<<   বৈশাখ   >>
শুক্র শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ
১০ ১১
১২ ১৩ ১৪ ১৫ ১৬ ১৭ ১৮
১৯ ২০ ২১ ২২ ২৩ ২৪ ২৫
২৬ ২৭ ২৮ ২৯ ৩০ ৩১
১৪৩২

১ বৈশাখ বাংলা বর্ষপঞ্জি অনুসারে বছরের প্রথম দিন। বছর শেষ হতে আরো ৩৬৪ দিন (অধিবর্ষে ৩৬৫ দিন) বাকি রয়েছে।

ইতিহাস

সম্পাদনা

পহেলা বৈশাখের ইতিহাস

সম্পাদনা

পহেলা বৈশাখ বা বাংলা নববর্ষ বাঙালি সংস্কৃতির একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎসব। এটি বাংলা সনের প্রথম দিন, যা প্রতি বছর ১৪ এপ্রিল (বাংলাদেশে) ও ১৫ এপ্রিল (ভারতে) পালিত হয়। পহেলা বৈশাখের ইতিহাস দীর্ঘ এবং ঐতিহ্যপূর্ণ।

ইতিহাসের শুরু

সম্পাদনা

বাংলা সনের উৎপত্তি মোগল সম্রাট আকবরের শাসনামলে। তিনি ১৫৮৪ সালে বাংলার কৃষি খাজনা আদায়ের সুবিধার্থে একটি নতুন পঞ্জিকা প্রবর্তন করেন। এর আগে, মুসলিমদের হিজরি সন এবং হিন্দুদের লুনার ক্যালেন্ডার অনুসৃত হতো, কিন্তু তা কৃষির প্রয়োজন অনুযায়ী সঠিক ছিল না। তাই তিনি সূর্যাচলিত সৌর ক্যালেন্ডার গ্রহণ করেন, যা আজকের বাংলা সনের ভিত্তি। আকবরের পঞ্জিকা ছিল একটি ফসলী সন, অর্থাৎ কৃষির ফসলের উৎপাদনের সময়কে কেন্দ্র করে বছরের হিসাব নির্ধারণ করা হত।

নববর্ষের প্রচলন

সম্পাদনা

বাঙালি জাতির মধ্যে পহেলা বৈশাখ এর প্রচলন শুধু কৃষি কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিল না, এটি এক ধরণের উৎসব ও সাংস্কৃতিক অভিব্যক্তি হিসেবে পরিণত হয়। বাংলা সনের প্রথম দিন ছিল ফসল সংগ্রহের দিন, তাই কৃষকরা আনন্দ করে এটি উদযাপন করতেন।

আজকের পহেলা বৈশাখ

সম্পাদনা

বর্তমানে, পহেলা বৈশাখ শুধু কৃষির দিন হিসেবে পালিত হয় না, বরং এটি বাংলাদেশের এবং ভারতের বাঙালিদের মধ্যে ঐক্য, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের প্রতীক। বিভিন্ন শহরে, বিশেষ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউটের উদ্যোগে মঙ্গল শোভাযাত্রা, বৈশাখী মেলা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, নতুন পোশাক পরিধান এবং বিভিন্ন ঐতিহ্যবাহী খাবারের আয়োজন করা হয়।

এছাড়া, পহেলা বৈশাখের মাধ্যমে বাঙালিরা নতুন বছর, নতুন সম্ভাবনা ও নতুন উদ্যমের সূচনা করে থাকে।

ঘটনাবলী

সম্পাদনা

পহেলা বৈশাখের ঘটনাবলী

সম্পাদনা

পহেলা বৈশাখ, বাংলা নববর্ষ, প্রতি বছর ১৪ এপ্রিল (বাংলাদেশে) এবং ১৫ এপ্রিল (ভারতে) পালিত হয়। এটি বাঙালি সংস্কৃতির এক ঐতিহ্যবাহী উৎসব এবং বছরের প্রথম দিনকে কেন্দ্র করে নানা ধরনের অনুষ্ঠান ও কর্মকাণ্ড অনুষ্ঠিত হয়। পহেলা বৈশাখের দিন বাঙালি জাতি আনন্দ-উৎসব, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড, এবং ঐতিহ্য মেনে উদযাপন করে থাকে। নিচে পহেলা বৈশাখের কিছু গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা এবং কর্মকাণ্ড তুলে ধরা হলো:

১. আকবরের বাংলা সনের প্রবর্তন (১৫৮৪)

সম্পাদনা

পহেলা বৈশাখের ইতিহাস মোগল সম্রাট আকবরের সময় থেকে শুরু হয়। ১৫৮৪ সালে তিনি বাংলা সনের প্রবর্তন করেন। কৃষি খাজনা আদায়ের সুবিধার্থে ফসলী সন চালু করা হয়, যা বাংলা নববর্ষের সূচনা। সেসময় বাংলার কৃষকদের ফসল আদায়ের সময় হিসাব করার জন্য একটি নির্দিষ্ট সন প্রবর্তন করা হয়।

২. নববর্ষের শুরু ও কৃষকদের আনন্দ

সম্পাদনা

বাংলা নববর্ষের প্রথম দিনটি ছিল ফসল সংগ্রহের দিন। কৃষকরা নতুন ফসল ঘরে তুলতেন এবং তাদের জন্য এটি একটি আনন্দের দিন ছিল। তারা বিভিন্ন ধর্মীয় ও সামাজিক অনুষ্ঠান পালন করতেন এবং নতুন বছরের জন্য ভালবাসা ও শুভকামনা ব্যক্ত করতেন।

৩. পহেলা বৈশাখের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান

সম্পাদনা

বাংলাদেশের বিভিন্ন শহর ও গ্রামে পহেলা বৈশাখে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। বিশেষভাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউটের উদ্যোগে মঙ্গল শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়, যা এক ধরনের বিশাল বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা, যেখানে হাজার হাজার মানুষ রঙিন পোশাক পরে, মুখে হাসি নিয়ে অংশগ্রহণ করে। এই শোভাযাত্রা বাংলা সংস্কৃতির ঐতিহ্য এবং সম্প্রীতির প্রতীক হিসেবে গণ্য হয়।

৪. বৈশাখী মেলা ও খাওয়া-দাওয়া

সম্পাদনা

পহেলা বৈশাখে বৈশাখী মেলা বসে, যেখানে বিভিন্ন ধরনের দেশি খাদ্য, হস্তশিল্প, গয়না, এবং খেলনা বিক্রি হয়। লোকেরা পান্তা ভাত, ইলিশ মাছ, ভর্তা, শাক-সবজি ও মিষ্টান্ন খেয়ে নববর্ষ উদযাপন করে। এটি বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলে বিশেষভাবে একটি জনপ্রিয় প্রথা।

৫. নতুন পোশাক পরিধান

সম্পাদনা

পহেলা বৈশাখে বাঙালিরা নতুন পোশাক পরিধান করে থাকে। ছেলেরা সাধারণত পাঞ্জাবি এবং মেয়েরা লাল-সাদা শাড়ি পরিধান করে। এটি নতুন বছরের নতুন সূচনা এবং জীবনের প্রতি একটি নতুন দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণের প্রতীক হিসেবে দেখা হয়।

৬. আলপনা আঁকা

সম্পাদনা

পহেলা বৈশাখের দিন ঘর ও আঙিনায় আলপনা আঁকা হয়, যা সাধারণত রঙিন মাটির ডিজাইন হয়। এটি বাংলা সংস্কৃতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ, যা সৌন্দর্য এবং শুভ কামনার প্রতীক হিসেবে বিবেচিত হয়।

৭. সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা ও অনুষ্ঠান

সম্পাদনা

নতুন বছর উপলক্ষে অনেক স্কুল, কলেজ, ক্লাব ও সাংস্কৃতিক সংগঠন বিভিন্ন ধরনের সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা আয়োজন করে। এর মধ্যে নৃত্য, গান, কবিতা আবৃত্তি, এবং নাটক অন্যতম।

৮. জাতিগত ও ধর্মীয় ঐক্য

সম্পাদনা

পহেলা বৈশাখের দিনটি একটি জাতিগত এবং ধর্মীয় ঐক্য প্রকাশের দিন। এই দিনে বাঙালি মুসলিম, হিন্দু, খ্রিস্টান, বৌদ্ধ—সব ধর্মের মানুষ একসাথে আনন্দে মেতে ওঠে। এটি বাঙালির একমাত্র উৎসব, যা ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবার জন্য উন্মুক্ত।

পহেলা বৈশাখ আসলে একটি সাম্প্রদায়িক সাদৃশ্য, নতুন বছরের শুভ সূচনা, এবং বাংলা সংস্কৃতির উদযাপন এর এক অনুপম দিন।

মৃত্যু

সম্পাদনা

ছুটি ও অন্যান্য

সম্পাদনা

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা