হেমন্ত কুমারী দেবী
মহারাণী হেমন্ত কুমারী দেবী ১২৭৬ বাংলা সনে মানিকগঞ্জ জেলার ধুল্লা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। রাজশাহী শহরের উন্নয়নের সাথে তিনি বিশেষভাবে স্মরনীয় হয়ে আছেন। জনকল্যাণকর কাজের জন্য হেমন্ত কুমারী মহারাণী খেতাব পেয়েছেন ৷ তিনি শেষ জীবনে কাশীতে অবস্থানকালে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং অবশেষে ১৩৪৯ বঙ্গাব্দের ২৭ আষাঢ় মৃত্যুবরণ করেন৷
মহারাণী হেমন্ত কুমারী দেবী | |
---|---|
জন্ম | ১৮৬৯ |
মৃত্যু | ১১ জুলাই, ১৯৪২ |
নাগরিকত্ব | ![]() |
পরিচিতির কারণ | পুঠিয়ার জমিদার |
দাম্পত্য সঙ্গী | যতীন্দ্র নারায়ণ |
ব্যক্তিগত জীবনসম্পাদনা
পুঠিয়ার জমিদার মহারাণী শরৎ সুন্দরী দেবীর পুত্র যতীন্দ্র নারায়ণ ১৮৮০ সালে ঢাকা জেলার বিশিষ্ট জমিদার ভুবনমোহন রায়ের মেয়ে হেমন্ত কুমারী দেবীকে বিয়ে করেন। অসৎ সঙ্গের কারণে কুমারের শরীরে নানা রোগ দানা বাঁধে। অবশেষে ১৮৮৩ সালে তিনি মারা যান।[১] এদিকে জীবনের শেষ সময় মহারাণী হেমন্ত কুমারী দেবীর শাশুড়ি মহারাণী শরৎ সুন্দরী নানা সমস্যায় তিক্ত হয়ে ভারতের কাশীতে চলে যান। ১৮৮৬ সালে তিনি মারা যান। এরপরে হেমন্ত কুমারী দেবী মাত্র ১৮ বছর বয়সে পুঠিয়া জমিদারীর দায়িত্বভার গ্রহণ করেন।
জমিদারী দায়ীত্বসম্পাদনা
মহারাণী হেমন্ত কুমারীর অপরিণত বয়সের সুযোগে প্রকৃত কর্তৃত্ব চলে যায় পিতা ভুবনমোহন ও মামা ভৈরব চন্দ্রের হাতে। ১৮৯০ সালে ভুবনমোহন মৃত্যুবরণ করলে রাজবাড়ির দায়িত্ব পান ভৈরব রায়। ১৮৯৫ সালে মহারাণী হেমন্ত কুমারীর একমাত্র মেয়ে রাজকুমারী সুরেন্দ্র বালার সঙ্গে বিশ্বেশর স্যানালের বিয়ে হয়। বিয়ের মাত্র ১০ বছর পর ১৯০৫ সালে রাজকুমারী সুরেন্দ্র বালা মারা যান। হেমন্ত কুমারী দেবী অনেক ভালো কাজের জন্য লর্ড কার্জনের আমলে ১৯০১ সালে রানী ও ১৯২০ সালে লর্ড আর উইনের আমলে মহারাণী উপাধীতে ভূষিত হন। ১৯৪২ সালে মহারাণী হেমন্ত কুমারী দেবী পরলোকগমন করেন। ১৯৫০ সালে সারা দেশে জমিদারি প্রথার বিরুদ্ধে গণজাগরণ ঘটে। মহারাণী হেমন্ত দেবীর মৃত্যুর পরে অন্য জায়গাগুলোর মতো পুঠিয়া রাজবংশেরও বিলুপ্তি ঘটে।[২]
কৃতিত্বসম্পাদনা
মহারাণী হেমন্ত কুমারীর জমিদারী আমলে বহু শিক্ষার্থী, বহু বিধবা, এবং বহু অনাথ তার কাছ থেকে নিয়মিত মাসিক মাসোহারা পেত৷[৩] রাজশাহী শহরে তিনি একটি ছাত্রাবাস যা বর্তমানে রাজশাহী কলেজের অধীনে মহারাণী হেমন্ত কুমারী হিন্দু ছাত্রাবাস সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সেবামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করেছেন। তার সমাজকল্যাণ মূলক কার্যক্রমের মধ্যে হেমন্ত কুমারী ওয়াটার ওয়ার্কস, হেমন্ত কুমারী সংস্কৃত কলেজ, নওগাঁ দাতব্য চিকিৎসালয়ে বার্ষিক দান, ভাগিরথিতে স্নানঘাট নির্মাণের সহায়তা, দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন স্মুতি তহবিলে দান, নান্দিনা (ময়মনসিংহ) ডাকঘর গৃহ নির্মাণ, পূরীধামের অনাথ আশ্রম ও হেমন্ত নাথের মন্দিরে দান ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য৷[৪]
আরো দেখুনসম্পাদনা
তথ্যসূত্রসম্পাদনা
- ↑ McAdam, Marika. (2004) Lonely Planet's Bangladesh. pp. 114-115.
- ↑ Kamruzzaman Shahin (২৬ এপ্রিল ২০১১)। "Puthia Palace decaying: Terracotta pieces, other artefacts ruining, being stolen"। Daily Sun।
- ↑ "পুঠিয়ার মন্দিরসমূহ"। রাজশাহী জেলা প্রশাসন।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ ABM Husain, Asiatic Society of Bangladesh "Architecture". ISBN (invalid) 984-300-000965. ওসিএলসি 298612818. ওসিএলসি 845471338 (pg:361-363)