অঁরি বেক্যরেল
অঁতোয়ান অঁরি বেক্যরেল[১] (ফরাসি: Antoine Henri Becquerel; ১৫ই ডিসেম্বর ১৮৫২ - ২৫শে আগস্ট ১৯০৮) একজন ফরাসি পদার্থবিদ। তিনি তেজস্ক্রিয়তা আবিষ্কার করেন। তার নামানুসারে তেজস্ক্রিয়তার একটি এককের নাম রাখা হয়েছে বেক্যরেল। তিনি ১৯০২ সালে পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন।[২]
অঁরি বেক্যরেল | |
---|---|
জন্ম | ডিসেম্বর ১৫, ১৮৫২ |
মৃত্যু | আগস্ট ২৫, ১৯০৮ |
জাতীয়তা | ফ্রান্স |
মাতৃশিক্ষায়তন | একোল পোলিতেকনিক একোল দে পোঁ জে শোসে |
পরিচিতির কারণ | তেজস্ক্রিয়তা |
পুরস্কার | পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার (১৯০৩) |
বৈজ্ঞানিক কর্মজীবন | |
কর্মক্ষেত্র | পদার্থবিজ্ঞানী |
প্রতিষ্ঠানসমূহ | কোঁসের্ভাতোয়ার দেজার জে মেতিয়ে একোল পোলিতেকনিক প্যারিস জাদুঘর |
স্বাক্ষর | |
টীকা | |
তার পুত্রের নাম জঁ বেক্যরেল, পিতার নাম আলেকসঁদ্র এলমোঁ বেক্যরেল, এবং পিতামহের নাম অঁতোয়ান সেজার বেক্যরেল. |
প্রাথমিক জীবন
সম্পাদনাবেক্যরেলের জন্ম হয় প্যারিসের এক ধনী পরিবারে যেখানে চার পুরুষ ধরে বিজ্ঞানচর্চা প্রচলিত ছিল। তাঁরা হলেন পদার্থবিজ্ঞানীঃ অঁতোয়ান সেজার বেক্যরেল (বেক্যরেলের পিতামহ), আলেকসঁদ্র এলমোঁ বেক্যরেলে (বেক্যরেলের বাবা),জঁ বেক্যরেলে (বেক্যরেলের পুত্র)। অঁরি তার শিক্ষাজীবন শুরু করেন প্যারিসের লিসে লুই-ল্য-গ্রঁ (Lycée Louis-le-Grand) উচ্চবিদ্যালয়ে। তিনি একোল পোলিতেকনিক নামক উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিজ্ঞান ও একোল দে পোঁ জে শোসে-তে (École des Ponts et Chaussées) প্রকৌশল বিদ্যায় উচ্চশিক্ষা লাভ করেন। ১৮৭৪ সালে তিনি ল্যুসি জোয়ে মারি জামাঁ-কে বিয়ে করেন। ল্যুসি তাঁদের প্রথম সন্তান জঁকে জন্ম দিতে গিয়ে মারা যান। ১৮৯০ সালে অঁরি লুইজ দেজিরে লোরিওকে বিয়ে করেন।
অবদান
সম্পাদনা১৮৯২ খ্রিষ্টাব্দে বেক্যরেল তার পরিবারের তৃতীয় ব্যক্তি হিসাবে ফ্রান্সের জাতীয় প্রাকৃতিক ইতিহাস জাদুঘরে পদার্থবিদ্যার সম্মানিত আসনে অধিষ্ঠিত হন। ১৮৯৪ খ্রিষ্টাব্দে তিনি ফরাসি সরকারের সেতু ও জনপথ বিভাগের প্রধান প্রকৌশলীর পদ লাভ করেন।
১৮৯৬ খ্রিষ্টাব্দে বেক্যরেল ইউরেনিয়ামের লবণের দ্যুতির উপর গবেষণা করার সময় ঘটনাচক্রে তেজস্ক্রিয়তা আবিষ্কার করেন। ভিলহেল্ম র্যোন্টগেনের ব্যবহারিক পরীক্ষণ সম্পন্ন করতে গিয়ে বেক্যরেল পটাশিয়াম ইউরেনাইল সালফেট নামক দ্যুতিময় খনিজ পদার্থকে আলোকচিত্রের পাতে লেপে দেন, এবং এর উপরে কালো বর্ণের আচ্ছাদন দেন, যাতে করে উজ্জ্বল সূর্যালোকে তিনি পরীক্ষা চালাতে পারেন। কিন্তু আসল পরীক্ষণ চালাবার আগে বেক্যরেল দেখতে পান যে, তার আলোকচিত্রের প্লেটগুলো এক্সপোজ্ড, অর্থাৎ ব্যবহৃত হয়ে গেছে। এই ঘটনা হতে বেক্যরেল তেজস্ক্রিয় বিকিরণ সংক্রান্ত বিষয়ে গবেষণা চালান। ১৯০৩ খ্রিষ্টাব্দে তিনি তেজস্ক্রিয়তা আবিষ্কারের জন্য মারি ক্যুরি ও পিয়ের ক্যুরির সাথে যৌথভাবে পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন।[৩]
জীবনাবসান
সম্পাদনা১৯০৮ খ্রিষ্টাব্দে মৃত্যুর পূর্বে তিনি ফরাসি বিজ্ঞান একাডেমির স্থায়ী সম্পাদক নির্বাচিত হন। ৫৫ বছর বয়সে তিনি ফ্রান্সের ল্য ক্রোয়াজিক নামক স্থানে মৃত্যুবরণ করেন। তার নামানুসারে তেজস্ক্রিয়তার আন্তর্জাতিক একক বেকেরেল (Bq)-এর নামকরণ করা হয়। চাঁদ ও মঙ্গল গ্রহের দুইটি খাতের নামও তার নামানুসারে রাখা হয়।
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ এই ফরাসি ব্যক্তিনামটির বাংলা প্রতিবর্ণীকরণে উইকিপিডিয়া:বাংলা ভাষায় ফরাসি শব্দের প্রতিবর্ণীকরণ-এ ব্যাখ্যাকৃত নীতিমালা অনুসরণ করা হয়েছে।
- ↑ "The Discovery of Radioactivity"। Berkeley Lab। ১৫ জুন ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৪ আগস্ট ২০১৫।
- ↑ Henri Becquerel - Biographical. Nobelprize.org.
বহিঃসংযোগ
সম্পাদনা- নোবেল পুরস্কারের ওয়েবসাইটে বেক্যরেলের জীবনী ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২৯ আগস্ট ২০০৪ তারিখে
- বেক্যরেল সম্পর্কিত নিবন্ধ
- বেক্যরেলের সংক্ষিপ্ত জীবনী ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৭ জুন ২০১১ তারিখে