১৯১৫ সিঙ্গাপুর বিদ্রোহ

বিদ্রোহ

১৯১৫ সিঙ্গাপুর বিদ্রোহ (১৯১৫ সিপাহী বিদ্রোহ বা ৫ম নেটিভ লাইট ইনফ্রেন্ট্রির বিদ্রোহ বলেও পরিচিত) শীর্ষক বিদ্রোহ প্রথম বিশ্বযুদ্ধ চলাকালে সিঙ্গাপুরে সংঘটিত হয়। এসময় ৮৫০ জন ভারতীয় সৈনিকের প্রায় অর্ধেক ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে। এই বিদ্রোহের সাথে গদর বিদ্রোহের সম্পর্ক ছিল। ১৯১৫ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি সংঘটিত এই বিদ্রোহ সাতদিন পর্যন্ত স্থায়ী হয় এবং এতে ৪৭ জন ব্রিটিশ সৈনিক ও স্থানীয় বেসামরিক ব্যক্তি মারা যায়। শেষপর্যন্ত ব্রিটিশ বাহিনী ও মিত্র নৌ শক্তি এই বিদ্রোহ দমন করে।

ইতিহাস

সম্পাদনা

লালা হর দয়াল কর্তৃক গদর পার্টি ১৯১৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রে গঠিত হয়। সশস্ত্র বিপ্লবের মাধ্যমে ভারত থেকে ব্রিটিশদের তাড়ানো এর উদ্দেশ্য ছিল। তাদের ধারণা ছিল যে ভারতের বাইরে অবস্থানরত ভারতীয় সেনারা তাদের সাহায্য করবে তাই তারা সৈনিকদের উদ্দেশ্য করে প্রচারণা চালাতে থাকে এবং সৈনিকদের বিদ্রোহ করতে উৎসাহ দেয়া হয়। প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শুরু হওয়ার কয়েক মাস পর গদর দলীয়রা ১৩০তম বালুচি রেজিমেন্টের সেনাদের বিদ্রোহ করতে উৎসাহ দেয়। কর্তৃপক্ষ তাদের পরিকল্পনা জেনে যায় এবং পরিস্থিতি সামাল দেয়ার জন্য সৈনিকদের অন্যত্র সরিয়ে দেয়া হয়।[] এরপর গদর দলীয়রা সিঙ্গাপুরের দিকে মনোনিবেশ করে। এসময় এখানকার নিয়মিত গ্যারিসনে শুধু এক রেজিমেন্ট ভারতীয় সৈনিক ও কিছু ব্রিটিশ গোলন্দাজ ও প্রকৌশলী ছিল।

ভারতীয় ৫ম লাইট ইনফেন্ট্রি

সম্পাদনা

৫ম লাইট ইনফেন্ট্রি ১৯১৪ সালের অক্টোবরে মাদ্রাজ থেকে সিঙ্গাপুর পৌছায়। তাদেরকে রাজার নিজস্ব ইয়র্কশায়ার লাইট ইনফেন্ট্রিকে প্রতিস্থাপন করার জন্য পাঠানো হয়।[] এই রেজিমেন্ট ১৮০৩ সাল থেকে চালু ছিল।[] ১৯১৪-১৫ সালে এই ইউনিট সম্পূর্ণরূপে মুসলিমদের নিয়ে গঠিত ছিল। ৫ম লাইট ইনফেন্ট্রি মূলত রাঙ্গার (রাজপুত বংশোদ্ভূত মুসলিম) ও পাঠানদের নিয়ে গঠিত ছিল। ব্রিটিশ ও ভারতীয় অফিসাররা এর নেতৃত্বে ছিল। সিপাহী ও অফিসারদের মধ্যে দুর্বল যোগাযোগ, ঢিলেঢালা শৃঙ্খলা ও দুর্বল নেতৃত্ব সেনাদলকে অকার্যকর করে ফেলে এবং গদর পার্টির প্রচারণার ফলে শৃঙ্খলা আরো ভেঙে পড়ে।

এসময় কমান্ডিং অফিসার লেফটেন্যান্ট কর্নেল ই ভি মার্টিনের ব্যক্তিত্বও ভূমিকা রেখেছে। পূর্ববর্তী কর্নেলরা অন্যান্য অফিসারদের কাছে তার অজনপ্রিয়তার কথা বললেও রেজিমেন্টে মেজর থেকে পদোন্নতি দেয়া হয়। অন্যান্যদের কাছে তিনি বেশি সম্মানিত ছিলেন না। তার নিয়োগ ব্রিটিশ অফিসারদের মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি করে। পরে ভারতীয় অফিসারদের মধ্যেও এক হাবিলদারের পদোন্নতি নিয়ে অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়ে। সাধারণ পরিস্থিতি এধরনের ঘটনা কম প্রভাব ফেললেও এসময় তা গদর পার্টির প্রচারণায় প্রভাবিত হয়।

 
তুরস্কের সুলতান খলিফা পঞ্চম মুহাম্মদ ছিলেন প্রথম বিশ্বযুদ্ধের অক্ষশক্তির তিন সম্রাটের অন্যতম

প্রথম বিশ্বযুদ্ধে উসমানীয় সাম্রাজ্য জার্মানির পক্ষাবলম্বন করে। তুরস্কের সুলতান এসময় মুসলিম বিশ্বের খলিফা বিবেচিত হতেন। ব্রিটেন তুরস্কের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করলে সুলতানের জারি করা ফতোয়ায় ব্রিটিশদের বিরোধিতা করার ডাক দেয়া হয়।[] তুর্কিপন্থি গুজরাটি কফিশপ মালিক কাসেম মনসুর সিপাহীদের সাথে সাক্ষাত করেন এবং নিজ বাসায় তাদের আমন্ত্রণ জানান। ধর্মীয় নেতা নুর আলম শাহের সাথে মনসুর সিপাহীদের মনে ব্রিটিশ বিরোধী অনুভূতি জাগিয়ে তোলেন এবং তাদের বলেন যে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে যাওয়া তাদের ধর্মীয় দায়িত্ব।[]

বিদ্রোহ

সম্পাদনা

১৯১৫ সালের ২৭ জানুয়ারি কর্নেল মার্টিন ঘোষণা করেন যে ৫ম লাইট ইনফেন্ট্রি হংকংয়ে পাঠানো হবে। সিহাপীদের মধ্যে গুজব ছড়িয়ে পড়ে যে তাদের এর পরিবর্তে মুসলিমদের বিপক্ষে লড়ার জন্য ইউরোপ বা তুরস্কে পাঠানো হবে।[] পরে একটি অনুসন্ধানের মাধ্যমে তিনজন ভারতীয় অফিসার সুবেদার দুন্দি খান, জমাদার ক্রিস্টি খান ও জমাদার আলি খানকে এর মূল হোতা বলে শনাক্ত করা হয়।[] ১৯১৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে হংকং যাওয়ার চূড়ান্ত আদেশ আসার পর এই তিনজন ও অন্যান্য নেতারা এখনই বিদ্রোহ করার সময় বলে সিদ্ধান্ত নেন। ১৫ ফেব্রুয়ারি সিঙ্গাপুরের জেনারেল অফিসার কমান্ডিং বিদায়ী প্যারেডে ভাষণ দেন। এতে তিনি গন্তব্য হিসেবে হংকংয়ের নাম উল্লেখ করেননি। একই দিন বিকাল ৩:৩০ মিনিটে রেজিমেন্টের আটটি কোম্পানির মধ্যে চারটি রাজপুত কোম্পানি ও ১০০ মালয় স্টেটস গাইড বিদ্রোহ করে।[] অধিকাংশ পাঠান সিপাহী বিদ্রোহ করেনি তবে তারা সন্দেহগ্রস্ত হয়ে পড়ে। শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টায় দুইজন ব্রিটিশ অফিসার নিহত হন। বিদ্রোহীরা নিজেদের তিনটি দলে ভাগ করে। একশ জনের একটি দল তাংলিন ব্যারাক থেকে গোলাবারুদ আনার জন্য অগ্রসর হয়। এখানে জার্মান লাইট ক্রুসার এসএমএস এমডিনের ক্রু সদস্যরাসহ ৩০৯ জন জার্মান ব্রিটিশদের কর্তৃক অন্তরীণ ছিল। বিদ্রোহীরা অফিসার ও ক্যাম্প প্রহরীদের উপর ঝাপিয়ে পড়ে। নিহতদের মধ্যে ছিলেন সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট জে লাভ মন্টোগোমারি, রাইফেলসঃ সার্জেন্ট জি ওয়াল্ড (রিজার্ভ) ইঞ্জিনিয়ার; কর্পোরাল ডি ম্যাকগিলভরে, রাইফেলস; কর্পোরাল জি ও লসন, সাইলিস্ট স্কাউটস; ল্যান্স কর্পোরাল জে জি ই হার্পা‌র, রাইফেলস; প্রাইভেট বি সি ক্যামেরুন, রাইফেলস; প্রাইভেট এফ এস ড্রেসডেল, রাইফেলস; ও প্রাইভেট এ জে জি হল্ট, রাইফেলস।[] তিনজন ব্রিটিশ ও একজন জার্মান আহত হয় কিন্তু হামলায় বেঁচে যায়। জারমানদেরকে দলে টানার জন্য বিদ্রোহীরা চেষ্টা চালায়। কিন্তু আচমকা ঘটনার কারণে তারা এতে যোগ দিতে অপারগা প্রকাশ করে। কিছু জার্মান নাবিক ও রিজার্ভ বিদ্রোহীদের সাথে যোগ দিতে ইচ্ছুক ছিল কিন্তু অধিকাংশই নিরপেক্ষ অবস্থান নেয়।[১০][১১] পয়ত্রিশজন জার্মান পালাতে সক্ষম হয় এবং বাকিরা ব্যারাকে রয়ে যায়।[]

চীনা নববর্ষের সময় থাকায় অধিকাংশ চীনা স্বেচ্ছাসেবীরা ছুটিতে ছিল। ফলে সিঙ্গাপুর বিদ্রোহীদের কাছে একরকম প্রতিরক্ষাহীন অবস্থায় পড়ে যায়। ব্রিটিশ সরকার অপ্রস্তুত হয়ে পড়ে। সামরিক আইন জারি করা হয় এওং এইচএমএস কাডমুসের মেরিনরা ব্রিটিশ, মালয়ী ও চীনা স্বেচ্ছাসেবীদের সাথে যোগ দিতে উপকূলের দিকে অগ্রসর হয়।[১২] ব্রিটিশ ভাইস এডমিরাল স্যার মার্টিন জেরাম মিত্র যুদ্ধজাহাজের কাছে সাহায্য চেয়ে রেডিও বার্তা পাঠান।[]

একদল বিদ্রোহী ৫ম লাইট ইনফেন্ট্রির কমান্ডিং অফিসার লেফটেন্যান্ট কর্নেল ই ভি মার্টিনের বাংলো অবরোধ করে। মার্টি‌ন ও মালয় স্টেটস ভলান্টিয়ার রাইফেলসের একটি বিচ্ছিন্ন অংশ সারারাত অবস্থান ধরে রাখে। অনুগত সৈনিকরা তাদের সাথে যোগ দিতে চাইলে বিদ্রোহীদের সাথে মিশে যাওয়ার আশঙ্কায় তাদের সরে যেতে বলা হয়। দিনের আলো ফোটার পর প্রতিরক্ষাকারীরা রেজিমেন্টাল ব্যারাকের দখল নিতে সক্ষম হয়।[১৩] বিদ্রোহীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়ে। সাধারণ জনতা শান্ত অবস্থায় থাকে। অন্যদিকে স্বেচ্ছাসেবী, নাবিক ও মেরিনাররা বিদ্রোহীদের সাথে খন্ডযুদ্ধ চালিয়ে যায়।

মিত্র শক্তি

সম্পাদনা
 
ফরাসি ক্রুসার মন্টকাম। ফরাসি নৌবাহিনীর একটি ক্রুসার যা ভাইস এডমিরাল জেরামের আবেদনে সাহায্য নিয়ে এগিয়ে আসে।

১৭ ফেব্রুয়ারি ফরাসি ক্রুসার মন্টকাম, একটি রুশ সাহায্যকারী ক্রুসার অরেল ও জাপানি যুদ্ধজাহাজ অটোয়াসুশিমা এগিয়ে আসে।[১৪] মিত্র সেনারা বিদ্রোহীদের দিকে অগ্রসর হয়। রক্তক্ষয়ী এক লড়াইয়ের পর অধিকাংশ বিদ্রোহী নিহত বা আহত হয়। যোগ্য নেতৃত্বের অভাবে বিদ্রোহ দিক হারিয়ে ফেলে এবং অনেক বিদ্রোহী আত্মসমর্পণ করে। বাকিরা মিত্রশক্তির উপর হামলা করার জন্য বনে পালিয়ে যায়। অনেকে জহর প্রণালী অতিক্রম করার চেষ্টা করে কিন্তু জহরের সুলতানের সেনাবাহিনীর কারণে ব্যর্থ হয়।[১৫]

২০ ফেব্রুয়ারি রেঙ্গুন থেকে ১ম/৪র্থ ব্যাটেলিয়ন, কিংস শ্রপশায়ার লাইট ইনফেন্ট্রি এসে পৌছায়। তারা শেষ বিদ্রোহীদের পরাস্ত করে।

বিচার ও প্রকাশ্যে মৃত্যুদন্ড

সম্পাদনা
 
সিঙ্গাপুরের আউটরাম রোডে বিদ্রোহী সৈনিকদের প্রকাশ্যে মৃত্যুদন্ড

২৩ ফেব্রুয়ারি অনুসন্ধান আদালত বসে। প্রথমে গোপনে অনুষ্ঠিত হলেও পরে ন্যায়বিচার হচ্ছে তা বোঝানোর জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয়। ১৫ মে পর্যন্ত এই কার্যক্রম চলে। অফিসার ও সাধারণ সৈনিকদের কাছ থেকে অনেক তথ্য পাওয়া গেলেও বিদ্রোহের কারণ চূড়ান্তভাবে নির্ণয় করা সম্ভব হয়নি। অনুসন্ধানের পর সিদ্ধান্ত হয় যে অভ্যন্তরীণ কেউ বিদ্রোহে উস্কানি দিয়েছে এবং তারা জাতীয়তাবাদি বা ধর্মীয় আবেগের অনুরুক্ত।[১৬]

সামরিক আদালতে ২০০ জনের বেশি সৈনিকের বিচার হয়। তাদের মধ্যে ৪৭ জনের মৃত্যুদন্ড দেয়া হয়। মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে কাসেম মনসুরও ছিলেন। তবে গদর পার্টির সাথে যোগাযোগ থাকা সক্রিয় জাতীয়তাবাদি হিসেবে নুর আলম শাহ উন্মোচিত হলেও তাকে বিচারের আওতায় আনা হয়নি।[১৭] ব্রিটিশরা মুসলিম প্রজাদের মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি করতে চাইছিল না তাই তাকে এর পরিবর্তে নির্বাসনে পাঠানো হয়। বিচারে ৬৪ জনকে যাবজ্জীবন দ্বীপান্তরের শাস্তি দেয়া হয়, ৭৩ জনকে ৭ থেকে ২০ বছর পর্যন্ত বিভিন্ন মেয়াদে কারাদন্ড দেয়া হয়। আউটরাম কারাগারে মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্তদের প্রকাশ্যে ফায়ারিং স্কোয়াডে হত্যা করা হয়। প্রায় ১৫,০০০ জন লোক এসময় উপস্থিত ছিল। দ্য স্ট্রেইটস টাইমস রিপোর্ট করেছে:

An enormous crowd, reliably estimated at more than 15,000 people, was packed on the slopes of Sepoy Lines looking down on the scene. The square as before was composed of regulars, local volunteers and Shropshire under the command of Colonel Derrick of the Singapore Volunteer Corps (SVC). The firing party consisted of men from the various companies of SVC under Captain Tongue and Lieutenant Blair and Hay.[১৮]

অবশিষ্ট সৈনিকরা এবং সাতজন ব্রিটিশ ও ভারতীয় অফিসার ১৯১৫ সালের ৩ জুলাই সিঙ্গাপুর ত্যাগ করে। তাদের ক্যামেরুন ও জার্মান পূর্ব আফ্রিকায় পাঠানো হয়। কর্নেল মার্টিনকে তাদের সাথে পাঠানো হয়নি। অনুসন্ধান আদালত তার কঠোর সমালোচনা করে এবং এরপর তিনি সেনাবাহিনী থেকে অবসর নেন। ১৯২২ সালে ৫ম লাইট ইনফেন্ট্রি ভেঙে দেয়া হয়।[] মালয় স্টেটস গাইডেরও একই ভাগ্য বরণ করতে হয়। ১৯১৫ সালের এপ্রিলে তাদেরকে কেলান্টানে পাঠানো হয়েছিল। এরপর তাদের আফ্রিকায় পাঠানো হয় এবং ১৯১৯ সালে ভেঙে দেয়া হয়।[১৯]

পরবর্তী অবস্থা

সম্পাদনা
 
বিদ্রোহের স্মৃতিফলক, ভিক্টোরিয়া থিয়েটার এন্ড কনসার্ট হল, সিঙ্গাপুর

এই ঘটনার পর সিঙ্গাপুরের ব্রিটিশদের কাছে প্রতীয়মান হয় যে ভারতীয় সৈনিকদের উপর নির্ভর করা সম্ভব নয়। জাপানি, ফরাসি ও রুশ নাবিক ও মেরিনাররা সাহায্য করলেও ভবিষ্যত সাহায্যের জন্য যুদ্ধকালীন মিত্রদের উপর নির্ভর করা হবে কিনা সে ব্যাপারে সন্দেহ দেখা দেয়। পরবর্তীতে সকল ভারতীয়কে রেজিস্টার করতে বলা হয়। একারণে পূর্বের অনুগতদের মধ্যে খারাপ মনোভাব দেখা দেয়।[২০]

সিঙ্গাপুরের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার জন্য ব্রিটিশরা ১৯১৫ সালের আগস্টে “রিজার্ভ ফোর্স এন্ড সিভিল গার্ড অর্ডিন্যান্স” পাশ করে। এর আওতায় সামরিক বাহিনী, স্বেচ্ছাসেবী বা পুলিশে ছিল না এমন ১৫ থেকে ৫৫ বছর বয়সী পুরুষদের যোগদান বাধ্যতামূলক করা হয়।[১৯]

বিদ্রোহ নিয়ন্ত্রণ করতে ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষের দুর্বলতা অনুভব করে চরমপন্থি ভারতীয় বিপ্লবীরা ভারতের বাইরে নিযুক্ত সৈনিকদের উৎসাহিত করতে শুরু করে এবং ব্রিটিশদের ভারত থেকে উৎখাত করতে জাপানের সাথে বন্ধুত্ব গড়া শুরু করে। পরবর্তীতে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর নেতৃত্বে আজাদ হিন্দ ফৌজ গঠিত হয়।

বিদ্রোহ এবং বিদ্রোহে নিহত ব্রিটিশ সৈনিক ও বেসামরিক ব্যক্তিদের স্মরণে ভিক্টোরিয়া থিয়েটার এন্ড কনসার্ট হলে দুটি ও সেন্ট এন্ড্রুস ক্যাথেড্রালে চারটি ফলক স্থাপন করা হয়েছে।[২১] এছাড়াও কর্পোরাল জে হার্পার এবং প্রাইভেট এ জে জি হল্টের নামে পরবর্তীতে যথাক্রমে হার্পার রোড ও হল্ট রোডের নামকরণ করা হয়েছে।[২২]

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. Sareen, "Preface".
  2. "Commentary on the Mutiny"। The New York Times। ২ মে ১৯১৫। 
  3. Harper, R. W. E. (১৯৮৪)। Singapore mutiny। Harry Miller। Singapore: Oxford University Press। আইএসবিএন 0-19-582549-7ওসিএলসি 11227312 
  4. Ban, p. 53.
  5. Sareen, "Report Section II" pp. 39–40.
  6. Sareen, pp. 11–14.
  7. Harper, R.W.E. (১৯৮৪)। Singapore Mutiny। Oxford University Press। পৃষ্ঠা 22। আইএসবিএন 0-19-582549-7 
  8. Philip Mason, pages 426–427 "A Matter of Honour", আইএসবিএন ০-৩৩৩-৪১৮৩৭-৯
  9. "Roll of Honour"http://www.roll-of-honour.com/Overseas/SingaporeMutiny.html  |ওয়েবসাইট= এ বহিঃসংযোগ দেয়া (সাহায্য)
  10. R.W.E. Harper & Harry Miller, pages 62–71 "Singapore Mutiny", আইএসবিএন ০-১৯-৫৮২৫৪৯-৭
  11. Herbert, Edwin (২০০৩)। Small Wars and Skirmishes: 1902–1918 – Early Twentieth-century Colonial Campaigns in Africa, Asia and the Americas। Foundry books। পৃষ্ঠা 223। আইএসবিএন 1-901543-05-6 
  12. R.W.E. Harper & Harry Miller, pages 122–123 "Singapore Mutiny", আইএসবিএন ০-১৯-৫৮২৫৪৯-৭
  13. "Narrative of Their Doings in the Mutiny"। The Straits Times। ২৬ এপ্রিল ১৯১৫। 
  14. Sareen, pp. 14–15.
  15. "The Mutiny"। The Straits Times। ২৬ মার্চ ১৯১৫। 
  16. Sareen, "Report Section II".
  17. Ban, "Tales of Unrest", pp. 28–29.
  18. "Execution of Twenty Two Renegades"। The Straits Times। ২৬ মার্চ ১৯১৫। 
  19. Ban, pp. 56—58.
  20. Sareen, "Proclamation Under Martial Law", p. 822.
  21. "1915 Indian (Singapore) Mutiny"। Singapore Infopedia। ২০০৭-০৬-১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ জুন ২০০৭ 
  22. Savage, p. 145, 150.

গ্রন্থপঞ্জি

সম্পাদনা
  • Sareen, T.R. (১৯৯৫)। Secret Documents on Singapore Mutiny 1915। New Delhi: Mounto Publishing House। আইএসবিএন 81-7451-009-5 
  • Ban, Kah Choon (২০০১)। Absent History: The Untold Story of Special Branch Operations in Singapore 1915–1942। Singapore: SNP Media Asia। আইএসবিএন 981-4071-02-1 
  • Kuwajima, Sho (১৯৮৮)। First World War and Asia–Indian Mutiny in Singapore (1915)। Japan: Osaka University 
  • Victor R Savage, Brenda S A Yeoh (২০০৪)। Toponymics–A Study of Singapore Street Names (2nd Ed)। Singapore: Eastern Universities Press। আইএসবিএন 981-210-364-3 

আরও পড়ুন

সম্পাদনা

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা