হাবিবুর রহমান (তোতা মিয়া)
হাবিবুর রহমান (তোতা মিয়া) (জন্ম: ১৯১৯-মৃত্যু: ১৯৭৮) বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের রাজনীতিবিদ, আইনজীবী পূর্ব পাকিস্তানের এমএনএ ও বাংলাদেশের সাবেক সাংসদ। তিনি ১৯৭০ সালের পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসাবে এমএনএ ও স্বাধীন বাংলাদেশের ১৯৭৩ সালের প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সিলেট-৯ আসন (বর্তমান সিলেট-৪) থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য।[১][২][৩][৪]
এ্যাডভোকেট হাবিবুর রহমান (তোতা মিয়া) | |
---|---|
সাবেক সিলেট-৯, (বর্তমান সিলেট-৪) আসনের সাবেক সাংসদ | |
কাজের মেয়াদ ১৯৭৩ – ১৯৭৫ | |
পূর্বসূরী | (শুরু) স্বাধীনতা লাভ |
উত্তরসূরী | নাজিম কামরান চৌধুরী |
ব্যক্তিগত বিবরণ | |
জন্ম | ১৯১৯ রতনপুর গ্রাম, চতুল পরগনা, কানাইঘাট, সিলেট জেলা, ব্রিটিশ ভারত। (বর্তমান বাংলাদেশ) |
মৃত্যু | ১৯৭৮ সিলেট জেলা |
নাগরিকত্ব | ব্রিটিশ ভারত (১৯৪৭ সাল পর্যন্ত) পাকিস্তান (১৯৭১ সালের পূর্বে) বাংলাদেশ |
রাজনৈতিক দল | মুসলিম লীগ (১৯৫৪ সাল পর্যন্ত) বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ |
পিতামাতা | নাজির হাতিম আলী (পিতা) |
জীবিকা | রাজনীতিবিদ, আইনজীবী |
জন্ম ও প্রাথমিক জীবন
সম্পাদনাএ্যাডভোকেট হাবিবুর রহমান (তোতা মিয়া) ১৯১৯ সালে ব্রিটিশ ভারতের আসামের সিলেট জেলার কানাইঘাটের চতুল পরগনার রতনপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা ছিলেন নাজির হাতিম আলী উত্তর সিলেট লোকের বোর্ডের মেম্বার ছিলেন [৩]
শিক্ষা জীবন
সম্পাদনানিজ গ্রামে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপ্ত করে ১৯৩২ সালে কানাইঘাট এমএ স্কুলে ভর্তি হন। জৈন্তা হাইস্কুল থেকে ১৯৩৯ সালে বৃত্তিসহ মেট্টিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ১৯৪১ সালে সিলেট এমসি কলেজ থেকে আইএ এবং বিএ পাস করেন ১৯৪৩ সালে। ১৯৪৫ সালে ঢাকা ল কলেজ থেকে প্রথম বিভাগে প্রথম হয়ে এলএলবি ডিগ্রি অর্জন করে স্বর্ণপদকে ভূষিত হন।
রাজনৈতিক ও কর্মজীবন
সম্পাদনা১৯৪১ সালে আসাম প্রাদেশিক মুসলিম ছাত্র ফেডারেশন গঠিনে উদ্যোক্তাদের মধ্যে তিনি ছিলেন অন্যতম। ১৯৪৫ সাল পর্যন্ত তিনি ছাত্র ফেডারেশনের সক্রিয় সদস্য ছিলেন। তিনি ১৯৪৬ সালে সিলেট জেলা বারে আইন ব্যবসা শুরু করেন। জৈন্তা অঞ্চলের তিনিই সর্বপ্রথম আইনজীবী ও সিলেট বারের সদস্য ছিলেন।
১৯৪৬ সালের নির্বাচনে তিনি জৈন্তা এলাকা থেকে মুসলিমলীগের প্রার্থী হিসাবে প্রতিদ্বন্ধিতা করে জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের প্রার্থী মেীলভী ইব্রাহিম আলী চতুলীর কাছে পরাজিত হন। তিনি ১৯৫৪ সালে আওয়ামী লীগে যোগ দিয়ে সিলেট জেলা কমিটির সভাপতি নির্বাচিত হয়ে মৃত্যু পর্যন্ত এ দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৫৬ সালের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বি করেও পরাজিত হন তিনি। সেবার তার পক্ষে গণসংযোগ করতে জৈন্তাপুরের দরবস্ত বাজারে শেখ মুজিবুর রহমান উপস্থিত হয়েছিলেন। ১৯৭০ সালের পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসাবে এমএনএ নির্বাচিত হন।
২৬ মার্চ ১৯৭১ সালে পাকিস্তান সেনাবাহিনী তার সিলেট শহরের বাসভবন পুড়িয়ে দেয়। এসময় তিনি ভারতের শিলং চলে যান। সেখান থেকে তিনি সিলেটের উত্তরাঞ্চলের মুক্তিযুদ্ধের তৎপরতার দায়িত্ব গ্রহণ করেন। পাক বাহিনীর আত্মসমর্পণের পর তিনি সিলেট সদরের প্রশাসক নিযুক্ত হয়ে সিলেটের আইন-শৃঙ্খলা পুনপ্রতিষ্টায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। স্বাধীন বাংলাদেশের ১৯৭৩ সালের প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তৎকালীন সিলেট-৯ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন মুশাহিদ বায়মপুরীর ছেলে ও জমিয়তের প্রার্থী শেখজাদা ফারুক আহমদ। তিনি সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন। [৩]
মৃত্যু
সম্পাদনাএ্যাডভোকেট হাবিবুর রহমান ১৯৭৮ সালে ৫৯ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন।[৩]
আরও দেখুন
সম্পাদনাতথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "১ম জাতীয় সংসদে নির্বাচিত মাননীয় সংসদ-সদস্যদের নামের তালিকা" (পিডিএফ)। জাতীয় সংসদ। বাংলাদেশ সরকার। ৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা।
- ↑ "সিলেট-৪ আসন: সংসদ নির্বাচনের সেকাল-একাল"। সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম। ৩ জানুয়ারি ২০১৯। ২৬ অক্টোবর ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ অক্টোবর ২০১৯।
- ↑ ক খ গ ঘ "নির্বাচনের ইতিহাসে সিলেট-৫ আসন"। sylhetreport.com। সংগ্রহের তারিখ ২৬ অক্টোবর ২০১৯।
- ↑ জৈন্তিয়ার ইতিহাস ও ঐতিহ্য।