মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন

বাংলাদেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি
(সাহাবুদ্দিন চুপ্পু থেকে পুনর্নির্দেশিত)

মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন (জন্ম: ১০ ডিসেম্বর ১৯৪৯)[১] হলেন বাংলাদেশের বর্তমান রাষ্ট্রপতি। বাংলাদেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে তিনি ২৪ এপ্রিল ২০২৩ তারিখ থেকে দায়িত্বাধীন আছেন। রাষ্ট্রপতি হওয়ার পূর্বে তিনি জেলা ও দায়রা জজ ও দুর্নীতি দমন কমিশনের কমিশনার ছিলেন।[২]

মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন
২০২৩ সালে সাহাবুদ্দিন
২২তম বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি
দায়িত্বাধীন
অধিকৃত কার্যালয়
২৪ এপ্রিল ২০২৩
প্রধানমন্ত্রীশেখ হাসিনা
পূর্বসূরীআবদুল হামিদ
কমিশনার
দুর্নীতি দমন কমিশন
কাজের মেয়াদ
১৪ মার্চ ২০১১ – ১৩ মার্চ ২০১৬
রাষ্ট্রপতিআব্দুল হামিদ
উত্তরসূরীএ এফ এম আমিনুল ইসলাম
ব্যক্তিগত বিবরণ
জন্মমোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন চুপ্পু
(1949-12-10) ১০ ডিসেম্বর ১৯৪৯ (বয়স ৭৪)
শিবরামপুর, পাবনা সদর উপজেলা, পাবনা জেলা
জাতীয়তাবাংলাদেশী
রাজনৈতিক দলবাংলাদেশ আওয়ামী লীগ
দাম্পত্য সঙ্গীরেবেকা সুলতানা (বি. ১৯৭২)
সন্তান
পিতামাতাশরফুদ্দিন আনছারী (পিতা)

খায়রুন্নেসা (মাতা)
বাসস্থানবঙ্গভবন
শিক্ষাএমএসসি, এলএলবি
প্রাক্তন শিক্ষার্থীসরকারি এডওয়ার্ড কলেজ, পাবনা
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
পেশাসাবেক জেলা ও দায়রা জজ, দুদকের সাবেক কমিশনার
যে জন্য পরিচিতরাজনীতিবিদ, বিচারক
সামরিক পরিষেবা
শাখামুজিব বাহিনী
কাজের মেয়াদ১৯৭১
যুদ্ধবাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ

প্রাথমিক ও শিক্ষা জীবন

মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন ১৯৪৯ সালের ১০ই ডিসেম্বর তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের (বর্তমান বাংলাদেশের) পাবনা জেলার সদর উপজেলার শিবরামপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম শরফুদ্দিন আনছারী ও মাতার নাম খায়রুন্নেসা।[৩] তিনি ১৯৬৬ সালে পাবনা রাধানগর মজুমদার একাডেমী স্কুল এন্ড কলেজ, পাবনা থেকে এসএসসি[৪][৫] এবং ১৯৬৮ সালে পাবনা এডওয়ার্ড কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন ও ১৯৭১ সালে (১৯৭২ সালে অনুষ্ঠিত) বিএসসি পাস করেন।[৬] তিনি ১৯৭৪ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মনোবিজ্ঞানে এমএসসি ডিগ্রি লাভ করেন। পরে পাবনা শহীদ অ্যাডভোকেট আমিনুদ্দিন আইন কলেজ থেকে ১৯৭৫ সালে এলএলবি ডিগ্রি অর্জন করেন।[৬][৭]

মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকা

মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন পাবনা জেলার স্বাধীন বাংলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ এর আহ্বায়ক ছিলেন। ১৯৭১ সালের ৯ এপ্রিল তিনি ভারতে যান এবং প্রশিক্ষণ নিয়ে পাবনা জেলার বিভিন্ন অঞ্চলে পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে সক্রিয়ভাবে যুদ্ধ করেন।

কর্মজীবন

মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন ১৯৮০ থেকে দুই বছর দৈনিক বাংলার বাণীতে সাংবাদিকতা করেন।[৮] পরে আইন পেশায় যোগ দেন। শুরুতে তিনি পাবনা জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য ছিলেন। ১৯৮২ সালে বিসিএস (বিচার) ক্যাডারে তিনি মুন্সেফ (সহকারী জজ) পদে যোগ দেন। সাহাবুদ্দিন ১৯৯৫ ও ১৯৯৬ সালে বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিস এসোসিয়েশন-এর মহাসচিব নির্বাচিত হন।[৯] কর্মের ধারাবাহিকতায় তিনি যথাক্রমে যুগ্ম জেলা জজ, অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ এবং জেলা ও দায়রা জজ পদে দায়িত্ব পালন করে ২০০৬ সালে অবসরে যান।[১০]

সরকারি চাকরিতে থাকাকালীন ১৯৯৯ সালে সাহাবুদ্দিন প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে ১০ সদস্যবিশিষ্ট দলের সদস্য হিসেবে ‘আন্তর্জাতিক আইন সম্মেলন’-এ যোগদানের জন্য চীনের রাজধানী বেইজিংসহ চীনের বিভিন্ন প্রদেশ পরিদর্শন করেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পরিচালকের দায়িত্ব পালনকালে তিনি রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিভিন্ন সেমিনারে যোগদানের জন্য যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, সুইজারল্যান্ড সফর করেন। জাতিসংঘের অর্থায়নে এই সফর অনুষ্ঠিত হয় এবং এই সফরে সংসদ সদস্য, সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যসহ বেসামরিক আমলারাও অন্তর্ভুক্ত ছিলেন।

২০০১ সালে বিএনপি-জামাত জোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জনগোষ্ঠীর ওপর হামলা, হত্যা, ধর্ষণ ও লুণ্ঠনের ঘটনা তদন্তে পরবর্তী সময়ে গঠিত বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশনের চেয়ারম্যান (সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতির পদমর্যাদায়) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। ২০০১ সালের সংসদ নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতার কারণ ও সুপারিশ প্রণয়নের জন্য গঠিত তাদের দাখিলকৃত প্রতিবেদন সরকার গেজেট আকারে প্রকাশ করে।

তিনি বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিযুক্ত সমন্বয়কারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

বিচারিক কাজের পাশাপাশি তিনি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পরিচালক হিসেবে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তাসহ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের ডেস্ক অফিসার হিসেবে দুই বছর দায়িত্ব পালন করেন। ২০১১ সালের ১৪ মার্চ তিনি দুর্নীতি দমন কমিশনের কমিশনার হিসেবে নিযুক্ত হন এবং ২০১৬ সালে অবসরে যান।[১১]

দুদকের কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে বিশ্বব্যাংক কর্তৃক উত্থাপিত কথিত পদ্মাসেতু সংক্রান্ত দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তে অন্যতম মুখ্য ভূমিকা পালন করেন এবং বিশ্বব্যাংকের অভিযোগের মিথ্যা ও অন্তঃসারশূন্যতা প্রমাণে সমর্থ হন। তার প্রেরিত তদন্ত প্রতিবেদন কানাডার আদালত কর্তৃক সমর্থিত হয়।

তিনি ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের পরিচালনা পর্ষদের ভাইস চেয়ারম্যান এবং এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক লিমিটেডের উপদেষ্টা হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।[৮][১২]

রাজনৈতিক জীবন

সাহাবুদ্দিন ছাত্রজীবনে পাবনা জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি এবং ১৯৭৪ সালে পাবনা জেলা যুবলীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট সংঘটিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যাকাণ্ডের পর তিনি কারাবরণ করেন।

তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সর্বশেষ ২২তম জাতীয় পরিষদে নির্বাচন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

পরবর্তীতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমামের মৃত্যুতে খালি থাকা প্রচার ও প্রকাশনা উপকমিটির চেয়ারম্যান পদে তাকে মনোনীত করা হয়।[১৩]

২২তম রাষ্ট্রপতি

১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ তারিখ সাহাবুদ্দিন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বাংলাদেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে নির্বাচিত হন।[১৪][১৫] এর আগের দিন, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ তারিখে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে রাষ্ট্রপতি পদের জন্য তার নামে দুটি মনোনয়নপত্র দাখিল করা হয়।[১৬] অতঃপর এ নির্বাচনে অন্য কোন প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল না করায় ও প্রয়োজনীয় যাচাই-বাছাইপূর্বক প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল ১৩ ফেব্রুয়ারি তারিখে মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিনকে আনুষ্ঠানিকভাবে রাষ্ট্রপতি হিসেবে ঘোষণা করেন।[১৭] ২০২৩ সালের ২৪ এপ্রিল বঙ্গভবনে সকাল ১১টায় বাংলাদেশের জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি হিসাবে তাকে শপথ বাক্য পাঠ করান।[১৮] একইদিনে মন্ত্রীপরিষদ বিভাগ থেকে রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব গ্ৰহণ সংক্রান্ত সরকারী গেজেট প্রকাশিত হয়।

 
মন্ত্রীপরিষদ বিভাগ থেকে প্রকাশিত গেজেট

ব্যক্তিগত জীবন

মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন ১৯৭২ সালের ১৬ নভেম্বর রেবেকা সুলতানার সাথে বিবাহ-বন্ধনে আবদ্ধ হন।[৬] তাদের এক সন্তান রয়েছে, যার নাম মো. আরশাদ আদনান (রনি)।[৬]

কিংবদন্তি

তার সম্মানে ২০২০ সালে পাবনা পৌরসভা কর্তৃক নির্মিত একটি উদ্যানের নামকরণ করা হয় ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন চুপ্পু বিনোদন পার্ক’।[১৯]

তথ্যসূত্র

  1. "মো. সাহাবুদ্দিন রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত: ইসি"বাংলা ট্রিবিউন। ৬ এপ্রিল ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ 
  2. হোসেন, কাজী মোবারক। "আওয়ামী লীগের প্রার্থী সাহাবুদ্দিন চুপ্‌পু, তিনিই হচ্ছেন রাষ্ট্রপতি"bdnews24.com। ২০২৩-০২-১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০২-১২ 
  3. "এক নজরে সাহাবুদ্দিন চুপ্পু"দৈনিক জনকণ্ঠ। সংগ্রহের তারিখ ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ 
  4. "আমার স্মৃতিতে রাধানগর মজুমদার একাডেমী পাবনা"। ২০২০-০৬-০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৬-০৭ 
  5. "আরএম একাডেমির ১১৯ বছর পূর্তিতে স্মৃতিচারণ"দৈনিক জনকন্ঠ। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৬-০৭ 
  6. "একনজরে রাষ্ট্রপতি প্রার্থী মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন"আরটিভি। সংগ্রহের তারিখ ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ 
  7. "আওয়ামী লীগের মনোনীত রাষ্ট্রপতি সাহবুদ্দিন আহমেদ কে?"বিবিসি বাংলা। ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩। সংগ্রহের তারিখ ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ 
  8. "বঙ্গবন্ধুর ডাকে রাজপথে নামা সাহাবুদ্দিন চুপ্পু যাচ্ছেন বঙ্গভবনে"bdnews24.com। ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ 
  9. "দেশের পরবর্তী রাষ্ট্রপতি হচ্ছেন সাহাবুদ্দিন চুপ্পু"দেশ রূপান্তর। ২০২৩-০২-১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০২-১২ 
  10. প্রতিবেদক, নিজস্ব। "রাষ্ট্রপতি পদে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন"প্রথম আলো। ২০২৩-০২-১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০২-১২ 
  11. "আওয়ামী লীগের মনোনীত রাষ্ট্রপতি সাহবুদ্দিন আহমেদ কে?"বিবিসি বাংলা। ২০২৩-০২-১২। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০২-১২ 
  12. "About IBBL:Audit Committee"www.islamibankbd.com। ২০২৩-০২-১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০২-১২ 
  13. "কে এই সাহাবুদ্দিন চুপ্পু"দৈনিক ইত্তেফাক। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০২-১৩ 
  14. "সংবাদ বিজ্ঞপ্তি" (পিডিএফ)www.ecs.gov.bdবাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন। সংগ্রহের তারিখ ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ 
  15. "মো. সাহাবুদ্দিন রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত"প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ 
  16. "রাষ্ট্রপতি পদে মনোনয়ন জমা দিয়ে যা বললেন সাহাবুদ্দিন চুপ্পু"দৈনিক যুগান্তর। সংগ্রহের তারিখ ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ 
  17. "২২তম রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হলেন মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন"দৈনিক জনকণ্ঠ। সংগ্রহের তারিখ ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ 
  18. প্রতিবেদক, কূটনৈতিক। "রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনকে অভিনন্দন জানিয়ে বার্তা চীনা প্রেসিডেন্টের"প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৪-২৪ 
  19. "পাবনায় 'মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন চুপ্পু বিনোদন পার্ক' উদ্বোধন"যুগান্তর। ১ জুলাই ২০২০। সংগ্রহের তারিখ ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ 
রাজনৈতিক দপ্তর
পূর্বসূরী
আবদুল হামিদ
বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি
২৩ এপ্রিল ২০২৩ - বর্তমান
উত্তরসূরী
-