হীরা দেবী বাইবা

ভারতীয় গায়িকা

হীরা দেবী বাইবা ছিলেন ভারতের দার্জিলিং জেলার ভারতীয় লোকসংগীত গায়িকা এবং নেপালি লোক গানের প্রবর্তক হিসাবে তাঁরই নাম করা হয়। তাঁর 'চুরা ত হোইন অস্তুরা' (নেপালি: चुरा त होइन अस्तुरा) গানটিকে বলা হয়ে থাকে রেকর্ড করা প্রথম তামাং সেলো (নেপালি লোক গানের একটি ঘরানা)। হীরা দেবী বাইবা একমাত্র নেপালি লোক গায়ক, কলকাতার এইচএমভি থেকে যাঁর গানের অ্যালবাম বের হয়েছিল (১৯৭৪ এবং ১৯৭৮ সালে)।[১] তিনি আকাশবাণীর একমাত্র প্রথম শ্রেণীর (গ্রেড- এ) নেপালি লোক গায়ক ছিলেন।

হীরা দেবী বাইবা
২০১০ সালে তোলা ছবি
২০১০ সালে তোলা ছবি
প্রাথমিক তথ্য
জন্ম (1940-09-09) ৯ সেপ্টেম্বর ১৯৪০ (বয়স ৮৩)
অম্বুটিয়া, দার্জিলিং, ভারত
মৃত্যু১৯ জানুয়ারি ২০১১(২০১১-০১-১৯)
কদমতলা, শিলিগুড়ি, ভারত
ধরননেপালি লোক সঙ্গীত, তামাং সেলো
পেশালোক গায়ক
বাদ্যযন্ত্রমাদল, হারমোনিয়াম, ডাম্ফু
লেবেলএইচএমভি, রেডিও নেপাল, মিউজিক নেপাল, এআইআর (আকাশবাণী)

জীবন এবং সংগীত সম্পাদনা

হীরা দেবী বাইবা কার্শিয়াংয়ের কাছাকাছি অম্বুটিয়া টি এস্টেটের একটি সংগীতকার পরিবারে জন্মেছিলেন এবং নেপালি লোক সংগীতশিল্পী ও সুরকারদের দীর্ঘ প্রজন্মের অন্যতম একজন ছিলেন। তাঁর পিতার নাম সিং মান সিং বাইবা এবং মায়ের নাম শেরিং ডোলমা। তাঁর ৪০ বছরের সংগীত জীবনে, তিনি প্রায় ৩০০টি লোক গান করেছেন।[২] তাঁর পেশাদার সংগীত জীবন শুরু হয়েছিল ১৯৬৬ সালে কার্শিয়াংয়ে রেডিও নেপালের জন্য তিনটি গান রেকর্ড করার মধ্যে দিয়ে। তিনি ১৯৬৩ সাল থেকে ১৯৬৫ সাল পর্যন্ত কার্শিয়াংয়ের আকাশবাণী স্টেশনে ঘোষক হিসাবে কাজ করেছিলেন।[৩]

বাইবার জনপ্রিয় গানগুলির মধ্যে রয়েছে ফারিয়া লায়াইদিয়্যাচন, ওরা দৌদি জান্দা, এবং রামরি তা রামরি। বাবার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে, বাইবা ২০০৮ সালে শিলিগুড়ির কাছে কদমতলায় তাঁর নিজের বাড়িতে এস এম বাইবা আন্তর্জাতিক সংগীত ও নৃত্য একাডেমি চালু করেছিলেন। হীরা বাইবা ১৯শে জানুয়ারী, ২০১১ সালে ৭১ বছর বয়সে নিজের বাড়িতে অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা যান।[৪] তাঁর দুই সন্তান আছেন নবনীত আদিত্য বাইবা এবং সত্য বাইবা[৫]

কন্যা ও পুত্রের শ্রদ্ধা নিবেদন সম্পাদনা

কিংবদন্তি হীরা দেবী বাইবার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে, তাঁ দুই সন্তান সত্য বাইবা এবং নবনীত আদিত্য বাইবা ২০১৬-২০১৭ সালে তাঁর কয়েকটি বিখ্যাত একক গান পুনরায় রেকর্ড করেন এবং প্রকাশ করেন। 'আমা লাই শ্রদ্ধাঞ্জলি -মায়ের প্রতি শ্রদ্ধা' এই প্রকল্পের পরিচালনা ও দেখাশোনা করেছিলেন সত্য এবং নবনীত এর জন্য গান গেয়েছিলেন। এইভাবে তাঁরা এই ধারাকে আরও এগিয়ে নিয়ে গেছেন।[৬][৭]

পুরস্কার সম্পাদনা

হীরা দেবী ১৯৮৬ সালে দার্জিলিংয়ের নেপালি অকাদেমি কর্তৃক 'মিত্রসেন পুরস্কার' পেয়েছিলেন, ১৯৯৬ সালে সিকিম সরকার তাঁকে 'মিত্রসেন স্মৃতি পুরস্কার' দেন। ২০০১ সালে তিনি অগম সিং গিরি পুরস্কার এবং গোর্খা শহীদ সেবা সমিতির আজীবন সম্মাননা পুরস্কার পেয়েছিলেন। নেপাল সরকার তাঁকে গোর্খা দক্ষিণ বাহু (নেপালের নাইটহুড), সাধনা সম্মান এবং মধুরিমা ফুল কুমারী মাহাতো পুরস্কার দিয়েছিলেন।

আরো দেখুন সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "चुरा त होइन अस्तुरा - पहिलो तामाङ सेलो गीत ? - Tamang Online"Tamang Online (ইংরেজি ভাষায়)। ৭ ডিসেম্বর ২০১৬। ২০১৮-০৩-০৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৫ মার্চ ২০১৮ 
  2. "Darjeeling's folk singer Hira Waiba dies of burn injuries"The Himalayan Times। সংগ্রহের তারিখ ২১ জুলাই ২০১২ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  3. "North Bengal & Sikkim | School for Nepali folk music"The Telegraph। Calcutta (Kolkata)। ২০১৮-০৩-০৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৫ মার্চ ২০১৮ 
  4. "Hira Devi dies of burn injuries"The Telegraph। ২৫ অক্টোবর ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২১ জুলাই ২০১২ 
  5. "Navneet Aditya Waiba, Satya Waiba"The Telegraph। ২ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ জানুয়ারি ২০১৭ 
  6. "Songs of Tribute, Ama Lai Shraddhanjali"The Himalayan Times। ১২ ডিসেম্বর ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১০ জানুয়ারি ২০১৭ 
  7. "Ama Lai Shraddhanjali"। ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। 

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা