরফলে, ইংল্যান্ড প্রথমবারের মতো ক্রিকেট বিশ্বকাপ বিজয়ী হয়।[৩][৪][৫]
এই প্রথমবারের মত একটি ওয়ানডে ম্যাচের খেলায় সুপার ওভারের প্রয়োজন হয় এবং এটিই প্রথমবারের যেখানে বাউন্ডারি গণনা নিয়মে ফলাফল নির্ধারিত হয়। ম্যাচটিকে ক্রিকেট ইতিহাসের সর্বশ্রেষ্ঠ এবং সর্বাধিক নাটকীয় হিসাবে ধরা হয়, কিছু বিশ্লেষক এটিকে একদিনের ক্রিকেটের ইতিহাসে সর্বশ্রেষ্ঠ ম্যাচ হিসাবে অভিহিত করেন।[৬][৭][৮][৯]
ম্যাচের পরে আম্পায়ার কুমার ধর্মসেনা শেষ ওভারে ভুল করার কথা স্বীকার করেন; শেষ ওভারের ৪র্থ বল নিউজিল্যান্ডের ফিল্ডার ফিল্ডিং করে বল স্ট্যাম্পে নিক্ষেপ করেন যেটি বেন স্টোকসের ব্যাটে লাগে, যিনি তখন দ্বিতীয় রান পূর্ণ করতে ঝাঁপ দিয়েছিলেন এবং ব্যাটে লেগে বলটি বাউন্ডারিতে যেয়ে চার হয়ে যায়, ধর্মসেনা ওভারথ্রোতে চারসহ মোট ছয় রান দেন কিন্তু যেখানে তার পাঁচ রান দেওয়া উচিত ছিল যেহেতু ব্যাটসম্যানরা নিক্ষেপের সময় তখনও দ্বিতীয় রানটি পূর্ণ করেননি। তবে ধর্মসেনা বলেন যে তিনি তার "সিদ্ধান্তের জন্য কখনই অনুশোচনা করবেন না"।[১০][১১][১২] ঘটনার ফলস্বরূপ, মেরিলেবোন ক্রিকেট ক্লাব জানায় যে তারা ওভারথ্রোর নিয়মটি পর্যালোচনা করবে।[১৩][১৪]
প্রেক্ষাপট
সম্পাদনাইংল্যান্ড ও ওয়েলসে আয়োজিত ২০১৯ ক্রিকেট বিশ্বকাপ ৩০ মে শুরু হয়। গ্রুপ পর্বের খেলাগুলো রাউন্ড-রবিন পদ্ধতিতে অনুষ্ঠিত হয়। এ পর্বে অংশগ্রহণকারী দশ দলই একে-অপরের বিপক্ষে একই গ্রুপে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অবতীর্ণ হয়। প্রত্যেক দলই সর্বমোট নয়টি খেলায় অংশ নেয়। গ্রুপের শীর্ষ চার দল নক-আউট পর্বে উপনীত হয়। প্রথম সেমিফাইনালে গ্রুপপর্বে চতুর্থ স্থানে থাকা নিউজিল্যান্ড দল গ্রুপ বিজয়ী ভারতকে পরাজিত করে, এবং দ্বিতীয় সেমিফাইনালে গ্রুপপর্বে তৃতীয় স্থানে থাকা ইংল্যান্ড দ্বিতীয় স্থানে থাকা অস্ট্রেলিয়াকে পরাজিত করে।
ইংল্যান্ড ২৭ বছর তাদের প্রথম ফাইনাল খেলে, তারা সর্বশেষ ফাইনাল খেলেছিল ১৯৯২ বিশ্বকাপে, যেখানে তারা মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে পাকিস্তানের কাছে পরাজিত হয়। তাদের অন্য ফাইনাল খেলাগুলি ছিল ১৯৭৯ সালে লর্ডসে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ও ১৯৮৭ সালে ইডেন গার্ডেন্সে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে। অস্ট্রেলিয়ার পর বিশ্বকাপে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সংখ্যক ফাইনালে খেলতে সত্ত্বেও, তারা কোন ট্রফি জিততে পারেনি। অন্যদিকে নিউজিল্যান্ড তাদের দ্বিতীয় ফাইনাল খেলে ও এটি ছিল তাদের টানা দ্বিতীয় ফাইনাল। নিউজিল্যান্ডের আগের ফাইনালটি ২০১৫ সালের যেখানে তারা অস্ট্রেলিয়ার নিকট পরাজিত হয়।
ইংল্যান্ড যখন ফাইনালে পৌঁছে, তখন যুক্তরাজ্যের বিনামূল্যে দেখার (ফ্রি-টু-এয়ার) টেলিভিশন চ্যানেলে খেলা দেখানোর জন্য চাহিদা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পায়। ফলে স্বত্বাধিকারী স্কাই স্পোর্টস চ্যানেল ৪ কে ফাইনাল খেলা সম্প্রচার করার অনুমোদন দিতে সম্মত হয়, যারা আগে এই টুর্নামেন্টের সন্ধ্যায় হাইলাইট সম্প্রচার করার অধিকার পেয়েছিল। তবে, চ্যানেল ৪ তার তাগে তাদের চ্যানেলে ২০১৯ ব্রিটিশ গ্র্যান্ড প্রিক্স দেখানোর প্রতিশ্রুতির কারণে, মোটর প্রতিযোগিতা চলাকালে তারা তাদের সহ চ্যানেল মোর ৪-এ খেলা সম্প্রচার করে ও ব্রিটিশ গ্র্যান্ড প্রিক্স শেষ হবার তারা সম্প্রচার মূল চ্যানেলে নিয়ে আসে। ফলে ২০০৫ সালের অ্যাশেজ সিরিজের পর থেকেই ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের কোন আন্তর্জাতিক ম্যাচ যুক্তরাজ্যে বিনামূল্যে দেখার টেলিভিশন চ্যানেলে সম্প্রচারিত হয়।
১৯৯৬ সালে শ্রীলঙ্কার বিজয়ের পর থেকে এটিই প্রথম ফাইনাল যেখানে যে দলটিই জিতুক না কেন সেটি হবে তাদের প্রথম বিশ্বকাপ জয়। ১৯৯২ সালের পর এটিই প্রথম ফাইনাল যেখানে এর আগে বিশ্বকাপ জিতেনি এমন দলের বিশ্বকাপ বিজয় নিশ্চিত ছিল।
ফাইনালের পথে
সম্পাদনাফাইনালের পথে
সম্পাদনানিউজিল্যান্ড
সম্পাদনা১১ পয়েন্ট নিয়ে চতুর্থ স্থানে থেকে নিউজিল্যান্ড রাউন্ড-রবিন পর্যায় শেষ করে, যেখানে পাকিস্তানও ১১ পয়েন্ট অর্জন করেছিল তবে খুব অল্প রান রেটের ব্যবধানে নিউজিল্যান্ড সেমিফাইনালে যায়। তারা নয়টি ম্যাচ থেকে পাঁচটি জয় পায় এবং তিনটি হারে; একটি ম্যাচ বৃষ্টির কারণে পরিত্যক্ত হয় যেখানে তাদের বিপক্ষ দল ছিল ভারত। ৯ জুলাই ওল্ড ট্রাফোর্ডে টুর্নামেন্টের প্রথম সেমিফাইনালে তারা ভারতের সাথে খেলে, যারা রাউন্ড-রবিন পর্যায়ে প্রথম হয়। ফাইনালে আসতে তারা ভারতকে ১৮ রানে পরাজিত করে।
ইংল্যান্ড
সম্পাদনা১২ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় স্থানে থেকে ইংল্যান্ড রাউন্ড-রবিন পর্যায় শেষ করে। তারা নয়টি ম্যাচ থেকে ছয়টি জয় পায় এবং তিনটি হারে। ১১ জুলাই এজবাস্টনে টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় সেমিফাইনালে তারা সাবেক চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়ার সাথে খেলে, যারা রাউন্ড-রবিন পর্যায়ে দ্বিতীয় হয়। ফাইনালে আসতে তারা অস্ট্রেলিয়াকে ৪ উইকেটে পরাজিত করে।
খেলা
সম্পাদনাখেলা পরিচালনাকারী কর্মকর্তা
সম্পাদনা১২ জুলাই ২০১৯ তারিখে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল ফাইনাল ম্যাচ পরিচালনাকারী কর্মকর্তাবৃন্দ দের নাম ঘোষণা করে।[১৫]
- মাঠের আম্পায়ার: কুমার ধর্মসেনা এবং মারাইজ ইরাসমাস
- তৃতীয় আম্পায়ার: রড টাকার
- চতুর্থ আম্পায়ার: আলীম দার
- ম্যাচ রেফারি: রঞ্জন মাদুগালে
দল ও মুদ্রা নিক্ষেপ
সম্পাদনাউভয় দলই খেলোয়াড় অপরিবর্তিত রেখে সেমি-ফাইনালে খেলা একই দল নিয়ে খেলার সিদ্ধান্ত নেয়; নিউজিল্যান্ড সিদ্ধান্ত নেয় যে, ভারতকে হারাতে পারে এমন লাইন-আপই ফাইনাল ম্যাচে তাদের পক্ষে কাজ করবে, অন্যদিকে ইংল্যান্ডের উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান জেসন রয় সেমিফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষের ম্যাচে আম্পায়ারের সিদ্ধান্তে আপত্তি তোলায় এবং অশ্রাব্য ভাষা ব্যবহার করায় ফাইনাল ম্যাচে সম্ভাব্য নিষিদ্ধ হওয়া থেকে বেঁচে যান।[১৬]
সকালের দিকে অল্প বৃষ্টির কারণে টস কিছুটা বিলম্বে হয়, ফলে খেলা নির্ধারিত সময়ের ১৫ মিনিট পর ১০টা ৪৫ মিনিটে শুরু হয়। খেলা শুরুর আগে এটি আশঙ্কা করা হচ্ছিল যে বৃষ্টি ম্যাচে হস্তক্ষেপ করতে পারে কিন্তু পরে দ্রুতই আকাশে মেঘাচ্ছন্নভাব কেটে যায়। টস জিতে নিউজিল্যান্ডের অধিনায়ক প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন।
নিউজিল্যান্ডের ইনিংস
সম্পাদনাশুরুতে ভালো কিছুর ইঙ্গিত দিয়েছিল নিউজিল্যান্ড। অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন ও ওপেনার হেনরি নিকোলসের ব্যাটে এক পর্যায়ে তাদের সংগ্রহ ছিল ১ উইকেটে ১০৩ রান। কিন্তু লিয়াম প্লাঙ্কেটের তোপে পড়ে নিয়মিত বিরতিতেই উইকেট হারাতে থাকে নিউজিল্যান্ডে। টুর্নামেন্টে হেনরি নিকোলসের প্রথম অর্ধ-শতকে ও লাথামের ৪৭ রানে ভর দিয়ে নিউজিল্যান্ড পুরো ৫০ ওভার ব্যাট করে ৮ উইকেটে ২৪১ রান তোলে। স্বাগতিক ইংল্যান্ডের পক্ষে লিয়াম প্লাঙ্কেট ও ক্রিস ওকস তিনটি করে উইকেট নেন।
ইংল্যান্ডের ইনিংস
সম্পাদনা২৪২ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ইংল্যান্ড ধীর গতিতে শুরু করে। নিউজিল্যান্ডের বোলাররা চমৎকার বোলিং করে। দলীয় অর্ধ-শতক হতে ইংল্যান্ডের ৮৬ বল লেগে যায়। এক পর্যায়ে ২৪ ওভারে ৮৬ রানে ৪ উইকেট হারায় ইংল্যান্ড। দলীয় এই বিপর্যয়ের মুখে ১১০ রানের জুটি গড়ে ইংল্যান্ডকে টেনে তোলেন বেন স্টোকস ও জস বাটলার। বাটলার ৫৯ করে আউট হয়ে যান। এর ইংল্যান্ড আবার নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে তবে বেন স্টোকস দলকে ভরসা দিতে থাকেন। জিততে শেষ ওভারে ইংল্যান্ডের প্রয়োজন হয় ১৫ রানের ও হাতে ছিল ২ উইকেট।
ট্রেন্ট বোল্টের করা শেষ ওভারের প্রথম ২ বলে বেন স্টোকস কোন রান নিতে পারেননি, তৃতীয় বলে এক ছক্কা হাঁকান। চতুর্থ বলে বেন স্টোকস মিড উইকেটে বল পাঠিয়ে ২ রান নিতে যান, সেই সময় ফিল্ডার রান আউট করতে বল স্ট্যাম্পের দিকে নিক্ষেপ করেন; বেন স্টোকস তখনো রান নিচ্ছিলেন ও রান আউট থেকে বাঁচতে ব্যাট এগিয়ে রেখে ঝাঁপ দেন তবে স্ট্যাম্পের দিকে ফিল্ডারের নিক্ষেপ করা বল ব্যাটের লেগে মাঠের বাইরে চলে যেয়ে চার হয়ে যায়। ফলে ইংল্যান্ড ২ রান ও চার সহ মোট ছয় রান পায় সেই বল থেকে। শেষ দুই বলে ২ রানের দরকার ছিল। পঞ্চম বলে আবার দুই রান নিতে যান বেন স্টোকস, তবে ১ রান সম্পন্ন করার পর দ্বিতীয় রান নিতে যেয়ে রানআউট হন আদিল রশিদ। শেষ বলে ইংল্যান্ডের দরকার হয় ২ রানের। স্টোকস হালকা ঠেলে ২ রান নিতে যান কিন্তু দ্বিতীয় রান নেয়ার সময় ফিল্ডার নিশামের নিক্ষিপ্ত বল ধরে উইকেট ভেঙে রান আউট করে দেন বোল্ট। ফলে ম্যাচ টাই হয়।
সুপার ওভার
সম্পাদনা২৪১ রানে ম্যাচ টাই হওয়ায় সুপার ওভার শুরু হয়। সুপার ওভারে ব্যাট করতে আসেন ইংল্যান্ডের দুই ব্যাটসম্যান বেন স্টোকস ও জস বাটলার। নিউজিল্যান্ডের পক্ষে বল করেন ট্রেন্ট বোল্ট। প্রথম বলেই ৩ রান নেন স্টোকস। দ্বিতীয় বলে এক রান নেন জস বাটলার। পরের বলে চার মারেন স্টোকস। চতুর্থ বলে এক রান হয়। পঞ্চম বলে ২ রান হয়। শেষ বলে বাটলারের ব্যাট থেকে আসে আরেকটি চার। ফলে স্কোরবোর্ডে ১৫ রান যোগ করে ইংল্যান্ড।
লক্ষ্য তাড়া করতে, নিউজিল্যান্ডের হয়ে ব্যাট করতে আসেন মার্টিন গাপটিল ও জেমস নিশাম। ইংল্যান্ডের হয়ে বল করেন জোফরা আর্চার। প্রথম বল ওয়াইড দেন বোলার জোফরা আর্চার। পরের প্রথম বলে নিশামের ২ রান নেন। দ্বিতীয় বলে ছক্কা হাঁকান তিনি। তৃতীয় ও চতুর্থ বলে নেন ২ রান করে। পঞ্চম বলে এক রানের বেশি নিতে ব্যর্থ হন জেমস নিশাম। ফলে শেষ বলে দরকার হয় ২ রানের। সুপার ওভারের শেষ বলে নিউজিল্যান্ড, মার্টিন গাপটিল ডিপ মিড-উইকেটের দিকে ঠেলে ২ রান নিতে যান। মার্টিন গাপটিল ১ রান নিয়ে ইংল্যান্ডের সমান ১৫ করার পর দ্বিতীয় রান নেয়ার জন্য দৌড় শুরু করেন কিন্তু তিনি রান সম্পন্ন করার আগেই ইংল্যান্ডের উইকেট-রক্ষক জস বাটলার তাকে রান আউট করে দেন। যার ফলে সুপার ওভারও টাই হয় কিন্তু ফলে বাউন্ডারি গণনা নিয়মে ইংল্যান্ড জয়লাভ করে (মূল ম্যাচে নিউজিল্যান্ড ১৭টি বাউন্ডারি মারে, অন্যদিকে ইংল্যান্ড ২৬টি বাউন্ডারি মারে)। এরফলে, ইংল্যান্ড প্রথমবারের মতো ক্রিকেট বিশ্বকাপ বিজয়ী হয়। বেন স্টোকস ৮৪ রান ও সুপার ওভারের ৭ করার জন্য ম্যাচসেরা পুরস্কার লাভ করেন
ব
|
||
- নিউজিল্যান্ড টসে জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয়।
- সুপার ওভার: ইংল্যান্ড ১৫/০, নিউজিল্যান্ড ১৫/১
- ইংল্যান্ড বাউন্ডারি গণনা নিয়মে জয়লাভ করে (২৬-১৭)।
- এই প্রথমবার মতো একটি একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচের বিজয়ী নির্ধারণ করতে সুপার ওভার ব্যবহৃত হয়েছে এবং এটিই প্রথমবার যেখানে সুপার ওভারও টাই হয়।
- কেন উইলিয়ামসন (নিউজিল্যান্ড) বিশ্বকাপের একক সংস্করণে অধিনায়ক হিসেবে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হন (৫৭৮ রান)।
- ১ম ইনিংস
নিউজিল্যান্ডের ব্যাটিং[১৭] | |||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|
খেলোয়াড় | অবস্থা | রান | বল | ৪ | ৬ | স্ট্রাইক রেট | |
মার্টিন গাপটিল | এলবিডব্লিউ ব উকস | ১৯ | ১৮ | ২ | ১ | ১০৫.৫৫ | |
হেনরি নিকোলস | ব প্লাঙ্কেট | ৫৫ | ৭৭ | ৪ | ০ | ৭১.৪২ | |
কেন উইলিয়ামসন | ক বাটলার ব প্লাঙ্কেট | ৩০ | ৫৩ | ২ | ০ | ৫৬.৬০ | |
রস টেলর | এলবিডব্লিউ ব উড | ১৫ | ৩১ | ০ | ০ | ৪৮.৩৮ | |
টম ল্যাথাম | ক (বদলি) জেমস ভিন্স ব উকস | ৪৭ | ৫৬ | ২ | ১ | ৮৩.৯২ | |
জেমস নিশাম | ক রুট ব প্লাঙ্কেট | ১৯ | ২৫ | ৩ | ০ | ৭৬.০০ | |
কলিন ডি গ্র্যান্ডহোম | ক (বদলি) ভিঞ্জস ব উকস | ১৬ | ২৮ | ০ | ০ | ৫৭.১৪ | |
মিচেল স্যান্টনার | অপরাজিত | ৫ | ৯ | ০ | ০ | ৫৫.৫৫ | |
ম্যাট হেনরি | ব আর্চার | ৪ | ২ | ১ | ০ | ২০০.০০ | |
ট্রেন্ট বোল্ট | অপরাজিত | ১ | ২ | ০ | ০ | ৫০.০০ | |
লকি ফার্গুসন | ব্যাট করেনি | ||||||
অতিরিক্ত | (লেবা ১২, ওয়া ১৭, নোব ১) | ৩০ | |||||
মোট | (৮ উইকেট; ৫০ ওভার) | ২৪১ |
উইকেটের পতন: ১/২৯ (গাপটিল, ৬.২ ওভার), ২/১০৩ (উইলিয়ামসন, ২২.৪ ওভার), ৩/১১৮ (নিকোলস, ২৬.৫ ওভার), ৪/১৪১ (টেলর, ৩৩.১ ওভার), ৫/১৭৩ (নিশাম, ৩৯ ওভার), ৬/২১৯ (ডি গ্র্যান্ডহোম, ৪৬.৫ ওভার), ৭/২৩২ (ল্যাথাম, ৪৮.৩ ওভার), ৮/২৪০ (হেনরি, ৪৯.৩ ওভার)
ইংল্যান্ডের বোলিং[১৭] | ||||||
---|---|---|---|---|---|---|
বোলার | ওভার | মেডেন | রান | উইকেট | ইকোনমি | |
ক্রিস উকস | ৯ | ০ | ৩৭ | ৩ | ৪.১১ | |
জোফ্রা আর্চার | ১০ | ০ | ৪২ | ১ | ৪.২০ | |
লিয়াম প্লাঙ্কেট | ১০ | ০ | ৪২ | ৩ | ৪.২০ | |
মার্ক উড | ১০ | ১ | ৪৯ | ১ | ৪.৯০ | |
আদিল রশিদ | ৮ | ০ | ৩৯ | ০ | ৪.৮৭ | |
বেন স্টোকস | ৩ | ০ | ২০ | ০ | ৬.৬৬ |
- ২য় ইনিংস
ইংল্যান্ডের ব্যাটিং[১৭] | |||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|
খেলোয়াড় | অবস্থা | রান | বল | ৪ | ৬ | স্ট্রাইক রেট | |
জেসন রয় | ক ল্যাথাম ব হেনরি | ১৭ | ২০ | ৩ | ০ | ৮৫.০০ | |
জনি বেয়ারস্টো | ব ফার্গুসন | ৩৬ | ৫৫ | ৭ | ০ | ৬৫.৪৫ | |
জো রুট | ক ল্যাথাম ব ডি গ্র্যান্ডহোম | ৭ | ৩০ | ০ | ০ | ২৩.৩৩ | |
ইয়ন মর্গ্যান | ক ফার্গুসন ব নিশাম | ৯ | ২২ | ০ | ০ | ৪০.৯০ | |
বেন স্টোকস | অপ্রাজিত | ৮৪ | ৯৮ | ৫ | ২ | ৮৫.৭১ | |
জস বাটলার | ক (বদলি) সাউদি ব ফার্গুসন | ৫৯ | ৬০ | ৬ | ০ | ৯৮.৩৩ | |
ক্রিস উকস | ক ল্যাথাম ব ফার্গুসন | ২ | ৪ | ০ | ০ | ৫০.০০ | |
লিয়াম প্লাঙ্কেট | ক বোল্ট ব নিশাম | ১০ | ১০ | ১ | ০ | ১০০.০০ | |
জোফ্রা আর্চার | ব নিশাম | ০ | ১ | ০ | ০ | ০.০০ | |
আদিল রশিদ | রান আউট (স্যান্টনার/বোল্ট) | ০ | ০ | ০ | ০ | ০.০০ | |
মার্ক উড | রান আউট (নিশাম/বোল্ট) | ০ | ০ | ০ | ০ | ০.০০ | |
অতিরিক্ত | (বা ২, লেবা ৩, ওয়া ১২) | ১৭ | |||||
মোট | (সবাই আউট; ৫০ ওভার) | ২৪১ |
উইকেটের পতন: ১/২৮ (রয়, ৫.৪ ওভার), ২/৫৯ (রুট, ১৬.৩ ওভার), ৩/৭১ (বেয়ারস্টো, ১৯.৩ ওভার), ৪/৮৬ (মর্গান, ২৩.১ ওভার), ৫/১৯৬ (বাটলার, ৪৪.৫ ওভার), ৬/২০৩ (উকস, ৪৬.১ ওভার), ৭/২২০ (প্লাঙ্কেট, ৪৮.৩ ওভার), ৮/২২৭ (আর্চার, ৪৯ ওভার), ৯/২৪০ (রশিদ, ৪৯.৫ ওভার), ১০/২৪১ (উড, ৫০ ওভার)
নিউজিল্যান্ডের বোলিং[১৭] | ||||||
---|---|---|---|---|---|---|
বোলার | ওভার | মেডেন | রান | উইকেট | ইকোনমি | |
ট্রেন্ট বোল্ট | ১০ | ০ | ৬৭ | ০ | ৬.৭০ | |
ম্যাট হেনরি | ১০ | ২ | ৪০ | ১ | ৪.০০ | |
কলিন ডি গ্র্যান্ডহোম | ১০ | ২ | ২৫ | ১ | ২.৫০ | |
লকি ফার্গুসন | ১০ | ০ | ৫০ | ৩ | ৫.০০ | |
জেমস নিশাম | ৭ | ০ | ৪৩ | ৩ | ৬.১৪ | |
মিচেল স্যান্টনার | ৩ | ০ | ১১ | ০ | ৩.৬৬ |
|
|
উদাযাপন
সম্পাদনাইংল্যান্ডের জয়ের পর, জাতিটি গর্বে উচ্ছসিত হয় ও জয়ের উৎযাপন রাত গড়িয়ে পরদিন পর্যন্ত চলে। ইংল্যান্ড দল লর্ডসে থেকেই রাত্রি উদ্যাপন করে। পরের দিন, দলটি ওভালে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করে, তারা ভক্তদেরকে দলটির সাথে দেখা করতে ও দলটিকে অভিবাদন জানাতে এবং ট্রফির সাথে ছবি তোলার জন্য আমন্ত্রণ জানায়।[১৮]
রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথসহ আরো অনেক যশস্বী ব্যক্তি জয়ের জন্য ইংল্যান্ড দলকে অভিনন্দন জানায়।[১৯][২০]
“ | আজকের বিশ্বকাপ ফাইনালে এমন এক রোমাঞ্চকর জয়ের জন্য রাজকুমার ফিলিপ এবং আমি ইংল্যান্ড পুরুষ ক্রিকেট দলকে আমাদের উষ্ণ অভিনন্দন প্রেরণ করছি। | ” |
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে বিজয় উদ্যাপন এবং অভিনন্দন জানানোর পরদিন ইংল্যান্ড দলকে ১০ ডাউনিং স্ট্রিটে আমন্ত্রণ জানায়। প্রাক্তন রক্ষণশীল দলের প্রধানমন্ত্রী স্যার জন মেজর, যিনি নিজেই একজন সারে কাউন্টি ক্রিকেট ক্লাবের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট এবং সম্মানসূচক অজীবনের উপ-প্রেসিডেন্ট, উক্ত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।[২১]
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "Jadeja, Dhoni fight in vain as New Zealand advance to final"। Cricbuzz। সংগ্রহের তারিখ ১০ জুলাই ২০১৯।
- ↑ "Lord's to host record 5th final in 2019 World Cup"। India TV। সংগ্রহের তারিখ ৭ জুলাই ২০১৯।
- ↑ "England awarded 2019 World Cup"। ESPNcricinfo। ৩০ এপ্রিল ২০০৬। সংগ্রহের তারিখ ৩০ এপ্রিল ২০০৬।
- ↑ "Cricket World Cup: The Final 10"। International Cricket Council। সংগ্রহের তারিখ ২৩ মার্চ ২০১৮।
- ↑ "ICC Cricket World Cup 2019 schedule announced"। সংগ্রহের তারিখ ২৬ এপ্রিল ২০১৮।
- ↑ "A recap of the most dramatic match in cricket history"। The Guardian। ১৪ জুলাই ২০১৯। সংগ্রহের তারিখ ১৪ জুলাই ২০১৯।
- ↑ "England win Cricket World Cup: Ben Stokes stars in dramatic finale against New Zealand"। BBC Sport। ১৪ জুলাই ২০১৯। সংগ্রহের তারিখ ১৪ জুলাই ২০১৯।
- ↑ "2019 Cricket World Cup final: England beat Black Caps in greatest ODI in history"। New Zealand Herald। ১৪ জুলাই ২০১৯। সংগ্রহের তারিখ ১৪ জুলাই ২০১৯।
- ↑ "Epic final tied, Super Over tied, England win World Cup on boundary count"। ESPNcricinfo। সংগ্রহের তারিখ ১৫ জুলাই ২০১৯।
- ↑ "2019 Cricket World Cup: Umpire Kumar Dharmasena admits he made a crucial mistake in final"। New Zealand Herald। ২১ জুলাই ২০১৯। সংগ্রহের তারিখ ২১ জুলাই ২০১৯।
- ↑ "'I will never regret the decision' - Kumar Dharmasena"। ESPNcricinfo। সংগ্রহের তারিখ ২১ জুলাই ২০১৯।
- ↑ Saraswat, Akshay (২১ জুলাই ২০১৯)। "Kumar Dharmasena makes shocking comment on umpiring mistake in World Cup final"। International Business Times। সংগ্রহের তারিখ ২১ জুলাই ২০১৯।
- ↑ "MCC to review overthrow rules after Guptill-Stokes World Cup 2019 final incident"। India Today। ২০ জুলাই ২০১৯। সংগ্রহের তারিখ ২১ জুলাই ২০১৯।
- ↑ Hughes, Matt; Ammon, Elizabeth (২০ জুলাই ২০১৯)। "Overthrow law to be reviewed after World Cup final controversy"। দ্য টাইমস। সংগ্রহের তারিখ ২১ জুলাই ২০১৯।
- ↑ "ICC appoints match officials for World Cup final"। ANI News। ১২ জুলাই ২০১৯।
- ↑ "ফাইনালে নিষেধাজ্ঞা পাওয়া থেকে বাঁচলেন জেসন রয়"। দ্য ডেইলি স্টার। ১২ জুলাই ২০১৯। সংগ্রহের তারিখ ১৭ জুলাই ২০১৯।
- ↑ ক খ গ ঘ "Final: Final, ICC Cricket World Cup at Lord's, Jul 14 2019"। ১৪ জুলাই ২০১৯। সংগ্রহের তারিখ ১৪ জুলাই ২০১৯।
- ↑ Burnton, Simon। "An all-time-classic': England celebrates Cricket World Cup victory – as it happened"। The Guardian। সংগ্রহের তারিখ ১৬ জুলাই ২০১৯।
- ↑ Elizabeth II [@RoyalFamily] (১৪ জুলাই ২০১৯)। "A message from Her Majesty The Queen: Prince Philip and I send our warmest congratulations to the England Men's Cricket team after such a thrilling victory in today's World Cup Final." (1/2) #CricketWorldCup" (টুইট)। সংগ্রহের তারিখ ১৬ জুলাই ২০১৯ – টুইটার-এর মাধ্যমে।
- ↑ Afzal, Asfia। "Here's what celebs had to say after England won the World Cup after nail-biting final"। Business recorder। সংগ্রহের তারিখ ১৬ জুলাই ২০১৯।
- ↑ "Cricket World Cup: England meet Prime Minister Theresa May at 10 Downing Street"। BBC Sport। ১৫ জুলাই ২০১৯। সংগ্রহের তারিখ ১৬ জুলাই ২০১৯।
বহিঃসংযোগ
সম্পাদনা- অফিসিয়াল ২০১৯ ক্রিকেট বিশ্বকাপ সাইট (ইংরেজি)