সাবা করিম

ভারতীয় ক্রিকেটার

সৈয়দ সাবা করিম (উর্দু: صبا کریم‎‎; উচ্চারণ; জন্ম: ১৪ নভেম্বর, ১৯৬৭) বিহারের পাটনা এলাকায় জন্মগ্রহণকারী সাবেক ভারতীয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার, প্রশাসক ও ধারাভাষ্যকার। ভারত ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯৯০-এর দশকের শেষদিকে সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্যে ভারতের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন।

সাবা করিম
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নামসৈয়দ সাবা করিম
জন্ম (1967-11-14) ১৪ নভেম্বর ১৯৬৭ (বয়স ৫৬)
পাটনা, বিহার, ভারত
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
ভূমিকাউইকেট-রক্ষক, প্রশাসক, ধারাভাষ্যকার
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
একমাত্র টেস্ট
(ক্যাপ ২৩০)
১০ নভেম্বর ২০০০ বনাম বাংলাদেশ
ওডিআই অভিষেক
(ক্যাপ ১০১)
২৩ জানুয়ারি ১৯৯৭ বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা
শেষ ওডিআই৩০ মে ২০০০ বনাম বাংলাদেশ
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট ওডিআই এফসি
ম্যাচ সংখ্যা ৩৪ ১২০
রানের সংখ্যা ১৫ ৩৬২ ৭,৩১০
ব্যাটিং গড় ১৫.০০ ১৫.৭৩ ৫৬.৬৬
১০০/৫০ ০/০ ০/১ ২২/৩৩
সর্বোচ্চ রান ১৫ ৫৫ ২৩৪
বল করেছে ৩৬
উইকেট
বোলিং গড়
ইনিংসে ৫ উইকেট
ম্যাচে ১০ উইকেট
সেরা বোলিং
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ১/০ ২৭/৩ ২৪৩/৫৫
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ১২ অক্টোবর ২০২০

ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ভারতীয় ক্রিকেটে বাংলা ও বিহার দলের প্রতিনিধিত্ব করেন। দলে তিনি মূলতঃ উইকেট-রক্ষক হিসেবে খেলতেন। এছাড়াও, ডানহাতে নিচেরসারিতে ব্যাটিং করতেন সাবা করিম

প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট সম্পাদনা

পাটনার সেন্ট জ্যাভিয়ার্স হাই স্কুলে অধ্যয়ন শেষে ক্রিকেটের দিকে ঝুঁকে পড়েন। ১৯৮২-৮৩ মৌসুমে ১৫ বছর বয়সে বিহার দলের পক্ষে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন শুরু করেন। ১৯৯০-৯১ মৌসুমের রঞ্জী ট্রফি প্রতিযোগিতায় ওড়িশার বিপক্ষে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ২৩৪ রানে ইনিংস খেলেছিলেন তিনি।[১]

১৯৮২-৮৩ মৌসুম থেকে ২০০০-০১ মৌসুম পর্যন্ত সাবা করিমের প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান ছিল। ঘরোয়া ক্রিকেটে নিয়মিতভাবে রান সংগ্রহ করেছেন। ১৯৯৪-৯৫ মৌসুম পর্যন্ত বিহার দলের অন্যতম চালিকাশক্তিতে পরিণত হয়েছিলেন। বাংলা দলে চলে আসার পরপরই দল নির্বাচকমণ্ডলীর দৃষ্টি তার প্রতি নিবদ্ধ হয়।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সম্পাদনা

সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে একটিমাত্র টেস্ট ও চৌত্রিশটি একদিনের আন্তর্জাতিকে অংশগ্রহণ করেছেন সাবা করিম। ১০ নভেম্বর, ২০০০ তারিখে ঢাকায় স্বাগতিক বাংলাদেশ দলের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। এটিই তার একমাত্র টেস্টে অংশগ্রহণ ছিল। এরপর আর তাকে কোন টেস্টে অংশগ্রহণ করতে দেখা যায়নি। অন্যদিকে, টেস্ট অভিষেকের পূর্বেই ২৩ জানুয়ারি, ১৯৯৭ তারিখে ব্লুমফন্তেইনে স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকা দলের বিপক্ষে একদিনের আন্তর্জাতিকে অভিষেক ঘটে তার। ৩০ মে, ২০০০ তারিখে ঢাকায় স্বাগতিক বাংলাদেশ দলের বিপক্ষে সর্বশেষ ওডিআইয়ে অংশ নেন তিনি।

১৯৮৯ সালে অনেকটা বিস্ময়করভাবেই ওয়েস্ট ইন্ডিজ গমনার্থে ভারত দলে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। তবে, সংরক্ষিত উইকেট-রক্ষক হিসেবে তাকে কোন আন্তর্জাতিক খেলায় অংশগ্রহণের সুযোগ দেয়া হয়নি। কিছুকাল তিনি পর্দার আড়ালে চলে যান। তবে, ১৯৯৬ সালে দক্ষিণ আফ্রিকায় সফরকারী ভারত দলে তাকে নিয়ে আসা হয়। স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক সিরিজে নয়ন মোঙ্গিয়া’র স্থলাভিষিক্ত হন। অভিষেক খেলাতেই ৫৫ রান সংগ্রহ করেন। পরবর্তীতে এটিই তার সেরা ব্যক্তিগত ইনিংস হিসেবে রয়ে যায়। এরপরের খেলায় করেন ৩৮ রান। কিন্তু, পরবর্তী আট ইনিংসে তিনি সবমিলিয়ে মাত্র ৪৯ রান যুক্ত করতে পেরেছিলেন।

টেস্ট অভিষেক সম্পাদনা

এরপর থেকে তিনি কখনো দলে নিজেকে স্থায়ীভাবে পাকাপোক্ত করতে পারেনি। প্রধানত দলে নিয়মিত উইকেট-রক্ষক নয়ন মোঙ্গিয়া’র থিতু অবস্থানের কারণেই এটি হয়েছে। এমনকি ১৯৯৯ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপের পর মোঙ্গিয়াকে দলের বাইরে রাখা হলেও দল নির্বাচকমণ্ডলী তার প্রতি আস্থা রাখতে পারেননি। এম. এস. কে. প্রসাদসমীর দিঘেকে অগ্রাধিকার দেয়া হয়। এ দুজনও ব্যর্থ হলে নিচেরসারির কার্যকর ব্যাটসম্যান সাবা করিমকে ২০০০ সালে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের পর দলে স্থায়ীভাবে খেলার সম্ভাবনা জাগ্রত হয়।

মে, ২০০০ সালে ঢাকায় অনুষ্ঠিত এশিয়া কাপে অংশ নেন। বাংলাদেশের বিপক্ষে সীমিত ওভারের খেলায় অনিল কুম্বলে’র বল আটকানোকালে ডান চোখে আঘাত পান। এরফলে, তার চোখে অস্ত্রোপচার করতে হয় ও তার খেলোয়াড়ী জীবনে বিঘ্ন ঘটায়।[২] তাসত্ত্বেও, নভেম্বর, ২০০০ সালে একই প্রতিপক্ষের বিপক্ষে একমাত্র টেস্ট খেলায় অংশ নেন।[৩]

প্রশাসনে অংশগ্রহণ সম্পাদনা

ক্রিকেট খেলা থেকে অবসর গ্রহণের পর ধারাভাষ্যকর্মের সাথে যুক্ত হন। টেলিভিশনে ধারাভাষ্য দিতেন ও সেপ্টেম্বর, ২০১২ সালে জাতীয় দল নির্বাচক হিসেবে তাকে মনোনীত করা হয়। টিস্কো’র কর্পোরেট কমিউনিকেশনস ডিভিশনে কাজ করছেন।

১ জানুয়ারি, ২০১৮ তারিখে বিসিসিআই কর্তৃক জেনারেল ম্যানেজার, ক্রিকেট অপারেশন্স পদে তাকে নিযুক্ত করা হয়। ক্রিকেটের বিভিন্ন বিভাগে কৌশলগত নির্দেশনা, পরিকল্পনা বাস্তবায়ন, অর্থ বরাদ্দ, খেলা চলাকালীন সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও অভিযোগ পর্যবেক্ষণ, মাঠের মানদণ্ড নিরূপ, ঘরোয়া প্রকল্পের প্রশাসনিক দিকে নজর দেয়া তার প্রধান কাজ ছিল।[৪] এ পদের জন্যে সাবা করিম ছাড়াও ভেঙ্কটেশ প্রসাদ আবেদন করেছিলেন।

২৭ সেপ্টেম্বর, ২০১২ তারিখে পূর্ব অঞ্চলের জন্যে জাতীয় দল নির্বাচক হিসেবে তাকে মনোনয়ন দেয়া হয়।[৫]

ব্যক্তিগত জীবনে বিবাহিত তিনি। ফিদেল সাবা নামীয় তার এক সন্তান রয়েছে। জানুয়ারি, ২০২০ সালে এক নারীকে হোন্ডা জাজে আহত করে।[৬]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "The Home of CricketArchive"cricketarchive.com। সংগ্রহের তারিখ ৪ জুন ২০১৭ 
  2. "Karim contemplates retirement"। সংগ্রহের তারিখ ৪ জুন ২০১৭ 
  3. "The Home of CricketArchive"cricketarchive.com। সংগ্রহের তারিখ ৪ জুন ২০১৭ 
  4. "Saba Karim appointed GM"। thehindu। সংগ্রহের তারিখ ১২ অক্টোবর ২০২০ 
  5. "Patil is Chief Selector, Amarnath exits"। Wisden India। ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১২। ৮ ডিসেম্বর ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ অক্টোবর ২০২০ 
  6. "Former cricketer Saba Karim son Fidel hits woman with car injured"। India Today। ৭ জানুয়ারি ২০২০। 

আরও দেখুন সম্পাদনা

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা