হামাদ বিন খলিফা আলে সানি
শেখ হামাদ বিন খলিফা বিন হামাদ বিন আব্দুল্লাহ বিন জসিম বিন মোহাম্মদ আল থানি (আরবি: حمد بن خليفة آل ثاني) হলেন ক্ষমতাসীন কাতারি আল থানি রাজপরিবারের একজন গুরুত্বপূর্ণ সদস্য, যিনি ১৯৯৫ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত কাতারের শাসক বা আমির ছিলেন। এরপর তিনি সিংহাসন ত্যাগ করে নিজের ৪র্থ পুত্র তামিম বিন হামাদ আলথানির হাতে ক্ষমতা অর্পণ হস্তান্তর করেন।[১][২] কাতারে তাকে ফাদার আমির বা পিতা আমির বলে উল্লেখ করা হয়।[৩] হামাদ ১৯৯৫ সালে একটি রক্তপাতহীন প্রাসাদ অভ্যুত্থানের মাধ্যমে তার পিতা খলিফা বিন হামাদ আল থানির কাছ থেকে ক্ষমতা দখল করেন। নিজের ১৮ বছরের শাসনামলে তিনি কাতারকে এক অনন্য স্থানে নিয়ে গিয়েছেন।
হামাদ বিন খলিফা আল থানি | |
---|---|
حمد بن خليفة آل ثاني | |
কাতারের আমির | |
প্রধানমন্ত্রী | আব্দুল্লাহ বিন খলিফা বিন হামদ আল থানি |
পূর্বসূরী | খলিফা বিন হামাদ আল থানি |
উত্তরসূরী | তামিম বিন হামাদ আল থানি |
কাজের মেয়াদ ২৭ জুন, ১৯৯৫ – ২৫ জুন, ২০১৩ | |
ব্যক্তিগত বিবরণ | |
জন্ম | ১ জানুয়ারি, ১৯৫২ দোহা, কাতার |
নাগরিকত্ব | কাতার |
জাতীয়তা | কাতারি |
দাম্পত্য সঙ্গী | মারিয়াম বিনতে মুহাম্মাদ আল থানি, মৌজা বিনতে নাসের আল মিসনাদ, নৌরা বিনতে খালিদ আল থানি |
পিতামাতা |
|
তার আমলে কাতারে প্রাকৃতিক গ্যাসের উৎপাদন ৭৭ মিলিয়ন টনে পৌঁছেয় এবং এর ফলে কাতার বিশ্বের সবচেয়ে ধনী দেশ হয়ে ওঠে, যেখানে দেশের গড় আয় বছরে ৮৬,৪৪০ মার্কিন ডলার।[৪] তার আমলেই ২০০৬ এশিয়ান গেমস, দোহা চুক্তি, ফাতাহ-হামাস দোহা চুক্তি, ২০১২ ইউএন ক্লাইমেট চেঞ্জ কনফারেন্সসহ কাতারে বেশ কয়েকটি ক্রীড়া ও কূটনৈতিক ইভেন্ট অনুষ্ঠিত হয় এবং তখনই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, কাতারে ২০২২ ফিফা বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হবে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে তিনি কাতারি বিনিয়োগ কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠা করেন এবং ২০১৩ সাল নাগাদ কাতার সারাবিশ্বে $১০০ বিলিয়ন থেকেও বেশি বিনিয়োগ করে। কাতারি কর্তৃপক্ষের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্যভাবে বিনিয়োগ রয়েছে দ্য শার্ড, বার্কলেস ব্যাংক, হিথ্রো বিমানবন্দর, হ্যার্ডস, পারি সাঁ - জেরমাঁ, ফোক্সওয়াগেন, সিমেন্স ও রয়্যাল ডাচ শেলে।[৫]
হামাদ কাতারে কোন সংগঠিত রাজনৈতিক বিরোধিতা এবং বাকস্বাধীনতা ও ভিন্নমতের উপর নিষেধাজ্ঞা ছাড়াই একটি স্বৈরাচারী শাসন পরিচালনা করেন।[৬][৭][৮] হামাদের শাসনামলে কাতারে দুটি মার্কিন সামরিক ঘাঁটি স্থাপিত হয়। তিনি ইরানের সাথেও ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রাখেন। তিনি দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রেখে আরব বসন্তের সময় বিশেষ করে লিবিয়া ও সিরিয়ায় বিদ্রোহী আন্দোলনকে সমর্থন ও অর্থায়ন করেন। শেখ হামাদ বিখ্যাত নিউজ মিডিয়া গ্রুপ আল জাজিরা প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি যুক্তরাষ্ট্র ও তালেবানের মধ্যে আলোচনায়ও ভূমিকা রেখেছিলেন।[৯][১০] ২০১৩ সালের জুনে হামাদ একটি সংক্ষিপ্ত টেলিভিশন ভাষণে ঘোষণা করেন যে, তিনি তার চতুর্থ পুত্র তামিম বিন হামাদ আল থানির হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করবেন।[১১]
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "Qatar: A tiny country asserts powerful influence", CBS 60 Minutes via youtube.com, 15 January 2012.
- ↑ "Qatar: Freedom in the World 2020 Country Report"। Freedom House (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৭-১১।
- ↑ "Qatar's Father Emir flown to Switzerland to treat broken leg"। ২৯ ডিসেম্বর ২০১৫। সংগ্রহের তারিখ ৬ এপ্রিল ২০১৬।
- ↑ "Emir of Qatar profile: Who is Sheikh Hamad bin Khalifa Al Thani, how did he turn Qatar into the world's richest nation and why has he decided to abdicate?"। The Independent। ২০১৩-০৬-২৫। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৩-০৬।
- ↑ "Middle East Monitor"। ৬ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ জুলাই ২০১৬।
- ↑ Kamrava, Mehran (২০০৯)। "Royal Factionalism and Political Liberalization in Qatar": 401–420। আইএসএসএন 0026-3141। জেস্টোর 20622928। ডিওআই:10.3751/63.3.13।
- ↑ Reuters Staff (২০১২-১০-৩০)। "Qatari draft media law criticized by rights group"। Reuters (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৭-১১।
- ↑ Freedman, Rosa (২০১৫)। Failing to Protect: The UN and the Politicization of Human Rights (ইংরেজি ভাষায়)। Oxford University Press। পৃষ্ঠা 109। আইএসবিএন 978-0-19-061300-6।
- ↑ Windfuhr, Volkhard; Zand, Bernhard (২৯ মার্চ ২০০৯)। "SPIEGEL Interview with the Emir of Qatar – 'We Are Coming to Invest'"। Der Spiegel। সংগ্রহের তারিখ ২ মার্চ ২০১২।
- ↑ Cohen, Noam (১ জানুয়ারি ২০০৯)। "Al Jazeera provides an inside look at Gaza conflict"। The New York Times। সংগ্রহের তারিখ ২ মার্চ ২০১২।
- ↑ "Qatari emir Sheikh Hamad hands power to son Tamim"। BBC News। ২০১৩-০৬-২৫। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৩-০৬।