সাইবাই ভোঁসলে (ও. নিম্বলকর ) ( আনু. ১৬৩৩[১] - ৫ সেপ্টেম্বর ১৬৫৯) ছিলেন মারাঠা সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা শিবাজীর প্রথম স্ত্রী এবং প্রধান সহধর্মিণী। তিনি তার স্বামীর উত্তরসূরি এবং দ্বিতীয় ছত্রপতি সম্ভাজির মা ছিলেন।

পরিবার সম্পাদনা

সাইবাই বিশিষ্ট নিম্বলকর পরিবারের সদস্য ছিলেন, যার সদস্যরা পবর রাজবংশের যুগ থেকে ফালটানের শাসক ছিলেন[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] এবং দক্ষিণাত্য সালতানাত এবং মুঘল সাম্রাজ্যের সেবা করেছিলেন। তিনি ছিলেন ফালটানের পঞ্চদশ রাজা, মুধোজিরাও নায়েক নিম্বলকরের কন্যা এবং ষোড়শ রাজার বোন বজমি রাও নায়েক নিম্বলকরের বোন।[২] সাইবাইয়ের মা রেউবাই শিরকে পরিবারের সদস্য ছিলেন। অন্ধ্র প্রদেশের রাভালি শিবাজি এবং সাইবাইয়ের বর্তমান শেষ নাতি।

বিবাহ সম্পাদনা

১৬৪০ সালের ১৬ ই মে পুনের লাল মহলে সাইবাই এবং ছত্রপতি শিবাজীর শৈশবকালীন বিয়ে হয়েছিলেন।[৩][৪] বিয়ের ব্যবস্থা করেছিলেন তার মা জীজা বাঈ; কিন্তু স্পষ্টতই তার বাবা শাহজি বা তার ভাই, সম্ভাজি এবং ইকোজি তাতে উপস্থিত ছিলেন না। ফলে শাহজি শীঘ্রই তার নতুন পুত্রবধূ, ছেলে এবং ছেলরর মা জিজা বাঈকে বেঙ্গালুরুতে ডেকে পাঠান, যেখানে তিনি তার দ্বিতীয় স্ত্রী তুকাবাঈয়ের সাথে থাকতেন।[৫]

সাইবাই এবং শিবাজী একে অপরের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ভাগ করে নিয়েছিলেন। বলা হয়ে থাকে যে তিনি একজন জ্ঞানী মহিলা এবং শিবাজীর অনুগত সঙ্গিনী ছিলেন।[৬] সব দিক থেকে, সাইবাই একজন সুন্দরী, সদালাপী এবং একজন স্নেহশীল মহিলা ছিলেন। তাকে একজন "ভদ্র এবং নিঃস্বার্থ ব্যক্তি" হিসাবে বর্ণনা করা হয়েছে।[৭]

১৬৫৯ সালে সাইবাইয়ের অকাল মৃত্যুর পর ১৬৭৪ সালে জিজাবাঈয়ের মৃত্যুর পর, শিবাজীর ব্যক্তিগত জীবন উদ্বেগ এবং অসন্তুষ্টিতে আচ্ছন্ন হয়ে পড়ে।[৮] যদিও শিবাজীর দ্বিতীয় স্ত্রী সোয়রাবাই তাদের মৃত্যুর পরে রাজপরিবারে খ্যাতি অর্জন করেছিলেন, তবে তিনি সাইবাইয়ের মতো স্নেহময় সঙ্গিনী ছিলেন না, যাকে শিবাজী মহারাজ খুব ভালবাসতেন।[৯]


সাইবাই মারা যাওয়ার আগ পর্যন্ত শিবাজী মহারাজের প্রিয় ছিলেন। তার কাছে অনুপ্রেরণার একটি দুর্দান্ত উত্স, কিংবদন্তি রয়েছে যে "সাই" ছিল তার মৃত্যুশয্যায় তিনি উচ্চারিত শেষ শব্দ।

মৃত্যু পর্যন্ত সাইবাই শিবাজী মহারাজের প্রিয় ছিলেন। কিংবদন্তিতে বলা হয় যে "সাই" ছিল শিবাজীর মৃত্যুশয্যায় উচ্চারিত শেষ শব্দ।[১]

মৃত্যু সম্পাদনা

সাইবাই ১৬৫৯ সালে রাজগড় দুর্গে মারা যান যখন শিবাজী মহারাজ প্রতাপগড়ে আফজল খানের সাথে তার সাক্ষাতের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। তিনি সম্ভাজিক জন্ম দেওয়ার সময় থেকেই অসুস্থ ছিলেন এবং তার মৃত্যুর আগে তার অসুস্থতা গুরুতর হয়ে ওঠেছিল। সম্ভাজিকে তার বিশ্বস্ত ধারৌ দ্বারা সেবাযত্ন করা হয়েছিল। মায়ের মৃত্যুর সময় সম্ভাজির বয়স ছিল দুই বছর এবং তার দাদী জীজা বাঈ তাকে লালন-পালন করেন।[১০] রাজগড় দুর্গে সাইবাইয়ের সমাধি অবস্থিত।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Tare, Kiran (জুন ১৬, ২০১২)। "First-ever portrait of Shivaji's queen to be unveiled soon"India Today। সংগ্রহের তারিখ ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০১৩ 
  2. Katamble, V.D. (২০০৩)। Shivaji the Great। Dattatraya Madhukar Mujumdar, Balwant Printers। পৃষ্ঠা 36। আইএসবিএন 9788190200004 
  3. Balkrishna Deopujari, Murlidhar (১৯৭৩)। Shivaji and the Maratha Art of War। Vidarbha Maharashtra Samshodhan Mandal। পৃষ্ঠা 35। 
  4. Gordon, Stewart (১৯৯৩)। The Marathas 1600-1818। Cambridge University। পৃষ্ঠা 60আইএসবিএন 9780521268837 
  5. Rana, Bhawan Singh (২০০৪)। Chhatrapati Shivaji (1st সংস্করণ)। Diamond Pocket Books। পৃষ্ঠা 19। আইএসবিএন 9788128808265 
  6. Sen, Surendra Nath (১৯৩০)। Foreign Biographies of Shivaji Volume 2 of Extracts and Documents relating to Maratha History। K. Paul, Trench, Trubner & Company Limited। পৃষ্ঠা 165। 
  7. Kincaid, Dennis (১৯৮৭)। The History of Chh.Shivaji Maharaj: The Grand Rebel (ইংরেজি ভাষায়)। Karan Publications। পৃষ্ঠা 78। 
  8. Sardesai, Govind Sakharam (১৯৫৭)। New History of the Marathas: Chh.Shivaji Maharaj and his line (1600-1707) (ইংরেজি ভাষায়)। Phoenix Publications। পৃষ্ঠা 263। 
  9. Kincaid, Dennis (১৯৩৭)। The Grand Rebel: An Impression of Chh.Shivaji Maharaj, Founder of the Maratha Empire। Collins। পৃষ্ঠা 162, 176। 
  10. Mehta, J. L. (২০০৫)। Advanced study in the history of modern India, 1707-1813। New Dawn Press, Inc.। পৃষ্ঠা 45, 47। আইএসবিএন 9781932705546