হপার রিড
হলকম্ব ডগলাস হপার রিড (ইংরেজি: Hopper Read; জন্ম: ২৮ জানুয়ারি, ১৯১০ - মৃত্যু: ৫ জানুয়ারি, ২০০০) এসেক্সের উডফোর্ড গ্রীন এলাকায় জন্মগ্রহণকারী প্রথিতযশা ইংরেজ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার ছিলেন। ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯৩৫ সময়কালে সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্যে ইংল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছিলেন।[১] ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে এসেক্স ও সারে দলের প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন। দলে তিনি মূলতঃ ডানহাতি ফাস্ট বোলার হিসেবে খেলতেন। এছাড়াও, নিচেরসারিতে ডানহাতে ব্যাটিং করতেন হপার রিড।
![]() | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ক্রিকেট তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
ব্যাটিংয়ের ধরন | ডানহাতি | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বোলিংয়ের ধরন | ডানহাতি ফাস্ট | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
আন্তর্জাতিক তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জাতীয় দল | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
একমাত্র টেস্ট (ক্যাপ ২৮৯) | ১৭ আগস্ট ১৯৩৫ বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
| ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ২১ মার্চ ২০১৯ |
শৈশবকালসম্পাদনা
উইনচেস্টার কলেজে পড়াশোনা করেছিলেন হপার রিড। অক্সফোর্ড কিংবা কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ হয়নি তার। কিন্তু, ১৯৩৩ সালে ফাস্ট-বোলার হিসেবে সারে ক্লাবের সদস্য হবার ফলে উভয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিপক্ষে প্রস্তুতিমূলক খেলায় অংশগ্রহণের সুযোগ পেয়েছিলেন। তবে, কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশীপের খেলায় সারের পক্ষে অংশগ্রহণ করতে পারেননি। কিন্তু, কেমব্রিজের বিপক্ষে অনুষ্ঠিত খেলায় দ্বিতীয় ইনিংসে ৪/২৬ পেলেও সারে কর্তৃপক্ষ রিডকে দলে নেয়নি। ফলে, এসেক্সের পক্ষে তার খেলার বিষয়েও আপত্তি উত্থাপন করেনি ক্লাব দলটি। এছাড়াও, ১৯০৪ থেকে ১৯১০ সময়কালে ২২ খেলায় এসেক্স প্রথম একাদশে অংশগ্রহণকারী আর্থার হলকম্বের সন্তান হিসেবেও তিনি যোগ্যতা লাভের অধিকারী ছিলেন।
কাউন্টি ক্রিকেটসম্পাদনা
১৯৩৩ সালে এসেক্সের পক্ষে মাত্র একটি খেলায় অংশগ্রহণের সুযোগ লাভ করেছিলেন হপার রিড। খেলায় তিনি ৫৬ রান দিলেও কোন উইকেট পাননি। কিন্তু পরের বছর এসেক্সের বোলিং আক্রমণ রুখে দিয়ে কেন্ট দল ৮০৩/৪ করার পর তাকে দলে খেলার সুযোগ দেয়া হয়।
দূর্দান্তভাবে যাত্রা শুরু করেন তিনি। প্রথম ওভারেই জ্যাক হবসের ক্যাপ স্পর্শ করে তার বল। শেষ পর্যন্ত নিজের শেষ প্রথম-শ্রেণীর মৌসুমে হবস, হপার রিডের বলে বোল্ড হন। ঐ ইনিংসে তিনি ৭/৩৫ পেয়েছিলেন। এটিই তার খেলোয়াড়ী জীবনের ব্যক্তিগত সেরা বোলিং পরিসংখ্যান হিসেবে রয়ে যায়। কিন্তু, চার্টার্ড একাউন্ট্যান্ট হিসেবে প্রশিক্ষণে ব্যস্ত থাকায় খেলায় অংশগ্রহণ সীমিত পর্যায়ের ছিল হপার রিডের। তাসত্ত্বেও ঐ মৌসুমে ৬৯ উইকেট দখল করেন। হ্যারল্ড লারউড ও দলীয় সঙ্গী কেন ফার্নেস তার তুলনায় সেরা বোলিং করেছিলেন। সেপ্টেম্বরে ফোকস্টোনে অনুষ্ঠিত জেন্টলম্যানের সদস্যরূপে প্লেয়ার্সের বিপক্ষে খেলেন। খেলার তিনি ১৭১ রান খরচায় ৯ উইকেট লাভ করেছিলেন। উইজডেন মন্তব্য করে যে, এ মৌসুমের সেরা আবিষ্কার হচ্ছেন হপার রিড।[২] ১৯৩৪ সালের শেষদিকে ওয়াগন ওয়ার্কস গ্রাউন্ডে গ্লুচেস্টারশায়ারের বিপক্ষে ধীরগতির উইকেটেও কেন ফার্নেসকে নিয়ে ঠিকই নিজেদেরকে উজাড় করে দিয়েছিলেন।
১৯৩৫ সালে হপার রিড তার পেশায় মনোনিবেশ ঘটানোয় জুন মাসের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত কোন খেলায় অংশ নেননি। তবে, এরপর এসেক্স দলে খেলতে নেমেই দ্রুত সফলতা পান। কেন ফার্নেস আঘাতের কবলে পড়ায় হপার রিড ও স্ট্যান নিকোলসকে পেস বোলিং আক্রমণ পরিচালনা করতে হয়েছিল।[৩] হাডার্সফিল্ডে তাদের অবিস্মরণীয় বোলিং লক্ষ্য করা যায়। বোলিং উপযোগী পিচে এ দুজন ইয়র্কশায়ারকে ৩১ ও ৯৯ রানে গুটিয়ে দেন। ফলশ্রুতিতে এসেক্স দল ইনিংস ও ২০৪ রানের অবিস্মরণীয় জয় তুলে নেয়।[৪] ইয়র্কশায়ারের বিপক্ষে ১১ উইকেট পেয়েছিলেন। ১৯৩৫ সালে ৯৭ উইকেট পান।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটসম্পাদনা
ঘরোয়া ক্রিকেটে সুন্দর ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শনের স্বীকৃতিস্বরূপ শক্তিধর দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজের চূড়ান্ত টেস্ট খেলার জন্যে ইংল্যান্ড দলের সদস্যরূপে তাকে মনোনয়ন দেয়া হয়। হপার রিড বেশ ভালোমানের বোলিংশৈলী উপহার দিয়ে ছয়জন স্বীকৃত ব্যাটসম্যানকে প্যাভিলিয়নে ফেরৎ পাঠান। ওভাল টেস্টে ৪/১৩৬ ও ২/৬৪ করেন। এরপর এরল হোমসের নেতৃত্বাধীন ইংরেজ দলের সদস্য হিসেবে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড গমন করেন। তবে, সেখানে তিনি স্বাভাবিক খেলায় নিজেকে তুলে ধরতে পারেননি। তাসত্ত্বেও, ডুনেডিনে নিউজিল্যান্ড একাদশের বিপক্ষে ১০০ রান খরচায় ১১ উইকেট পেয়েছিলেন।
অবসরসম্পাদনা
হপার রিডের নিয়োগকর্তা তার অনুপস্থিতির কারণে বেশ রাগান্বিত হন ও ১৯৩৬ সালে তিনদিনের ক্রিকেট খেলায় অংশগ্রহণের উপর নিষেধাজ্ঞা প্রদান করেন। অন্যথায়, তাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করার হুমকি দেয়া হয়। ফলে, এভাবেই হপার রিডের খেলোয়াড়ী জীবন শেষ হয়ে যায়। তাসত্ত্বেও, ১৯৪৮ সালে মেরিলেবোন ক্রিকেট ক্লাবের (এমসিসি) সদস্যরূপে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে একটি খেলায় অংশ নিয়েছিলেন তিনি।
শনিবারের দিনগুলোয় ইঙ্গলফিল্ড গ্রীন ও দ্য বাটারফ্লাইয়েজের পক্ষে আরও কয়েকবছর ক্লাব ক্রিকেটে অংশ নিয়েছিলেন। তবে, তিনদিনের খেলায় আর অংশ নেননি হপার রিড। ৫ জানুয়ারি, ২০০০ তারিখে কর্নওয়ালের ট্রুরো এলাকায় ৯০ বছর বয়সে হপার রিডের দেহাবসান ঘটে।
মূল্যায়নসম্পাদনা
দীর্ঘ দূরত্ব নিয়ে বোলিং কর্মে অগ্রসর হতেন তিনি।[৫] প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে সংক্ষিপ্ত সময় খেললেও বিশ্বের অন্যতম দ্রুতগতিসম্পন্ন বোলারের মর্যাদা পেয়েছিলেন হপার রিড। সজীব পিচে তিনি দূর্দমনীয় ছিলেন। এসেক্স দল কেন ফার্নেস ও হপার রিডের ন্যায় দুইজন দ্রুততম বোলারকে নিয়ে যে-কোন কাউন্টি দলের বিপক্ষে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সুবিধা আদায় করতে পেরেছিল।
সংক্ষিপ্ত খেলোয়াড়ী জীবনে অতিবাহনের কারণে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটের ইতিহাসে সর্বাপেক্ষা বাজে রেবিটের মর্যাদা পেয়েছেন। এক পর্যায়ে ১৯৩৫ সালে উপর্যুপরি আটটি ইনিংসে রানবিহীন অবস্থায় ছিলেন। ইংল্যান্ডে অবস্থান করে ৫৮ ইনিংসে মাত্র ২২ রান তুলেছিলেন। সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে তার মোট রান সংখ্যা সংগৃহীত উইকেটের চেয়ে ত্রিশ শতাংশ কম ছিল। অদ্যাবধি কাউন্টি দলটির পক্ষে অংশগ্রহণকারী খেলোয়াড়দের মধ্যে এটি সর্বনিম্নস্থানে রয়েছে। প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে ইনিংস প্রতি চার রানের নিচে গড় রানের অধিকারী অন্য টেস্ট ক্রিকেটার হিসেবে তার সাথে নিউজিল্যান্ডীয় ক্রিস মার্টিন ও দক্ষিণ আফ্রিকান আল্ফ হল এবং গ্ল্যামারগনের পেসার জেফ জোন্স রয়েছেন।
তথ্যসূত্রসম্পাদনা
- ↑ "Hopper Read"। www.cricketarchive.com। সংগ্রহের তারিখ ২০১২-০১-১২।
- ↑ Southerton, Sydney J. (editor); John Wisden’s Cricketers’ Almanack, Seventy-Second Edition (1935); part ii, p. 265
- ↑ Brookes, Wilfrid H. (editor); John Wisden’s Cricketers’ Almanack, Seventy-Third Edition (1936); part ii, p. 270
- ↑ Brookes; John Wisden’s Cricketers’ Almanack (1936); part ii, p. 120
- ↑ McKinstry, Leo; Jack Hobbs: England's Greatest Cricketer, p. 361 আইএসবিএন ০২২৪০৮৩৩০৯
আরও দেখুনসম্পাদনা
বহিঃসংযোগসম্পাদনা
- ইএসপিএনক্রিকইনফোতে হপার রিড (ইংরেজি)
- ক্রিকেটআর্কাইভে হপার রিড (সদস্যতা প্রয়োজনীয়) (ইংরেজি)