সি. ভি. বয়েজ

ব্রিটিশ পদার্থবিজ্ঞানী


স্যার চার্লস ভার্নন বয়েজ, এফআরএস[১] (১৫ মার্চ ১৮৫৫-৩০ মার্চ ১৯৪৪) একজন ব্রিটিশ পদার্থবিজ্ঞানী ছিলেন। উদ্ভাবনী ব্যবহারিক গবেষণার জন্য তিনি সুপরিচিত ছিলেন। [২]


চার্লস ভার্নন বয়েজ
স্যার চার্লস ভার্নন বয়েজ, এফআরএস
জন্ম১৫ মার্চ, ১৮৫৫
উয়িং, রুটল্যান্ড, যুক্তরাজ্য
মৃত্যু৩০ মার্চ ১৯৪৪ (1944-03-31) (বয়স ৮৯)
সেন্ট মেরি বোর্ন, অ্যান্ডওভার, হ্যাম্পশায়ার
নাগরিকত্বব্রিটিশ
পুরস্কার রাজকীয় পদক(১৮৯৬)
ডাডেল পুরস্কার (১৯২৪)
রামফোর্ড পদক (১৯২৪)
এলিয়ট ক্রেসেন পদক (১৯৩৯)
বৈজ্ঞানিক কর্মজীবন
কর্মক্ষেত্রপদার্থবিজ্ঞানী

প্রারম্ভিক জীবন সম্পাদনা

সি.ভি.বয়েজ রেভারেন্ড চার্লস বয়েজের অষ্টম সন্তান। রেভারেন্ড বয়েজ রুটল্যান্ড কাউন্টির উইং গ্রামের অ্যাংলিকান ধর্মযাজক ছিলেন। সি.ভি. বয়েজ মার্লবোরো কলেজ ও রাজকীয় খনি বিদ্যালয়ে লেখাপড়া করেন। তিনি ফ্রেডরিক গুথরির কাছ থেকে পদার্থবিজ্ঞান বিষয়ে শিক্ষালাভ করেন। তিনি নিজেকে উচ্চতর গণিত বিষয়ে স্ব-শিক্ষিত করে তুলেন। একই সময়ে তিনি ধাতুবিদ্যা ও খনিবিদ্যা বিষয়ে ডিগ্রি অর্জন করেন। খনিবিদ্যা স্কুলে অধ্যয়নের সময় তিনি ইন্টেগ্রাফ নামক যন্ত্র আবিষ্কার করেন, যা কোনো ফাংশনের সমাকলন করতে সক্ষম। গুথরিন বয়েজ-কে প্রদর্শক হিসেবে কাজ করার সুযোগ দেওয়ার পূর্বে তিনি কিছুদিন কয়লাশিল্পে কাজ করেছেন।

ব্যবহারিক পদার্থবিজ্ঞান সম্পাদনা

বয়েজ গলিত কোয়ার্টজ আঁশের মোচড়সাম্য(Torsion balance) আবিষ্কারে সক্ষম হয়েছিলেন। এর দরুন ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র বলের পরিমাপ করা সম্ভব হয়। বয়েজ একটি কোয়ার্টজ দণ্ডকে ক্রসবো বা আড়ধনুকের সাথে সংযুক্ত করেন। দণ্ডটিকে তিনি গলনবিন্দু পর্যন্ত উত্তপ্ত করে আড়ধনুকটিকে নিক্ষেপ করেন। এর ফলে তিনি এত পাতলা আঁশ তৈরি করেন, যা আলোক অণুবীক্ষণ যন্ত্র দ্বারা শনাক্ত করা সম্ভব ছিল না। তিনি এজন্য রেডিওমাইক্রোমিটার তৈরি করেন। যন্ত্রটি এক মাইলেরও অধিক দূরত্বে অবস্থিত মোমবাতির আলোর প্রতি সাড়া দিতে সক্ষম। বয়েজ একে জ্যোতির্বৈজ্ঞানিক পর্যবেক্ষণের জন্য ব্যবহার করেন। তিনি ১৮৯৫ সালে মহাকর্ষীয় ধ্রুবক G এর একটি মান প্রকাশ করেন। ক্যাভেন্ডিসের নির্ণীত মানের আলোকে বয়েজ G এর অধিকতর সংশোধিত মান প্রকাশ করেন। তাঁর ও ক্যাভেন্ডিসের G পরিমাপের পদ্ধতি ছিল প্রায় একই ধরনের। কিন্তু বয়েজ এক্ষেত্রে দুইটি ভরযুক্ত বস্তুকে ভূমি থেকে একই উচ্চতায় ও অপর দুইটি ভরযুক্ত বস্তুকে ভূমি থেকে ভিন্ন উচ্চতায় স্থাপন করেন, যাতে করে বিপরীতমুখী বস্তুর অনাকাঙ্ক্ষিত আন্তঃক্রিয়া হ্রাস পায়। [৩]

তিনি ফ্র্যাঙ্ক শুমানের সৌর ইঞ্জিন মডেলের সমালোচনা করেন। পরবর্তীতে ফ্র্যাঙ্ক তাঁকে প্রযুক্তিগত পরামর্শক পদে নিয়োগ প্রদান করেন। তাঁদের দুইজনের একত্রে "সান-বয়লার" নামে একটি যন্ত্রাংশের পেটেন্ট ছিল, যেগুলো দেখতে অনেকটা সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যবহৃত অধিবৃত্তাকার কাচের মত। [৪]

স্বীকৃতি সম্পাদনা

বয়েজ দক্ষিণ কেনসিংটনের রাজকীয় বিজ্ঞান কলেজে (বর্তমানে ইম্পেরিয়াল কলেজ) ১৮৮৯ থেকে ১৮৯৭ সাল পর্যন্ত সহকারী অধ্যাপক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়েও পরীক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৮৯৯ সালের ক্রিসমাসে তিনি রাজকীয় ইনস্টিটিউটে ভাষণ প্রদান করেন। ১৮৮৮ সালে তিনি রাজকীয় সমিতির সভ্যপদে নির্বাচিত হন। [১] ১৯৩৫ সালে বয়েজ নাইটহুডে ভূষিত হন। ১৮৯৬ সালে তিনি রাজকীয় পদক ও ১৯২৪ সালে রামফোর্ড পদকে ভূষিত হন। ১৯৩৯ সালে তাঁকে এলিয়ট ক্রেসেন পদকে সম্মানিত করা হয়।

ব্যক্তিগত জীবন সম্পাদনা

বয়েজ ১৮৯২ সালে ম্যারিয়ন অ্যামেলিয়া পোলোকের সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। ম্যারিয়নের সাথে কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিতবিদ অ্যান্ড্রু ফোরসিথের বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কিত ছিল। এর ফলে চারদিকে সমালোচনার ঝড় ওঠে ও ফোরসিথ বিভাগীয় প্রধানের পদ থেকে সরে দাঁড়াতে বাধ্য হন। ১৯১০ সালে বয়েজ ও ম্যারিয়নের বিবাহবিচ্ছেদ হয়। ম্যারিয়ন পরবর্তীতে ফোরসিথকে বিয়ে করেন।

১৯৪৪ সালের ৩০ মার্চ বয়েজ অ্যান্ডোভারে মৃত্যুবরণ করেন। [৫]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Strutt, John William (১ নভেম্বর ১৯৪৪)। "Charles Vernon Boys, 1855-1944"Obituary Notices of Fellows of the Royal Society4 (13): 771–788। ডিওআই:10.1098/rsbm.1944.0021 – royalsocietypublishing.org (Atypon)-এর মাধ্যমে। 
  2. "Charles Boys - Biography"Maths History 
  3. https://zenodo.org/record/1429361/files/article.pdf
  4. http://mragheb.com/NPRE%20498ES%20Energy%20Storage%20Systems/Solar%20Thermal%20Power%20and%20Energy%20Storage%20Historical%20Perspective.pdf
  5. "Wayback Machine" (পিডিএফ)web.archive.org। ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৫। Archived from the original on ২৪ জানুয়ারি ২০১৩। সংগ্রহের তারিখ ৫ অক্টোবর ২০২০