হাবিবুর রহমান (চুয়াডাঙ্গার রাজনীতিবিদ)

বাংলাদেশী রাজনীতিবিদ

মাওলানা হাবিবুর রহমান (আনু. ১৯৩৫–২৩ সেপ্টেম্বর ২০১০) বাংলাদেশের চুয়াডাঙ্গা জেলার রাজনীতিবিদ, ইসলামি বক্তা ও চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন।[১][২]

মাওলানা

হাবিবুর রহমান
হাবিবুর রহমান (চুয়াডাঙ্গার রাজনীতিবিদ).jpg
চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের সংসদ সদস্য
কাজের মেয়াদ
২৭ ফেব্রুয়ারি ১৯৯১ – ১৫ ফেব্রুয়ারি ১৯৯৬
পূর্বসূরীহাবিবুর রহমান হবি
উত্তরসূরীমোজাম্মেল হক
ব্যক্তিগত বিবরণ
জন্মআনু. ১৯৩৫
চাপড়া, নদিয়া জেলা, বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি, ব্রিটিশ ভারত
(বর্তমান পশ্চিমবঙ্গ)
মৃত্যু২৩ সেপ্টেম্বর ২০১০
লোকনাথপুর, দামুড়হুদা উপজেলা, চুয়াডাঙ্গা জেলা
রাজনৈতিক দলবাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী
প্রাক্তন শিক্ষার্থীঢাকা আলিয়া মাদ্রাসা

প্রাথমিক জীবনসম্পাদনা

হাবিবুর রহমান আনু. ১৯৩৫ সালে ভারতের নদিয়া জেলার চাপড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৫০ সালে পারিবারিক ভাবে চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদার হোগলডাঙ্গা গ্রামে বসবাস শুরু করেন। তিনি প্রথমে কুমিল্লা কামরাঙ্গীরচর ও পরে ঢাকা আলীয়া মাদরাসা থেকে কামিল পাস করেন।[৩]

রাজনৈতিক জীবনসম্পাদনা

হাবিবুর রহমান বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিশে শূরার সদস্য ছিলেন। তিনি ১৯৬০ সালে ছাত্র সংঘ ও ১৯৬৯ সালে জামায়াতে যোগদান করেন।[৩] ১৯৯১ সালের পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী হিসেবে চুয়াডাঙ্গা-২ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।[১][৪] ১২ জুন ১৯৯৬ সালের সপ্তম ও ২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি জামায়াতের প্রার্থী হিসেবে চুয়াডাঙ্গা-২ আসন থেকে পরাজিত হয়েছিলেন।[৫]

যুদ্ধাপরাধ বিতর্কসম্পাদনা

হাবিবুর রহমান মুক্তিযুদ্ধের সময় চুয়াডাঙ্গার জীবননগরের শান্তি কমিটির সভাপতি ছিলেন ও তার নেতৃত্বে কয়াগ্রামের মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রাজ্জাককে হাসাদহ ক্যাম্পে নিয়ে হত্যা ও পরে তার লাশ গুম করে ফেলা হয় বলে অভিযোগ করা হয়েছিলো। ১ জানুয়ারী ১৯৭২ সালের তাকে দালাল আইনে গ্রেফতার করা হয় ও দালাল আইনে সাজাপ্রাপ্ত ৭৫২ যুদ্ধাপরাধীর সাথে তাকেও সাজা দেয়া হয়েছিলো। জিয়াউর রহমান সরকার দালাল আইন বাতিল করলে অন্যদের সাথে তিনিও ছাড়া পান।[৬][৭][৮]

তাছাড়াও ১৯৯১ সালে জাতীয় সংসদে তিনি বিএনপির উপর ক্ষুদ্ধ হয়ে ‘‘কার অছিলায় শিন্নি খাইল্যা.. মোল্লা চিনলা না’’ বলে মন্তব্য করে সারাদেশে আলোচিত হন।[৩]

মৃত্যুসম্পাদনা

হাবিবুর রহমান ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১০ সালে চুয়াডাঙ্গা জেলার দামুড়হুদা উপজেলার লোকনাথপুরের নিজ বাসভবনে বার্ধ্যক্য জনিত অসুস্থতা কারণে মৃত্যুবরণ করেন।[৩]

তথ্যসূত্রসম্পাদনা

  1. "৫ম জাতীয় সংসদে নির্বাচিত মাননীয় সংসদ-সদস্যদের নামের তালিকা" (পিডিএফ)জাতীয় সংসদবাংলাদেশ সরকার। ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। 
  2. চুয়াডাঙ্গা, রেজাউল করিম লিটন, জাহিদ বাবু (১৯ নভেম্বর ২০১৮)। "একাদশ জাতীয় সংসদ নিবার্চন চুয়াডাঙ্গা-২, আ'লীগে ৭, বিএনপিতে ২ জন"দৈনিক যায়যায়দিন। ১০ জুলাই ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১০ জুলাই ২০২০ 
  3. সংবাদদাতা, দামুড়হুদা, চুয়াডাঙ্গা (২৫ সেপ্টেম্বর ২০১০)। "মাওলানা হাবিবুর রহমানের দাফন সম্পন্ন"দৈনিক সংগ্রাম। ১০ জুলাই ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১০ জুলাই ২০২০ 
  4. "১৯৯১ সালে জামায়াত মনোনীত নির্বাচিত এমপি ছিলেন যারা"বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। ২০১৯-০৯-০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৭-১০ 
  5. "হাবিবুর রহমান, আসন নং: ৮০, চুয়াডাঙ্গা-২, দল: জামায়াতে ইসলামী (দাঁড়িপাল্লা)"দৈনিক প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ১০ জুলাই ২০২০ 
  6. "মাওলানা হাবিবুর রহমান - চুয়াডাঙ্গার কুখ্যাত রাজাকার"। সাপ্তাহিক ২০০০। ২৬ ডিসেম্বর ২০০৮। 
  7. রাজীব আহমেদ। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ চুয়াডাঙ্গা জেলা। পৃষ্ঠা ৩০০। 
  8. এএসএম সামছুল আরেফিন (১৯৯৯)। রাজাকার ও দালাল অভিযোগে গ্রেফতারদের তালিকাবাংলাদেশ: বাংলাদেশ রিসার্চ অ্যান্ড পাবলিকেশন্স। পৃষ্ঠা ৬২।