সূত্রাপুর জমিদার বাড়ি

সূত্রাপুর জমিদার বাড়ি পুরান ঢাকার সূত্রাপুর থানার রেবতী মোহন দাস রোডে (আর. এম. দাস রোড) অবস্থিত একটি সুদৃশ্য ভবন। ২০ শতকের গোড়ার দিকে প্রতাপশালী হিন্দু জমিদার রেবতী মোহন দাস এই ভবনটি নির্মাণ করেন। এটি বাংলাদেশের প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের পুরাকীর্তির তালিকার অন্তর্ভুক্ত।

সূত্রাপুর জমিদার বাড়ি
সূত্রাপুর জমিদার বাড়ি
ধর্ম
অন্তর্ভুক্তিহিন্দুধর্ম
জেলাঢাকা জেলা
অবস্থান
দেশবাংলাদেশ
স্থাপত্য
সৃষ্টিকারীরেবতী মোহন দাস

ইতিহাস সম্পাদনা

ব্রিটিশ আমলের জমিদার রায় বাহাদুর সত্যেন্দ্র কুমার দাস এই বাড়িটির মালিক ছিলেন। তিনি একসাথে জমিদার, ব্যবসায়ী, ব্যাংকার ও প্রেসমালিক হিসেবে খ্যাতি লাভ করেন। এছাড়া ঢাকা পৌরসভার চেয়ারম্যানের দায়িত্বও পালন করেন। তিনি ওয়াল্টার রোডে বিজলীবাতি স্থাপনের জন্য অর্থপ্রদান করেন, এজন্য ওয়াল্টার রোডের একটি বিরাট অংশের নাম তার পিতা রেবতী মোহন দাসের নামানুসারে রেবতী মোহন দাস রোড বা আর. এম. দাস রোড রাখা হয়। স্থানীয়দের কাছে সত্যেন্দ্র কুমার দাসের বাড়িটি ‘জমিদারবাড়ি’ নামে পরিচিত ছিল। [১]

দেশবিভাগের সময় জমিদারবাড়ির বংশধরগণ বাড়িটি ত্যাগ করে চলে যায় এবং শত্রুসম্পত্তি হিসেবে বাড়িটি সরকারের অধিকারে আসে। বর্তমানে ভবনটি ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের কোয়ার্টার হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। এখানে এখন ফায়ার সার্ভিস ও সরকারি কর্মকর্তাদের পরিবার বসবাস করছে[২][৩]

গঠনশৈলী সম্পাদনা

পুরো ভবনটি পাশাপাশি অবস্থিত দুটি পৃথক তিনতলা বিশিষ্ট দালানের সমন্বয় যাদের দক্ষিণস্থিত অংশটি বেশি প্রাচীন বলে মনে হয়। দক্ষিণের মূল দালানে প্রায় ৫০ ফুট উঁচু প্রবেশমুখ আছে যার ছাদ তিনটি করিন্থিয়ান স্তম্ভ দ্বারা স্থাপিত। এর দুইপাশের অংশে বিভিন্ন নকশা ও কারুকাজ দেখা যায়। কয়েকটি লতাপাতামণ্ডিত অর্ধবৃত্তাকার কাঠামো এবং এর নিচে গোলাকার নকশা দেখা যায়। পুরো দালানে বিভিন্ন আয়তনের প্রায় ৩৫ টি কক্ষ বিদ্যমান। সামনের ছোট বারান্দা দিয়ে প্রবেশ করলে প্রায় ৫০ বর্গফুটের একটি উন্মুক্ত আঙিনায় পৌঁছানো যায় যার তিনদিক দালানে বেষ্টিত এবং মুক্ত পূর্বপ্রান্তটি ধোলাইখালে গিয়ে শেষ হয়েছে। দালানটির পিছনদিকও করিন্থিয়ান স্তম্ভ, তিনটি গোলাকার নকশা পরিবৃত অর্ধবৃত্তাকার কাঠামো ও অন্যান্য ফুলপাতার কারুকাজ দ্বারা শোভিত।

 
সূত্রাপুর জমিদারবাড়ির করিন্থিয়ান স্তম্ভ

উত্তরপার্শ্বের তিনতলা ভবনটি রেবতী মোহন দাসের কোন এক আত্মীয় নির্মাণ করেন বলে জানা যায়। এতেও ৫০ ফুট প্রবেশমুখ এবং প্রায় সমানসংখ্যক কক্ষ রয়েছে। এর ভিতরেও অভ্যন্তরীণ আঙিনা এবং ধোলাইখালের খালের দিকে একটি মুক্তপথ(পূর্বদিকে) আছে। এর ছাদের বেষ্টনীতে নির্দিষ্ট দূরত্বে ছোট ছোট রন্ধ্র বিদ্যমান।

ভবন দুটি একত্রে প্রায় এক একর স্থানের উপর নির্মিত।[৪]

চিত্রশালা সম্পাদনা

আরও দেখুন সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "এই আমাদের ওয়ার্ড ৮০"। প্রথম আলো। ৬ মে ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৬ 
  2. Wadud, Khawaja Ashraful Hawak, Md Abdul। "সমকাল :: বেহাত ও নষ্ট হচ্ছে ঢাকার পুরাকীর্তি ::" [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  3. "অরক্ষিত হয়ে পড়ছে পুরান ঢাকার প্রাচীন নিদর্শন : শুধু ঘোষণাতেই সীমাবদ্ধ ঐতিহ্য"। ২০ মার্চ ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৬ 
  4. BUILDINGS OF THE BRITISH RAJ IN BANGLADESH, by Najimuddin Ahmed, edited by John Sanday, THE UNIVERSITY PRESS LIMITED, November1986 first edition, page number 51-52