বাবর

বাবর
(সম্রাট বাবর থেকে পুনর্নির্দেশিত)

মির্জা জহিরউদ্দিন মুহাম্মদ বাবর ছিলেন মধ্য এশিয়ার একজন বিখ্যাত মুসলিম সম্রাট এবং মুঘল সাম্রাজের প্রতিষ্ঠাতা।[১] তিনি সাধারণত বাবর নামেই অধিক পরিচিত। ১৪৮৩ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি তিনি বর্তমান উজবেকিস্তানে জন্মগ্রহণ করেন এবং ১৫৩০ সালের ২৬ ডিসেম্বর তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তিনি তৈমুর লঙ্গের ৬ষ্ঠ বংশধর ছিলেন। তৈমুরীয় আমির মীরন শাহের মাধ্যমে বাবুরের বংশধারা প্রবাহিত হয়েছে এবং মাতার দিক থেকে চেঙ্গিস খানের বংশধর ছিলেন।[২][৩][৪] তিনি মির্জা ওমর সাঈদ বেগের (ওমর সেখ মির্জা) পুত্র ও তৈমুরী শাসক সুলতান মোহাম্মদের প্রপৌত্র ছিলেন।[৫] তিনি পানিপথের প্রথম যুদ্ধে দিল্লীর লোদি রাজবংশের শেষ সুলতান ইব্রাহিম লোদিকে পরাজিত করে দিল্লি দখল করে মুঘল সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন।[৬][৭] তার মৃত্যুর পর তার পুত্র মির্জা হুমায়ুন সিংহাসনে আরোহণ করেন। পানিপথের যুদ্ধে তিনিই প্রথম কামানের ব্যবহার করেন এবং তার প্রখর রণকৌশলের (রুমী কৌশল) কাছে হার মানেন ইব্রাহিম লোদি।[৮]

মির্জা জহিরউদ্দিন মুহাম্মদ বাবর
ظهیرالدین محمد بابر
সুলতানুল আজম ওয়াল খাকান
আল-কুকারাম
বাদশাহ
গাজী
ভারতের সম্রাট
বাবরের প্রতিকৃতি
১ম মুঘল সম্রাট
রাজত্ব২৭শে এপ্রিল ১৫২৬ – ৫ই জানুয়ারি ১৫৩১
উত্তরসূরিমির্জা হুমায়ুন
জন্ম১৪ ফেব্রুয়ারি, ১৪৮৩
মৃত্যু২৬ ডিসেম্বর, ১৫৩০
(বয়স ৪৭ বছর)
সমাধি১৫৩১
স্ত্রীগণ
বংশধরমির্জা হুমায়ুন (পুত্র)
কামরান মির্জা (পুত্র)
আসকারি মির্জা (পুত্র)
হিন্দাল মির্জা (পুত্র)
বারবুল মির্জা (পুত্র)
ফারুক মির্জা (পুত্র)
শাহরুখ মির্জা (পুত্র)
সুলতান আহমদ মির্জা (পুত্র)
আলোয়ার মির্জা (পুত্র)
গুলবদন বেগম (কন্যা)
মেহেরজান বেগম (কন্যা)
ঈশান বেগম (কন্যা)
মাসুমা বেগম (কন্যা)
গুলগাদার বেগম (কন্যা)
গুলরঙ বেগম (কন্যা)
গুলচেহারা বেগম (কন্যা)
পূর্ণ নাম
মির্জা জহির উদ্-দিন মুহাম্মদ বাবর
ظهیرالدین محمد بابر
চাঘাতাই/ফার্সিﻇﻬﻴﺮ ﺍﻟﺪﻳﻦ محمد بابر
প্রাসাদতৈমুরি রাজবংশ
রাজবংশতৈমুরী সাম্রাজ্য
পিতাউমর শেখ মির্জা দ্বিতীয় , ফারগনার আমীর
মাতাকুতলুক নিগার খানাম

পটভূমিকা সম্পাদনা

জহির উদ্দিন মোহাম্মদ ১৪৮৩ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি [৯] ফারগানা প্রদেশের আনদিজান শহরে জন্মেছিলেন। ফারগানা বর্তমানে উজবেকিস্তান নামে পরিচিত। তিনি ফারগানা প্রদেশের শাসনকর্তা ওমর মির্জার বড় পুত্র ছিলেন।[১০] তার স্ত্রী কুতলুক নিগার আনাম ইউনূস খান এর কন্যা ছিলেন। মঙ্গলদের থেকে উদ্ধুত বারলাস উপজাতিতে বেড়ে উঠলেও বাবর জাতিতে তুর্কি [১১]পারস্য সংস্কৃতির[৬][১২][১৩] সংমিশ্রণ ছিলেন । এই অঞ্চলগুলো পরবর্তীতে ইসলামিক জাতিতে পরিণত হয় এবং তুর্কিস্থান এবং খোরাসান নামে পরিচিত লাভ করে। বাবরের মাতৃভাষা ছিল চাঘাতাই যা তার কাছে তুর্কি ভাষা নামে পরিচিত ছিল।[১৪] এছাড়া তিমুরীয় বিত্তবানদের প্রধান ভাষা পার্সিও তার দখল ছিল। তিনি চাঘাতাই ভাষাতে তার আত্মজীবনী “বাবরনামা” লিখেছেন, যার ভাষা, বাক্য গঠন, শব্দ মূলত পারস্য ভাষার অনুসারী।[১৫]

আন্দিজানির সকলে তুর্কি ছিলেন, শহর ও বাজারের সকলেই তুর্কি নামে পরিচিত। সাহিত্যের ভাষা মানুষের কথ্য ভাষাকেই প্রতিফলিত করেছিল, যেমন মীর আলি শের নাওয়াই এর লেখা, যদিও তিনি হিন (হেরাত) এ জন্মলাভ করেন ও বেড়ে ওঠেন, তবে তা এগুলোরই একটি উপভাষা। সুন্দর চেহারা তাদের মাঝে খুবই নিয়মিত ছিল। বিখ্যাত সঙ্গীত শিল্পী খাজা ইউসূফ ছিলেন একজন আনদিজানি[১৬]

বাবর একজন মঙ্গলীয় (অথবা ফার্সীতে মুঘল) হয়েও মধ্য এশিয়ার তুর্কি এবং ইরানীদের কাছ থেকে ব্যাপক সহযোগিতা লাভ করেছিলেন এবং তার সৈন্যবাহিনীতে পার্সি (তুর্কি অথবা সার্ট জাতি, বাবর যে নামে ডাকতেন)[১৬],পাঠান,আরবীয় মানুষ ছিলেন।এছাড়াও তার সৈন্যবাহিনীতে কিজিলবাশ (Qizilbāš) যোদ্ধারা ও অন্তর্ভুক্ত করেছিল,[১৭] পার্সিয়া থেকে শিয়াসুফির ধর্মীয় ধারা বর্তমান ছিল যা পরবর্তী কালে মোঘল কোর্টে সর্বাপেক্ষা প্রভাবশালী হয়েছিল।

কথিত আছে বাবর শক্ত সমর্থ এবং শারীরিক ভাবে সুস্থ ছিলেন। তিনি কেবল ব্যায়ামের জন্য দু’কাঁধে দু’জনকে নিয়ে ঢাল বেয়ে দৌড়ে নামতেন। কিংবদন্তি আছে, বাবর তার সামনে পড়া সবগুলো নদী সাঁতরে পার হতেন এবং উত্তর ভারতের গঙ্গা নদী দু’বার সাঁতার দিয়ে পাড়ি দিয়েছিলেন।[১৮]

বাবরের দৃঢ স্পৃহা ছিল। তার প্রথম স্ত্রী সালতান বেগমের কাছে তিনি কিছুটা লাজুক ছিলেন, পরে তার উপর আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন। আত্মজীবনীতে তিনি কিশোর বয়সের কামনা বাবুরী নামক এক বালকের কথা গুরুত্বের সঙ্গে উল্লেখে করেন।[১৯]

বাবর একজন গোঁড়া সুন্নি মুসলিম ছিলেন। তিনি তার শিয়া মুসলিমদের অপছন্দ করতেন তা কখনও ব্যক্ত করেছিলেন " তাদের বিচ্যুতি " বলে ।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] যদিও ধর্ম বাবরের জীবনের এক প্রধান স্থান ছিল এবং তার সহযোগী রাজারা ইসলামকে হালকা ভাবে গ্রহণ করেছিল। বাবর তার সমকালীন এক কবির কবিতার একটি লাইন প্রায় উদ্ধৃত করতেন:" আমি মাতাল, আধিকারিক।আমাকে শাস্তি দিন যখন আমি সংযমি। " বাবরের সহযোগী রাজারা মদ পান করতেন এবং প্রাচুর্য্য পূর্ণ ভাবে জীবন যাপন করতেন, তারা বাজারের ছেলের সঙ্গে প্রেমে পড়েছিল এবং তারা হিংস্র এবং নির্মম ছিলেন।বাবরের এক কাকার মতে "অধর্ম এবং পাপকার্জে সে আসক্ত হয়েছিল। সে নিজেও সমকামিতায় ও আসক্ত হয়ে পড়েছিল।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] হায়দ্রাবাদের শিবির বাজারে অবস্থানকালীন সময়ে তিনি "বাবরি/বাবুরী" নামের আন্দিজানী এক ছেলের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। মূলত নামের মিল থাকার দরুন এমন সম্পর্ক হয়েছিল যা বর্তমান সমাজেও হয়ে থাকে। বন্ধুকে নিয়ে কবিতাও লিখেছিলেন বাবর।

সংস্কৃতি সম্পাদনা

ট্রানসোক্সিয়ান এবং খোরাসান'এ তুর্ক-মোঙ্গলীয় এবং পার্শি জনগণ পাশাপাশি বসবাস করতেন। এই বিভক্ত সমাজটি নৃতাত্ত্বিক ভাবে সামরিক এবং বেসামরিক দিকে সরকার এবং নিয়মের দায়িত্ব ভাগ করে নিয়েছিল। তুর্ক-মোঙ্গলীয়রা ছিল মূলত সামরিক গোষ্ঠী এবং ফার্সিরা মূলত বিভিন্ন বেসামরিক কাজে যুক্ত ছিল। তুর্ক-মোঙ্গলীয়দের মধ্যে কথ্য ভাষারূপে চাঘতাই ভাষা প্রচলিত ছিল। মধ্য এশিয়ার তৃণপ্রধান বৃক্ষহীন প্রান্তরে চেঙ্গিস খানের পৃষ্ঠপোষকতায় এরা এক রাজনৈতিক সংগঠনে পরিনত হয়েছিল।[১৬] এদের প্রধান ভাষা ফার্সি ছিল, তাজিক ভাষা এদের মাতৃভাষা ছিল(ফার্সি)। সমস্ত শিক্ষিত এবং শহুরে মানুষের ভাষাও ছিল ফার্সি। তৈমুর লঙ্গের সরকারি রাজভাষাও ফার্সিই ছিল[২০][২১] এবং তার প্রশাসন, ইতিহাস,কবিতা [২২],সংস্কৃতি এই ভাষার মাধ্যমেই প্রকাশ পেয়েছিল। কিন্তু তৈমুর লঙ্গের পরিবার বাড়িতে চাঘাতাই ভাষায় কথা বলতো।[২২] সেই সময় আরবি ভাষা বিজ্ঞান, দর্শনবিদ্যা, ধর্মতত্ত্ব এবং ধর্মীয় বিজ্ঞানের ভাষা হিসাবে যথেষ্ট ঔৎকর্ষ্য অর্জন করেছিল।[২২]

বাবরের নাম সম্পাদনা

জহির উদ্দিন মোহাম্মদ তার ডাকনাম বাবর নামেই পরিচিত ছিলেন। বাবর নামটি লোমশ জন্তু বিভার তথা উদবিড়ালের নামের ইন্দো ইউরোপীয় সংস্করণ। তার নিকটাত্মীয় মির্জা মোহাম্মদ হায়দার লিখেছেন,

At that time the Chaghatái were very rude and uncultured (bázári), and not refined (buzurg) as they are now; thus they found Zahir-ud-Din Muhammad difficult to pronounce, and for this reason gave him the name of Bábar. In the public prayers (khutba) and in royal mandates he is always styled 'Zahir-ud-Din Bábar Muhammad,' but he is best known by the name of Bábar Pádisháh.("চাঘাতাই এর আমল (মঙ্গল সম্প্রদায় চেঙ্গিস খানের দ্বিতীয় পুত্র চাঘাতাই খানের থেকে উদ্ধুত) ছিল নিষ্ঠুর এবং কুরূচিপূর্ণ এবং বর্তমান সময়ের মত শিক্ষিত ছিল না। তারা দেখল এ নামটা উচ্চারণ করা কঠিন, সেজন্য তাকে বাবর নাম দিয়েছে।")[২৩]

সামরিক জীবন সম্পাদনা

 
মুহাম্মদ শেবানীর প্রতিকৃতি, যিনি সমরকন্দে বাবরকে ১৫০১ সালে পরাজিত করেন।

১৪৯৪ সালে মাত্র বারো বছর বয়সে বাবর প্রথম ক্ষমতা লাভ করেন । তিনি ফরগানার সিংহাসনে আরোহণ করেন যা বর্তমানে উজবেকিস্তান নামে পরিচিত। তার চাচা অনবরত তাকে সিংহাসন চ্যুত করার চেষ্টা করেছিলেন এবং তার অন্যান্য শত্রুও ছিল। একসময় সে বাবরকে ক্ষমতাচ্যূত করতে সফল হয়। ফলে জীবনের বেশকিছু সময় তাকে আশ্রয়হীন এবং যাযাবরের ন্যায় জীবনযাপন করতে হয়। এসময় তার সাথে শুধুমাত্র তার বন্ধু ও চাষীদের যোগাযোগ ছিল। ১৪৯৭ সালে বাবর সমরকন্দের উজবেক শহরে আক্রমণ চালান এবং ৭ মাস পরে শহর দখল করতে সক্ষম হন। ইতিমধ্যে প্রায় ৩৫০ কিলোমিটার দূরের ফরগানায় কিছু নোবেলদের বিদ্রোহের কারণে তাকে স্থানটি হারাতে হয়। ফরগানা পুনরুদ্ধারের জন্য অগ্রসর হলে তার বাহিনীর লোকজন তাকে ফেলে চলে যায়, ফলে তাকে সমরকন্দ ও ফরগানা উভয়ই হারাতে হয়।

১৫০১ সালে বাবর আবার সমরকন্দ দখল করতে প্রস্তুতি নেন, তবে আবারো তার পরাক্রমশালী প্রতিপক্ষ মোহাম্মদ শেবানী খান এর কাছে পরাজিত হন। তিনি তার কিছু অনুচর নিয়ে পালিয়ে আসতে সমর্থ হন। পরবর্তীতে বাবর একটি শক্তিশালী দল গঠনে মনযোগী হন এবং প্রধানত তাজিকবাদাক্‌শানদেরকে তার দলে অন্তর্ভুক্ত করেন। ১৫০৪ সালে তুষার সমৃদ্ধ অঞ্চল হিন্দুকুশ পর্বত অতিক্রম করেন এবং কাবুল দখল করেন। এর ফলে তিনি একটি নতুন ধনী রাজ্য লাভ করেন এবং নিজের ভাগ্য প্রতিষ্ঠা করেন এবং বাদশাহ উপাধি গ্রহণ করেন। ১৫০৬ সালে হুসাইন বায়কারাহ এর মৃত্যু তার অভিযানকে বিলম্বিত করে। বাবর তার মিত্রপক্ষের শহর হেরাতে দু’মাসের জন্য অবস্থান করে সম্পদের অভাবে এলাকা ছেড়ে দিতে বাধ্য হন। এর মধ্যেও তিনি এই রাজ্যকে প্রাচূর্য্যমণ্ডিত করেছেন। হেরাতের শিক্ষিত ও বুদ্ধজীবী সম্প্রদায়ের আধিক্য তাকে চমত্‌কৃত করে। তিনি অহিগুরের কবি মীর আলি শির নাভাই এর সাথে পরিচিত হন। নাভাই তার সাহিত্যে চাঘাতাই ভাষার ব্যবহার করতেন, তিনি বাবরকে তার আত্মজীবনী লিখতে উৎসাহিত করেন।

ঘনিয়ে আসা একটি বিদ্রোহ তাকে হেরাত থেকে কাবুল আসতে বাধ্য করে। তিনি এই পরিস্থিতি সামলে ওঠেন, তবে দুই বছর পর একটি বিপ্লব সংঘটিত হবার পর তার কিছু শীর্ষস্থানীয় নেতা তাকে কাবুল থেকে তাড়িয়ে দেন। বাবর কিছু সঙ্গী সহ শহর থেকে পালিয়ে গেলেও পুনরায় শহরে ফিরে এসে কাবুল দখল করেন। বিদ্রোহীদের তিনি তার অধীনে নিয়ে আসেন। এদিকে ১৫১০ সালে মোহাম্মদ শেবানী পার্সিয়ার শাসনকর্তা ইসমাঈল সাকাভিদ এর কাছে নিহত হন। বাবুর এই সুযোগে তার পূর্বপুরুষের রাজ্য তিমুরিদ পুনঃরুদ্ধার করতে চেষ্টা করেন। কয়েক বছর বাবর ইসমাঈল এর সাথে মধ্য এশিয়া দখলের জন্য মিলিত হন। বাবর সাকাভিদকে তার রাজ্যে সার্বভৌম রাজা হিসেবে চলার অনুমতি দেন। শাহ ইসমাঈল বাবর ও তার বোন খানজাদার মধ্যে পুনর্মিলন ঘটান। খানজাদাকে শেবানী বন্দী করে জোরপূর্বক বিয়ে করেছিল। ইসমাঈল বাবরকে অনেক ধনসম্পদ এবং রসদ সরবরাহ করেছিলেন এবং প্রতিদানে বাবর তাকে শুল্কমুক্ত সুবিধা দিয়েছিলেন।

এদিকে শাহ এর পারস্য শিয়া মুসলিমদের একটি অভেদ্য দুর্গে পরিণত হয় এবং তিনি নিজেকে ৭ম শিয়া ঈমাম ঈমান মূসা আল কাজিমের বংশধর হিসেবে দাবি করতেন। তথন তার নামে মূদ্রা চালূ করা হয় এবং মসজিদে খুত্‌বা পড়ার সময়ে তার নাম নিয়ে পড়া হত। এই যুক্তিতে বাবর পারস্যের মিত্ররাজ্যের সাথে সখ্যতা গড়ে তোলেন পার্সিয়ার শাহ্‌কে তাড়ানোর জন্য, যদিও কাবুলেও বাবরের নামে মূদ্রা ও খুতবা প্রচলিত ছিল।

 
সমরকন্দে চৌদ্দ শতকে তৈমুর কর্তৃক পুনর্নির্মিত শাহ্-ই জিন্দা সমাধী।

পরে বাবর বুখার দিকে রওনা হন এবং সেখানে তার বাহিনীকে স্বাধীনতার সৈনিক হিসেবে মূল্যায়ন করা হয়। তিইমুরিদ হিসেবে এক্ষত্রে তার খুব সমর্থন ছিল। শহর ও গ্রামের লোকজন তাকে ও তার বাহিনীকে সাহায্য করতে গিয়ে সর্বস্ব উজাড় করে দিত। বাবর পার্সিয়ার সহযোগিতা ফিরিয়ে দেন তাদের প্রয়োজন মনে না করার আত্মবিশ্বাসে। ১৫১১ সালের অক্টোবর মাসে প্রায় ১০ বছর পরে বাবর সমরকন্দে আবার প্রবেশ করতে সমর্থ হন। বাজার স্বর্ণবেষ্টিত হয়ে গিয়েছিল এবং আবারো জনগণ তাদের মুক্তিদাতাকে সাদরে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল। বাবর শিয়া পোশাক পরে সুন্নীদের সামনে দাঁড়ান এবং পরিস্থিতি সামাল দেন। তার কাজিন হায়দার লিখেছেন, বাবর একটু ভীত ছিলেন পার্সিয়ার সাহায্য প্রত্যাখ্যান করে। পার্সিয়ার শাহকে খুশী রাখার জন্য বাবর সুন্নী সম্প্রদায়কে কোন লাঞ্ছনা করেননি এবং শাহ্‌ এর সহযোগিতার আনুষ্ঠানিক হাতটিও সরিয়ে দেননি। এর ফলে ৮ মাস পরে তিনি উজবেক পুনরায় জয় করতে সমর্থ হন।

বংশধারা সম্পাদনা

সুজাউদ্দীন তৈমুর লঙ

মিরান শাহ

সুলতান মুহাম্মদ বেগ

আবু সাঈদ মির্জা

উমর শেখ মির্জা

বাবর
 

ভারত অভিযান সম্পাদনা

উত্তর ভারত জয় সম্পাদনা

নিজের অতীতের কথা লিখতে গিয়ে বাবর বলেছেন, সমরকন্দ পূনরুদ্ধার ছিল আল্লাহ্‌র দেয়া সর্বশ্রেষ্ঠ উপহার। এরপর বাবরের লক্ষ্য হয়ে দাঁড়ায় ফরগানা দখল করা। এদিকে পশ্চিম দিক থেকে উজবেকদের আক্রমণের ভয়ও ছিল। ফলে তাকে ভারত ও এর পূর্ব দিকে মনোনিবেশ করতে হয়, বিশেষ করে আইয়ুদিয়ার রাজ্য এবং পেনিনসুলার মালায়া। বাবর নিজেকে সৈয়দ বংশের সত্যিকারের শাসনকর্তা হিসেবে দাবি করেন। একইভাবে নিজেকে তিমুরের মুকুটের দাবিদার হিসেবে উল্লেখ করেন তিনি। তিমুর প্রকৃতপক্ষে খিজর খানের ছিল, তিনি এটিকে মিত্ররাজ্য পাঞ্জার হাতে দিয়ে চলে গিয়েছিলেন। পরে তিনি দিল্লী সালতানাতের সুলতান হয়েছেন। সৈয়দ বংশ পরে আফগানের শাসনকর্তা ইবরাহিম লোদির কাছে বেদখল হয়ে যায়। বাবর এটিকে পুণরুদ্ধার করতে চান। তিনি পাঞ্জাব আক্রমণ করার আগে ইবরাহিম লোদিকে একটি অনুরোধ করেন, “আমি তাকে একটি গোসাওক পাঠিয়েছি এবং তার কাছে সে সব দেশের অধিকার চেয়েছি যেগুলো প্রাচীনকাল থেকেই তুর্কিদের উপর নির্ভরশীল।“

ইবরাহিম বাবরের প্রস্তাব গ্রহণ করেন নি এবং খুব তাড়াতাড়ি তাকে আক্রমণের পরিকল্পনাও করেননি। তাই বাবর এর মধ্যে কিছু পূর্ব প্রস্তুতি সেরে নেন আক্রমণের জন্য এবং কান্দাহার বন্ধ করে দেন। তিনি কাবুলের পশ্চিম দিক থেকে আক্রমণ চালানোর একটি রণকৌশল ঠিক করেন ভারত দখলের জন্য। কান্দাহার বন্ধ করে দেবার ফলে আক্রমণ ধারণাকৃত সময়ের অনেক পরে সংঘটিত হয়। প্রায় তিন বছর পর কান্দাহার ও এর পৌরদুর্গ বেদখল হয়েছিল এবং এছাড়াও অন্যান্য ছোটোখাটো যুদ্ধ সংঘটিত হয়। এই খণ্ডযুদ্ধগুলো বাবরকে সফল হবার সুযোগ করে দেয়।

পাঞ্জাবে প্রবেশের সময় বাবরের রাজদূত লঙ্গর খান নিয়াজী বাবরকে পরামর্শ দেন জানজুয়ার রাজপুত্রকে এই অভিযানে সম্পৃক্ত করার জন্য, তাদের এই দিল্লী জয়ের অভিযান বেশ পরিচিত লাভ করে। বাবর তার প্রধান ব্যক্তি মালিক আসাদ এবং রাজা সংঘর খান এর কাছে তার রাজ্যে ঐতিহ্যগত শাসনের সুফল এবং তার পূর্বপুরুষের সহযোগিতার কথা তাদের কাছে উল্লেখ করেন। বাবর শত্রুদের পরাজিত করে তাদের নিজের দলে ভিড়ান। ১৫২১ সালে গাখারসে তার মিত্রদের একত্রিত করেন। বাবর তাদের প্রত্যেককে সেনাপ্রধান হসান রানা সঙ্গকে পরাজিত করেন, এটিও তার ভারত দখলের অন্তর্ভুক্ত।

১৫০৮ সাল থেকে ১৫১৯ সালের সময়টুকু বাবরের স্মৃতিকথায় ছিল না। এই সময় ইসমাঈল আই একটা দুঃসময় কাটান, তার বিশাল অশ্বারোহী বাহিনী নিশ্চিহ্ন হয় অটোম্যান রাজার বিরুদ্ধে চালদিরান যুদ্ধে। সেখানে ম্যাচলক মাস্কেট নামক এক ধরনের নতুন অস্ত্র ব্যবহার করা হয়। বাবর এবং ইসমাঈল দু’জনেই প্রযুক্তির উন্নয়ন উপলব্ধি করেন এবং বাবর তার বাহিনীকে ম্যাচলক যন্ত্রের প্রশিক্ষণ দিতে একজন অটোম্যান উস্তাদ আলীকে তার বাহিনীতে আমন্ত্রণ জানান। ওউস্তাদ আলী তখন ম্যাচলক মানব নামে পরিচিত ছিলেন। বাবর মনে রেখেছিলেন যে, তার বিরোধীরা তার বাহিনীকে এই ধরনের কোন অস্ত্র আগে দেখেনি বলে বিদ্রুপ করত। এ যন্ত্রগুলো থেকে বিকট শব্দ হত এবং কোন তীর বা বর্ষা নিক্ষিপ্ত হত না।

এই অস্ত্রগুলো স্বল্পসংখ্যক সৈন্যের হাতে দেয়া হয় শত্রুদের উপর কর্তৃত্ব করার জনয। ভারতের পথে অগ্রসর হবার সময় ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জাতিগুলোর সাথে খণ্ড যুদ্ধের সময় এটি ব্যবহার করা হয় শুধুমাত্র শত্রুদের অবস্থান এবং কোশল পরীক্ষা করার জন্য। কান্দাহার ও কাবুলের দুটি শক্ত প্রতিরোধ থেকে রক্ষা পাওয়া বাবর কোন অঞ্চল জয়ের পর স্থানীয়দের খুশি করার চেষ্টা করতেন। এজন্য স্থানীয় সংস্কৃতি পালনের পাশাপাশি বিধবা ও এতিমদের সাহায্য করা হত।

ইব্রাহিম লোদির সাথে যুদ্ধ সম্পাদনা

ইব্রাহিম লোদি অনেকের অপ্রিয় ছিলেন, এমনকি তার নিজস্ব নোবেলদের কাছেও। বাবর ১২০০০ সৈন্য যোগাড় করেন এবং লোদির আফগান নোবেলদেরকে তার শামিল হবার আমন্ত্রণ জানান। এই সৈন্যসংখ্যা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছিল কেননা তারা অগ্রসর হবার সময় স্থানীয় অনেকেই তাদের সাথে যোগ দিচ্ছিল। দুই পক্ষের মধ্যে প্রথম বড় সংঘর্ষ হয় ১৫২৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে। বাবরের পুত্র হুমায়ূন ১৭ বছর বয়সে তিমুরিদ বাহিনীকে নেতৃত্ব দেন ইবরাহিমের উন্নত বাহিনীর বিপরীতে। হুমায়ূনের বিজয় অর্জন ছিল অন্যন্য খণ্ডযুদ্ধের চেয়ে বেশ কঠিন। তবে তারপরও এটি একটি চূড়ান্ত বিজয় ছিল। যুদ্ধের পর আটটি হাতি সহ প্রায় শতাধিক যুদ্ধবন্দীকে আটক করা হয়। তারপর অন্যান্য যুদ্ধের বন্দীদের মত এই বন্দীদের পরে আর মুক্ত করা হয়নি। হুমায়ূনের আদেশ অনুসারে তাদের হত্যা করা হয়। বাবরের স্মৃতিকথায় আছে, “উস্তাদ আলীকুলি খান এবং ম্যাচলকধারীদের সকল বন্দীকে গুলি করার আদেশ দেয়া হয়েছিল। হুমায়ূনের প্রথম যুদ্ধের অভিজ্ঞতা ছিল এটি যা একটি চমৎকার পূর্বাভাস।“ এটিই ছিল খুব সম্ভবত ফায়ারিং স্কোয়াডের প্রথম উদাহরণ।

ইব্রাহিম লোদি প্রায় এক লক্ষ সৈন্য এবং ১০০টি হাতি সহ বাবরের দিকে অগ্রসর হন। তখন বাবরের সৈন্যসংখ্যা লোদির অর্ধেকেরও কম ছিল, যা সর্বসাকুল্যে প্রায় ২৫০০০ এর মত। ১৫২৬ সালের ২১ এপ্রিলে সংঘটিত এই যুদ্ধটি পানিপথের প্রথম যুদ্ধ নামে খ্যাত এবং বাবর ও লোদির মধ্যে প্রধান সংঘাত। যুদ্ধে ইবরাহিম লোদি নিহত হন এবং তার বাহিনীকে পরাজিত করে তাড়িয়ে দেয়া হয়। বাবর দ্রুত দিল্লী এবং আগ্রা উভয়ের দখল নেন। ঐদিনই বাবর হুয়ায়ূনকে আগ্রা যাবার আদেশ দেন জাতীয় ধনসম্পদ লুটপাটের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য। হুমায়ূন সেখানে রাজা গোয়ালিয়রের পরিবারকে পান। রাজা যুদ্ধে নিহত হয়েছিলেন এবং তার পরিবারের সদস্যরা নিরাপত্তা নিশ্চয়তা লাভের আশায় হুমায়ূনকে একটি বড় হীরা দেন। এই হীরাটিকে বলা হত “কোহিনূর” বা আলোর পর্বত।“ ধারণা করা হয়, এটি তারা তাদের রাজ্য পূণরুদ্ধারের জন্য করে। এই পরিবারটিই গোয়ালিয়রের শাসনকর্তা ছিল, তবে তার পিছনে উপহারটির গুরুত্বের কথা জানা যায় না।

বাবর বিজয়ের তৃতীয় দিন দিল্লী পৌছেন। তিনি তার উপস্থিতি উদযাপিত করেন যমুনা নদীর তীরে এবং সেখানে শুক্রবার পর্যন্ত উৎসব স্থায়ী করা হয়। পরে মুসলমানেরা শোকরানা নামায আদায় করেন এবং এবং জামা মসজিদে তার নামে তিনি খুতবা শোনেন। পরে তিনি আগ্রার দিকে অগ্রসর হন ছেলের সাথে সাক্ষাতের জন্য। বাবরকে সেই পাথরটি দিয়ে গ্রহণ করে নেয়া হয়। বাবর বলেছিলেন, আমি তাকে এটি ফিরিয়ে দিলাম এবং একজন বিশেষজ্ঞ অলঙ্কারবিদ বললেন যে, এর মূল্য দিয়ে পৃথিবীর সকল লোককে আড়াই দিন খাওয়ানো যাবে। পরবর্তী দুইশ বছর এটি বাবর হীরা নামে পরিচিত ছিল।

রাজপুতদের সাথে যুদ্ধ সম্পাদনা

দিল্লী ও আগ্রা দখলের পরও বাবর মেওয়ারের রাজপুত রাজ রানা সাংগার দুশ্চিন্তায় নির্ঘুম রাত কাটাতে লাগলেন। বাবরের অভিযানের আগে রাজপুতের জমিদারেরা সালতানাতের কিছু জাতি জয় করতে সমর্থ হয়েছিল। তারা বাবরের নতুন রাজ্যের দক্ষিণ পশ্চিমের একটি অঞ্চল সরাসরি শাসন করত যা রাজপতনা নামে পরিচিত ছিল। এটি কোন একতাবদ্ধ রাজ্য ছিল না, বরং এটি ছিল রানা সিংগার অধীন কিছু রাজ্যের সংগঠন। বাবরের লেখনীতে, রানা সাংগা একটি বাহিনী গঠন করে।... দশজন ক্ষমতাবান প্রধান, প্রত্যেকে পাগান হোস্টের নেতা, তারা বিদ্রোহী হয়ে ওঠে। তবে তারা আলাদা থেকে যায় একজন উচ্ছৃঙ্খল নেতার জন্য।

মৃত্যু ও কারণ সম্পাদনা

বাবর ১৫৩০ সালের ২৬ ডিসেম্বর আগ্রায় মৃত্যুবরণ করেন। কথিত আছে যে, পুত্রের আরোগ্যের জন্য বাবর নিজেকে উৎসর্গ করেন। পুত্র হুমায়ুন দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হলে পিতা বাবর তার নিজের জীবনের বিনিময়ে স্রষ্টার নিকট পুত্রের আরোগ্য কামনা করেন। ক্রমান্বয়ে হুমায়ুন আরোগ্য লাভ করতে থাকেন এবং বাবর পীড়িত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন।[২৪] ইতিহাসবিদদের মতে, ইব্রাহিম লোদীর মা বাবরকে হত্যার জন্য বিষ প্রয়োগ করেছিলেন। সেই বিষের ক্রিয়া তার শরীরকে ধীরে ধীরে অসুস্থ করে দেয়। এছাড়া শারীরিকভাবে প্রবল শক্তিশালী বাবর ভারতের আবহাওয়ার সাথেও মানিয়ে নিতে পারছিলেন না। হুমায়ুননামায় গুলবদন বেগম বলেছেন, বাবর অনেক আগে থেকেই পেটের পীড়ায় ভুগতেন। এছাড়া তাকে মানসিক ও শারীরিক অসুস্থতায়ও অনেক যুদ্ধে লড়তে হয়েছে।[২৫]

চিত্রশালা সম্পাদনা


তথসূত্র সম্পাদনা

  1. EB (1878).
  2. Christoph Baumer, The History of Central Asia: The Age of Islam and the Mongols, Bloomsbury Publishing, 2018, p. 47
  3. Foundation, Encyclopaedia Iranica। "Ẓahīr-al-Dīn Moḥammad Bābor"iranicaonline.org (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৩-২২ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  4. Robert L. Canfield, Robert L. (1991). Turko-Persia in historical perspective, Cambridge University Press, p. 20.
  5. "Britannica Academic"academic.eb.com। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১২-১৪ 
  6. Lehmann, F.। "Memoirs of Zehīr-ed-Dīn Muhammed Bābur"Encyclopaedia Iranica। ২০০৮-১২-০৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-০৪-০২ 
  7. Robert L. Canfield, Robert L. (1991). Turko-Persia in historical perspective, Cambridge University Press, p.20.
  8. "Babar the Conqueror." Encyclopedia of World Biography. Vol. 1. 2nd ed. Detroit: Gale, 2004. 405-407. 23 vols. Gale Virtual Reference Library. Gale.
  9. "Babar"Manas। University of California Los Angeles। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-০৪-০২ 
  10. "Mirza Muhammad Haidar"Silk Road Seattle। Walter Chapin Center for the Humanities at the University of Washington। সংগ্রহের তারিখ ২০০৬-১১-০৭On the occasion of the birth of Babar Padishah (the son of Omar Shaikh) 
  11. Babur at Encyclopædia Britannica
  12. "Timurids"The Columbia Encyclopedia (6th Ed. সংস্করণ)। New York: Columbia University। ২০০৬-১২-০৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৬-১১-০৮ 
  13. For more information about the medieval Turko-Persian society of Central Asia and Iran, see Turko-Persian Tradition and Persianate society.
  14. Iran: The Timurids and Turkmen at Encyclopædia Britannica.
  15. Dale, Stephen Frederic (২০০৪)। The garden of the eight paradises: Bābur and the culture of Empire in Central Asia, Afghanistan and India (1483-1530)। Brill। পৃষ্ঠা pp.15,150। আইএসবিএন 9004137076 
  16. Babur, Emperor of Hindustan (২০০২)। The Baburnama: Memoirs of Babur, Prince and Emperor। translated, edited and annotated by W.M. Thackston। Modern Library। আইএসবিএন 0-375-76137-3 
  17. Manz, Beatrice Forbes (১৯৯৪)। "The Symbiosis of Turk and Tajik"। Central Asia in Historical Perspective। Boulder, Colorado & Oxford। পৃষ্ঠা 58। আইএসবিএন ০-৮১৩৩-৩৬৩৮-৪ 
  18. Elliot, Henry Miers (১৮৬৭–১৮৭৭)। "The Muhammadan Period"The History of India, as Told by Its Own Historians। John Dowson (ed.)। London: Trubner। ২০০৮-০৬-২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-০৪-০২ 
  19. "The Memoirs of Babur, Volume 1, chpt. 71"Memoirs of Zehīr-ed-Dīn Muhammed Bābur Emperor of Hindustan, Written by himself, in the Chaghatāi Tūrki। Translated by John Leyden and William Erskine, Annotated and Revised by Lucas King। Oxford University Press। ১৯২১। ৫ ডিসেম্বর ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৫ জুলাই ২০০৮ 
  20. Mir 'Ali Shir Nawāi (১৯৬৬)। Muhakamat Al-Lughatain (Judgment of Two Languages)। Robert Devereux (ed.)। Leiden: E.J. Brill। ওসিএলসি 3615905টেমপ্লেট:LCC 
  21. Spuler, Bertold। "Central Asia"Encyclopaedia Iranica। ২০০৮-১২-০৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-০৪-০২ 
  22. B.F. Manz, W.M. Thackston, D.J. Roxburgh, L. Golombek, L. Komaroff, R.E. Darley-Doran (২০০৭)। "Timurids"। Encyclopaedia of Islam (Online Edition সংস্করণ)। Brill Publishers 
  23. Tarikh-i-Rashidi: A History of the Moghuls of Central Asia। Elias and Denison Ross (ed. and trans.)। 1898, reprinted 1972। আইএসবিএন 0700700218  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য) গুগল বইয়ে Full text.
  24. বিস্মৃত মুঘল শাসনের উজ্জ্বল অতীত, বাংলা নিউজ টুয়েন্টি ফোর ডটকম, ২৩ নভেম্বর ২০১৭
  25. বিস্মৃত মুঘল শাসনের উজ্জ্বল অতীত, বাংলা নিউজ টুয়েন্টি ফোর ডটকম, ২৩ নভেম্বর ২০১৭
পূর্বসূরী:
নাই
মুঘল সম্রাট
১৫২৬১৫৩০
উত্তরসূরী:
সম্রাট হুমায়ুন

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা