হরি ধান

বিশেষ জাতের উচ্চ ফলনশীল ধান

একটি বিশেষ জাতের উচ্চ ফলনশীল ধানবাংলাদেশের কৃষক বিজ্ঞানী হরিপদ কাপালী এই ধানের আবিষ্কারক। ঝিনাইদহ জেলার অনেক জমিতে এখন এই ধান চাষ হচ্ছে। বিঘাপ্রতি ফলন ২০ থেকে ২২ মণ। ধানের গোছা পুরুষ্টু ও বিচালি শক্ত। মোটা চাল। ভাত মোটা হলেও খেতে সুস্বাদু।

আবিষ্কারের ইতিহাস সম্পাদনা

ঝিনাইদহ সদর উপজেলার আসানসোল গ্রামের কৃষক হরিপদ কাপালী ১৯৯৯ সালে নিজের ধানের জমিতে একটি ছড়া তার নজর কাড়ে। ধানের গোছা বেশ পুষ্ট এবং গাছের সংখ্যা তুলনামূলকভাবে বেশি। এ ছড়াটি তিনি নজরদাড়িতে রাখলেন। ধানের বাইল (ছড়া) বের হলে তিনি দেখতে পান বাইলগুলো তুলনামূলকভাবে অন্য ধানের চেয়ে দীর্ঘ, এবং প্রতিটি বাইলে ধানের সংখ্যাও বেশি। ধান পাকলে তিনি আলাদা করে বীজ ধান হিসেবে রেখে দিলেন। পরের মৌসুমে এগুলো আলাদা করে আবাদ করলেন এবং আশাতীত ফলন পেলেন। এভাবে তিনি ধানের আবাদ বাড়িয়ে চললেন। আর নিজের অজান্তেই উদ্ভাবন করলেন এক নতুন প্রজাতির ধান, হরিধান। মূলতঃ ডারউইনের আবিষ্কৃত কৃত্রিম নির্বাচনের একটি সফল পরীক্ষা সম্পন্ন করেছেন প্রান্তিক কৃষক হরিপদ কাপালী [১] । ইরি ও বোরো মৌসুমে এ ধান আবাদ করতে হয়। তার গ্রামের কৃষকরা এর থেকে উপকৃত হওয়ার পর পুরো বাংলাদেশে এর আবাদ ব্যাপকভাবে ছরিয়ে পড়ে।

বৈজ্ঞানিক তথ্য সম্পাদনা

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে করা গবেষণায় দেখা গেছে আমন ধানের উচ্চফলনশীল জাত ব্রি-৫৬ ভ্যারাইটির ধানের ফলন প্রতি হেক্টর জমিতে গড়ে ৫.৫১ টন সেখানে হরিধানের ফলন ৬.০৮ টন। এছাড়াও খড় পাওয়া যায় ৬.৪৫ টন যা ব্রি-৫৬ ধান থেকে বেশি। ২০% ইউরিয়া প্রয়োগে হরিধানের সর্বোচ্চ ফলন প্রতি হেক্টরে ৬.৪৩ টন পর্যন্ত পাওয়া গেছে।[২]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. হরিধানের স্রষ্টা হরিপদ কাপালি, জনবিজ্ঞান, সংখ্যা ৩, ২০০৯
  2. Haque, E.; Rahman, M.R.; Kader, A. (১০ জুন ২০১৯)। "Performance of locally discovered rice cultivar (Haridhan) in Bangladesh under urea sprays technology"Archives of Agriculture and Environmental Science। Agriculture and Environmental Science Academy, Haridwar, India। পৃষ্ঠা 235–241। ডিওআই:10.26832/24566632.2019.0402017। সংগ্রহের তারিখ ৬ ডিসেম্বর ২০২৩