সি. আর. রঙ্গাচারি
কমান্ডার রাজাগোপালচারী রঙ্গাচারি (মারাঠি: सी.आर. रंगाचारी; জন্ম: ১৪ এপ্রিল, ১৯১৬ - মৃত্যু: ৯ অক্টোবর, ১৯৯৩) তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের মামান্দার এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ভারতীয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার ছিলেন। ভারত ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯৪৮ সালে সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্যে ভারতের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন।
ব্যক্তিগত তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
পূর্ণ নাম | কমান্ডার রাজাগোপালচারী রঙ্গাচারি | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জন্ম | ১৪ এপ্রিল, ১৯১৬ মামান্দার, ব্রিটিশ ভারত | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
মৃত্যু | ৯ অক্টোবর, ১৯৯৩ মাদ্রাজ, ভারত | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ব্যাটিংয়ের ধরন | ডানহাতি | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বোলিংয়ের ধরন | ডানহাতি ফাস্ট | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ভূমিকা | বোলার | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
আন্তর্জাতিক তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জাতীয় দল |
| |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
টেস্ট অভিষেক (ক্যাপ ৪৪) | ২৩ জানুয়ারি ১৯৪৮ বনাম অস্ট্রেলিয়া | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
শেষ টেস্ট | ৯ ডিসেম্বর ১৯৪৮ বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
| ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ৫ এপ্রিল ২০২০ |
ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ভারতীয় ক্রিকেটে মাদ্রাজ দলের প্রতিনিধিত্ব করেন। দলে তিনি মূলতঃ ডানহাতি ফাস্ট বোলার হিসেবে খেলতেন। এছাড়াও, ডানহাতে নিচেরসারিতে ব্যাটিং করতেন সি. আর. রঙ্গাচারি।
প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট সম্পাদনা
মাদ্রাজের পাচাইয়াপ্পা কলেজে অধ্যয়ন করেছিলেন তিনি। ১৯৩২ সালে মাদ্রাজ ক্রিকেট লীগের যাত্রা শুরু হলে চিপুক ইউনাইটেড ক্লাবের পক্ষে খেলতে থাকেন। এরপর, ত্রিপলিকেন সিসিতে স্থানান্তরিত হন। সেখানে, এম.জে. গোপালনের সাথে অবিস্মরণীয় জুটি গড়েন।
১৯৩৮-৩৯ মৌসুম থেকে ১৯৫৩-৫৪ মৌসুম পর্যন্ত সি. আর. রঙ্গাচারি’র প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান ছিল। ৬২ খেলায় ২৬.১১ গড়ে ১৯৯টি উইকেট লাভ করেন। তন্মধ্যে, ১৪বার পাঁচ-উইকেটের সন্ধান পান। বামহাতি ব্যাটসম্যানের বিপক্ষে নিখুঁতভাবে অফ-কাটার মারতেন। বিশ্রামহীন অবস্থায় দীর্ঘক্ষণ বোলিংয়ে সক্ষম ছিলেন। রাজ্য দলে পেসারদের উজ্জ্বীবনী শক্তির ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন। মিডিয়াম পেস বোলার হিসেবে কিঞ্চিত রাউন্ড-আর্ম ভঙ্গীমায় বোলিং কর্মে অগ্রসর হতে সি. আর. রঙ্গাচারি। ব্যাটসম্যানের পাশ থেকে বলকে ঘোরাতে পারতেন।
১৯৩৮ সালে কিশোরদের আন্তঃসংস্থা প্রতিযোগিতায় মহীশূরের বিপক্ষে দূর্দান্ত খেলা প্রদর্শন করেন। ৯/৪৫ বোলিং পরিসংখ্যান গড়ে প্রথমবারের মতো সকলের পাদপ্রদীপে চলে আসেন। একই বছর রঞ্জী ট্রফির দলে খেলার জন্যে মনোনীত হন। রঙ্গাচারি চমৎকার ফিল্ডার হিসেবে সুনাম কুড়িয়েছিলেন। সচরাচর, সিলি মিড-অফ অঞ্চলে ফিল্ডিং করতেন। তন্মধ্যে, স্পিনার এ.জি. রাম সিংয়ের সাথে তার চমৎকার বোঝাপড়া ছিল।
১৯৪৫-৪৬ মৌসুমে সফরকারী অস্ট্রেলিয়ান সার্ভিসেস দল, ১৯৪৯-৫০ মৌসুমে কমনওয়েলথ দলের বিপক্ষে অনানুষ্ঠানিক টেস্টে অংশ নেন। এছাড়াও, এম. জে. গোপালন ট্রফিতে দুই খেলায় অংশ নিয়েছিলেন সি. আর. রঙ্গাচারি। ১৯৫২-৫৩ মৌসুমে মাদ্রাজ দলের দুই খেলায় অধিনায়কত্ব করেন।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সম্পাদনা
সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে চারটিমাত্র টেস্টে অংশগ্রহণ করেছেন সি. আর. রঙ্গাচারি। অস্ট্রেলিয়া ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে অংশগ্রহণকৃত চার টেস্ট খেলেছিলেন। ২৩ জানুয়ারি, ১৯৪৮ তারিখে অ্যাডিলেডে স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়া দলের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। ৯ ডিসেম্বর, ১৯৪৮ তারিখে মুম্বইয়ে সফরকারী ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের বিপক্ষে সর্বশেষ টেস্টে অংশ নেন তিনি।
দশ মাস পর দিল্লিতে স্বর্ণালী মুহূর্ত অতিবাহিত করেন। ১৫ বছর পর ভারতের মাটিতে প্রথম টেস্ট অনুষ্ঠিত হয়। শুরুতেই দলকে ২৭/৩-এ নিয়ে গেলেও পরবর্তীতে খেলাটি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। ১৯৪৭-৪৮ মৌসুমে ভারত দলের সদস্যরূপে অস্ট্রেলিয়া গমনের জন্যে মনোনীত হন। তাসমানিয়ার বিপক্ষে খেলায় হ্যাট্রিক লাভ করেন। ডন ব্র্যাডম্যানের নেতৃত্বাধীন অপরাজেয় অস্ট্রেলিয়া দলের মুখোমুখি হন। এক পর্যায়ে অস্ট্রেলিয়া দল ৫০৩/৩ সংগ্রহ করেছিল। অ্যাডিলেডে অনুষ্ঠিত অভিষেক ঘটা টেস্টে ৪/১৪১ পান। নীল হার্ভে, কিথ মিলার, রে লিন্ডওয়াল ও ইয়ান জনসন তার শিকারে পরিণত হন।
দিল্লির ফিরোজ শাহ কোটলায় সফরকারী ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের বিপক্ষে ইনিংসে ব্যক্তিগত সেরা বোলিং পরিসংখ্যান ৫/১০৭ গড়েন। প্রথম পরিবর্তিত বোলার হিসেবে বোলিংয়ে নেমে অ্যালান রে, জেফ স্টলমেয়ার ও জর্জ হ্যাডলিকে প্রথম ১৯ বলে বিদেয় করেন। এ পর্যায়ে তিনি মাত্র ১ রান খরচ করেছিলেন। তন্মধ্যে, জর্জ হ্যাডলি’র লেগ স্ট্যাম্প বেশ কয়েক গজ দূরে খণ্ড-বিখণ্ড হয়ে পড়ে।[১] এরপর তিনি আর কোন উইকেট লাভে সক্ষমতা দেখাতে পারেননি। প্রাপ্ত ৯ উইকেট লাভে তাকে ৫৪.৭৭ গড়ে রান খরচ করতে হয়েছিল। বোম্বে টেস্ট থেকে তিনি বাদ পড়েন। প্রথম পাঁচ ইনিংসে তার সংগৃহীত রানগুলো হচ্ছে - ০*, ০, ০, ০* ও ০।
প্রশাসনে অংশগ্রহণ সম্পাদনা
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে উপেক্ষার শিকার হলেও, পরবর্তী পাঁচ বছর মাদ্রাজ দলের পক্ষে খেলেছিলেন তিনি। তামিলনাড়ু/মাদ্রাজ ও দক্ষিণ অঞ্চল দলের খেলা আয়োজনে ব্যবস্থাপকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হন। এছাড়াও, রাজ্য দলের নির্বাচকের দায়িত্বে ছিলেন তিনি। মাদ্রাজের পক্ষে রঞ্জী ট্রফিতে ১০৪ উইকেট লাভ করেছিলেন সি. আর. রঙ্গাচারি।
সিংহ হৃদয়ের অধিকারী ক্রিকেটার হিসেবে তার সবিশেষ পরিচিতি ছিল। ক্রিকেটের পাশাপাশি হকি খেলায়ও দক্ষ ছিলেন তিনি। সি. আর. রঙ্গচারি পুলিশ বিভাগে কাজ করতেন। এরপর, সহকারী সুপারিন্টেন্ডেন্ট পদে অধিষ্ঠিত হন। ব্যক্তিগত জীবনে বিবাহিত ছিলেন সি. আর. রঙ্গাচারি। তার সন্তান সি. আর. বিজয়রাঘবন একদিনের আন্তর্জাতিক ও প্রথম-শ্রেণীর খেলায় আম্পায়ারের দায়িত্ব পালন করেছেন। পাশাপাশি, টেস্ট খেলায় তৃতীয় আম্পায়ার ছিলেন। ৯ অক্টোবর, ১৯৯৩ তারিখে হৃদযন্ত্রক্রীয়ায় আক্রান্ত হয়ে ৭৭ বছর বয়সে মাদ্রাজ এলাকায় সি. আর. রঙ্গাচারি’র দেহাবসান ঘটে।
তথ্যসূত্র সম্পাদনা
- ↑ Indian Express, 11 November 1948
আরও দেখুন সম্পাদনা
বহিঃসংযোগ সম্পাদনা
- ইএসপিএনক্রিকইনফোতে সি. আর. রঙ্গাচারি (ইংরেজি)
- ক্রিকেটআর্কাইভে সি. আর. রঙ্গাচারি (সদস্যতা প্রয়োজনীয়) (ইংরেজি)
গ্রন্থপঞ্জি সম্পাদনা
- V. Ramnarayan, Mosquitos and Other Jolly Rovers
- Obituary in Indian Cricket 1994