স্মৃতিসৌধ

একধরনের স্থাপনা যা স্পষ্টভাবে কোনো ব্যক্তি বা গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা স্মরণ করার জন্য তৈরি অথবা উদ্দ

স্মৃতিসৌধ একপ্রকার স্থাপনা যা কোনো ব্যক্তি বা ঘটনার স্মৃতিতে নির্মিত কিংবা কোনো ঐতিহাসিক যুগ বা সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের স্মরণের অংশ হিসাবে কোনো সামাজিক গোষ্ঠীর কাছে প্রাসঙ্গিক।[] স্মৃতিসৌধের উদাহরণের মধ্যে মূর্তি, যুদ্ধ স্মারক, ঐতিহাসিক ভবন ও প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান উল্লেখযোগ্য। কোনো স্মৃতিসৌধের সংরক্ষণের কোনো জন-আগ্রহ থাকলে তাকে ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান বা অনুরূপ তালিকায় ভুক্ত করা যায়।[]

ব্রাজিলের রিও ডি জেনিরোতে অবস্থিত ত্রাণকর্তা যিশুখ্রিস্টের মূর্তি, দক্ষিণ আমেরিকার সবচেয়ে বেশি দেখা স্মৃতিসৌধ।

সৃষ্টি ও কার্যকারিতা

সম্পাদনা
 
প্রথম বিশ্বযুদ্ধে নিহত ভারতীয় সৈনিকদের স্মৃতিতে নির্মিত ইন্ডিয়া গেট, যা নয়াদিল্লির অন্যতম বিখ্যাত স্মৃতিসৌধ।

কোনো শহর বা স্থানের সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য প্রায়ই স্মৃতিসৌধ ব্যবহার করা হয়। ওয়াশিংটন, ডিসি, নয়াদিল্লিব্রাসিলিয়ার মতো পরিকল্পিত শহর অনেকসময় কোনো স্মৃতিসৌধকে কেন্দ্র করে তৈরি করা হয়। যেমন নগর পত্তনের আগে ওয়াশিংটন শহরের সার্বজনিক এলাকার উন্নতির জন্য পিয়ের শার্ল লঁফঁ ওয়াশিংটন মনুমেন্টের ধারণা করেছিলেন। আরও পুরনো নগরের ক্ষেত্রে স্মৃতিসৌধ যেখানে অবস্থিত সেটি ইতিপূর্বে গুরুত্বপূর্ণ।

বয়স, আকার বা ঐতিহাসিক গুরুত্বের জন্য খ্যাত স্থাপনা অন্য কোনো কারণে নির্মিত হলেও সেটি স্মৃতিসৌধের স্বীকৃতি পায়, যেমন চীনের মহাপ্রাচীর

অনেকসময় ঐতিহাসিক বা রাজনৈতিক বার্তা প্রেরণের উদ্দেশ্যে স্মৃতিসৌধ নির্মিত হয়, আর যার ফলে স্মৃতিসৌধ কোনো সক্রিয় সমাজ-রাজনৈতিক প্রভাবের বিকাশ করে। এছাড়া সমকালীন রাজনৈতিক ক্ষমতার শ্রেষ্ঠত্ব দৃঢ়তর করার জন্য স্মৃতিসৌধ ব্যবহার করা হয়, যেমন তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নে ভ্লাদিমির লেনিনের একাধিক মূর্তি। এর শিক্ষামূলক উদ্যেশ্য পূরণের জন্য স্মৃতিসৌধকে জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করতে হবে, অর্থাৎ জনসাধারণ এর স্থানীয় মাত্রা ও বিষয়বস্তু অনুভব করতে পারবে। স্মৃতিসৌধের সামাজিক অর্থ সবসময় নির্দিষ্ট থাকে না, এবং এ নিয়ে প্রায়ই বিভিন্ন সামাজিক গোষ্ঠীর মধ্যে "বিবাদ" সৃষ্টি হয়। উদাহরণস্বরূপ, প্রাক্তন সমাজতন্ত্রিক রাষ্ট্র পূর্ব জার্মানির কাছে বার্লিন প্রাচীর পশ্চিমের মতবাদের "অশুদ্ধি" থেকে সুরক্ষার প্রতীক ছিল, কিন্তু ভিন্নমতাবলম্বীদের কাছে এটি ঐ রাষ্ট্রের আনুষঙ্গিক দমননীতি ও বাতুলতার প্রতীক ছিল।

 
যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম রাষ্ট্রপতি জর্জ ওয়াশিংটনের স্মৃতিতে ওয়াশিংটন, ডিসিতে নির্মিত ওয়াশিংটন মনুমেন্ট, যা বিশ্বের সর্বোচ্চ ওবেলিস্ক

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. Caves, R. W. (২০০৪)। Encyclopedia of the City। Routledge। পৃষ্ঠা 470। আইএসবিএন 978-0415252256 
  2. "Preserving Cultural Heritages"wmf.org। World Monument Fund। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-১০-২৩ 

আরও পড়ুন

সম্পাদনা
  • Chaney, Edward। 'Egypt in England and America: The Cultural Memorials of Religion, Royalty and Revolution', Sites of Exchange: European Crossroads and Faultines, ed. M. Ascari and A. Corrado, Amsterdam & New York, Rodopi, 2006, 39–6 
  • Choay, Françoise (২০০১)। The invention of the historic monument। Cambridge University Press। 
  • Gangopadhyay, Subinoy (২০০২)। Testimony of Stone : Monuments of India। Dasgupta & Co.। 
  • Phillips, Cynthia; Priwer, Shana (২০০৮)। Ancient Monuments। M E Sharpe Reference। 
  • Stierlin, Henri (২০০৫)। Great monuments of the ancient world। Thames & Hudson। 
  • Judith Dupre. Monuments: America's History in Art and Memory (2007). Random House. আইএসবিএন ৯৭৮-১-৪০০০-৬৫৮২-০

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা