সামাজিক উদ্বেগমূলক ব্যাধি

সামাজিক দূর্ভীতি ব্যাধি হলো এক জাতীয় উদ্বেগজনিত মানসিক সমস্যা যা আক্রান্ত ব্যক্তিদের মাঝে সামাজিক ভীতি সৃষ্টির মাধ্যমে তাদের প্রতিদিনকার জীবনে যথেষ্ট সংকট ও প্রতিবন্ধকতার তৈরী করে। একে ইংরেজিতে "সোশ্যাল অ্যাংজাইটি ডিজর্ডার" (Sociaol Anxiety Disorder, সংক্ষেপে SAD)[১] এই সমস্যায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের সামাজিক ভীতি আরো প্রকট হয়ে উঠে, যখন তাদের নিয়ে কেউ নেতিবাচক মূল্যায়ন বা সামান্য সমালোচনাও শুরু করে দেয়।

সামাজিক দূর্ভীতি ব্যাধি
প্রতিশব্দসামাজিক ভীতি
বিশেষত্বমনোরোগ বিজ্ঞান, মনোবিজ্ঞান
লক্ষণসামাজিক বিচ্ছিন্নতা, হীনমন্যতাবোধ, আত্ম-সম্মানবোধের অভাব, সামাজিকীকরণে অসুবিধা বা অন্যদের সাথে স্বাভাবিকভাবে মিশতে অপারগতা
রোগের সূত্রপাতসচরাচর বয়ঃসন্ধিকালের সময় থেকে
ঝুঁকির কারণজিনগত কারণ

এই সমস্যায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের শারীরিক উপসর্গের মধ্যে লজ্জায় রক্তিম হয়ে উঠা, অতিরিক্ত ঘামা, কাঁপুনি, বুক ধড়ফড়ানি এবং বমিভাব অন্তর্ভুক্ত। পাশাপাশি দ্রুত কথা বলার সময় তোতলামির সমস্যাও থাকতে পারে। এছাড়া তীব্র ভীতি ও অস্বস্তিতেও অনেকে অত্যাতঙ্ক আক্রমণ দ্বারা আক্রান্ত হয়। এই সমস্যা থেকে রেহাই পেতে অনেকে মদ এবং বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়াই নিজে নিজে ঔষুধ সেবন করে; যা পরবর্তীতে তাদের মাঝে মদ্যাসক্তি ও স্বল্পাহার এবং অতি-আহারের মতো ব্যাধি তৈরী করে।[২][৩] আইসিডি-১০ এর মানদন্ড অনুসারে, সামাজিক দূর্ভীতি ব্যাধির মূল মানদন্ডগুলো হলো - অন্যদের মনযোগের কেন্দ্রীভূত হওয়ার ভয়, লজ্জাজনক পরিস্থিতির সম্মুখীন হওয়ার আশঙ্কা, অন্যদের এড়িয়ে চলা এবং অন্যান্য উদ্বেগজনিত উপসর্গসমূহ চিহ্নিত।[৪]

সামাজিক দূর্ভীতি ব্যাধির মূল চিকিৎসা হলো সংজ্ঞানাত্মক আচরণীয় চিকিৎসা (কগনিটিভ বিহেভিরিয়াল থেরাপি, সংক্ষেপে সিবিটি) (এক জাতীয় পরামর্শভিত্তিক চিকিৎসা) যা রোগীর চিন্তার ধরন এবং উদ্বেগের ফলে যে শারীরিক প্রতিক্রিয়াগুলো হয়, তার পরিবর্তন সাধন করে। এছাড়া উক্ত পরামর্শভিত্তিক চিকিৎসার পাশাপাশি ঔষধের মধ্যে "নৈর্বাচনিক সেরোটোনিন পুনঃগ্রহণ নিরোধক" (সিলেক্টিভ সেরোটোনিন রিআপটেইক ইনহিবিটর', সংক্ষেপে এস.এস.আর.আই) (এক জাতীয় বিষন্নতা-নিরোধক ঔষধ)-ও দেওয়া হয় যা রোগ নিরাময়ে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।[৫] মূলত ১৯৯৯ সাল থেকে চিকিৎসার জন্য ওষুধের অনুমোদন এবং বিপণনের মাধ্যমেই সামাজিক দূর্ভীতি ব্যাধির প্রতি নজর উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. National Institute for Health and Clinical Excellence: Guidance. Social Anxiety Disorder: Recognition, Assessment and Treatment. Leicester (UK): British Psychological Society; 2013. PubMed
  2. Stein, MD, Murray B.; Gorman, MD, Jack M. (২০০১)। "Unmasking social anxiety disorder" (পিডিএফ)Journal of Psychiatry & Neuroscience। 3। 26 (3): 185–9। পিএমআইডি 11394188পিএমসি 1408304 । সংগ্রহের তারিখ ১৭ মার্চ ২০১৪ 
  3. Shields, Margot (২০০৪)। "Social anxiety disorder— beyond shyness" (পিডিএফ)How Healthy Are Canadians? Statistics Canada Annual Report15: 58। সংগ্রহের তারিখ ১৭ মার্চ ২০১৪ 
  4. Social Phobia (F40.1) in ICD-10: Diagnostic Criteria and Clinical descriptions and guidelines.
  5. Liebowitz, Michael R.; Schneier, Franklin R.; Bragdon, Laura B.; Blanco, Carlos (২০১৩-০২-০১)। "The evidence-based pharmacotherapy of social anxiety disorder"International Journal of Neuropsychopharmacology16 (1): 235–249। আইএসএসএন 1461-1457ডিওআই:10.1017/S1461145712000119