হাঙর নদী গ্রেনেড (চলচ্চিত্র)
হাঙর নদী গ্রেনেড ১৯৯৭ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধভিত্তিক বাংলাদেশী চলচ্চিত্র। সেলিনা হোসেন এর উপন্যাস হাঙর নদী গ্রেনেড অবলম্বনে নির্মিত এই ছবিটি পরিচালনা করেছেন বাংলাদেশের বিখ্যাত চলচ্চিত্রকার চাষী নজরুল ইসলাম।[১] ছবিতে বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন সুচরিতা, সোহেল রানা, অরুণা বিশ্বাস, অন্তরা, ইমরান, দোদুল ও আশিক প্রমুখ।[২]
হাঙর নদী গ্রেনেড | |
---|---|
পরিচালক | চাষী নজরুল ইসলাম |
চিত্রনাট্যকার | চাষী নজরুল ইসলাম |
উৎস | সেলিনা হোসেন কর্তৃক হাঙর নদী গ্রেনেড |
শ্রেষ্ঠাংশে |
|
সুরকার | শেখ সাদী খান |
চিত্রগ্রাহক | জেড এইচ পিন্টু |
সম্পাদক | সৈয়দ মুরাদ |
পরিবেশক | চাষী চলচ্চিত্র |
মুক্তি | ২১ নভেম্বর, ১৯৯৭ |
স্থিতিকাল | ১১৩ মিনিট |
দেশ | বাংলাদেশ |
ভাষা | বাংলা |
কাহিনি সংক্ষেপ
সম্পাদনাগ্রামের দুরন্ত কিশোরী বুড়ির অল্প বয়সে বিয়ে হয় তার থেকে দ্বিগুণ বয়স্ক গফুরের সাথে। গফুরের আগের ঘরের দুই সন্তান, সলিম আর কলিম। দুজনকেই বুড়ি ভালোবাসে। তাও সে তার নিজের সন্তান চায়। জন্ম হয় তার নিজের সন্তান রইসের। কিন্তু অনেক সাধনার সন্তান রইস হয় বাক-প্রতিবন্ধী। ইতিমধ্যে গফুর মারা যায়। বড় ছেলে সলিমের বিয়ে হয়। ঘরে আসে নতুন বউ রমিজা। শুরু হয় যুদ্ধ। সলিম চলে যায় যুদ্ধে। বাড়িতে রেখে যায় কলিমকে মায়ের দেখাশুনার জন্য। পাকিস্তানিদের দোসরদের কাছে এই খবর পেয়ে মেজর কলিমকে ধরে নিয়ে যায় এবং মুক্তিযোদ্ধাদের খবর দেওয়ার জন্য কলিমকে মারধোর করে। এক পর্যায়ে তারা কলিমকে তার মায়ের সামনে গুলি করে হত্যা করে।
যুদ্ধ আরও ভয়াবহরূপ ধারণ করে। রমিজার বাবা রমিজাকে নিয়ে যায়। গ্রামের রমজান আলীর দুই ছেলে যুদ্ধে গেছে যেনে ক্যাম্পে নিয়ে তাকে নির্যাতন করা হয়। এক রাতে অপারেশন চালিয়ে কোণঠাসা হয়ে দুই যোদ্ধা তার বুড়ির বাড়িতে আশ্রয় নেয়। তাদের পিছে ধাওয়া করে পাকিস্তানি বাহিনী তার বাড়িতে পৌঁছে। দেশপ্রেমের অগ্নিপরীক্ষায় একজন মা, মুক্তিযোদ্ধাদের বাঁচাতে তার নিজের আকাঙ্ক্ষিত সন্তানকে তুলে দেয় পাক বাহিনীর বন্দুকের নলের মুখে।
কুশীলব
সম্পাদনা- সুচরিতা - বুড়ি
- সোহেল রানা - গফুর, বুড়ির স্বামী
- অরুণা বিশ্বাস - বৈষ্ণবী, বুড়ির বান্ধবী
- অন্তরা - রমিজা, বুড়ির সৎ ছেলে সলিমের স্ত্রী
- বিজয় চৌধুরী - রইস (বুড়ির ছেলে)
- ইমরান -
- দোদুল -
- আশিক -
- রাজিব - রমজান আলী
- শওকত আকবর - বুড়ির বাবা
- শর্মিলী আহমেদ - বুড়ির মা
- মিজু আহমেদ - পাকিস্তানি মেজর
- নাসির খান - মনসুর
- চাষী নজরুল ইসলাম - রমিজার বাবা
নির্মাণ
সম্পাদনাবাংলাদেশের প্রখ্যাত নারী ঔপন্যাসিক সেলিনা হোসেন এর বিখ্যাত উপন্যাস হাঙর নদী গ্রেনেড অবলম্বনে ভারতীয় চলচ্চিত্র নির্মাতা সত্যজিৎ রায় একটি চলচ্চিত্র নির্মাণ করতে চেয়েছিলেন। ১৯৭৫ সালের ১৩ আগস্ট সেলিনা হোসেনকে লেখা এক চিঠিতে তিনি এ উপন্যাসের প্রশংসা করেন এবং চলচ্চিত্রে রুপ দেওয়ার আশা পোষণ করেন। কিন্তু তৎকালীন বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক অবস্থার কারণে চলচ্চিত্রটি নির্মাণ করা যায়নি।[৩] সত্যজিৎ রায় এর মৃত্যুর পরে বাংলাদেশী চলচ্চিত্রকার চাষী নজরুল ইসলাম ১৯৯৩ সালে এটি নির্মাণ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। নির্মাণ শেষে ১৯৯৭ সালে ছবিটি মুক্তি দেয়া হয়।
সঙ্গীত
সম্পাদনাহাঙর নদী গ্রেনেড ছবির সঙ্গীত পরিচালনা করেছেন শেখ সাদী খান।
সম্মাননা
সম্পাদনা- বিজয়ী: শ্রেষ্ঠ পরিচালক - চাষী নজরুল ইসলাম
- বিজয়ী: শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী - সুচরিতা
- বিজয়ী: শ্রেষ্ঠ কাহিনিকার - সেলিনা হোসেন
আরও দেখুন
সম্পাদনাতথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ পল্লব ভট্টাচার্য (৩০ মার্চ ২০১০)। "From page to screen"। দ্য ডেইলি স্টার (ইংরেজি ভাষায়)। ঢাকা, বাংলাদেশ। সংগ্রহের তারিখ ২২ এপ্রিল ২০১২।
- ↑ "চোখে ভাসে 'হাঙর নদী গ্রেনেড'"। দ্য রিপোর্ট। ঢাকা, বাংলাদেশ'। ৪ অক্টোবর ২০১৪। সংগ্রহের তারিখ ১৮ মার্চ ২০১৬।
- ↑ "হাঙর নদী গ্রেনেড বানাতে চেয়েছিলেন সত্যজিৎ রায়"। বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম। ঢাকা, বাংলাদেশ। ১২ জানুয়ারি ২০১৫। সংগ্রহের তারিখ ১৮ মার্চ ২০১৬।
বহিঃসংযোগ
সম্পাদনা- ইন্টারনেট মুভি ডেটাবেজে হাঙর নদী গ্রেনেড (ইংরেজি)
- বাংলা মুভি ডেটাবেজে হাঙর নদী গ্রেনেড