সুখেন্দু দস্তিদার

সুখেন্দু দস্তিদার (? - ১১ জুন ১৯৭৮) একজন বাঙালি সশস্ত্র বিপ্লববাদী, সাম্যবাদী রাজনীতিবিদ। তিনি সূর্য সেনের নেতৃত্বাধীন চট্টগ্রামের অস্ত্রগার আক্রমণের সর্বকনিষ্ঠ ব্যক্তি ছিলেন।[১]

সুখেন্দু দস্তিদার
বিপ্লবী সুখেন্দু দস্তিদার
জন্ম
মৃত্যু১১ জুন ১৯৭৮
জাতীয়তাবাংলাদেশী
নাগরিকত্ব ব্রিটিশ ভারত (১৯৪৭ সাল পর্যন্ত)
 পাকিস্তান (১৯৭১ সাল পর্যন্ত)
 বাংলাদেশ
পরিচিতির কারণচট্টগ্রামের অস্ত্রগার আক্রমণের ব্যক্তি
রাজনৈতিক দলঅনুশীলন সমিতি, পাকিস্তানের কমিউনিস্ট পার্টি, বাংলাদেশের সাম্যবাদী দল (মার্কসবাদী-লেনিনবাদী)
আন্দোলনভারতের বিপ্লবী স্বাধীনতা আন্দোলন
পিতা-মাতা
  • চন্দ্রকুমার দস্তিদার (পিতা)
  • কুমুদিনী দস্তিদার (মাতা)
আত্মীয়অর্ধেন্দু দস্তিদার, পূর্ণেন্দু দস্তিদার

প্রারম্ভিক জীবন সম্পাদনা

তার জন্ম হয়েছিল চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার ধলঘাট গ্রামে। পিতার নাম চন্দ্রকুমার দস্তিদার এবং মাতার নাম কুমুদিনী দস্তিদার।

রাজনৈতিক জীবন সম্পাদনা

পাকিস্তানের কমিউনিস্ট পার্টিতে সম্পাদনা

১৯৫৬ সালে অনুষ্ঠিত পাকিস্তানের কমিউনিস্ট পার্টির পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক সম্মেলনে ১২ সদস্যবিশিষ্ট পার্টির পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক কমিটি নির্বাচিত করা হয়। সেই কমিটির সদস্য ছিলেন সুখেন্দু দস্তিদার। ১৯৬৭ — ৬৮ সালে পূর্ব পাকিস্তানের কমিউনিস্ট পার্টির পূর্ব পাকিস্তান শাখায় চীন-সোভিয়েত ভাঙনের প্রেক্ষাপটে ভাঙন দেখা দেয়।

১৯৬৭ সালে ১-৩ অক্টোবর ১ম কংগ্রেসে মার্কসবাদ, লেনিনবাদ, মাও সেতুং এর চিন্তাধারাকে আদর্শিক ভিত্তি হিসাবে গ্রহণ করে কমরেড সুখেন্দু দস্তিদার, কমরেড মোহাম্মদ তোয়াহার নেতৃত্বে পূর্ব পাকিস্তান কমিউনিস্ট পার্টি (এম-এল) প্রতিষ্ঠিত হয়। সুখেন্দু দস্তিদার ১ম কংগ্রেসে ৯ সদস্যবিশিষ্ট নির্বাচিত কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।

মুক্তিযুদ্ধে অবদান সম্পাদনা

কমরেড সুখেন্দু দস্তিদার, কমরেড তোয়াহার নেতৃত্বে লক্ষ্মীপুর-নোয়াখালী, রাজশাহী, কিশোরগঞ্জ- ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম, ফরিদপুর, বরিশাল,সিলেট, খুলনা সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পার্টির কমরেডগণ ও মেহনতি জনতা পাক হানাদার ও তাদের দোসর রাজাকার-আলবদর-আলশামস এর বিরুদ্ধে সশস্ত্র লড়াই সংগ্রাম শুরু করেন। কমরেড সুখেন্দু দস্তিদার, কমরেড মোহাম্মদ তোয়াহার নেতৃত্বে সাম্যবাদী--শ্রমিক-কৃষক-মেহনতি জনতার গণফৌজ সশস্ত্র লড়াই সংগ্রামের মধ্য দিয়ে পাক হানাদার বাহিনী ও তাদের দালালদের পরাজিত করে লক্ষ্মীপুর-রামগতি,নোয়াখালী সদরের ২০০ বর্গমাইলের বেশি অঞ্চল নিয়ে একটি মুক্ত অঞ্চল গঠন করেন।দেশ স্বাধীন হওয়া পর্যান্ত সাম্যবাদী- গণফৌজ উক্ত অঞ্চল মুক্ত রাখে ও সেখানে জনগণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা চালু করা হয়।

বাংলাদেশের সাম্যবাদী দলে সম্পাদনা

১৯৭২ সনে সুখেন্দু দস্তিদার কর্তৃক পার্টির নাম পরিবর্তন করে পূর্ব পাকিস্তান কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী-লেনিনবাদী) থেকে বাংলাদেশের সাম্যবাদী দল (মার্কসবাদী-লেনিনবাদী) রাখা হয়।[১] এবং পার্টিতে ভাঙ্গন দেখা দেয়। সুখেন্দু দস্তিদার ও মোহাম্মদ তোয়াহার নেতৃত্বে একটি অংশ সংগঠিত হয়। অন্য অংশের নেতৃত্ব দিতে থাকেন আবদুল হক, শরদিন্দু দস্তিদার, অজয় ভট্টাচার্য এবং হেমন্ত সরকার[২]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. বসু, অঞ্জলি (নভেম্বর ২০১৩)। বসু, অঞ্জলি; সেনগুপ্ত, সুবোধচন্দ্র, সম্পাদকগণ। সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান (পঞ্চম সংস্করণ, দ্বিতীয় মুদ্রণ সংস্করণ)। কলকাতা: সাহিত্য সংসদ। পৃষ্ঠা ৭৮৮-৭৮৯। আইএসবিএন 978-8179551356 
  2. হোসেন, আমজাদ (১৯৮৯)। "পূর্ব বাংলায় নকশাল আন্দোলনের প্রভাব"। নকশালবাড়ি আন্দোলনের প্রামাণ্য তথ্য সংকলন (প্রথম প্রকাশ সংস্করণ)। পৃষ্ঠা ১৮৮–১৯২।