হলদিয়া বন্দর
হলদিয়া বন্দর বা আনুষ্ঠানিকভাবে হলদিয়া ডক কমপ্লেক্স (এইচডিসি) হল নদীতীরস্থ একটি বন্দর। বন্দরটি গভীর সমুদ্র (স্যান্ডহেড) থেকে প্রায় ১২১ কিলোমিটার (৭৫ মাইল) অভ্যন্তরে এবং কলকাতা থেকে ১০৪ কিলোমিটার (৬৫ মা) ভাটিতে পশ্চিমবঙ্গের হলদিয়া শহরে হুগলি নদীর পশ্চিম তীরে অবস্থিত। এটি ১৯৬০-এর দশকে স্বাধীন ভারতে বিকশিত হয়েছিল, এবং কলকাতা বন্দরের সহযোগী বন্দর হিসাবে ১৯৭৭ খ্রিস্টাব্দে আনুষ্ঠানিকভাবে কার্যক্রম শুরু করেছিল। বন্দরের ডক ব্যবস্থাটি জলকপাট দ্বারা বদ্ধ একটি ডক ও নদীতীরস্থিত জেটিসমূহ নিয়ে গঠিত।[৫] হলদিয়া বন্দরটি মূলত সম্পূর্ণ পণ্যবোঝাই হ্যান্ডিসাইজ জাহাজ পরিচালনা করে, তবে সর্বোচ্চ গভীরতা ৯ মিটারের বেশি এবং বন্দরটিতে সর্বোচ্চ ২৩০ মিটার দীর্ঘ জাহাজ নোঙর করতে পাড়ে।[৬]
হলদিয়া বন্দর | |
---|---|
অবস্থান | |
দেশ | ভারত |
অবস্থান | হলদিয়া, পশ্চিমবঙ্গ |
স্থানাঙ্ক | ২১°১২′ উত্তর ৮৮°০০′ পূর্ব / ২১.২০° উত্তর ৮৮.০০° পূর্ব |
বিস্তারিত | |
চালু | ১৯৬৭ |
পরিচালনা করে | কলকাতা বন্দর কর্তৃপক্ষ |
মালিক | জাহাজ মন্ত্রক, ভারত সরকার |
পোতাশ্রয়ের ধরন | কৃত্রিম নদী বন্দর |
উপলব্ধ নোঙরের স্থান | ১৪ |
জেটি | ৬ |
জেনারেল ম্যানেজার | অমল দত্ত |
প্রতাশ্রয়ের গভীরতা | ৮.৫ মিটার (২৮ ফু) |
পরিসংখ্যান | |
জলযানের আগমন | ২,২৬২ (২০১৮-২০১৯) [১] |
বার্ষিক কার্গো টন | ৪৭ মিলিয়ন টন (২০১৯-২০২০)[২][৩][৪] |
বার্ষিক কন্টেইনারের আয়তন | ১,৭৮,০০০ টিইইউ (২০১৮-২০১৯)[২] |
শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জী পোর্টের (কলকাতা) অন্তর্গত হলদিয়া বন্দর বা হলদিয়া ডক কমপ্লেক্সের পশ্চাদভূমি পশ্চিমবঙ্গ, ঝাড়খণ্ড, বিহার, উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ ও উত্তর-পূর্ব ভারত, ভারতের ভূমিবেষ্টিত প্রতিবেশী রাষ্ট্র নেপাল ও ভুটানকে নিয়ে গঠিত। বন্দরটি মূলত বাল্ক পণ্য পরিবহন করে; ২০২২–২৩ অর্থবর্ষের তথ্য অনুযায়ী, বন্দরটি ৪ কোটি ৮৬ লাখ মেট্রিক টন (৪৮.৬ মিলিয়ন টন) পণ্য পরিচালনা করতে সক্ষম হয়েছিল, যার বেশিরভাগই পশ্চিমবঙ্গ, ঝাড়খণ্ড, বিহার ও উত্তরপ্রদেশ মত রাজ্যগুলিতে পরিবহণ করা হয়। বাল্ক পণ্য পরিবহনের পরিমাণ অনুযায়ী, বন্দরটি ২০২৩ খ্রিস্টাব্দের কলকাতা ডক ব্যবস্থার সহ গঠিত শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জী পোর্টের (কলকাতা বন্দর) সহিত ভারতের পঞ্চম ব্যস্ততম বন্দর ছিল।
অবস্থান ও ভূগোল
সম্পাদনাহলদিয়া বন্দর সমুদ্র সমতল থেকে ৮ মিটার উচ্চতায় এবং ২১.২০ উত্তর ও ৮৮.০৬ পূর্বে অবস্থিত। এটি জলপথে পারাদ্বীপের ১৫৬ নটিক্যাল মাইল উত্তরে, এবং কলকাতা থেকে নদীপথে ১০৪ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত। অবস্থিত। এটি পূর্ব ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের দক্ষিণ অংশে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার তমলুক মহকুমায়য় হুগলি নদী ও হলদি নদীর মিলন স্থানে হুগলি হুগলি নদীর পশ্চিম উপকূলে গড়ে উঠেছে। বন্দরটি কলকাতা মহানগর থেকে নদী বা জলপথে ৯০ কিলোমিটার দূরে এবং বঙ্গোপসাগর থেকে নদী পথে ৪০ কিলোমিটার অভ্যন্তরে অবস্থিত।
হলদিয়া বন্দরটি ভারতের পূর্ব উপকূলে নিন্ম গাঙ্গেয় সমভূমিতে অবস্থিত যা গাঙ্গেয় সমভূমি নামে পরিচিত একটি সমতল সমভূমির অংশ; ভূমি ঢাল মোটামুটি সমতল। হলদিয়ায় ঋতুভেদে তাপমাত্রার তারতম্য রয়েছে। এপ্রিল ও মে হল উষ্ণতম মাস, যেখানে ডিসেম্বর ও জানুয়ারি শীতলতম মাস। এখন পর্যন্ত নথিভুক্ত সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪৪.৯০ সে (মে) ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৬.৯০ সে (ডিসেম্বর), যা ১৯৭৫ খ্রিস্টাব্দে নথিভুক্ত করা হয়েছিল। জুন থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ু থেকে বন্দরটি তার বেশিরভাগ মৌসুমী বৃষ্টিপাত পায়, এই সময়ের গড় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ২৫০ মিমি। মাঝেমধ্যেই বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় উপকূলে আঘাত হানে। নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত উত্তর-পশ্চিম মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে মাসিক গড় বৃষ্টিপাত ৫০ মিমি-এর কম হয়। এই অঞ্চলে বার্ষিক গড় বৃষ্টিপাত প্রায় ১৫০০ মিমি।
এটি পলিমাটি দ্বারা গঠিত ভূমিতে অবস্থিত, যা মূলত হুগলী ও হলদি নদীর দ্বারা বাহিত পলি থেকে গঠিত। বন্দরের পার্শ্ববর্তী অঞ্চলটি তৃতীয় শ্রেণির ভূমিকম্প প্রবণ অঞ্চলের অধীনে পড়ে যা ভূমিকম্পের একটি মাঝারি ঝুঁকি নির্দেশ করে। কোনো প্রাকৃতিক পোতাশ্রয় না থাকায় ডকটি নদীর তীরবর্তী ভূমি খনন করে গড়ে তোলা হয়। সর্বোচ্চ গভীরতা ১২.৫ মিটার (৪১ ফু) পর্যন্ত এবং প্রবেশ পথের মাটি প্রধানত পলিযুক্ত। পোতাশ্রয় অঞ্চলে দৃশ্যমানতা সারা বছর ভাল থাকে এবং কম দৃশ্যমানতা সাধারণত দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে ঘটা ভারী বৃষ্টির সঙ্গে যুক্ত। নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত প্রতি মাসে গড়ে ৫-৭ দিন সকালে কুয়াশা দেখা যায়।
ইতিহাস
সম্পাদনাপ্রেক্ষাপট
সম্পাদনাকলকাতা বন্দর কর্তৃপক্ষের কলকাতাস্থিত শতাব্দী প্রাচীন বন্দরের নৌ-চ্যানেলের স্বল্প নাব্যতার কারণে কলকাতা ডক ব্যবস্থা সমুদ্রগামী বৃহৎ জাহাজ পরিচালনা করতে অক্ষম ছিল। এই অক্ষমতা কলকাতা ও পূর্ব ভারতের অর্থনীতিকে হুমকির মধ্যে ফেলেছিল। পলি জমা ও বালির ডুবো চরের কারণে কলকাতা বন্দর দীর্ঘকাল ধরে নৌ চলাচলের সমস্যার সম্মুখীন হয়েছিল এবং জাহাজ চলাচলের জন্য একটি বিকল্প উপায় প্রয়োজন ছিল, যার ফলে পশ্চিমবঙ্গ সরকার কলকাতার একটি সহায়ক বন্দর স্থাপনের সম্ভাবনা বিবেচনা করে।
১৯৫০-এর দশকে, মোহনার কাছে হুগলি নদীর নীচে একটি বন্দরের উপযুক্ত অবস্থানের জন্য অনুসন্ধান চলেছিল, যেখানে নাব্যতার সমস্যা হবে না এবং বড় জাহাজের জন্য পর্যাপ্ত খসড়া সরবরাহ করবে। বিভিন্ন সম্ভাব্য স্থানগুলির মধ্যে, কলকাতা থেকে ৬০ কিলোমিটার দক্ষিণে জিওনখালি ছিল হলদিয়ার একটি গুরুতর প্রতিদ্বন্দ্বী। জিওনখালিতে সারা বছর ২৬ ফুটের নাব্যতা ছিল, এবং ৫৩০ ফুটের বেশি লম্বা জাহাজের অনুমতি দিতে সক্ষম।
হলদিয়া প্রকল্পের প্রতিবেদনটি ১৯৫৯ খ্রিস্টাব্দে যুক্তরাজ্যের বন্দরের পরামর্শক, রেন্ডেল পামার ট্রিটন (আরপিটি) দ্বারা তৈরি করা হয়েছিল। হলদিয়ার নাব্যতা ছিল সমস্ত দিনের জন্য ৩০ ফুট, ২৩৮ দিনের জন্য ৩২ ফুট এবং বছরে ৩৯ দিনের জন্য ৩৫ ফুট। এটি প্রত্যাশিত ছিল যে ড্রেজিং এবং নদী প্রশিক্ষণের কাজগুলির সঙ্গে, নাব্যতা বাড়বে এবং ১৯৮৫ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে, ৮০,০০০ ডিডব্লিউটি আকারের জাহাজগুলি হলদিয়ায় আসতে সক্ষম হবে। হলদিয়ার নৌপথে কেবল দুটি বালির ডুবো চর ছিল–অকল্যান্ড ও মিডলটন। ১৯৬০-এর দশকে নির্মিত বারাউনি শোধনাগারের জন্য প্রয়োজনীয় অপরিশোধিত তেল ও পেট্রোলিয়াম পণ্য পরিবহনের জন্য একটি তেল জেটির তাত্ক্ষণিক প্রয়োজন অনুভূত হয়, যা নতুন বন্দর নির্মাণের পরিকল্পনাকে পুষ্ট করেছিল।
কলকাতা পোর্ট কমিশনারস: ১৯৭৫ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত
সম্পাদনাপ্রাথমিক সময়কালে, তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী ডঃ বিধানচন্দ্র রায় কলকাতার একটি উপগ্রহ বন্দর স্থাপনের জন্য গেঁওখালিকে একটি উপযুক্ত স্থান হিসাবে বেছে নিয়েছিলেন এবং উন্নত পরিবহনের জন্য রেল যোগাযোগের মাধ্যমে এটিকে কোলাঘাটের সঙ্গে যুক্ত করার পরিকল্পনা করেছিলেন। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বিভিন্ন প্রচেষ্টা সত্ত্বেও, গেঁওখালি প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হয়নি কিন্তু বিকল্পভাবে নদীর ডান তীরে হলদিয়াকে কলকাতার সহায়ক বন্দর হিসাবে নির্বাচিত করা হয়েছিল। এটি তুলনামূলকভাবে অধিক নাব্য নৌপথে অবস্থিত ছিল, এবং প্রস্তাবিত গেঁওখালি এলাকার চেয়ে সমুদ্রের কাছাকাছি ছিল; এছাড়া মোটামুটি সোজা নৌচলাচল পথ ও চ্যানেলে মাত্র তিনটি ডুবো চর ছিল। নতুন বন্দরের জন্য প্রকল্প প্রতিবেদন ১৯৫৯ খ্রিস্টাব্দে তৈরি করা হয়েছিল কিন্তু কিছু প্রযুক্তিগত সমস্যার কারণে বিলম্বিত হয়েছিল। মহাপরিকল্পনায় জলকপাট সহ দুটি প্রবেশপথ, ৪৭ টি বার্থ, নদীর তীরে দুটি তেল জেটি এবং দুটি বড় আকারের ড্রাই ডক সহ একটি ত্রিশূল সাদৃশ্য ডক নির্মাণের কল্পনা করা হয়েছিল।
বঙ্গোপসাগরের নিকটবর্তী হওয়ার কারণে, হলদিয়াকে ১৯৬০-এর দশকের প্রথম দিকে বড় জাহাজ পরিবহনের জন্য নকশা করা হয়েছিল। ৭ কোটি বৈদেশিক অর্থ সহ ৪০ কোটি টাকা ব্যয়ে হলদিয়া ডক নির্মাণের প্রস্তাবটি কলকাতা বন্দরের কমিশনারগণ ১৯৬৬ খ্রিস্টাব্দের ২৬শে সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত বৈঠকে অনুমোদন করেছিলেন। হলদিয়া অঞ্চলটি প্রথম নদীবন্দর হিসাবে ১৯৬০-এর দশকের শেষের দিকে বিকশিত হয়েছিল। ডকের জন্য নির্মাণ ১৯৬৭ খ্রিস্টাব্দে শুরু হয়েছিল। প্রথম পর্যায়ে, মাত্র ৭ টি বার্থ এবং একটি একক তেল জেটি নির্মাণাধীন নেওয়া হয়েছিল। প্রথম তেল জেটির নির্মাণ ১৯৬৫ খ্রিস্টাব্দে শুরু হয়েছিল, যা ১৯৬৮ খ্রিস্টাব্দে বারাউনি শোধনাগারের সঙ্গে সংযোগকারী পাইপলাইনের সাথে সম্পন্ন হয়েছিল।
কলকাতা পোর্ট কমিশনার ১৯৬৬ খ্রিস্টাব্দে হলদিয়া প্রকল্পের অধীনে ড্রেজিংয়ের কাজটি ইভান মিলুটিনোভিক – পিআইএম-এর কাছে অর্পণ করেছিল; সংস্থাটি পারাদ্বীপ বন্দর প্রকল্পের জন্য সফলভাবে ড্রেজিং সম্পন্ন করেছিলেন। হলদিয়া ড্রেজিং চুক্তির অধীনে সংস্থাটিকে ২.৮৬ কোটি টাকা প্রদান করা হয়েছিল। চুক্তিতে তেল জেটির সামনে, জলকপাটের প্রবেশপথে এবং ডকে ১৫ লাখ ঘনমিটার (১.৫ মিলিয়ন) পলি ড্রেজিং জড়িত ছিল। ড্রেজ করা পলি ডকের কাছাকাছি নিচু জমিতে জমা করা হয়েছিল। ড্রেজিংয়ের কাজটি ১৯৬৬ খ্রিস্টাব্দে শুরু হয়ে ১৯৬৯ খ্রিস্টাব্দে শেষ হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু ডাচ সংস্থার ড্রেজারগুলি ১৯৭৩ খ্রিস্টাব্দ থেকে ১৯৭৫ খ্রিস্টাব্দে পর্যন্ত মোতায়েন করা হয়েছিল। ড্রেজিংয়ের জন্য প্রতিদিন ১.৪৯ লাখ টাকা ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছিল। ড্রেজার হ্যাম-৩০৮ অকল্যান্ডে (হুগলি নদীর একটি ডুবো চর) এবং ড্রেজার ডেল্টা বে মিডলটনে (হুগলি নদীর আরেকটি ডুবো চর) মোতায়েন করা হয়েছিল। প্রস্তাবিত অনুমান ছিল যে ৭ কোটি ৬ লাখ ঘনমিটার (৭৬ মিলিয়ন) পলি ড্রেজিং বছরে ৩২০ দিনের জন্য ১২.২ মি নাব্যতা দেবে এবং ৩ কোটি ঘনমিটার (৩০ মিলিয়ন) পলি ড্রেজিং সারা বছর ১০.৬৭ মি নাব্যতা দেবে।
কলকাতা পোর্ট ট্রাস্ট: ১৯৭৫–বর্তমান
সম্পাদনাশেষ পর্যন্ত ১৯৭৭ খ্রিস্টাব্দে, হলদিয়া বন্দর চালু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে হলদিয়া ডক কমপ্লেক্স গতি পায়। হলদিয়া ডক কমপ্লেক্স, কলকাতা পোর্ট ট্রাস্টের একটি আধুনিক ডক কমপ্লেক্স, ১৯৭৭ খ্রিস্টাব্দে বৃহত্তর জাহাজ পরিচালনার জন্য, সর্বোত্তম অর্থনীতির সঙ্গে বাল্ক কার্গো বহন করার জন্য স্থাপন করা হয়েছিল। হলদিয়া ডক কমপ্লেক্স প্রথম অর্থবর্ষে (১৯৭৫-৭৬) নির্ধারিত পণ্য পরিচালনার পরিমাণ ছিল ২ কোটি ১ লাখ (২১ মিলিয়ন) মেট্রিক টন, যা কলকাতা ডক ব্যবস্থার তুলনায় ২.৫ গুনের বেশি।
ডাচ ড্রেজিং সংস্থাটি ১৯৭৭ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত ৫ কোটি ঘনমিটার (৫০ মিলিয়ন ঘনমিটার) পলি ড্রেজ করেছিল, এবং মোট খরচ হয়েছিল ২৬ কোটি টাকা। ১৯৭৮ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে, মোট ড্রেজিংয়ের পরিমাণ ছিল ৮ কোটি ২ লাখ ঘনমিটার (৮২ মিলিয়ন ঘনমিটার), যার মধ্যে অকল্যান্ডে ৫ কোটি ঘনমিটার (৫০ মিলিয়ন ঘনমিটার), জেলিংহামে ২ কোটি ১ লাখ ঘনমিটার (২১ মিলিয়ন ঘনমিটার) এবং মিডলটনে ১ কোটি ১ লাখ ঘনমিটার (১১ মিলিয়ন ঘনমিটার)। তবে আনুমানিক মানের চেয়ে বেশি ড্রেজিং করা সত্ত্বেও, নাব্যতার উন্নতি সামঞ্জস্যপূর্ণ ছিল না। হলদিয়া প্রকল্পটি ১২.২ মিটারের নাব্যতার জন্য নকশা করা হয়েছিল, কিন্তু প্রয়োজনের চেয়ে বেশি ড্রেজিংয়ের পরেও, নাব্যতা ৯.৬৭ মিটারের বেশি হয়নি। ফলে, ড্রেজিং বন্ধ করে দেওয়া হয়; পরবর্তীতে শুধুমাত্র চ্যানেলের রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ড্রেজিং অব্যাহত রাখা হয়।
পরবর্তীতে বন্দরকে কেন্দ্র করে হলদিয়া শহর ও হলদিয়া শিল্পাঞ্চল গড়ে উঠেছিল। বন্দরের মাধ্যমে ১৯৬০-এর দশকে খনিজ তেল আমদানি শুরু হয়েছিল, যার ফলে হলদিয়া পরবর্তী দশকগুলিতে পশ্চিমবঙ্গ ও সমগ্র পূর্ব ভারতের প্রথম পেট্রোকেমিক্যাল হাব হিসেবে বিকশিত হয়েছিল। এইভাবে, ১৯৯০-এর দশকের গোড়ার দিকে কেন্দ্রীয় সরকার কর্তৃক নতুন অর্থনৈতিক নীতি (এনইপি) গৃহীত হওয়ার অনেক আগে, হলদিয়া বন্দর ও শিল্পাঞ্চলকে বেসরকারি উদ্যোক্তাদের ও বিদেশী পুঁজির জন্য একটি মরূদ্যানে পরিণত হয়েছিল।
বন্দরের নৌ-চ্যানেলটি ২০০০-এর দশকের শেষের দিকে নাব্যতা সঙ্কটের সম্মুখীন হয়, যা বন্দরের স্বাভাবিক নৌ-চলাচলকে প্রভাবিত করেছিল। মূল নাব্যতা সঙ্কট দেখা দিয়েছিল নৌ-চ্যানেলের জেলিংহাম ও অকল্যান্ড স্যান্ডবারে, এই দুটি স্থানে আদর্শ নৌযানযোগ্য গভীরতা শূন্য জোয়ারে যথাক্রমে ৬.১ মিটার ও ৬.৩ মিটার ছিল। কলকাতা পোর্ট ট্রাস্ট কর্তৃক পরিচালিত ২০০৮ খ্রিস্টাব্দের অক্টোবর মাসের সমীক্ষায় দেখা যায় যে দুটি স্থানে গভীরতা কমে যথাক্রমে ৩.৯ মিটার ও ৪.৩ মিটার হয়েছে। নাব্যতা সঙ্কট থেকে মুক্তির জন্য, বন্দর কর্তৃপক্ষ লোয়ার অকল্যান্ডের বিকল্প চ্যানেল হিসাবে ইডেন চ্যানেল চালু করতে ২০১১ সালে একটি সমীক্ষায় পরিচালনা করেছিল। ইডেন চ্যানেলটি ২০১৬ খ্রিস্টাব্দে চালু করা হয়েছিল, যার অগভীর অংশেও গভীরতা শূন্য জোয়ারে ৬.২–৬.৯ মিটার (২০–২৩ ফু)।
চ্যানেলে নাব্যাত সঙ্কট, জাহাজ চলাচলে জোয়ার ও লকগেটের উপরে নির্ভরতার মত কারণসমূহ হলদিয়া ডকে পণ্য পরিবহনের পরিমাণ ২০০৯ খ্রিস্টাব্দ থেকে দ্রুত হারে হ্রাস করেছিল। ডকে জাহাজের চলাচল শুধুমাত্র উচ্চ জোয়ারের সময় ঘটে যা দিনে দুবার ঘটে, ফলে বন্দর ব্যবহারকারি সংস্থাগুলি ভারতের অন্যান্য পূর্ব-উপকূলীয় গভীর জলের বন্দরে স্থানান্তর করে। কলকাতা বন্দর কর্তৃপক্ষ ২০১৮ খ্রিস্টাব্দের মার্চ মাসে হলদিয়া ডক কমপ্লেক্সের অধীনে হলদিয়া ফ্লোটিং টার্মিনাল নামে পরিচিত একটি ভাসমান জেটি চালু করে, যা লকগেটের উপরে নির্ভরতার সম্পূর্ণভাবে অতিক্রম করে। এটি সর্বোচ্চ ১০–১২ হাজার ডিডব্লিউটি আকারের বার্জ/মিনি বাল্ক ক্যারিয়ার থেকে পণ্য খালাসে সক্ষম; বছরে পণ্য খালাসের সক্ষমতা ৪০ লাখ মেট্রিক টন। বন্দরের পণ্য পরিবহনে বৃদ্ধি ঘটাতে ২০১০-এর দশকের মাঝামাঝি সময় থেকে তরল পণ্যবাহী জাহাজ পরিচালনার ক্ষেত্রে লকগেট ও ডকের উপরের নির্ভরতা সমাপ্ত করার পরিকল্পনা করা হয়। ডকের মধ্যে পরিচালিত তরল পণ্য খালাসের সুবিধা নদীর তীরে স্থানান্তর করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। আউটার টার্মিনাল-২ ২০২২ খ্রিস্টাব্দে ২৩শে মার্চ চালু করা হয়, যার নির্মাণ কাজ ২০১৯ খ্রিস্টাব্দে ৫ই সেপ্টেম্বর শুরু হয়েছিল।
পশ্চাৎভূমি
সম্পাদনাবন্দরটি কলকাতা বন্দরের সহযোগী বন্দর হওয়ার কলকাতা বন্দরের পশ্চাৎ ভূমি হলদিয়া বন্দরের পশ্চাৎ ভূমিতে পরিণত হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ, ঝাড়খণ্ড, বিহার, মধ্যপ্রদেশ ও উত্তরপ্রদেশের পূর্ব অংশ, ওড়িশার উত্তর অংশ এবং উত্তর-পূর্ব ভারত হলদিয়া বন্দর পশ্চাৎ ভূমির অন্তর্গত। এই বিশাল পশ্চাৎ ভূমির পণ্যদ্রব্য হলদিয়া বন্দর দ্বারা আমদানি ও রপ্তানি করা হয়। ভারতের বাইরে নেপাল ও ভূটানের পণ্য কলকাতা বন্দর ছাড়াও হলদিয়া বন্দরের মধ্যমে পরিবহন করা হয়।
পরিকাঠামো
সম্পাদনানদী তীরবর্তী জেটি
সম্পাদনাতেল জেটি
সম্পাদনাহলদিয়া বন্দরে তরল পণ্য মূলত হুগলী নদীর পশ্চিম তীরস্থিত ১২.৫ মিটার নাব্যতা সম্পন্ন তিনটি তেল জেটি দ্বারা পরিবহন করা হয়। এই তেল জেটিগুলি ‘তেল জেটি ১’, ‘তেল জেটি ২’ ও ‘তেল জেটি ৩’ নামে পরিচিত। নির্মাণ নকশা ও পরিকাঠামো অনুযায়ী, তেল জেটি ১ ৮৯,০০০ ডিডব্লিউটি এবং তেল জেটি ২ ও ৩ ১,৫০,০০০ ডিডব্লিউটি আকারের ট্যাংকার হ্যান্ডেল করতে সক্ষম। তেল জেটি ১-এর সবচেয়ে দূরবর্তী দুটি মুরিং ডলফিনের মধ্যবর্তী দূরত্ব হল ২৯০ মিটার, যা সর্বোচ্চ ২০০ মিটার ও সর্বনিম্ন ৮৪ মিটার দৈর্ঘ্যের জাহাজকে ধারণ করার অনুমতি প্রদান করে। অপরদিকে তেল জেটি ২ ও ৩-এর সবচেয়ে দূরবর্তী দুটি মুরিং ডলফিনের মধ্যবর্তী দূরত্ব হল যথাক্রমে ৩৩০ মিটার ও ৩৪৫ মিটার; তেল জেটি ২ ও ৩ সর্বোচ্চ ২৫০ মিটার ও সর্বনিম্ন ১৬০ মিটার দৈর্ঘ্যের জাহাজকে ধারণ করার অনুমতি প্রদান করে।
তেল জেটি তিনটি বার্ষিক ১০.৭ মিলিয়ন টন পণ্য পরিবহনের সক্ষমতা সম্পন্ন, যার মধ্যে ‘তেল জেটি ১’, ‘তেল জেটি ২’ ও ‘তেল জেটি ৩’ এর বার্ষিক যথাক্রমে ২.৬ মিলিয়ন টন, ৩.৭ মিলিয়ন টন ও ৪.৪ মিলিয়ন টন পণ্য পরিবহনে সক্ষম।[৭] ‘তেল জেটি ১-এ মূলত পেট্রোলিয়াম, তেল ও পিচ্ছিলকারক পণ্য হ্যান্ডেলিং-এর সুবিধা রয়েছে, অপরদিকে ‘তেল জেটি ২’ ও ‘তেল জেটি ৩’-এ খনিজ তেল আমদানির পরিকাঠামো রয়েছে। জেটি তিনটির মাধ্যমে অশোধিত, পেট্রোলিয়াম পণ্য, নাফথা, এলপিজি, প্যারা জাইলিন, তরল অ্যামোনিয়া, এফও, বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিক ও ভোজ্য তেল পরিবহন করা হয়।[৭]
আউটার টার্মিনাল ২
সম্পাদনাজলকপাট ও তেল জেটি ২-এর মাঝে নদীর মধ্যে আউটার টার্মিনাল ২ অবস্থিত। টার্মিনালের বার্থ বা জেটি ৪ টি মুরিং ডলফিন ও একটি পরিষেবা ডেক নিয়ে গঠিত। সবচেয়ে দূরবর্তী দুটি মুরিং ডলফিনের মধ্যবর্তী দূরত্ব হল ২৭০ মিটার, অপরদিকে মধ্যবর্তী মুরিং ও দূরবর্তী মুরিং ডলফিনের মধ্যবর্তী দূরত্ব ৫৫ মিটার এবং মধ্যবর্তী মুরিং ও জেটির মধ্যবর্তী রেখার মধ্যবর্তী দূরত্ব ৮০ মিটার। পরিষেবা ডেকের দৈর্ঘ্য ১২ মিটার ও প্রস্থ ১৬ মিটার, এবং নদীর জলতল থেকে ৮.৭০ মিটার উচ্চতা সম্পন্ন। টার্মিনালটি সর্বোচ্চ ৯ মিটার নাব্যতা ও ১৮৫ মিটার দৈর্ঘ্যের জাহাজ ধারণ করতে সক্ষম। নির্মাণ নকশা ও পরিকাঠামো অনুযায়ী, আউটার টার্মিনাল ২ ৪০,০০০ ডিডব্লিউটি আকারের ট্যাংকার হ্যান্ডেল করতে সক্ষম। এটি মূলত ভোজ্য তেল খালাস করে।
ফ্লোটিং কার্গো হ্যান্ডলিং টার্মিনাল
সম্পাদনাফ্লোটিং কার্গো হ্যান্ডলিং টার্মিনালে বার্জ ও মিনি বাল্ক জাহাজ পরিচালনার পরিকাঠামো রয়েছে, এবং এর জেটিতে ১০,০০০-১২,০০০ ডিডব্লিউটি আকারের জাহাজ ভিড়তে সক্ষম। টার্মিনালের জেটিতে ৩ টি মুরিং ডলফিন ও ৬৬ মিটার দৈর্ঘ্যের বার্থ সহ স্থায়ী হপার ডেক রয়েছে। এই জেটিতে গভীর সমুদ্র ও সাগর নোঙ্গরখানায় বড় জাহাজ থেকে ছোট জাহাজে পণ্য পরিবহন করা আনা হয় এবং খালাস করা হয়। পণ্য, মূলত কয়লা, খালাসের জন্য স্থায়ী জেটিতে একটি ক্রেন রয়েছে, যা নোঙ্গরকৃত নৌযান থেকে পণ্য হপারে স্থানান্তর করে। আরেকটি ক্রেন মূল হপার প্ল্যাটফর্মের পাশাপাশি বার্থিং লাইনে একটি ৪৭ মিটার ও ২৪ মিটার চওড়া পন্টুনের উপরে রয়েছে। টার্মিনালের জেটির সর্বনিম্ন জলের গভীরতা ৮ মিটার, যা সহজেই মিনি বাল্ক জাহাজ পরিচালনা করতে সক্ষম। টার্মিনালটি বার্ষিক ২.৫৫ মিলিয়ন টন পণ্য পরিচালনা করতে সক্ষম।
কনভেয়ার বেল্টের মাধ্যমে জেটি থেকে নদীর তীরবর্তী ইয়ার্ডে পণ্য পরিবহন করা হয়। পণ্য মজুদ ইয়ার্ডটি ৪০০০ বর্গমিটার জুড়ে বিস্তৃত। পণ্য মজুদ ইয়ার্ড থেকে পণ্য পরিবহনের জন্য নির্বিঘ্নে যানবাহন চলাচল নিশ্চিত করতে টার্মিনালের সীমানা প্রাচীরের ভিতরে ১০.৫ মিটার প্রস্থ ক্যারেজওয়ে ১.৩০ কিমি দীর্ঘ সড়ক নেটওয়ার্ক রয়েছে।
ডক
সম্পাদনাবন্দরের ডকটি জলকপাট দ্বারা বদ্ধ, এবং এখানে মূলত বাল্ক পণ্য ও কন্টেইনার পরিচালনা করা হয়। ডক বেসিনে জলের সর্বোচ্চ গভীরতা হল ১২.৫ মিটার (৪১ ফু), যা সর্বোচ্চ ২৭৭ মিটার (৯০৯ ফু) দীর্ঘ জাহাজকে নোঙরের সক্ষমতা প্রদান করে। পাইলট স্টেশন থেকে ডক পর্যন্ত চ্যানেলের গড় গভীরতা ৮.৩ মিটার (২৭ ফু); সেই কারণে ডক চত্বরে সর্বোচ্চ ২৩০ মিটার (৭৫০ ফু) দীর্ঘ জাহাজ নোঙর করতে সক্ষম। জলকপাট বা লকগেটটি ৩৩০ মিটার দৈর্ঘ্য এবং ৩৯ মিটার প্রস্থ বিশিষ্ট। লকগেটের সঙ্গে হুগলি নদীর তীরের সমান্তরালে অ্যাপ্রোচ জেটি নামে পরিচিত একটি জেটি রয়েছে, যা মূলত লকগেটে প্রবেশের আগে জাহাজকে মুরিং সুবিধা প্রদান করে। ডকের মধ্যে একটি মাত্র টার্নিং বেসিন রয়েছে, যা ৫৪৫ মিটার ব্যাস বিশিষ্ট।
ডকে মোট ১৪ টি বার্থ রয়েছে, যেগুলি মধ্যে ৩ টি বার্থ সম্পূর্ণ যান্ত্রিক ব্যবস্থার মধ্যমে পণ্য হ্যান্ডেল করে। ডকের বার্থগুলির মধ্যে রয়েছে ৬ টি ড্রাই বাল্ক কার্গো বার্থ, ৩ টি লিকুইড কার্গো বার্থ, ৩ টি বহুমুখী বার্থ ও ২ টি ডেডিকেটেড কন্টেইনার বার্থ। বার্থগুলি সংখ্যা দ্বারা চিহ্নিত করা হয়, যেগুলি ২ থেকে ১৩ পর্যন্ত হতে পারে। শুষ্ক পণ্য পরিবহনের সুযোগ-সুবিধা ২ নং, ৪ নং, ৪এ নং, ৪বি নং, ৮ নং ও ১৩ নং বার্থে রয়েছে, যাদের মধ্যে ৪ নং ও ৪এ নং সম্পূর্ণ যান্ত্রিক ব্যবস্থার মধ্যমে পণ্য হ্যান্ডেল করা হয়।[৮] প্যানাম্যাক্স ও হ্যান্ডিম্যাক্স জাহাজে পণ্য বোঝাই ও খালাস করার জন্য ২ নং বার্থে দুটি মোবাইল হারবার ক্রেন (এমএইচসি) এবং টার্মিনালে পণ্য হ্যান্ডলিংয়ে প্রয়োজনীয় ডাম্পার, পে লোডার ও বুলডোজারের মত সরঞ্জাম পর্যাপ্ত সংখ্যায় রয়েছে।[৮]
হলদিয়া বন্দরে বহুমুখী টার্মিনাল ডক মধ্যস্থিত তিনটি বার্থ দ্বারা গঠিত। বার্থ তিনটি ‘৩ নং বার্থ’, ‘৯ নং বার্থ’ ও ‘১২ নং বার্থ’ নামে পরিচিত।[৯] টার্মিনালের মাধ্যমে শুষ্ক বাল্ক পণ্য, পরিষ্কার শুষ্ক বাল্ক পণ্য ও ব্রেক বাল্ক পণ্য পরিবহন করা হয়। ৩ নং বার্থে শুকনো বাল্ক পাশাপাশি ব্রেক বাল্ক পণ্য বোঝাই/খালাস করার সুবিধা রয়েছে ব্যবস্থা, কার্গো লোড/আনলোড মূলত জাহাজের গিয়ার ব্যবহার করা হয়। এই বার্থে স্থাপিত পাইপলাইনের মাধ্যমে ভোজ্য তেলও পরিচালনা করা হয়। ৯ নং বার্থে শুকনো বাল্ক পণ্য বোঝাই/খালাস করার সুবিধা রয়েছে সুবিধা রয়েছে হয়, অপরদিকে ১২ নং বার্থে পণ্য বোঝাই/খালাস করার জন্য আধা যান্ত্রিক পরিকাঠামো রয়েছে, যা মোবাইল হারবার ক্রেন, হপার ইত্যাদি দিয়ে সজ্জিত। ডাম্পার, পেলোডার ইত্যাদি দিয়ে উপকূলে অপারেশন করা হয়। ৯ নং ও ১২ নং বার্থের প্রতিটিতে পণ্যে সংরক্ষণের জন্য একটি করে গুদাম রয়েছে, যাদের সঞ্চয় এলাকার ক্ষেত্রফল যথাক্রমে ৯ হাজার ও ৩ হাজার বর্গমিটার। টার্মিনালটি বার্ষিক ৫.১ মিলিয়ন টন পণ্য পরিবহনের সক্ষমতা সম্পন্ন, যার মধ্যে ‘৩ নং বার্থ’, ‘৯ নং বার্থ’ ও ‘১২ নং বার্থ’ এর বার্ষিক যথাক্রমে ২.৩ মিলিয়ন টন, ০.৯ মিলিয়ন টন ও ১.৯ মিলিয়ন টন পণ্য পরিবহনে সক্ষম।[৯]
৫ নং, ৬ নং ও ৭ নং বার্থে তরল পণ্য পরিচালনার পরিকাঠামো রয়েছে, বার্থ তিনটি বন্দরের তরল পণ্য টার্মিনালের অংশ। ৬ নং ও ৭ নং বার্থে ফিঙ্গার জেটি রয়েছে, যা বার্থ দুটির জন্য জাহাজ মুরিংয়ের সুবিধা প্রদান করে। বার্থগুলিতে ভোজ্য তেল, সিবিএফএস, ফসফরিক অ্যাসিড ও বিভিন্ন ধরনের অ-বিপজ্জনক তরল পণ্য পরিবহনের ব্যবস্থা রয়েছে। এই বার্থ তিনটি বার্ষিক ৪.২ মিলিয়ন টন পণ্য পরিবহনের সক্ষমতা সম্পন্ন। ৬ নং ও ৭ নং বার্থে পণ্যে সংরক্ষণের জন্য ১৯ হাজার বর্গমিটারের আচ্ছাদন বিহীন সঞ্চয় এলাকার রয়েছে।[৭]
১০ নং ও ১১ নং বার্থে কন্টেইনার জাহাজ পরিচালনার পরিকাঠামো রয়েছে, বার্থ দুটি একত্রে বন্দর ক্রতিপক্ষ কর্তৃপক্ষ দ্বারা কন্টেইনার টার্মিনাল হিসাবে উল্লেখিত হয়। টার্মিনালটি ইন্টারন্যাশনাল কার্গো টার্মিনাল অ্যান্ড ইনফ্রাস্ট্রাকচার প্রাইভেট লিমিটেডের সহায়ক সংস্থা হালদিয়া ইন্টারন্যাশনাল কন্টেইনার টার্মিনাল লিমিটেড দ্বারা পরিচালিত ও রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়।[১০] টার্মিনালের জেটিটি ৪৩২ মিটার দীর্ঘ। জাহাজে কন্টেইনার খালাস ও বোঝাই করার জন্য ৩ টি রেল মাউন্টেড কোয়ে ক্রেন ও সঠিক স্থানে পার্ক রাখার জন্য ৪ টি রাবার টায়ার্ড গ্যান্ট্রি ক্রেন রয়েছে। প্রথম ধাপে টার্মিনালে ২ টি এবং দ্বিতীয় ধাপে তৃতীয় রেল মাউন্টেড কোয়ে ক্রেন পরিষেবায় যুক্ত হয়; তৃতীয় কোয়ে ক্রেনের উত্তোলন ক্ষমতা ৪০ টন এবং ক্রেন বাহু দ্বারা ৪০ মিটারের দূরের কন্টেইনার হ্যান্ডেলিং করতে সক্ষম। টার্মিনালে ৩ বা ৪ টি কন্টেইনারের সমতুল্য উচ্চতার স্ট্যাকিং সুবিধা সহ প্রায় ১৫০০ টিইইউ-এর গ্রাউন্ড স্লট রয়েছে। এটি বার্ষিক ২ লাখ কন্টেইনার পরিবহনের সক্ষমতা সম্পন্ন।[১০]
ভাসমান ক্রেন সুবিধা
সম্পাদনাভাসমান ক্রেন সুবিধা স্যান্ডহেডস নোঙ্গরখানা ও সাগর নোঙ্গরখানায় রয়েছে। এই ব্যবস্থার মাধ্যমে বৃহৎ জাহাজ থেকে পণ্য ছোট জাহাজ বা বার্জে স্থানান্তর করা হয় ও হলদিয়া ডক কমপ্লেক্সে খালাস করা হয়। কলকাতা বন্দর কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নিযুক্ত সংস্থা গভীর সমুদ্রে পণ্য খালাসের কাজ সম্পাদনা করে। এই কাজে ভাসমান ক্রেন – বার্জের উপরে স্থাপিত ক্রেন – পরিষেবায় নিয়োজিত আছে। গভীর সমুদ্রে পণ্য খালাসের জন্য নিযুক্ত ভাসমান ক্রেন দু’টি হল এমভি যুগলরাজ ও এমভি ভিগনরাজ। স্যান্ডহেডস নোঙ্গরখানায় জলের গভীরতা ৪০-৫০ মিটার, যেখানে বিশ্বের সকল বৃহৎ জাহাজ নোঙ্গর করতে সক্ষম; অপরদিকে সাগর নোঙ্গর খানায় জলের গভীরতা ৯-১০ মিটার, এখানে মূলত ছোট আকারের কেপসাইজ জাহাজ নোঙ্গর করে।
স্যান্ডহেডস নোঙ্গরখানায় শুষ্ক পণ্যের পাশাপাশি ন্যাপথার মত তরল পণ্য খলাস করার পরিকাঠামোও রয়েছে; ভাসমান ক্রেন সুবিধার মাধ্যমে মূলত কয়লার মত শুষ্ক পণ্য খালাস করা হয়, তবে তরল পণ্য খলাস করতে ভাসমান ক্রেন সুবিধার প্রয়োজন নেই। জাহাজ থেকে জাহাজে তরল পণ্য খলাসের জন্য ভাসমান ফেন্ডারের সমর্থন প্রয়োজন হয়, যা মাদার ভেসেল ও বার্জ বা ছোট জাহাজের মধ্যে ধাক্কা এড়াতে ব্যবহার করা হয়। কলকাতা বন্দর কর্তৃপক্ষ ভাসমান ফেন্ডার ও টাগ বোট সরবরাহ করে।
বন্দর চ্যানেল
সম্পাদনাকলকাতা বন্দরের সমুদ্র থেকে দুটি প্রবেশপথ রয়েছে, একটি ইস্টার্ন চ্যানেল এবং অন্যটি ওয়েস্টার্ন চ্যানেল; যেখানে পশ্চিম চ্যানেলটি হলদিয়াগামী জাহাজগুলি দ্বারা নৌচলাচলের জন্য ব্যবহার করা হয়। ওয়েস্টার্ন চ্যানেলটি ইস্টার্ন চ্যানেলের তুলনায় অধিক নাব্যতা সম্পন্ন, ফলে হলদিয়া ডক কমপ্লেক্সটি কলকাতা ডক ব্যবস্থার তুলনায় বৃহৎ জাহাজ পরিচালনা করতে সক্ষম।
ওয়েস্টার্ন চ্যানেলটি চারটি প্রধান ছোট চ্যানেলে বিভক্ত, যেগুলি হল ইডেন চ্যানেল, আপার অকল্যান্ড চ্যানেল, আপার ও লোয়ার জ্যালিংহাম চ্যালেন এবং হলদিয়া চ্যানেল। ইডেন চ্যানেল দক্ষিণ প্রান্ত গভীর সমুদ্রে অবস্থিত, এবং উত্তর প্রান্ত আপার অকল্যান্ড চ্যালেনের সঙ্গে যুক্ত। লোয়ার অকল্যান্ড চ্যালেনটি ইস্টার্ন চ্যানেল ও ওয়েস্টার্ন চ্যানেলের মধ্যে সংযোগ চ্যানেল হিসাবে কাজ করে, যা ইস্টার্ন চ্যানেলের মিডিলটং পয়েন্ট–গ্যাসপার চ্যানেলের উত্তর প্রান্ত–এবং আপার অকল্যান্ড চ্যালেনের দক্ষিণ প্রান্তের সঙ্গে যুক্ত। হলদিয়া ডক কমপ্লেক্সে জাহাজ চলাচলের জন্য গ্যাসপার চ্যানেল-আপার ও লোয়ার অকল্যান্ড চ্যালেন-আপার ও লোয়ার জ্যালিংহাম চ্যালেন-হলদিয়া চ্যানেল রুটটি ব্যবহৃত হত, কিন্তু পরবর্তীতে লোয়ার অকল্যান্ড চ্যালেনে থেকে অতিরিক্ত পলি অপসারণের প্রয়োজনীয় ড্রেজিং ব্যয় থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য ইডেন চ্যানেলের ব্যবহার শুরু হয়েছিল; বর্তমান নৌচলাচলের রুটটি হল ইডেন চ্যানেল-আপার অকল্যান্ড চ্যানেল-আপার জ্যালিংহাম চ্যালেন-হলদিয়া চ্যানেল।
হলদিয়া চ্যানেলের উজানে বলারি চ্যানেল অবস্থিত। বলারি চ্যানেলটি অতীতে সমুদ্রগামী জাহাজ চলাচলের জন্য উপযোগী ছিল, যা ইস্টার্ন চ্যানেল ও ওয়েস্টার্ন চ্যানেলের মধ্যে সংযোগ হিসাবে কাজ করত; কিন্তু গত শতাব্দীর শেষের দিকে অধিক পলি জমার কারণে বন্দর কর্তৃপক্ষ দ্বারা নৌ-চলাচলে অযোগ্য ও পরিত্যাক্ত ঘোষণা করা হয়েছে।
ডুবো চরের উপস্থিতির কারণে ওয়েস্টার্ন চ্যানেলের গভীরতা সকল স্থানে সমান নয়। হলদিয়া পর্যন্ত ১১০ কিলোমিটার (৬৮ মা) দীর্ঘ চ্যানেলের সর্বনিম্ন গভীরতা ৪.৩ মিটার (১৪ ফু) এবং ন্যূনতম প্রস্থতা ৩৪৫ মিটার (১,১৩২ ফু)। ওয়েস্টার্ন চ্যানেলের ডুবো চরগুলিতে প্রাকৃতিক নাব্যতা ৫ মিটারের অধিক, যার মধ্যে ইডেন চ্যানেলের গভীরতা উত্তর অংশে ৬.২ মিটার এবং নিন্ম অংশে ৬.৭ মিটার। জোয়ারেরে সময়ে জলস্ফীতির সহায়তায় চ্যানেলের গভীরতা ৯ মিটারের (৩০ ফু) অধিক হয়; সর্বোচ্চ ৯ মিটার (৩০ ফু) ও সর্বনিম্ন ৭.৬ মিটার (২৫ ফু) ড্রাফ্ট সম্পন্ন জাহাজ চলাচল করতে সক্ষম।
গভীরতা | বন্দর চ্যানেল | ডুবো চর | ||||
---|---|---|---|---|---|---|
শর্ত | মান | হলদিয়া নোঙরখানা | জ্যালিংহাম | আপার ইডেন | লোয়ার ইডেন | |
প্রাকৃতিক গভীরতা | সর্বনিম্ন | ৪.৩ মিটার (১৪ ফু) | ||||
জোয়ারের সময় নাব্যতা (ড্রাফট) | সর্বোচ্চ | ৯ মিটার (৩০ ফু) | ||||
গড় | ৮.৩ মিটার (২৭ ফু) | |||||
নাব্যতা (ড্রাফট) | গড় | ৫.১ মিটার (১৭ ফু) | ৫ মিটার (১৬ ফু) | ৬.২ মিটার (২০ ফু) | ৬.৭ মিটার (২২ ফু) |
সংযোগ
সম্পাদনারেলওয়ে
সম্পাদনাহলদিয়া ডক কমপ্লেক্সের গুদাম ও সাইডিংয়ের জন্য ট্রাফিক চাহিদা মেটাতে নিজস্ব রেলওয়ে ব্যবস্থা রয়েছে। ডকের প্রতিটি বার্থে রেল সংযোগ রয়েছে। ডকের রেল ব্যবস্থাকে ভারতীয় রেলের দক্ষিণ-পূর্ব রেলওয়ে জোনের অন্তর্গত পাঁশকুড়া-হলদিয়া ব্রডগেজ রেলওয়ে সেকশনে সম্পূর্ণ বৈদ্যুতিক একক লাইন বিশিষ্ট রেল করিডোরের মাধ্যমে সংযুক্ত রয়েছে, সংযোগটি দুর্গাচক স্টেশনের কাছে গৌরিচকে তৈরি করা হয়েছে। রেল ব্যবস্থাটি ১১৫ কিলোমিটার ট্র্যাক সহ ১১.৫ কিলোমিটার রেলপথ ও ২ টি ইয়ার্ড নিয়ে গঠিত। ডকের নিজস্ব রেলওয়ের অধীনস্থ ১২ টি লোকোমোটিভ দ্বারা ডকের মধ্যে রেলগাড়িগুলি পরিচালিত হয়, এবং বার্ষিক পণ্য পরিবহনের ক্ষমতা ৩ কোটি মেট্রিক টন। এই রেলওয়ে ব্যবস্থায় জেনারেল মার্শালিং ইয়ার্ড ও বাল্ক হ্যান্ডলিং ইয়ার্ড রয়েছে।
সড়ক
সম্পাদনাহলদিয়া ডক কমপ্লেক্সটি সরাসরি ১১৬ নং জাতীয় সড়কের (পুরাতন, ৪১ নং) সঙ্গে সংযুক্ত রয়েছে। এই জাতীয় সড়কটি কোলাঘাটে সুবর্ণ চতুর্ভুজের অংশ ১৬ নং জাতীয় সড়কের (পুরাতন, ৬ নং) সঙ্গে সংযোগ প্রদান করে, যা ডক কমপ্লেক্সকে ওড়িশা, ঝাড়খণ্ড সহ দেশের অন্যান্য রাজ্যগুলিকে বন্দরের উপলভ্যতা তৈরি করে।
জলপথ
সম্পাদনাহলদিয়া ডক কমপ্লেক্স সরাসরি ১ নং জাতীয় জলপথের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে, যা বন্দরকে জলপথে উত্তর ভারতের সঙ্গে সংযোগ প্রদান করে। ডক কমপ্লেক্সের জমিতে ভারতীয় অন্তর্দেশীয় জলপথ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক হলদিয়া মাল্টি-মোডেল টার্মিনাল নির্মিত হয়েছে, যার মাধ্যমে এই জলপথে কলকাতা বন্দর থেকে বারাণসি ও সাহেবগঞ্জ টার্মিনালের সরাসরি পণ্য পরিবহন করা হয়। এছাড়া ৯৭ নং জলপথ ভারত-বাংলাদেশ প্রোটোকল নৌপথের মাধ্যমে বাংলাদেশ ও উত্তর-পূর্ব ভারতের আসাম রাজ্যের নদী বন্দরগুলির সঙ্গে সংযুক্ত রয়েছে।
সম্প্রসারণ
সম্পাদনাসরকারি ও বেসরকারি যৌথ উদ্যোগে হলদিয়া বন্দরে ৮০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ হতে চলেছে। বন্দরের নতুন করে পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্যই পিপিপি মডেলে চারটি বার্জ জেটি তৈরি করা হচ্ছে। এই প্রকল্পের বার্জ জেটিগুলি বেশ বড় মাপের তৈরি করা হবে। এই জেটিগুলির মাধ্যমে বাল্ক জাতীয় এবং লিকুইড জাতীয় কার্গো পরিবহন করা যাবে।
হলদিয়া বন্দরের লকগেটের ওপর চাপ কমাতেই এই উদ্যোগ। বন্দরের লকগেট দুর্বল হয়ে পড়ায় এবং নাব্যতা সমস্যার জন্য বার্জ জেটি তৈরি করা হচ্ছে। আউটার টার্মিনাল-১ ও আউটার টার্মিনাল-২ তৈরি করা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই ৭৩ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি বার্জ জেটি আর ৭০ কোটি টাকা ব্যয়ে স্বয়ংক্রিয় ফ্লোটিং ক্রেন তৈরি করা হয়েছে। টেন্ডার প্রক্রিয়ার পর দক্ষিণ ভারতের বোথরা শিপিং এজেন্সি এই কাজের বরাত পেয়েছিল এবং এই সংস্থা বর্তমানে মাঝ সমুদ্র থেকে বার্জে করে বড় জাহাজ থেকে পণ্য নবনির্মিত জেটিতে নিয়ে এসে খালাস করছে।
হলদি নদী ও হুগলী নদীর পাড় বরাবর নতুন চারটি বার্জ জেটি তৈরিতে উদ্যোগী হয়েছে। এগুলিকেই বলা হচ্ছে আউটার টার্মিনাল। ৪১৩ কোটি টাকা ব্যয়ে সবচেয়ে বড় আউটার টার্মিনাল তৈরি হতে চলেছে। এই টার্মিনালটি তৈরি হবে হলদিয়া ভবনের ঠিক বিপরীতে। পাশাপাশি শালুকখালিতে ১৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে লিকুইড কার্গো হ্যান্ডেলিংয়ের জেটি তৈরি হচ্ছে। ৪১৩ কোটি টাকার আউটার টার্মিনালের কাজ পেতে টেন্ডারে যোগ দিয়েছে দু’টি গোষ্ঠী।
আরও দেখুন
সম্পাদনাতথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ http://www.kolkataporttrust.gov.in/index1.php?layout=2&lang=1&level=1&sublinkid=83&lid=124
- ↑ ক খ "পণ্য পরিবহণে 'সেরা' বন্দর হলদিয়া"। আনন্দবাজার পত্রিকা। ২২ জুন ২০২০। সংগ্রহের তারিখ ২২ জুন ২০২০।
- ↑ "KoPT gets highest ever cargo growth this year"। www.millenniumpost.in। ৩ এপ্রিল ২০১৯। সংগ্রহের তারিখ ৪ এপ্রিল ২০১৯।
- ↑ http://kolkataporttrust.gov.in/index1.php?
- ↑ "অচলাবস্থা কাটার মুখে হলদিয়া বন্দর, শুরু পণ্য খালাস"। ৩১ মার্চ ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৬।
- ↑ "haldia dock"।
- ↑ ক খ গ "LIQUID BULK CARGO TERMINAL"। smportkolkata.shipping.gov.in/। সংগ্রহের তারিখ ১৪ জুন ২০২১।
- ↑ ক খ "DRY BULK CARGO TERMINAL"। smportkolkata.shipping.gov.in। সংগ্রহের তারিখ ১৪ জুন ২০২১।
- ↑ ক খ "MULTIPURPOSE TERMINAL"। smportkolkata.shipping.gov.in। সংগ্রহের তারিখ ১৪ জুন ২০২১।
- ↑ ক খ "CONTAINER TERMINAL"। smportkolkata.shipping.gov.in। সংগ্রহের তারিখ ১৪ জুন ২০২১।
- ↑ উদ্ধৃতি ত্রুটি:
<ref>
ট্যাগ বৈধ নয়;২০২১-২০২২
নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি