হিমাংশু দত্ত
হিমাংশু কুমার দত্ত (১৯০৮ – ১৫ নভেম্বর ১৯৪৪) ছিলেন একজন বিশিষ্ট বাঙালি সুরকার। তার সমসাময়িক কিংবদন্তি সুরকারদের মধ্যে তিনি তার অনন্য ও সুমধুর কম্পোজিশনের জন্য প্রসিদ্ধ। তার সুরারোপিত গানগুলো সাধারণত “হিমাংশু দত্তের গান” হিসেবে পরিচিত। বাংলা সংগীতে অবদানের জন্য ঢাকার সরস্বত সমাজ তাকে ‘সুরসাগর’ খেতাবে ভূষিত করে। তিনি একজন সুগায়কও ছিলেন।
হিমাংশু কুমার দত্ত | |
---|---|
জন্ম | ১৯০৮ |
মৃত্যু | ১৫ নভেম্বর, ১৯৪৪ |
পেশা | কণ্ঠশিল্পী, সংগীত পরিচালক, সুরকার |
পিতা-মাতা | যোগেন্দ্রচন্দ্র দত্ত (পিতা) নীরদা দেবী (মাতা) |
প্রারম্ভিক জীবন
সম্পাদনাহিমাংশু দত্তের মাতা নীরদা দেবী ছিলেন সুগায়িকা এবং একজন প্রতিষ্ঠিত কণ্ঠশিল্পী। পিতা যোগেন্দ্রচন্দ্রের উৎসাহে খুব ছোটবেলা থেকেই সংগীতের প্রতি আসক্তি বা অনুরক্ততা প্রকাশ পায় হিমাংশু দত্তের। গানের প্রতি তার এ দূর্বলতায় সুকণ্ঠী ও সুগায়িকা মা তাকে সংগীতের প্রাথমিক তালিম দেন। ১৯২৪ সালে কুমিল্লা জিলা স্কুল থেকে এন্ট্রান্স বা ম্যাট্রিক পাস করেন। অতঃপর কলকাতা প্রেসিডেন্সি কলেজে ভর্তি হন। এখান থেকেই ১৯২৬ সালে আই.এস.সি. এবং বি.এ. ডিগ্রী লাভ করেন। প্রেসিডেন্সি কলেজে ছাত্র থাকা অবস্থাতেই হিমাংশু তার গানের জন্য জনপ্রিয়তা লাভ করেন।
গানে সুর প্রদান
সম্পাদনাছোটবেলায় কুমিল্লার এক ধর্মমন্দিরে ভজন গান পরিবেশন করে সকলকে আশ্চর্য ও বিমোহিত করেন হিমাংশু। পারিবারিক কোন জলসায় কিংবা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে গান না গেয়েও চতুর্দিকে তার গানের দীপ্তি ও খ্যাতি ছড়িয়ে পড়েছিল। হিমাংশু তার সহপাঠী সুবোধ পুরকায়স্থের লেখা বেশিরভাগ গানে সুর দিয়েছেন। এছাড়াও তিনি অজয় ভট্টাচার্য এবং বিনয় মুখোপাধ্যায়ের অনেক গানে সুরারোপ করে বিশিষ্ট সুরকার হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেন। তার গানের সুরে রাগ-সংগীতের প্রাধান্য লক্ষ্য করা যায় এবং করুণ রসের বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান।
জনপ্রিয় গানসমূহ
সম্পাদনা- আলোছায়া দোলা
- আবেশ আমার যায় উড়ে কোন ফাল্গুনে
- খুঁজে দেখা পাইনে যাহার
- ডাক দিয়ে যায় কেগো আমার বাজিয়ে বাঁশি
- তব স্মরণখানি
- তুমি তো বঁধু জান
- নতুন ফাগুন যবে
- বরষার মেঘ ডাকে ঝড় বরিষণে
- মম মন্দিরে
- তোমারই পথপানে চাহি
- চাঁদ কহে চামেলি গো
- রাতের দেউলে জাগে বিরহী তারা
- রাতের ময়ূর ছড়ালো যে পাখা
- ছিল চাঁদ মেঘের পারে
উপাধি লাভ ও সম্মাননা
সম্পাদনা- বাংলা সংগীতে হিমাংশু দত্তের অসামান্য অবদান ও দক্ষতার জন্য ১৯৩০ সালে ঢাকার সরস্বত সমাজ তাকে সুরসাগর উপাধিতে ভূষিত করে।[১][২]
- বাংলা সঙ্গীতের অমর সুরকার হিমাংশু দত্তের অবদানের কথা স্বীকার করে জীবনমুখী গানের স্রষ্টা কবীর সুমনের গাওয়া তোমাকে চাই গানের একটি কলি "..... ভুলে যাওয়া হিমাংশু দত্তের সুরে / সেই কবেকার অনুরোধের আসরে ......." কথাটি শ্রদ্ধার্ঘ্য চিত্তে চিরস্মরণীয় করে রেখেছেন।
আরও দেখুন
সম্পাদনাতথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "Himangshu Dutta-Biography"। calcuttaglobalchat.net। 5/31/06। সংগ্রহের তারিখ March 29, 2011। এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন:
|তারিখ=
(সাহায্য)[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ] - ↑ "সুরসাগর"। anandabazar। সংগ্রহের তারিখ মার্চ ২৯, ২০১১।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]