উইলিয়াম জেমস হার্শেল

(স্যার উইলিয়াম জেমস হার্শেল থেকে পুনর্নির্দেশিত)

স্যার উইলিয়াম জেমস হার্শেল, দ্বিতীয় ব্যারোনেট (৯ জানুয়ারি ১৮৩৩ – ২৪ অক্টোবর  ১৯১৭) [১][২][৩][৪][৫] ছিলেন একজন বৃটিশ আইসিএস অফিসার যিনি বৃটিশ ভারতে তথা বাংলায় কাজের দরপত্রে বা চুক্তিপত্রে প্রথম এবং কালক্রমে প্রথম অপরাধী শনাক্ত করতে ডান হাতের আঙুলের ছাপ নেওয়ার প্রথা চালু করেন । [২][৬][৭] [৮]

স্যার উইলিয়াম জেমস হার্শেল,ব্যারোনেট
জন্ম(১৮৩৩-০১-০৯)৯ জানুয়ারি ১৮৩৩
মৃত্যু২৪ অক্টোবর ১৯১৭(1917-10-24) (বয়স ৮৪)
বৈজ্ঞানিক কর্মজীবন
কর্মক্ষেত্রহাতের আঙুলের ছাপ, ফরেনসিক বিষয়াদি

ব্যক্তিগত জীবন সম্পাদনা

উইলিয়াম জেমস হার্শেলের জন্ম ১৮৩৩ খ্রিস্টাব্দের ৯ ই জানুয়ারি বাকিংঘমশায়রের (বর্তমানে  বার্কশায়রের) স্লাফের জ্যোতির্বিজ্ঞানী পরিবারে। তার পিতা স্যার জন ফ্রেডরিক উইলিয়াম হার্শেল ছিলেন জ্যোতির্বিজ্ঞানী ও গণিতজ্ঞ। স্যার উইলিয়াম হার্শেল যিনি ১৭৮১ খ্রিস্টাব্দে ইউরেনাস গ্রহটির আবিষ্কর্তা, হলেন জেমসের পিতামহ।[৮] তিনি পিতার বারটি সন্তানের মধ্যে ছিলেন তৃতীয় এবং তিনজন জ্যোতির্বিদদের মধ্যে জ্যেষ্ঠ। তার কনিষ্ঠ জ্যোতির্বিদ ভ্রাতারা হলেন আলেকজান্ডার স্টুয়ার্ট হার্শেল এবং জন হার্শেল জুনিয়র।

ছোটবেলা থেকেই জেমস ছিলেন বেশ দুরন্ত। পিতা তাকে ‘মাই আনরুলি বয়’ বলেই সম্বোধন করতেন। পিতার পরামর্শ মেনে জ্যোতির্বিদ্যা শিক্ষা না করে প্রশাসনিক কাজকর্ম শেখার জন্য ভর্তি হয়েছিলেন হেলিবেরির ‘ইষ্ট ইন্ডিয়া কলেজে’। সেখান থেকে ‘ইন্ডিয়ান রাইটার শিপ’ পরীক্ষা পাশের পর ১৮৫০ খ্রিস্টাব্দে ভারতে আসেন। প্রথমে পশ্চিমবঙ্গের মালদহে অ্যাসিস্টান্ট কালেক্টর অ্যান্ড ম্যাজিস্ট্রেট পদে এবং পরে ইন্ডিয়ান সিভিল সার্ভিসে মনোনীত হয়ে আসেন মুর্শিদাবাদ জেলার জঙ্গিপুর মহকুমায়। শাসক বৃটিশ ও শাসিত ভারতীয়দের মধ্যে অবিশ্বাসের পরিমণ্ডলে কাজ করতে তার সমস্যা দেখা দেয়। কিন্তু সে সময়ে বাংলায় নিরক্ষরদের টিপসই নেওয়ার প্রথা চালু ছিল। জেমস প্রথম সরকারি দরপত্র বা চুক্তিপত্রে পিছনে কালি আর তেলের মিশ্রণে ডুবিয়ে ঠিকাদারের ডান হাতের আঙ্গুলের ছাপ নেওয়া শুরু করেন যদিও কোন সরকারি নির্দেশ ছিল না। পরবর্তীকালে বাংলা পুলিশের ইন্সপেক্টর জেনারেল এডওয়ার্ড রিচার্ড হেনরি অপরাধী শনাক্ত করার উপায় হিসাবে আঙুলের ছাপ নেওয়া শুরু করেন। কলকাতার রাইটার্স বিল্ডিং-এ অ্যানথ্রোপমেট্রি বিভাগও চালু হয়। এই বিভাগে দু-জন বাঙালিকে নিযুক্ত করেন এডওয়ার্ড। তারা হলেন - কাজি আজিজুল হকহেমচন্দ্র বসু[৮]

পারিবারিক জীবন সম্পাদনা

১৮৬৪ খ্রিস্টাব্দের ১৯ শে মে তিনি সারি’র হ্যাচকাম হাউসের আলফ্রেড হার্ডক্যাসেলের কনিষ্ঠা কন্যা অ্যানি এম্মা হ্যালডেনকে বিবাহ করেন। তাদের চারটি সন্তান জন্মগ্রহণ করেন:

  • মার্গারেট এলিজা এমা হার্শেল (১৮৬৫-১৭৯৮) প্রথম দিকে তার মস্তিষ্কের টিউমার হয়েছিল।
  • এমা ডরোথিয়া হার্শেল (১৮৬৭–১৯৫৪)
  • শ্রদ্ধাভাজন স্যার জন চার্লস উইলিয়াম হার্শেল,তৃতীয় ব্যারনেট (১৮৬৯-১৯৫০)
  • আর্থার এডওয়ার্ড হার্ডক্যাসল হার্শেল (১৮৭৩–১৯২৪)

তিনি বার্কশায়ারের ওয়ারফিল্ডে থাকতেন। তার মৃত্যুর পরে ব্যারনেটিসি পুত্রের কাছে চলে যায়।

আঙুলের ছাপ নেওয়ার প্রথা সম্পাদনা

 
১৮৫৯-60 সালে হার্শেলের নেওয়া আঙুলের ছাপ

জেমস হার্শেল ইউরোপীয়ানদের মধ্যে  প্রথম ব্যক্তি যিনি শনাক্তকরণের কাজে হাতের আঙুলের ছাপের ব্যবহার শুরু করেন। তিনি বুঝেছিলেন যে, হাতের আঙুলের ছাপ অনন্য এবং স্থায়ী। তিনি নিজেই তার হাতের ছাপ জীবনভর রেখে দিয়ে সত্যতা প্রমাণ করেছেন। সরকারি কাজে হাতের আঙুলের ছাপ নেওয়ার প্রথম ব্যক্তি তিনি।

১৮৫০ খ্রিস্টাব্দে, তিনি আইসিএস অফিসার হিসাবে বাংলায় আসেন তিনি বিভিন্ন কাজের জন্য দরপত্র বা চুক্তিপত্রে ঠিকাদারদের হাতের আঙুলের ছাপ নেওয়া শুরু করেন। সরকারি নির্দেশনামা কিন্তু তখন চালু ছিল না। [২][৯]

জেমস হার্শেল অল্প বয়সেই কর্মজীবন শুরু করেন এবং প্রয়াণে দু-বৎসর আগে অবসর নেন।।

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা

  • Works by Sir William Herschel, 2nd Baronet at Project Gutenberg

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. A. Spokes Symonds, ‘Herschel, Sir William James, second baronet (1833–1917)’, rev. Katherine Prior, Oxford Dictionary of National Biography, Oxford University Press, 2004 accessed 14 Nov 2013
  2. "Michele Triplett's Fingerprint Dictionary: H" (glossary), Michele Triplett, 2006, Fprints.nwlean.net webpage: Fprints-H ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১৬ অক্টোবর ২০০৬ তারিখে.
  3. Death Of Sir William Herschel. Author Of Finger-Print Identity System. (Obituaries) .He was The Times Thursday, Oct 25, 1917; pg. 9; Issue 41618; col F
  4. Sir William Herschel. (News) The Times Saturday, Oct 27, 1917; pg. 9; Issue 41620; col E
  5. ‘HERSCHEL, Sir William James’, Who Was Who, A & C Black, an imprint of Bloomsbury Publishing plc, 1920–2008; online edn, Oxford University Press, Dec 2007 accessed 13 Nov 2013
  6. "Michele Triplett's Fingerprint Dictionary: K" (glossary), Michele Triplett, 2006, Fprints.nwlean.net webpage: Fprints-K ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১৬ অক্টোবর ২০০৬ তারিখে.
  7. Herschel, William J (১৯১৬)। The Origin of Finger-Printing (পিডিএফ)। Oxford University Press। আইএসবিএন 978-1-104-66225-7 
  8. "হাতের ছাপ থেকে অপরাধী প্রথম শনাক্ত হয় বাংলাতেই"। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৭-১৮ 
  9. Sengoopta Chandak, Imprint of the Raj: How Fingerprinting was Born in Colonial India