সাফা ও মারওয়া (আরবি: الصفا Aṣ-Ṣafā, المروة al-Marwah) সৌদি আরবের মক্কায় অবস্থিত বৃহত্তর আবু কুবাইস ও কাইকান পর্বতদ্বয়ের সাথে সংযুক্ত দুটি ছোট পাহাড়। এই পাহাড়দ্বয় হজ্জউমরার সাথে সম্পর্কিত। হজ্জ ও উমরার অংশ হিসেবে এই দুই পাহাড়ের মাঝে সাত বার আসা যাওয়া করতে হয় যা সায়ী নামে পরিচিত।

সাফা ও মারওয়া
বামে: একটি চিহ্ন হজযাত্রীদের সাফার দিকে যেতে ইঙ্গিত করে
ডানদিকে: সাফা ও মারওয়ার মধ্যে চলাচলের পথ, কাবাঘর এর তাওয়াফ বা প্রদক্ষিণের পাশাপাশি চিত্রিত
সর্বোচ্চ বিন্দু
প্রধান শিখরসাফা: আবু কুবাইস
মারওয়া: কাইকান
তালিকাভুক্তি
স্থানাঙ্ক২১°২৫′২৫″ উত্তর ৩৯°৪৯′৩৮″ পূর্ব / ২১.৪২৩৬১° উত্তর ৩৯.৮২৭২২° পূর্ব / 21.42361; 39.82722
নামকরণ
স্থানীয় নামٱلصَّفَا وَٱلْمَرْوَة (আরবি)
ভূগোল
সাফা ও মারওয়া সৌদি আরব-এ অবস্থিত
সাফা ও মারওয়া
সাফা ও মারওয়া
সৌদি আরবে অবস্থান
সাফা ও মারওয়া এশিয়া-এ অবস্থিত
সাফা ও মারওয়া
সাফা ও মারওয়া
সৌদি আরবে অবস্থান
দেশসৌদি আরব
অঞ্চলহেজাজ
প্রদেশমক্কা
শহরমক্কা
মূল পরিসীমাহেজাজ পর্বত
মসজিদুল হারামের অভ্যন্তরে সাফা পাহাড়, মক্কা, সৌদি আরব

ইতিহাস সম্পাদনা

ইসলামি বর্ণনা অনুযায়ী, ইবরাহিম (আ) আল্লাহর আদেশে তার স্ত্রী হাজেরা (আ) ও শিশুপুত্র ইসমাইল (আ) কে অল্প কিছু খাদ্যদ্রব্যসহ সাফা ও মারওয়ার কাছে মরুভূমিতে রেখে আসেন।[১][২] তাদের খাবার ও পানি শেষ হয়ে যাওয়ার পর হাজেরা পানির জন্য এই দুই পাহাড়ের মাঝে সাতবার যাওয়া আসা করেন। এসময় তিনি ইসমাইল (আ) কে রেখে যান।

প্রথমে তিনি আশেপাশের এলাকা দেখার জন্য সাফা পাহাড়ে উঠেন। তিনি কোনো কাফেলার সন্ধান পাওয়ার আশায় ছিলেন যাতে তাদের কাছ থেকে সামান্য পানি চেয়ে পিপাসা মেটানো যায়। কিছু না দেখার পর তিনি পার্শ্ববর্তী মারওয়া পাহাড়ে উঠেন। মূলত, মরুভুমিতে মরিচিকা দেখে পানির আশায় তিনি দৌড়ে যান। বারবার তার দৃষ্টিভ্রম হয় এবং সামান্য পানি পাওয়ার আশায় এভাবে সাতবার চলাচলের পর ফিরে এসে তিনি দেখতে পান যে ক্রন্দনরত শিশু ইসমাইল (আ) এর পায়ের আঘাতে মাটি ফেটে পানির ধারা বের হচ্ছে। মূলত, ফেরেশতা হযরত জিবরাইল (আ) এর আঘাতে এই পানির ধারাটি সৃষ্টি হয়। বিবি হাজেরা এই ঝর্ণা পাথর দিয়ে বেধে দেন। এরপর থেকে এটি জমজম কুয়া নামে পরিচিত হয়।

স্থান সম্পাদনা

কাবা মসজিদুল হারামে অবস্থিত। সাফা পাহাড় এর থেকে প্রায় ১০০ মি (৩৩০ ফুট) দূরে অবস্থিত। মারওয়া কাবা থেকে ৩৫০ মি (১১৫০ ফুট) দূরে অবস্থিত। সাফা ও মারওয়ার মধ্যবর্তী দূরত্ব ৩০০ মি (৯৮০ ফুট)। সাতবার আসা যাওয়া করার পর মোটামুটি ২.১ কিমি (১.৩ মাইল) দূরত্ব অতিক্রম করতে হয়। পাহাড়দ্বয় ও মধ্যবর্তী পথ বর্তমানে দীর্ঘ গ্যালারির মধ্যে অবস্থিত এবং মসজিদের অংশ।

সায়ি সম্পাদনা

হজ্জউমরার সময় এই দুই পাহাড়ের মধ্যে সাতবার আশা যাওয়া করতে হয়। একে সায়ি (আরবি: سَعِي, অনুবাদ'"অনুসন্ধান "') বলে।[৩] এটি হজ্জ ও উমরার অবশ্য পালনীয় বিধান।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Lings, Martin. (১৯৯১)। Muhammad : his life based on the earliest sources। Islamic Texts Society. (মার্জিত সংস্করণ)। London: Islamic Texts Society। আইএসবিএন 0-946621-25-Xওসিএলসি 27848193 
  2. Glassé, Cyril (১৯৯১)। The Concise Encyclopedia of Islam (ইংরেজি ভাষায়)। HarperSanFrancisco। আইএসবিএন 978-0-06-063126-0 
  3. Mohamed, Mamdouh N. (১৯৯৬)। Hajj & ʻUmrah : from A to Z । Beltsville, Md.: Amana Publications। আইএসবিএন 0-915957-54-Xওসিএলসি 33243931