হামিদা হাবিবুল্লাহ
বেগম হামিদা হাবিবুল্লাহ (২০ নভেম্বর ১৯১৬ - ১৩ মার্চ ২০১৮)[১] ছিলেন একজন ভারতীয় সংসদ সদস্য, শিক্ষাবিদ এবং সমাজকর্মী। স্বাধীনতা-উত্তর ভারতে তাকে ভারতীয় নারীত্বের প্রতীকী মুখ বলা হয়।[২]
হামিদা হাবিবুল্লাহ | |
---|---|
চিত্র:Begum.jpeg | |
জন্ম | |
মৃত্যু | ১৩ মার্চ ২০১৮ | (বয়স ১০১)
পেশা | সংসদ সদস্য, শিক্ষাবিদ এবং সামাজিক কর্মী |
কর্মজীবন | ১৯৬৫–২০১৮ |
দাম্পত্য সঙ্গী | এনাইথ হাবিবুল্লাহ |
পিতা-মাতা |
|
প্রাথমিক জীবন এবং শিক্ষা
সম্পাদনাবেগম হামিদা হাবিবুল্লাহ লখনউতে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন হায়দ্রাবাদ উচ্চ আদালতের প্রধান বিচারপতি নবাব নাজির ইয়ার জং বাহাদুরের কন্যা এবং তিন ভাইয়ের বড় বোন। তিনি তার শৈশব এবং প্রাথমিক জীবন হায়দ্রাবাদে কাটিয়েছেন।[৩] তিনি লন্ডনের পুটনির হোয়াইটল্যান্ডস কলেজে দুই বছরের শিক্ষক প্রশিক্ষণ কোর্সে পড়াশোনা করেছেন।[৪]
ব্যক্তিগত জীবন
সম্পাদনা১৯৩৮ সালে তিনি খাড়কভাসলার জাতীয় প্রতিরক্ষা একাডেমির প্রতিষ্ঠাতা কমান্ড্যান্ট মেজর জেনারেল এনাইথ হাবিবুল্লাহকে বিয়ে করেন।[৫]
তার ছেলে ওয়াজাহাত হাবিবুল্লাহ একজন প্রাক্তন আইএএস কর্মকর্তা এবং জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশনের প্রাক্তন চেয়ারপারসন। তার নাতি অমর হাবিবুল্লাহ এবং সাইফ হাবিবুল্লাহ বিশিষ্ট ব্যবসায়ী।[৫]
রাজনৈতিক জীবন
সম্পাদনাকংগ্রেস সমর্থক হিসেবে তিনি ১৯৬৫ সালে তার স্বামীর অবসর গ্রহণের পর সক্রিয় রাজনীতিতে যোগ দেন। তিনি হায়দারগড় (জেলা বারাবাঁকি) থেকে নির্বাচিত বিধানসভার সদস্য (বিধায়ক) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭১ থেকে ১৯৭৩ সাল পর্যন্ত সমাজ ও হরিজন কল্যাণ, জাতীয় সংহতি ও নাগরিক প্রতিরক্ষা প্রতিমন্ত্রী এবং ১৯৭১ থেকে ১৯৭৪ সাল পর্যন্ত পর্যটনমন্ত্রী ছিলেন। তিনি ১৯৮০ সাল পর্যন্ত উত্তরপ্রদেশ কংগ্রেস কমিটির (ইউপিসিসি) কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য এবং ১৯৬৯ সাল থেকে (নির্বাচিত) অল ইন্ডিয়া কংগ্রেস কমিটির (এআইসিসি) সদস্য ছিলেন। তিনি ১৯৭২ থেকে ১৯৭৬ সাল পর্যন্ত মহিলা কংগ্রেস, ইউপিসিসির সভাপতি ছিলেন।[৪][৫] এরপর তিনি ১৯৭৬ থেকে ১৯৮২ সাল পর্যন্ত রাজ্যসভার সদস্য ছিলেন।[৪]
শিক্ষাগত এবং সামাজিক কর্মজীবন
সম্পাদনালন্ডন থেকে ফিরে আসার পর তিনি এই অঞ্চলে নারী শিক্ষার প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তিনি ১৯৭৫ সাল থেকে তিনি লখনউয়ের অবধ গার্লস ডিগ্রি কলেজের সভাপতি ছিলেন, যা প্রথম ইংরেজি মেয়েদের ডিগ্রি কলেজ।[৬] তিনি ১৯৭৫ সাল থেকে তালিমগাহ-ই-নিসওয়ান কলেজের সভাপতি ছিলেন। এই কলেজে ৩,৫০০ জন মুসলিম মেয়েদের শিক্ষার জন্য ব্যবস্থা করেন। এই কলেজটি তার শাশুড়ি প্রয়াত বেগম ইনাম হাবিবুল্লাহ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।[৪]
তিনি ৫,০০০ চিকন শ্রমিক নিয়োগকারী নারীদের উন্নয়ন ও উন্নতির জন্য গঠিত একটি সংগঠন, এসইডব্লিউএ লখনউ (স্ব-কর্মসংস্থানপ্রাপ্ত মহিলা সমিতি) এর সভাপতি ছিলেন। তিনি ১৯৮৭ সাল থেকে নয়াদিল্লির কেন্দ্রীয় সমাজকল্যাণ বোর্ডের নির্বাহী কমিটির সদস্য ছিলেন।[৫]
হামিদা হাবিবুল্লাহ অল ইন্ডিয়া উইমেন্স কনফারেন্স, নারী সেবা সমিতি লখনউ, চেশায়ার হোমস ইন্ডিয়া লখনউয়ের পৃষ্ঠপোষক এবং সৈনিক কল্যাণ বোর্ড লখনউয়ের সদস্য ছিলেন।[৫]
তিনি ১৯৭৪ থেকে ১৯৮০ সাল পর্যন্ত লখনউ বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাহী পরিষদের সদস্য ছিলেন। তিনি ইউপি উর্দু একাডেমির সভাপতি (১৯৭২ সালে উদ্বোধন), প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এবং ১৯৭২-৭৬ এবং ১৯৮২ সালে পুনর্নির্বাচিত ছিলেন।[৫]
হামিদা হাবিবুল্লাহ সৈয়দনপুরের আম বাগানের চেহারা বদলে দিয়েছিলেন। কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্দেশিকা অনুসারে বেগম নিজেই মালিয়াহাবাদী, দশেরা, চৌসা, ল্যাংড়া এবং সফেদা সহ বেশ কয়েকটি জাতের আম রোপণ করেছিলেন।[৭]
এছাড়াও তিনি বেসরকারি সংস্থা প্রজ্বালা-এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন।[৮]
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ Follow Uttar Pradesh (২০১৮-০৩-১৩)। "Former UP minister Begum Hamida Habibullah dies at 102 - India News"। Indiatoday.in। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৪-২৭।
- ↑ "Begum Sahiba of Lucknow: At the Age of 100, Hamida Habibullah Lives on as an Iconic Figure"। সংগ্রহের তারিখ ২৯ জুলাই ২০১৭।
- ↑ "'There is a superpower in her'"। The Times of India। সংগ্রহের তারিখ ২৯ জুলাই ২০১৭।
- ↑ ক খ গ ঘ "Begum Sahiba of Lucknow: At the Age of 100, Hamida Habibullah Lives on as an Iconic Figure"। The Better India। ৮ ডিসেম্বর ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ২৯ জুলাই ২০১৭। উদ্ধৃতি ত্রুটি:
<ref>
ট্যাগ বৈধ নয়; আলাদা বিষয়বস্তুর সঙ্গে ":0" নামটি একাধিক বার সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে - ↑ ক খ গ ঘ ঙ চ Society, LUCKNOW। "Hamida Habibullah : Begum Sahiba of Lucknow"। lucknow.me। সংগ্রহের তারিখ ২৯ জুলাই ২০১৭। উদ্ধৃতি ত্রুটি:
<ref>
ট্যাগ বৈধ নয়; আলাদা বিষয়বস্তুর সঙ্গে ":1" নামটি একাধিক বার সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে - ↑ Ahmad, Omair (২ ডিসেম্বর ২০১৬)। "Stories of a century"। The Hindu Business Line (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২৯ জুলাই ২০১৭।
- ↑ "Mango farming has grown as a 'juicier business' in Barabanki village"। hindustantimes.com। ২১ জুন ২০১৩। সংগ্রহের তারিখ ২৯ জুলাই ২০১৭।
- ↑ Vasudev, Shefalee (৩১ মে ২০১৩)। "Opinion"। livemint.com। সংগ্রহের তারিখ ২৯ জুলাই ২০১৭।