সাতক্ষীরা সদর উপজেলা
সাতক্ষীরা সদর উপজেলা বাংলাদেশের সাতক্ষীরা জেলার অন্তর্গত একটি প্রশাসনিক এলাকা।সাতক্ষীরা সদরের প্রশাসন সাতক্ষীরা থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করে ১৯৮৪ সালে।১৮৬৯ সালে পৌরসভা গঠন করা হয় । সুলতানপুর বড়বাজার (প্রাচীন নাম প্রাণসায়ের বাজার) উপজেলা শহরের প্রধান বাণিজ্য কেন্দ্র।[১][২] এছাড়াও সাতক্ষীরা জেলার প্রধান শহরটি এই উপজেলার সাতক্ষীরা পৌরসভাতেই অবস্থিত।
সাতক্ষীরা সদর | |
---|---|
উপজেলা | |
মানচিত্রে সাতক্ষীরা সদর উপজেলা | |
স্থানাঙ্ক: ২২°৪৩′১৩″ উত্তর ৮৯°৪′৪৫″ পূর্ব / ২২.৭২০২৮° উত্তর ৮৯.০৭৯১৭° পূর্ব | |
দেশ | বাংলাদেশ |
বিভাগ | খুলনা বিভাগ |
জেলা | সাতক্ষীরা জেলা |
আসন | সাতক্ষীরা-২ |
সরকার | |
• সংসদ সদস্য | আশরাফুজ্জামান আশু (জাতীয় পার্টি) |
আয়তন | |
• মোট | ৪০৩.৪৮ বর্গকিমি (১৫৫.৭৮ বর্গমাইল) |
জনসংখ্যা | |
• মোট | ৪,৫৯,৯৮৭ |
• জনঘনত্ব | ১,১০০/বর্গকিমি (৩,০০০/বর্গমাইল) |
সময় অঞ্চল | বিএসটি (ইউটিসি+৬) |
প্রশাসনিক বিভাগের কোড | ৪০ ৮৭ ৮২ |
ওয়েবসাইট | দাপ্তরিক ওয়েবসাইট |
অবস্থান ও আয়তন
সম্পাদনাবাংলাদেশ এর দক্ষিণ পশ্চিম অঞ্চলে অবস্থিত সাতক্ষীরা বাংলাদেশ এর অন্যতম বৃহত্তম জেলা। জেলার উত্তর গোলার্ধে নিরক্ষরেখা এবং কর্কট ক্রান্তির মধ্যবর্তী ২১°৪৮´ থেকে ২২°৫৮´ উত্তর অক্ষাংশে এবং ৮৮°৫৫´ থেকে ৮৯°৫৫´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশে এবং সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে আনুমানিক গড়ে ১৬´ উচ্চে অবস্থিত। এই উপজেলার উত্তরে কলারোয়া উপজেলা, দক্ষিণে দেবহাটা উপজেলা ও আশাশুনি উপজেলা, পূর্বে তালা উপজেলা, পশ্চিমে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ।
ইতিহাস
সম্পাদনাপ্রাচীনকালে এই জেলাকে বাগড়ী, ব্যাঘ্রতট, সমতট, যশোর, চূড়ন প্রভৃতি নামে অভিহিত করা হতো। অবশ্য এ জেলার নামকরণের পেছনে অনেক মত প্রচলিত আছে। প্রথম ও প্রধান মতটি হলো চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের সময় নদীয়ার রাজা কৃষচন্দ্রের এক কর্মচারী বিষুরাম চক্রবর্তী নিলামে চূড়ন পরগনা ক্রয় করে তার অর্ন্তগত সাতঘরিয়া নামক গ্রামে বাড়ি তৈরী করেন। তার পূত্র প্রাণনাথ সাতঘরিয়া অঞ্চলে ব্যাপক উন্নয়ন করেন। ১৮৬১ সালে মহকুমা স্থাপনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হওয়ার পর ইংরেজ শাসকরা তাদের পরিচিত সাতঘরিয়াতেই প্রধান কার্যালয় স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেন। ইতোমধ্যেই সাতঘরিয়া ইংরেজ রাজকর্মচারীদের মুখে ‘সাতক্ষীরা’ হয়ে যায়। দ্বিতীয় মতটি হলো একদা সাত মনীষী সাগর ভ্রমণে এসে একান্ত শখের বসে (মতানৈক্যে রান্নার উপকরণাদি না পেয়ে) ক্ষীর রান্না করে খেয়েছিলেন। পরবর্তীতে ‘ক্ষীর’ এর সাথে ‘আ’ প্রত্যেয় যুক্ত হয়ে ‘ক্ষীরা’ হয় এবং লোকমুখে প্রচলিত হয়ে যায় সাতক্ষীরা।
বাংলাদেশের সর্ব দক্ষিণ-পশ্চিমে পৃথিবীর সর্ব বৃহৎ বনভূমি সুন্দরবন। বঙ্গোপসাগরের উপকূল এবং ভরতীয় সীমান্তে অবস্থিত সাতক্ষীরা নামক অঞ্চলটি মানব বসতি গড়ে ওঠার আগে ছিল একটি বিস্তীর্ণ জলাভূমি। পরবর্তীতে মানব বসতি গড়ে ওঠে। ১৮৬১ সালে যশোর জেলার অধীনে ৭টি থানা নিয়ে সাতক্ষীরা মহকুমা প্রতিষ্ঠিত হয়। পরে ১৮৬৩ সালে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের চব্বিশ পরগনা জেলার অধীনে এই মহকুমার কার্যক্রম শুরু হয়। পরবর্তীতে ১৮৮২ সালে খুলনা জেলা প্রতিষ্ঠিত হলে সাতক্ষীরা খুলনা জেলার অর্ন্তভূক্ত একটি মহকুমা হিসাবে স্থান লাভ করে। প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণের ফলে ১৯৮৪ সালে সাতক্ষীরা মহকুমা জেলায় উন্নীত হয়।
প্রশাসনিক এলাকা
সম্পাদনাসাতক্ষীরা সদর উপজেলায় ১৪ টি ইউনিয়ন রয়েছে। এগুলি হল -
শিক্ষা
সম্পাদনাএখানকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছেঃ
- সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ
- ইউনাইটেড মডেল কলেজ
- সাতক্ষীরা সরকারি কলেজ
- সাতক্ষীরা সিটি কলেজ
- সাতক্ষীরা সরকারি মহিলা কলেজ
- সাতক্ষীরা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়
- সাতক্ষীরা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়
- বল্লী মোঃ মুজিবুর রহমান মাধ্যমিক বিদ্যালয়
- বল্লী আদর্শ বালিকা বিদ্যালয়
- তালতলা আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়,তালতলা, বিনেরপোতা, সাতক্ষীরা।
- ভোমরা ইউনিয়ন পল্লী শ্রী মাধ্যমিক বিদ্যালয়
- সাতক্ষীরা সরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট,
- সাতক্ষীরা সরকারি টেকনিক্যাল কলেজ,,
,,,প্রভৃতি।
পরিবহন
সম্পাদনাসাতক্ষীরা থেকে ঢাকা পর্যন্ত বাংলাদেশের যে কোনও জেলাতে সুপরিচিত পরিবহন ব্যবস্থা রয়েছে। তাদের মধ্যে হাই ওয়ে সার্ভিস সেরা। আন্তঃজেলা পরিবহনও উন্নত। তবে জেলায় পরিবহন ব্যবস্থা এই জেলায় হাইওয়ে সার্ভিসের চেয়ে কম পরিচিত। এই জেলায় কোনও বিমান পরিসেবা নেই।
অর্থনীতি
সম্পাদনাসাতক্ষীরার দক্ষিণাঞ্চলের অধিকাংশ মানুষ মৎসচাষের উপর নির্ভরশীল। প্রধান ফল আম, জাম, কাঁঠাল, কলা, পেপে, নারিকেল, লিচু, সফেদা, জামরুল, কদবেল, বরই এবং পেয়ারা। খামারের মধ্যে ৮৬ টি গবাদিপশু, ৩২২ টি পোল্ট্রি খামার, ৩০৪৬ টি মৎস (রুই,কাৎলা,মৃগেল,পাংগাস ইত্যাদি), ৩৬৫০ টি চিংড়ি খামার, ৬৬ টি হ্যাচারি এবং ১ টি গরু প্রজনন কেন্দ্র আছে। রপ্তানী পণ্য গুলোর মধ্যে চিংড়ি, ধান, পাট, গম, পান পাতা এবং চামড়া উল্লেখযোগ্য।
উল্লেখযোগ্য স্থান
সম্পাদনা* সুলতানপুর শাহী মসজিদ। * সাতক্ষীরা পঞ্চমন্দির। * অন্নণপূর্ণা মন্দির। * জমিদার বাড়ি জামে মসজিদ। * জগন্নাথ দেবের মন্দির। * কালভৈরব মন্দির। * রাধা-গোবিন্দ মন্দির। * বৈকারী শাহী মসজিদ ও হোজরাখানা। * ছয়ঘরিয়া জোড়া শিব মন্দির। * ঝাউডাঙ্গা তহসীল অফিস। * ঝাউডাঙ্গা শ্রী শ্রী কালীমন্দির।
উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্ব
সম্পাদনা- আবেদ খান (সাংবাদিক ও কলাম-লেখক)
- মোহাম্মদ ওয়াজেদ আলী (লেখক, সাংবাদিক)
- স.ম আলাউদ্দীন ( মুক্তিযোদ্ধা)
- সাবিনা ইয়াসমিন (সঙ্গীত শিল্পী)
- নীলুফার ইয়াসমীন (সঙ্গীত শিল্পী)
- তারিক আনাম খান (অভিনেতা)
- সৌম্য সরকার (ক্রিকেটার)
- মুস্তাফিজুর রহমান (ক্রিকেটার)
- রবিউল ইসলাম (ক্রিকেটার)
- আশরাফুজ্জামান আশু (সংসদ সদস্য)
- মীর মোস্তাক আহমেদ রবি (সাবেক সংসদ সদস্য)
- কাজী শামসুর রহমান (সাবেক সংসদ সদস্য)
- আব্দুল খালেক মন্ডল (সাবেক সংসদ সদস্য)
বিবিধ
সম্পাদনা- উপজেলায় ইউনিয়নের সংখ্যা= ১৪ টি ও ১ টি পৌরসভা
- মোট জমির পরিমাণ= ৪০,৩৪৮ হেঃ
- নীট আবাদী জমি= ২৭,২৫০ হেঃ
- মোট ফসলী জমির পরিমাণ= ৬১০৬০ হেঃ
- মোট অনাবাদী জমি= ১৩,০৯৮ হেঃ
আরও দেখুন
সম্পাদনাতথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন (জুন ২০১৪)। "এক নজরে সাতক্ষীরা সদর"। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। ১ জুন ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৩ মার্চ ২০২০।
- ↑ তৃপ্তি মোহন মল্লিক (১৯ তারিখে)। "সাতক্ষীরা সদর উপজেলা"। বাংলা পিডিয়া। সংগ্রহের তারিখ ১৯ মার্চ ২০১৫। এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন:
|তারিখ=
(সাহায্য)
বহিঃসংযোগ
সম্পাদনা- বাংলাপিডিয়ায় সাতক্ষীরা সদর উপজেলা
- অফিসিয়াল ওয়েবসাইট ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২৬ মে ২০২০ তারিখে