হুর-উল-নিসা (৩০শে মার্চ ১৬১৩ - ৫ই জুন ১৬১৬) একজন মুঘল রাজকন্যা ছিল। তার জীবনকাল মাত্র তিন বছরের। সে ছিল মুঘল সম্রাট শাহ জাহান এবং তাঁর প্রধান স্ত্রী মমতাজ মহলের প্রথম কন্যা। ষষ্ঠ মুঘল সম্রাট আবুল মুজাফফর মুহি-উদ-দিন মুহাম্মদ আওরঙ্গজেব (আলমগীর) ছিলেন তার ভাই। তার অন্যান্য ভাই বোনেদের মধ্যে আছেন দারা শিকোহ, শাহ সুজা, সোরায়া বানু বেগম, দহর আরা বেগম ইত্যাদি।[১]

হুর-উল-নিসা বেগম
তৈমুর রাজকুমারী
জন্ম৩০শে মার্চ ১৬১৩
আকবরাবাদ, মুঘল সাম্রাজ্য
মৃত্যু৫ জুন ১৬১৬(1616-06-05) (বয়স ৩)
আজমির, মুঘল সাম্রাজ্য
সমাধি
রাজবংশতৈমুর বংশ
পিতাশাহ জাহান
মাতামুমতাজ মহল
ধর্মসুন্নি ইসলাম

জীবনী সম্পাদনা

হুর-উল-নিসা ১৬১৩ সালের ৩০শে মার্চ আকবরাবাদে জন্মগ্রহণ করে। তার পিতামহ সম্রাট জাহাঙ্গীর তার নামকরণ করেছিলেন হুর উল-নিসা বেগম। জাহাঙ্গীর তাকে নিজের কন্যা হিসাবে গ্রহণ করেছিলেন।[২] রাজপুত্র খুরম এবং তাঁর স্ত্রী আরজুমন্দ বানু বেগমের জন্ম নেওয়া চৌদ্দ সন্তানের মধ্যে সে ছিল প্রথম। তার মাতামহ ছিলেন আসফ খান চতুর্থ, তিনি হুর-উল-নিসার পিতার শাসনকালে উজিরে আজম ছিলেন।

সম্রাট জাহাঙ্গীর এবং তাঁর পরিবার তাকে গভীরভাবে ভালোবাসতেন।[৩]

মৃত্যু সম্পাদনা

১৬১৬ সালের ২১শে মে, হুর গুটি বসন্তে অসুস্থ হয়ে পড়ে এবং ৫ই জুন, "তার আত্মার পাখিটি এই চিরন্তন খাঁচা থেকে ডানা নিয়ে স্বর্গের বাগানে উড়ে গেল।"[২][৩]

জাহাঙ্গীর এই শিশুটির সাথে গভীরভাবে সংযুক্ত ছিলেন, এই দৌহিত্রীর মৃত্যুতে তিনি গভীরভাবে শোকাহত হয়েছিলেন। এই কারণে তিনি তার মৃত্যুর তথ্য লিখে রাখতে পারেননি এবং মির্জা গিয়াস বেগকে তা করার জন্য অনুরোধ করেছিলেন। জাহাঙ্গীর তার মৃত্যুর পর প্রথম দুই দিন কোন ভৃত্যকে গ্রহণ করেন নি এবং তার কক্ষ দেয়াল গেঁথে আড়াল করে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন। তৃতীয় দিনে আর শোক সহ্য করতে না পেরে যুবরাজ খুরমের বাড়িতে গিয়ে বেশ কয়েকদিন অবস্থান করেন। যুবরাজের বাড়িতে যাওয়ার সময়, "'স্বর্গীয় শিশু'"র কথা ভেবে সম্রাট কয়েকবার দুঃখে ভেঙে পড়েন। তারপর তিনি নিজেকে ব্যস্ত রাখার জন্য চতুর্থ আসফ খানের বাড়িতে যান। তবুও তিনি যতদিন আজমিরে থেকেছেন, প্রতিটি পরিচিত জিনিস দেখে তিনি ভেঙে পড়তেন।[৪][৩]

যেহেতু শিশুটি বুধবার মারা গিয়েছিল, জাহাঙ্গীর দিনটিকে "গুমশাম্বা'' বা "ক্ষতির দিন" বলে ডাকার নির্দেশ দেন।[৩][২]

তাকে আজমিরে মইনুদ্দিন চিশতীর কবরের কাছে সমাহিত করা হয়।[৫]

বংশ সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "Hur un-nisa Begum"। সংগ্রহের তারিখ ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২২ 
  2. Kham, Inayat (১৯৯০)। The ShahJahannama। Fuller, A. R. কর্তৃক অনূদিত। Oxford University Press। পৃষ্ঠা 6। 
  3. Emperor, Jahangir (১৯৯৯)। The Jahangirnama : memoirs of Jahangir, Emperor of India। Thackston, W. M. কর্তৃক অনূদিত। Washington D. C; New York: Freer Gallery of Art, Arthur M. Sackler Gallery, Smithsonian Institution ; Oxford University Press। পৃষ্ঠা 194। 
  4. Emperor, Jahangir (১৯৯৯)। The Jahangirnama : memoirs of Jahangir, Emperor of India। Thackston, W. M. কর্তৃক অনূদিত। Washington D. C; New York: Freer Gallery of Art, Arthur M. Sackler Gallery, Smithsonian Institution ; Oxford University Press। পৃষ্ঠা 195। 
  5. Sarkar, Kobita (২০০৭)। Shah Jahan and His Paradise on Earth। Agra, India: K.P. Bagchi & Company। পৃষ্ঠা 187। 
  6. Kobita Sarker, Shah Jahan and his paradise on earth: the story of Shah Jahan's creations in Agra and Shahjahanabad in the golden days of the Mughals (2007), p. 187
  7. Mehta, Jl (১৯৮৬)। Advanced Study in the History of Medieval India। পৃষ্ঠা 418। 
  8. Frank W. Thackeray, John E. Findling, Events That Formed the Modern World (2012), p. 254
  9. Mehta (1986, p. 374)
  10. Soma Mukherjee, Royal Mughal Ladies and Their Contributions (2001), p. 128
  11. Subhash Parihar, Some Aspects of Indo-Islamic Architecture (1999), p. 149
  12. Shujauddin, Mohammad; Shujauddin, Razia (১৯৬৭)। The Life and Times of Noor Jahan (ইংরেজি ভাষায়)। Caravan Book House। পৃষ্ঠা 1। 
  13. Ahmad, Moin-ud-din (১৯২৪)। The Taj and Its Environments: With 8 Illus. from Photos., 1 Map, and 4 Plans (ইংরেজি ভাষায়)। R. G. Bansal। পৃষ্ঠা 101