সুজন চক্রবর্তী

ভারতীয় রাজনীতিবিদ

সুজন চক্রবর্তী (জন্ম: ১৬ মার্চ ১৯৫৯) হলেন ভারতীয় বায়োমেডিক্যাল বিজ্ঞানী, রাজনীতিবিদ এবং ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী) রাজনৈতিক দলের নেতা। তিনি পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের যাদবপুর লোকসভা কেন্দ্রের চতুর্দশ লোকসভার সদস্য ছিলেন।[১] তিনি ১৯৯৫ সালে গ্রিসেআন্তর্জাতিক ক্যান্সার রিসার্চ ইনস্টিটিউটে একটি টিউমার মার্কার সম্পর্কিত বিষয়ে গবেষণা করেছিলেন, যা এই দশকের সেরা এশীয় উপস্থাপন হিসাবে বিবেচিত হয়েছিল। তিনি বর্তমানে ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্ক্সবাদী) দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য।

ডঃ সুজন চক্রবর্তী
ডঃ সুজন চক্রবর্তী
এমএলএ
কাজের মেয়াদ
২০১৬ – ২০২১
পূর্বসূরীমনিষ গুপ্ত
উত্তরসূরীদেবব্রত মজুমদার
সংসদীয় এলাকাযাদবপুর
যাদবপুরের
ভারতীয় সংসদের সদস্য
কাজের মেয়াদ
২০০৪-২০০৯
পূর্বসূরীকৃষ্ণা বসু
উত্তরসূরীকবীর সুমন
সংসদীয় এলাকাযাদবপুর
এমএলএ
কাজের মেয়াদ
১৯৯৮-২০০১
পূর্বসূরীশোভনদেব চট্টোপাধ্যায়
উত্তরসূরীঅরূপ ভদ্র
সংসদীয় এলাকাবারুইপুর
ব্যক্তিগত বিবরণ
জন্ম (1959-03-16) ১৬ মার্চ ১৯৫৯ (বয়স ৬৫)
কালিকাপুর, দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা, পশ্চিমবঙ্গ
রাজনৈতিক দলসিপিআই (এম)
দাম্পত্য সঙ্গীমিলি চক্রবর্তী
বাসস্থানদক্ষিণ চব্বিশ পরগনা
প্রাক্তন শিক্ষার্থীযাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়
পেশাবৈজ্ঞানিক (বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং)
সাংবাদিক
জনসাধারণ বুদ্ধিজীবী
রাজনীতিবিদ

শিক্ষা এবং প্রাথমিক জীবন সম্পাদনা

সুজন চক্রবর্তী ১ মার্চ ১৯৫৯ সালের পশ্চিমবঙ্গেদক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলার কালিকাপুরের কানাইলাল চক্রবর্তী এবং বিনাপানি চক্রবর্তী পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।[১] তিনি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফার্মাসিউটিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শেষ করেছেন। পরে তিনি একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফার্মাসিউটিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পিএইচডি অর্জন করেন। তিনি ১৫ ডিসেম্বর ১৯৮৭ সালে মিলি চক্রবর্তীকে বিয়ে করেন।[২]

রাজনৈতিক জীবন সম্পাদনা

সুজন চক্রবর্তী ১৯৮৬-৮৮ সাল পর্যন্ত ভারতের ছাত্র ফেডারেশনের রাজ্য শাখার বাঙালি অঙ্গ ছাত্র সংগ্রামের সম্পাদক ছিলেন। তিনি ১৯৮৮-৯৩ সাল পর্যন্ত এই সংগঠনের রাজ্য ইউনিটের সেক্রেটারি এবং ১৯৯৩-৯৪ সাল পর্যন্ত কেন্দ্রীয় সংস্থার সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ১৯৯৬-২০০০ সাল পর্যন্ত সুজন চক্রবর্তী সেন্টার অব ইন্ডিয়ান ট্রেড ইউনিয়নস এর রাজ্য ইউনিটের সদস্য ছিলেন। পরে তিনি সেন্টার অব ইন্ডিয়ান ট্রেড ইউনিয়নসের জেলারেল কাউন্সিলের সদস্য হন।

১৯৯৮-২০০১ সাল পর্যন্ত সুজন চক্রবর্তী পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার সদস্য ছিলেন। তিনি তৃণমূল কংগ্রেসের অরূপ ভদ্রকে মাত্র ৫ ভোটে পরাজিত করেন।[৩] ২০০৪ সালে তিনি চতুর্দশ লোকসভা নির্বাচনে নির্বাচিত হয়েছিলেন। ৫ই আগস্ট ২০০৭ তারিখ পর্যন্ত চতুর্দশ লোকসভার সদস্য থাকাকালীন তিনি অনেকগুলি কমিটির সদস্য ছিলেন যেমন - মানবসম্পদ উন্নয়ন কমিটি, বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তি কমিটি, পরিবেশ ও বন, কৃষি এবং গ্রামীণ শিল্প মন্ত্রণালয় এবং ক্ষুদ্রতর শিল্প মন্ত্রণালয় উপদেশক কমিটি, বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তি কমিটি, পরিবেশ এবং বন কমিটি।

২০১৬ বিধানসভা নির্বাচনে সুজন চক্রবর্তী মনিষ গুপ্ত কে ১৪ হাজার ৯৪২ ভোটে পরাজিত করে যাদবপুর বিধানসভা কেন্দ্র থেকে বিধায়ক এবং বিধানসভায় বাম পরিষদীয় দলনেতা নির্বাচিত হন।[৪]

২০২১ সালের পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনে সুজন চক্রবর্তী সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী দেবব্রত মজুমদারের কাছে ৩৮ হাজার ৮৬৯ ভোটে পরাজিত হন।[৫]

সামাজিক এবং প্রশাসনিক কার্যক্রম সম্পাদনা

সুজন চক্রবর্তী বিভিন্ন সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক কার্যকলাপের সাথে জড়িত। যেমন - পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চ এবং অল ইন্ডিয়া পিপলস সায়েন্স নেটওয়ার্ক। তিনি জেলার বেশ কয়েকটি ক্লাবের সাথে যুক্ত। তিনি বাংলাদেশ, কিউবা, ফ্রান্স, গ্রিস, ইংল্যান্ড এবং আমেরিকা বিভিন্ন দেশ ভ্রমণ করেছেন।

তিনি ১৯৯৪-১৯৯৮ সাল পর্যন্ত যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে সরকারি প্রতিনিধির কোর্ট সদস্য ছিলেন। তিনি ১৯৯৬-২০০১ সাল পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গ ফার্মাসিউটিক্যাল অ্যান্ড ফোটো কেমিক্যাল ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন লিমিটেডের চেয়ারম্যান, ১৯৯৮-১৯৯৯ সাল পর্যন্ত ইনফিউশন ইন্ডিয়া লিমিটেডের চেয়ারম্যান এবং ১৯৯৯-২০০৪ সাল পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গ গ্রামীণ শক্তি উন্নয়ন কর্পোরেশন লিমিটেডের চেয়ারম্যান ছিলেন।

পুরস্কার এবং সম্মাননা সম্পাদনা

১৯৯৯-২০০০ সালে বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে অসামান্য অবদানের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন কর্তৃপক্ষ সুজন চক্রবর্তীকে "আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায় স্বর্ণপদক" প্রদান করেছিলেন।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "Sujan Chakraborty(Communist Party of India (Marxist)(CPI(M))):Constituency- JADAVPUR(SOUTH 24 PARGANAS) - Affidavit Information of Candidate:"myneta.info। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০১-০২ 
  2. "Members : Lok Sabha"loksabhaph.nic.in। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০১-০২ 
  3. "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ২৫ আগস্ট ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২ জানুয়ারি ২০২০ 
  4. "https://www.elections.in/west-bengal/assembly-constituencies/2016-election-results.html"  |title= এ বহিঃসংযোগ দেয়া (সাহায্য)
  5. "https://results.eci.gov.in/Result2021/ConstituencywiseS25150.htm?ac=150"। ৩ মে ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ মে ২০২১  |title= এ বহিঃসংযোগ দেয়া (সাহায্য)

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা