হরীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়
হরীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় (২ এপ্রিল ১৮৯৮—২৩ শে জুন, ১৯৯০) ভারতীয় কবি, অভিনেতা ও রাজনীতিবিদ।
হরীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় | |
---|---|
হরীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় | |
জন্ম | ২ এপ্রিল ১৮৯৮ |
মৃত্যু | ২৩ শে জুন, ১৯৯০ |
পরিচিতির কারণ | সোনার কেল্লায় সিঁধুজ্যাঠা নামে অধিক পরিচিত, এছাড়া সীমাবদ্ধ, গুপী গাইন বাঘা বাইন চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। |
আন্দোলন | ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলন |
দাম্পত্য সঙ্গী | কমলাদেবী চট্টোপাধ্যায় (বি. ১৯১৯–১৯৮৮) |
বংশ পরিচিতি
সম্পাদনাহরীন্দ্রনাথের পিতা অঘোরনাথ চট্টোপাধ্যায় ছিলেন ভারতের প্রথম ডি.এস.সি।তার পৈতৃক বাড়ি ছিল অধুনা বাংলাদেশ রাষ্ট্রের মুন্সীগঞ্জ জেলার লৌহজং উপজেলার কনকসার গ্রামে। জ্যেষ্ঠ ভ্রাতা কমিউনিস্ট বিপ্লবী বীরেন চট্টোপাধ্যায় এবং বোন দেশনেত্রী সরোজিনী নায়ডু। হরীন্দ্রনাথ বাল্যবিধবা কৃষ্ণা রাওকে বিয়ে করেন, পরবর্তীকালে যিনি সমাজসেবিকা কমলাদেবী চট্টোপাধ্যায় নামে খ্যাত হয়েছিলেন।[১]
প্রারম্ভিক জীবন
সম্পাদনাহরীন্দ্রনাথ বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী ছিলেন। মাত্র ১০ বছর বয়েসে ক্ষুদিরামের ফাঁসির প্রেক্ষিতে ইংরেজি কবিতা 'ডাইং পেট্রিয়ট' রচনা করেন।[২] উচ্চশিক্ষার জন্যে কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে যান, সেসময় কেম্ব্রিজে নিয়ম ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি না থাকলেও মেধা প্রমাণিত হলে ডক্টরেট ডিগ্রির গবেষণার অনুমতি দেওয়া হবে। প্রতিভাবান হরীন্দ্রনাথ তার 'ফিস্ট অফ ইয়ুথ' কাব্যগ্রন্থের জন্যে গবেষণার সুযোগ পান।[৩]
রাজনীতিবিদ
সম্পাদনাগান্ধীজির অসহযোগ আন্দোলনের ডাকে দেশে প্রত্যাবর্তন করেন। আন্দোলনের সময় তিনি হিন্দি ও ইংরেজি ভাষায় গীতিকার ও সংগীতশিল্পীর কাজ করেছেন। 'শুরু হুই জং হামার' গানটি গাইবার জন্যে ৬ মাস জেল হয়। গননাট্য ও প্রগতি লেখক সংঘের সাথে গভীর যোগাযোগ থাকলেও তার সর্বজনপ্রিয়তা তাকে নির্দিষ্ট কমিটি বা দলে আটকে রাখেনি। জওহরলাল নেহ্রু তার প্রতি বিশেষ শ্রদ্ধাশীল ছিলেন। মূলত তারই প্রচেষ্টায় রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত লোকসভা সদস্য হয়েছিলেন। উত্তপ্ত বাদানুবাদ ও রাজনৈতিক তর্কের সময় লোকসভায় তার অনাবিল হাস্য পরিহাস সর্বজনবিদিত। বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রনায়কদের সাথে তার বন্ধুত্ব ছিল, তাদের মধ্যে ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট সূকর্ণ অন্যতম।[৩]
সাহিত্য ও সংগীত
সম্পাদনাতার কবিতার প্রশংসা করেছিলেন স্বয়ং কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। প্রথম প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ 'দি ফিস্ট অফ ইউথ'। দেশ বিদেশের বহু পত্রিকায় তার লেখা প্রকাশিত হয়। দি কফিন, এনসিয়েন্ট উইং, ডার্ক ওয়েল, দি ডিভাইন ভ্যাগাবন্ড, ব্লাড অফ স্টোনস, স্প্রিং ইন উইন্টার, দি উইজার্ড মাস্ক, ফাইভ প্লেজ ইত্যাদি অজস্র রচনা রয়েছে ইংরেজি ভাষায়। বিখ্যাত 'ইন্টারন্যাশনাল' সংগীতের হিন্দি তর্জমা করেছেন, লিখেছেন সিনেমার প্রচুর গান। নিজেও সংগীতশিল্পী হিসেবে জনপ্রিয় ছিলেন। ১৯৪৪ সালে গণনাট্য কর্মীরা কলকাতায় তাকে দিয়ে একটি অনুষ্ঠান করায় সেখানে এককভাবে গান, হারমোনিয়াম বাদন, কবিতা আবৃত্তি করেন।
অভিনয়
সম্পাদনাবোম্বাইতে থাকাকালীন চিত্রপরিচালক হৃষিকেশ মুখোপাধ্যায়ের সাথে ঘনিষ্ঠতা জন্মে। তার বহু ছবিতে অভিনয় করেছেন হরীন্দ্রনাথ। হরীন্দ্রনাথ অভিনীত হিন্দি ছবিগুলি হলো আশীর্বাদ, সাহেব বিবি অউর গুলাম, রাত অউর দিন, তেরে ঘর কে সামনে, চল মুরারী হিরো বননে, বাবুর্চি, গৃহপ্রবেশ ইত্যাদি। আজাদ নামে একটি ছবির প্রযোজনাও করেন তিনি। সত্যজিৎ রায়ের পরিচালনায় গুপী গাইন বাঘা বাইন, সীমাবদ্ধ, সোনার কেল্লায় অভিনয় করেছেন। শেষোক্ত ছবিতে সিধু জ্যাঠার চরিত্রে বাঙালির কাছে তিনি বহুল পরিচিত।[৪]
সম্মাননা ও পুরস্কার
সম্পাদনামৃত্যু
সম্পাদনা২৩ শে জুন, ১৯৯০ সালে মৃত্যু হয় তার।
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ ক খ রমাপদ চৌধুরী (১৭.০৯.১৪)। "হারানো খাতা"। দেশ। সংগ্রহের তারিখ ২৫.০১.২০১৭। এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন:
|তারিখ=, |সংগ্রহের-তারিখ=
(সাহায্য)[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ] - ↑ "Harindranath Chattopadhyay: শুধু সিনেমার পর্দায় নন, প্রকৃপক্ষেই 'সিধু জ্যাঠা' ছিলেন হরীন্দ্রনাথ"। Aaj Tak বাংলা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৩-১৬।
- ↑ ক খ গ দ্বিতীয় খন্ড, অঞ্জলি বসু সম্পাদিত (২০০৪)। সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান। কলকাতা: সাহিত্য সংসদ। পৃষ্ঠা ৪০৬, ৪০৭। আইএসবিএন 81-86806-99-7।
- ↑ "'গুগা বাবা' ছবির জাদুকর"।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]