স্তূপ

ধ্যানের স্থান হিসাবে ব্যবহৃত বৌদ্ধ অবশেষ সম্বলিত ঢিবির মতো কাঠামো

স্তূপ বা বৌদ্ধস্তূপ (সংস্কৃত: स्तूप, "ঢিবি", "গাদা") হচ্ছে একটি পাহাড়ের সদৃশ উত্তাল গোলাকৃতির কাঠামোযুক্ত স্থাপনা। স্তূপ সাধারণত বৌদ্ধ ভিক্ষুদের ধ্যানের স্থান হিসাবে ব্যবহৃত হয়।[২] স্থাপত্য পরিভাষায় এর সমার্থক শব্দ হচ্ছে চৈতা যার অর্থ একটি প্রার্থনা হল বা একটি স্তূপযুক্ত মন্দির।

খাইবার পাখতুনখোয়ার চাকদারা শহরে প্রাচীনকালের একটি বৌদ্ধস্তূপ ( খৃস্টপূর্ব ৩ সাল)[১]

উৎপত্তি সম্পাদনা

 
সাচি বৌদ্ধস্তূপ

স্তূপগুলো সম্ভবত প্রাক-বৌদ্ধধর্মীয় দেহাবশেষ ঢিবি হিসাবে উদ্ভূত হয়েছিল যেখানে আত্নউৎসর্গীকৃত সাধুদের সমাহিত করা হতো।[৩] অনেক লেখক ধারণা করেন যে স্তূপগুলি ভূমধ্যসাগর থেকে সিন্ধু উপত্যকা পর্যন্ত একটি বৃহত্তর সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য থেকে উৎসরিত। খৃস্টপূর্ব যুগে গোলাকৃতির ভিত্তির উপরে কৌনিক আকারের ঢিবি ধরনের যে সমাধিগুলো পাওয়া যায় তার সোথে এর সম্পর্ক আছে।[৪] গম্বুজ আকারের স্তম্ভ বৌদ্ধ ধর্মীয় ভবন (বুদ্ধের পবিত্র নিদর্শনগুলি সংরক্ষণের সাথে স্মরণীয় স্মৃতিস্তম্ভ) হিসাবে ভারতে ব্যবহার করা শুরু হয়েছিল।[৫]

বৌদ্ধ ইতিহাস অনুসারে সম্রাট অশোক (বিধি: ২—৩-২২২ খ্রিস্টাব্দ) প্রথমদিককার বিভিন্ন সমাধি থেকে বুদ্ধের ধ্বংসাবশেষ উদ্ধার করেছিলেন এবং তা সর্বত্র ছড়িয়ে দেবার উদ্দেশ্যে ভারতবর্ষ জুড়ে ৮৪,০০০ স্তূপা স্থাপন করেছিলেন।স্তূপ পরবর্তীতে অলংকৃত হতে থাকে। সাচি বৌদ্ধস্তূপ হচ্ছে তেমনই একটি উদাহরণ যাতে স্তূপ পুর্নাঙ্গ কাঠামোর ছাপ পাওয়া যায়।

প্রকারভেদ সম্পাদনা

বিভিন্ন কারণে নির্মিত, বৌদ্ধ স্তূপগুলি ফর্মের ভিত্তিতে এবং পাঁচটি ধরনের ফাংশনের ভিত্তিতে শ্রেণিবদ্ধ করা হয়েছে:[৬]

  • রিলিক স্তূপ, যেখানে বুদ্ধ, তাঁর শিষ্যগণ এবং সাধুগণের দেহাবশেষের ধ্বংসাবশেষ বা অবশেষকে সমাহিত।
  • অবজেক্ট স্তূপ, যার মধ্যে বুদ্ধ বা তাঁর শিষ্যদের ব্যবহৃত জিনিসগুলি যেমন ভিক্ষাবৃত্ত বাটি বা পোশাক, বা গুরুত্বপূর্ণ বৌদ্ধ ধর্মগ্রন্থগুলি রাখা আছে।
  • স্মরণীয় স্তূপ যা বুদ্ধ বা তাঁর শিষ্যদের জীবনে ঘটনার স্মরণে নির্মিত হয়েছিল।
  • প্রতীকী স্তূপ, বৌদ্ধ ধর্মতত্ত্বের দিকগুলির প্রতীক হিসাবে বিবেচনা করা হয়। উদাহরণস্বরূপ, বোরোবুদুরকে "মহাযান বোধিসত্ত্বের চরিত্রে" তিনটি জগতের (ধাতু) এবং আধ্যাত্মিক স্তরগুলির (ভূমি) প্রতীক হিসাবে বিবেচনা করা হয়।[৬]
  • ভ্রমণ স্তূপ, পরিদর্শন স্মরণে বা আধ্যাত্মিক সুবিধা অর্জনের জন্য নির্মিত হয়,

আরো জানুন সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Buddhist architecture, p.173
  2. Encyclopedia.com. Credited to James Stevens Curl, A Dictionary of Architecture and Landscape Architecture, 2000, originally published by Oxford University Press 2000.
  3. "Buddhist Art and Architecture: Symbolism of the Stupa / Chorten"। ২০০৬-০৮-১৪। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-০১-০৭ 
  4. "It is probably traceable to a common cultural inheritance, stretching from the Mediterranean to the Ganges valley, and manifested by the sepulchres, conical mounds of earth on a circular foundation, of about the eighth century B.C. found in Eritrea and Lydia." Rao, P. R. Ramachandra (2002). Amaravati. Youth Advancement, Tourism & Cultural Department Government of Andhra Pradesh. p. 33
  5. Encyclopædia Britannica (2008), Pagoda.
  6. Le Huu Phuoc (March 2010). Buddhist Architecture. Grafikol. p. 140. ISBN 978-0-9844043-0-8. Retrieved 8 December 2011.