হজ ও ওমরাহ ব্যবস্থাপনা আইন, ২০২১

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের একটি আইন

হজ ও ওমরাহ ব্যবস্থাপনা আইন, ২০২১ হলো ২০২১ সালের ১৫ জুন বাংলাদেশের জাতীয় সংসদে পাস হওয়া একটি আইন। এই আইনে বাংলাদেশের মুসলিম নাগরিকদের জন্য নির্বিঘ্নে ও সুষ্ঠুভাবে হজওমরাহ পালন নিশ্চিতকরণ এবং এজেন্সিসমূহের নিবন্ধন ও ব্যবস্থাপনা বিষয়ে বিধান প্রণয়ন করা হয়েছে। এর পূর্বে জাতীয় হজ ও ওমরাহ নীতি ঘোষণার মাধ্যমে এই কাজ সম্পন্ন হতো। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর এধরণের আইন এটিই প্রথম।

হজ ও ওমরাহ ব্যবস্থাপনা আইন, ২০২১
জাতীয় সংসদ
  • বাংলাদেশের মুসলিম নাগরিকদের জন্য নির্বিঘ্নে ও সুষ্ঠুভাবে পবিত্র হজ ও ওমরাহ পালন নিশ্চিতকরণ এবং এজেন্সিসমূহের নিবন্ধন ও ব্যবস্থাপনা বিষয়ে বিধান প্রণয়নকল্পে প্রনীত আইন
সূত্র২০২১ সনের ০৯ নং আইন
কার্যকারী এলাকাবাংলাদেশ
প্রণয়নকারীজাতীয় সংসদ
গৃহীত হয়১৫ জুন ২০২১ (2021-06-15)
সম্মতির তারিখ২৪ জুন ২০২১ (2021-06-24)
স্বাক্ষরকাল২৪ জুন ২০২১ (2021-06-24)
স্বাক্ষরকারীআবদুল হামিদ (বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি)
কার্যকরণ তারিখ২৪ জুন ২০২১ (2021-06-24)
বিধানিক ইতিহাস
উপস্থাপনকারীফরিদুল হক খান (বাংলাদেশের ধর্ম প্রতিমন্ত্রী)
প্রথম পঠন৪ এপ্রিল ২০২১ (2021-04-04)
দ্বিতীয় পঠন১৫ জুন ২০২২ (2022-06-15)
অবস্থা: বলবৎ

ইতিহাস সম্পাদনা

২০১১ সালে সৌদি আরব সরকার হজ ব্যবস্থপনায় পরিবর্তন আনে। বাংলাদেশ সরকারের জাতীয় হজ ও ওমরাহ নীতিমালা ঘোষণার মাধ্যমে হজ ব্যবস্থপনা হতো। ফলশ্রুতিতে হজ ব্যবস্থাপনার অনিয়মে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা সম্ভব ছিল না। ২০১২ সালে মন্ত্রিসভা নীতিমালার পরিবর্তে আইন করার নির্দেশনা দেয়। ২০২০ সালের ২৮ ডিসেম্বর মন্ত্রিসভার ভার্চুয়াল বৈঠকে এই আইনের খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়।[১] খসড়ায় উল্লেখিত জরিমানার অঙ্ক নিয়ে আপত্তি জানায় বাংলাদেশ হজ এজেন্সিস অব বাংলাদেশ (হাব)।[২] ২০২১ সালের ৪ এপ্রিল বিলটি সংসদে তোলেন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান। পরে বিলটি যাচাই-বাছাইয়ের জন্য ধর্ম মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়। বিলের ওপর জনমত যাচাই, বাছাই কমিটিতে পাঠানো এবং সংশোধনী প্রস্তাবগুলোর নিষ্পত্তির পর ১৫ জুন তা জাতীয় সংসদে কণ্ঠভোটে পাস হয়।[৩] ২৪ জুন রাষ্ট্রপতির স্বাক্ষরের পর তা আইনে পরিণত হয়।[৪]

বিশ্লেষণ সম্পাদনা

এই আইনের ধারার সংখ্যা ২৩টি। আইনে বলা হয়েছে, হজ ব্যবস্থাপনার জন্য সরকার এ সংক্রান্ত জাতীয় কমিটি গঠন করবে। হজ ও ওমরাহ এজেন্সিকে শর্ত মেনে নিবন্ধন নিতে হবে। হজের চুক্তি এখানে হওয়ার পরে কেউ সৌদি আরবে গিয়ে ঠকালে তবে ওই অপরাধ ‘বাংলাদেশে হয়েছে’ বলে গণ্য করে এই আইনে বিচারের বিধান রাখা হয়েছে। নিবন্ধন পেতে হলে হজ এজেন্সিকে তিন বছর এবং ওমরাহ এজেন্সিকে দুই বছরের ট্র্যাভেল এজেন্সি পরিচালনার অভিজ্ঞতার শর্ত দেওয়া হয়েছে। হজ এজেন্সিগুলো অনিয়ম করলে তাদের নিবন্ধন বাতিলের পাশাপাশি সর্বোচ্চ ৫০ লাখ টাকা জরিমানা করা আর ওমরা এজেন্সি অনিয়ম করলে তারা নিবন্ধন হারানোর সঙ্গে সর্বোচ্চ ১৫ লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানা করে শাস্তির বিধান দেওয়া হয়েছে। এছাড়া জামানত বাজেয়াপ্ত, নিবন্ধন স্থগিত, সতর্কীকরণ ও তিরস্কারের শাস্তিও রয়েছে। কোনো এজেন্সি পরপর দুইবার তিরস্কৃত হলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে তার নিবন্ধন দুই বছরের জন্য স্থগিত হয়ে যাবে। কোন এজেন্সির নিবন্ধন বাতিল হলে ওই এজেন্সির অংশীদার বা স্বত্বাধিকারীরা পরে কখনও হজ বা ওমরা এজেন্সির নিবন্ধন পাবে না। অন্য কোনো এজেন্সির কাজেও সম্পৃক্ত হতে পারবে না। হজ এজেন্সিগুলো স্বত্ত্ব পরিবর্তন করতে চাইলে নিবন্ধন কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে অনুমতি নেওয়ার কথাও বলা হয়েছে আইনে।[৫]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা