সৈয়দ মোহাম্মদ আহসান
ভাইস-এডমিরাল সৈয়দ মুহাম্মদ আহসান (উর্দু: ﺴﻴﺩ ﻣﺤﻣﺪ ﺍﺣﺴﻦ) (১৯২১ – ১৯৮৯) ছিলেন পাকিস্তানের ৪র্থ নৌবাহিনী প্রধান এবং পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর। তিনি পাকিস্তানের নৌ গোয়েন্দা বিভাগের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে কাজ করেছেন। পাশাপাশি নৌবাহিনীকে আধুনিক করায় আর ভূমিকা ছিল।[১][২] নৌ গোয়েন্দা বিভাগের ডিরেক্টর জেনারেল হিসেবে তিনি যুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশ নেন এবং ১৯৬৫ সালের ভারত পাকিস্তান যুদ্ধের সময় নৌ গোয়েন্দাদের অপারেশনে নেতৃত্ব দিয়েছেন।[৩]
সৈয়দ মুহাম্মদ আহসান | |
---|---|
![]() | |
জন্ম নাম | সৈয়দ মুহাম্মদ আহসান |
ডাকনাম | এস. এম. আহসান |
জন্ম | হায়দ্রাবাদ, ব্রিটিশ ভারত | ৯ জুলাই ১৯২১
মৃত্যু | ৪ ডিসেম্বর ১৯৮৯ ইসলামাবাদ, পাকিস্তান | (বয়স ৬৮)
সমাধি | করাচি সামরিক কবরস্থান |
আনুগত্য | ![]() ![]() |
সার্ভিস/ | ![]() ![]() |
কার্যকাল | ১৯৪০–১৯৭১ |
পদমর্যাদা | ![]() |
সার্ভিস নম্বর | পিএন নং. ০৭ |
ইউনিট | নেভাল অপারেশন ব্রাঞ্চ |
নেতৃত্বসমূহ | চীফ অব নেভাল স্টাফ পূর্বাঞ্চলীয় সামরিক হাই কমান্ড |
যুদ্ধ/সংগ্রাম | দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ব্রিটেনের যুদ্ধ ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ ১৯৪৭ ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ ১৯৬৫ অপারেশন দ্বারকা অপারেশন বরিশাল |
পুরস্কার | সিতারা-ই-পাকিস্তান ডিস্টিঙ্গুইশড সার্ভিস অর্ডার হিলাল-ই-কায়েদে আজম |
সম্পর্ক | মুহাম্মদ জালালউদ্দিন সাইদ (চাচাত ভাই) |
জন্ম ও শিক্ষাজীবনসম্পাদনা
সৈয়দ মুহাম্মদ আহসান ১৯২১ সালে ব্রিটিশ ভারতের হায়দ্রাবাদের একটি উর্দুভাষী পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছেন। তিনি হায়দ্রাবাদের নিজাম কলেজে পড়াশোনা করেছেন।[৪]
কর্মজীবনসম্পাদনা
১৯৩৮ সালে তিনি ব্রিটিশ ভারতীয় নৌবাহিনীতে যোগ দেন। ১৯৩৮ থেকে ১৯৪০ সাল পর্যন্ত তিনি ব্রিটেনে সামরিক প্রশিক্ষণ লাভ করেছেন।[৪] দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় তিনি আটলান্টিক মহাসাগর, ভূমধ্যসাগর ও ভারত মহাসাগরে লড়াইয়ে অংশ নিয়েছেন।[৫] আরাকানে সংঘটিত একটি নৌযুদ্ধে সাহসিকতার জন্য তিনি ডিস্টিঙ্গুইশড সার্ভিস ক্রস খেতাব পান। পরবর্তীতে ইংল্যান্ডের লিভারপুলের একটি টেকনিকাল স্কুলের ইন্সট্রাক্টর নিযুক্ত হন। ১৯৪৬ থেকে ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত তিনি ভারতের শেষ ভাইসরয় লর্ড মাউন্টব্যাটেনের এডিসি ছিলেন। পরবর্তীতে পাকিস্তানের গভর্নর জেনারেল মুহাম্মদ আলি জিন্নাহর এডিসি হন।[৪][৫]
১৯৫৫ থেকে ১৯৫৬ সাল পর্যন্ত তিনি যুক্তরাষ্ট্রে পাকিস্তান দূতাবাসের নৌবাহিনীর এটাশে ছিলেন। ১৯৬২ সালে তিনি রিয়ার এডমিরাল হন। ১৯৬৪ সালে তিনি পূর্ব পাকিস্তানের আভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান নিযুক্ত হন। ১৯৬৬ সালে তিনি নৌবাহিনীর প্রধান হন। পরের বছর ১৯৬৭ সালে তিনি ভাইস এডমিরাল পদে উন্নীত হন।[৪][৫]
পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নরসম্পাদনা
১৯৬৯ সালে ইয়াহিয়া খান সামরিক আইন জারি করার পর ১ সেপ্টেম্বর সৈয়দ মুহাম্মদ আহসান পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর হিসেবে শপথ নেন। তিনি গভর্নরের দায়িত্বে থাকাকালীন সময়ে ৭ ও ১৭ ডিসেম্বর যথাক্রমে জাতীয় ও প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে। ক্ষমতা হস্তান্তর নিয়ে কালক্ষেপণের ফলে অসন্তোষ সৃষ্টি হয়। ১৯৭১ সালের ১ মার্চ ইয়াহিয়া খান আসন্ন অধিবেশন স্থগিত ঘোষণা করেন। এর ফলে পূর্ব পাকিস্তানে ব্যাপক গণ বিক্ষোভ দেখা দেয়।[৪][৫]
১৯৭১ সালের ১ মার্চ সৈয়দ মুহাম্মদ আহসানের স্থলে সাহেবজাদা ইয়াকুব খানকে গভর্নর নিয়োগ দেয়া হয়।[৪]
সম্মাননাসম্পাদনা
সৈয়দ মুহাম্মদ আহসান ১৯৫৮ সালে সিতারা-ই-কায়েদে আজম, ১৯৬৯ সালে সিতারা-ই-পাকিস্তান এবং হিলাল-ই-কায়েদে আজম খেতাব লাভ করেন।[৪]
তথ্যসূত্রসম্পাদনা
- ↑ "Navy Special Forces"। Global Security.org। Global Security.org। ২৯ জুন ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ 2011। এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন:
|সংগ্রহের-তারিখ=
(সাহায্য) - ↑ Shafiullah, PA, Major-General K.M., "The Establishment of Eastern High Command.", Bangladesh at War, Agamee Prakshani, পৃষ্ঠা 26–31, আইএসবিএন 984-401-322-4
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ চ ছ সৈয়দ মুহাম্মদ আহসান, বাংলাপিডিয়া
- ↑ ক খ গ ঘ "Governors and Acting Governors of East Bengal/ East Pakistan 1947-1971 ২১ জুলাই ২০১৬ তারিখে সংগৃহিত"। ১৪ এপ্রিল ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২১ জুলাই ২০১৬।
বহিঃসংযোগসম্পাদনা
সামরিক দপ্তর | ||
---|---|---|
পূর্বসূরী আফজাল রহমান খান |
চীফ অব নেভাল স্টাফ ২০ অক্টোবর ১৯৬৬ – ৩১ আগস্ট ১৯৬৯ |
উত্তরসূরী মুজাফফর হাসান |
পূর্বসূরী সাহেবজাদা ইয়াকুব খান |
সামরিক আইন প্রশাসক ১ সেপ্টেম্বর ১৯৬৯ – ৭ মার্চ ১৯৭১ |
উত্তরসূরী সাহেবজাদা ইয়াকুব খান |
পূর্বসূরী মেজর-জেনারেল মুজাফফরউদ্দিন |
পূর্বাঞ্চলীয় সামরিক হাই কমান্ডের কমান্ডার ১ সেপ্টেম্বর ১৯৬৯ – ৭ মার্চ ১৯৭১ |
উত্তরসূরী এয়ার কমোডর মিট্টি মাসুদ |
রাজনৈতিক দপ্তর | ||
পূর্বসূরী সাহেবজাদা ইয়াকুব খান |
পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর ১৯৬৯–১৯৭১ |
উত্তরসূরী সাহেবজাদা ইয়াকুব খান |
পূর্বসূরী এন এম উকাইলি |
পাকিস্তানের অর্থমন্ত্রী ১৯৬৯ |
উত্তরসূরী মুজাফফর আলি খান কিজিলবাশ |