২০০৪ শাহজালাল বোমা আক্রমণ

২০০৪ শাহজালাল বোমা আক্রমণ টি ছিল বাংলাদেশের ব্রিটিশ হাই কমিশনার, আনোয়ার চৌধুরীর উপর একটি গ্রেনেড বোমা জঙ্গি হামলা। এই আক্রমণে হাই কমিশনার আহত হন এবং দু জন প্রত্যক্ষদর্শী মারা যান। এই হামলাটি হারকাত-উল-জিহাদ-আল-ইসলামির দ্বারা পরিচালিত হয়।

২০০৪ শাহজালাল বোমা আক্রমণ
স্থানসিলেট , বাংলাদেশ
তারিখ২১ মে ২০০৪ (ইউটিসি+০৬:০০)
লক্ষ্যবাংলাদেশের ব্রিটিশ হাই কমিশনার
হামলার ধরনগণহত্যা; বোমা আক্রমণ; জঙ্গিবাদ
নিহত৩ জন নিহত
আহত৭০ জন
হামলাকারী দলহারকাত-উল-জিহাদ-আল-ইসলামি

পটভূমি সম্পাদনা

শাহ জালালের মাজার হচ্ছে বাংলাদেশের সিলেটে ৭০০ বছরের পুরনো একটি সূফী এলাকা। ব্রিটিশ হাই কমিশনার, আনোয়ার চৌধুরী সিলেটে তার পৈতৃক নিবাস দেখতে গিয়েছিলেন। তিনি বাংলাদেশে জন্ম নেওয়া একজন ব্রিটিশ নাগরিক।[১] ২১ মে ২০০৪, তিনি মাজার দেখতে যান। সেখানে তিনি নামায আদায় করেন এবং তার সাথে দেখা করতে আসা লোকজনের সাথে কুশল বিনিময় করছিলেন। ২০০৪ সালের জানুয়ারি মাসে এই মাজারে বোমা হামলা হয় যেখানে ৫ জন লোক প্রাণ হারান।[২][৩][৪]

হামলা সম্পাদনা

বোমাটি দূতের উপর নিক্ষেপ করা হয় যখন তিনি উপস্থিত জনতার সাথে কথা বলছিলেন। বোমাটি তার পাকস্থলীর উপর এসে আঘাত হানে কিন্তু ফলশ্রুতিতে এটি বিস্ফোরিত হয়নি বরং গড়িয়ে কিছু দূর জেলা কমিশনারের পায়ের কাছে পড়ে এবং সেখানেই এটির বিস্ফোরণ হয়।[২] একজন পুলিশ কর্মকর্তাসহ তিনজন এই বোমা হামলায় নিহত হন।এর মাঝে হাবিল মিয়া নামের একজনের বাড়ি সিলেট এয়ারপোর্ট (তৎকালীন কোতোয়ালি থানা) থানাধীন বাইশটিলায় বলে জানা গেছে।

[৫] বিস্ফোরণে আনোয়ার চৌধুরী আহত হন।[৬]

বিচার সম্পাদনা

এই মামলায় ২০০৮ সালে হারকাত-উল-জিহাদ-আল-ইসলামি বাংলাদেশের প্রধান মুফতি আব্দুল হান্নানসহ তিন ব্যক্তিকে দণ্ডাদেশ দেওয়া হয়।[৭][৮] ব্রিটিশ হাই কমিশন এই বিচার সম্পন্ন প্রক্রিয়াকে স্বাগত জানায় কিন্তু মৃত্যুদণ্ডের বিরোধিতা করে।[৭][৯] পুলিশের মতে, এই আক্রমণের উদ্দেশ্য ছিল ইরাক এবং সারা বিশ্বজুড়ে আমেরিকা ও ব্রিটেনের মুসলিম হত্যার প্রতিশোধ নেয়া।[৭] গ্রেনেডের উপাদানসমূহে পাকিস্তানের আলামত ছিল।[১০]

প্রতিক্রিয়া সম্পাদনা

  • সাবেক ব্রিটিশ বৈদেশিক সচিব জ্যাক স্ট্রো একটি বিবৃতি দেন যেখানে বলা হয় এই বোমা হামলার খবর পেয়ে আমি গভীরভাবে শোকাহত এবং সকল ক্ষতিগ্রস্তদের এবং তাদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি। আসলে কি ঘটেছে এবং আহতদের অবস্থা পুরোপুরি পরিষ্কার নয়। বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে যথাযথা সমর্থন পাওয়ার জন্য আমরা কৃতজ্ঞ।[২]
  • তৎকালীন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া এই হামলার নিন্দা জানান এবং হামলার শিকার ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করেন।[৬]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "CNN.com - Bangladesh blast: UK envoy hurt - May 21, 2004"www.cnn.com। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-০৮-১১ 
  2. "Blast at Shahjalal shrine injures British HC, kills 2"archive.thedailystar.net। The Daily Star। ২০১৪-০৭-০২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-০৮-১১ 
  3. "Bangladesh shrine bomb kills two"BBC। ২০০৪-০১-১২। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-০৮-১১ 
  4. "Police probe Bangladesh bombing"BBC। ২০০৪-০১-১৩। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-০৮-১১ 
  5. Percival, Jenny; agencies (২০০৮-১২-২৩)। "Death sentences for Bangladesh grenade attack on British envoy"The Guardian (ইংরেজি ভাষায়)। আইএসএসএন 0261-3077। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-০৮-১১ 
  6. "UK envoy hurt in Bangladesh blast"BBC। ২০০৪-০৫-২১। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-০৮-১১ 
  7. "Three to die for UK envoy attack"BBC। ২০০৮-১২-২৩। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-০৮-১১ 
  8. "Grenade atack [sic] on Anwar Choudhury: Mufti Hannan among four indicted - The Sylhet Times - Your Bangladesh News Source"। ২০১৬-০৮-২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-০৮-১১ 
  9. "Ex-UK envoy grenade attack case full verdict released | Dhaka Tribune"archive.dhakatribune.com। ২০১৬-০৮-২৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-০৮-১২ 
  10. "Rooted in mujahids returning from Afghanistan"। ২০১৬-০৮-০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-০৮-১২