হাইগেনের ঘড়ি (Huygen's clock) হলো দোলক ঘড়ির একটি উন্নততর সংস্করণ। দোলক ঘড়ির বব বৃত্তীয় বক্রপথে দোলে। এজন্য এই ঘড়ির দোলন-কম্পাঙ্ক তার দোলন-বিস্তারের উপর নির্ভরশীল হয়ে থাকে। যত বেশি বিস্তারে দুলতে দেয়া হয়, কেন্দ্রে ফেরত আসতে ববের তত বেশি সময় লাগে।

১৬৩৭ খ্রিস্টাব্দের দিকে গ্যালিলিও গ্যালিলেই পেন্ডুলাম ঘড়ি প্রবর্তন করেন। এটি পেন্ডুলাম ঘড়ির প্রথম দিকের সংস্করণ।
ভিয়েনা রেগুলেটর সংস্করণের পেন্ডুলাম দেয়াল ঘড়ি।

ববটি যদি একটি সাইক্লয়েডীয় বক্রপথে দুলতো, তাহলে আর এই সমস্যাটি থাকতো না। কারণ সাইক্লয়েডের বৈশিষ্ট্য হলো, এর উপরকার যেকোন দুটি বিন্দু হতে মহাকর্ষের প্রভাবে কেন্দ্রে গড়িয়ে আসতে কোন বস্তুর একই পরিমাণ সময় লাগে। ১৬৭৩ সালে ওলন্দাজ গণিতবিদ, পদার্থবিজ্ঞানী এবং জ্যোতির্বিদ ক্রিশ্চিয়ান হাইগেনস(Christiaan Huygens) সমুদ্র-সমতলে নিখুঁতভাবে দ্রাঘিমাংশ পরিমাপ করার প্রয়োজনে এমন একটি দোলক ঘড়ি তৈরি করেন যার ববটি একটি সাইক্লয়েডীয় বক্রপথে দোলে।[১] তার নামানুসারে এই ঘড়ির নাম দেয়া হয় হাইগেনের ঘড়ি। তিনি ববটিকে সূক্ষ্ম সুতার সাহায্যে ঝুলিয়ে দেন এবং দোলন নিয়ন্ত্রণের জন্য সুতাকে কেন্দ্রে রেখে দুই পাশে দুইটি সাইক্লয়েড আকৃতির দন্ড সংযোজন করেন। ফলে দোলনের সময় যেকোন পাশে ববটি যখন কেন্দ্র থেকে দূরে সরতে থাকে, সুতাটি একটু একটু করে সাইক্লয়েড আকৃতির দন্ডের সংস্পর্শে আসতে থাকে, যার দরুন ববের অনুসৃত গতিপথটি হয় সাইক্লয়েডীয়।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Milham, Willis I. (১৯৪৫)। Time and Timekeepers। New York: MacMillan। আইএসবিএন 0-7808-0008-7 , p.330, 334