হ্যাকার সংস্কৃতি
হ্যাকার সংস্কৃতি (ইংরেজি: Hacker Culture) হলো সফটওয়্যার ব্যবস্থার সীমাবদ্ধতা অতিক্রম করে অভূতপূর্ণ ফলাফল অর্জনে বুদ্ধিবৃত্তিক সংপ্রশ্ন গ্রহণে যারা আগ্রহী এমন ব্যক্তিবর্গের উপ-সংস্কৃতি।[১] উপভোগের উদ্দেশ্যে বিশেষ কিছু কার্যে (যেমন প্রোগ্রামিং অথবা অন্য মাধ্যম) অংশগ্রহণকে "হ্যাকিং" বলা হয়। যাইহোক, হ্যাকার সংজ্ঞায়িতকরণ বিশেষকসমূহ তাদের কার্য (যথা প্রোগ্রামিং) নয়, বরং তাদের কার্যপ্রক্রিয়া,[২] যা হবে উত্তেজনাকর ও অর্থবহ কিছু। ক্রীড়নীয় বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন কার্যের ক্ষেত্রে বলা হয় যে তার "হ্যাক মূল্য" রয়েছে, সেখান থেকেই "হ্যাক" এসেছে। প্রাথমিক উদাহরণের মধ্যে রয়েছে, ছাত্ররা নিজেদের প্রযুক্তিগত দক্ষতা ও নৈপুন্য প্রদর্শনের উদ্দেশ্যে এমআইটির হ্যাকসমূহ। তাই হ্যাকার সংস্কৃতির উদ্ভব ৬০-এর দশকে একাডেমিয়ায়, উদ্ভব হয় ম্যাসাচুসেট্স ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (এমআইটি)-এর টেক মডেল রেইলরোড ক্লাব [৩] ও এমআইটি আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্স ল্যাবরেটরিকে ঘিরে। [৪] হ্যাকিং মূলত ছিলো অবরুদ্ধ এলাকায় বিশেষ ক্ষতিসাধন ব্যতীত নৈপুণ্য প্রদর্শন করে প্রবেশ করা।
রিচার্ড স্টলম্যান যারা প্রোগ্রামিং করে এমন হ্যাকারদের ব্যাখ্যা করেছেন এভাবে:
তাদের সবার মধ্যে যে বিষয়টির মিল ছিলো তা হলো প্রোগ্রামিং আর চমকারিত্বের লোভ। তারা তাদের প্রোগ্রামগুলোর তাদের সাধ্যমতে উৎকর্ষসাধন করছিলো। তারা সেগুলোকে দিয়ে করাচ্ছিলো সুসজ্জিত কার্যসমূহ। তারা আরও অসাধারণ কিছু করতে চাছিলো, যাতে তারা বলতে পারে "দেখো কি চমৎকার! আমি হলফ করে বলতে পারে, এটা যে করা যায় তুমি বিশ্বাস করতে না।[৫]
এ উপসংস্কৃতির হ্যাকাররা তাদেরকে স্পষ্টভাবে ক্ষতিসাধন করা হ্যাকার থেকে আলাদা করে রাখে এবং এসব অপরাধীদের ক্র্যাকার বলে অভিহিত করে।
সংজ্ঞা
সম্পাদনাজারগন ফাইল সর্বজন স্বীকৃত না হলেও, প্রভাব বিস্তারকারী হ্যাকার অপভাষার একটি সংকলন, হ্যাকারকে সংজ্ঞায়িত করে "A person who enjoys exploring the details of programmable systems and stretching their capabilities, as opposed to most users, who prefer to learn only the minimum necessary"(যে ব্যক্তি প্রোগ্রামযোগ্য ব্যবস্থার বিশদ আবিষ্কার ও তাদের কার্যক্ষমতার বিস্তার উপভোগ করে, যখন বেশিরভাগ ব্যবহারকারীই যা প্রয়োজন তা জানাতেই সীমাবদ্ধ থাকে) হিসেবে। [৬] রিকুয়েস্ট ফর কমেন্টস (আরএফসি) ১৩৯২, ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের পরিভাষাকোষ,এ অর্থকে আরও বিস্তৃত করে, "যে ব্যক্তি কোন সিস্টেম, কম্পিউটার ও বিশেষভাবে কম্পিউটার নেটওয়ার্ক সম্পর্কে প্রগাঢ় উপলব্ধি অর্জন করে পুলকিত হয়।"[৭] জারগন ফাইলে নথিভূক্ত করা হয়েছে যে, এ হ্যাকাররা গণমাধ্যম ও সাধারণ মানুষের হ্যাকার শব্দটির দ্বারা হ্যাকার বোঝানোতে হতাশ। তারা বরং তাদের ক্র্যাকার বলে অভিহিত করে। এ দলে "ভাল" হ্যাকার ও "মন্দ" হ্যাকার সবাই আছে। [৮]
আরও দেখুন
সম্পাদনাতথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ গ্যারিং, ভার্না (২০০৪)। দ্যা ইন্টারনেট ইন ডেইলি লাইফ (নিত্য জীবনে ইন্টারনেট)। মেরিল্যান্ড: রোম্যান এন্ড লিটলফিল্ড প্রকাশনী। পৃষ্ঠা ৪৩–৫৬। আইএসবিএন 0742542335।
- ↑ স্টলম্যান, রিচার্ড (২০০২)। "অন হ্যাকিং (হ্যাকিঙের উপরে)"। সংগ্রহের তারিখ ১৭ ডিসেম্বর ২০১৮।
- ↑ "টিএমআরসি - হ্যাকার"। ৩ মে ২০০৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৭ ডিসেম্বর ২০১৮।
- ↑ সংশয়ী বা ইতোমধ্যে ব্যবহৃত যেসব শব্দ সতর্কতার সাথে ব্যবহার করা উচিত (gnu.org)
- ↑ হ্যাকার্স — উইজার্ডস অব দ্যা ইলেক্ট্রনিক এইজে রিচার্ড স্টলম্যানের সাক্ষাৎকার
- ↑ রেমন্ড, এরিক, সম্পাদক (২৯ ডিসেম্বর ২০০৩)। "হ্যাকার"। জারগন ফাইল (সংস্করণ ৪.৪.৭ সংস্করণ)। সংগ্রহের তারিখ ১৭ ডিসেম্বর ২০১৮।
- ↑ ইন্টারনেট ইউজার্স গ্লোসারি (ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের পরিভাষাকোষ) রিকুয়েস্ট ফর কমেন্টস (আরএফসি) ১৩৯২, জানুয়ারি ১৯৯৩
- ↑ [১] জারগন ফাইল এ "ক্র্যাকার" এর সংজ্ঞা
বহিঃসংযোগ
সম্পাদনা- A Brief History of Hackerdom
- Hack, Hackers, and Hacking (see Appendix A)
- Gabriella Coleman: The Anthropology of Hackers The Atlantic, 2010.
- Gabriella Coleman: Hacker, Hoaxer, Whistleblower, Spy: The Many Faces of Anonymous at Open Library