ইসলামে সমকামিতা

লিঙ্গ, যৌনতা এবং ধর্মের প্রতিচ্ছেদ
(সমকামিতা ও ইসলাম থেকে পুনর্নির্দেশিত)

পুরুষ সমকামী, নারী সমকামী, উভকামী ও রুপান্তরিত লিঙ্গ (এলজিবিটি) ও তাদের অভিজ্ঞতার প্রতি মুসলিম বিশ্বের আচরণ ধর্মীয়, আইনগত, সামাজিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক ইতিহাস দ্বারা প্রভাবিত হয়েছে। কুরআনে লূতের সম্প্রদায়ের ঘটনা বর্ণনা করা হয়েছে, যারা পুরুষদের মধ্যে পারস্পারিক যৌনকর্ম সংঘটনের কারণে আল্লাহর ক্রোধের মাধ্যমে ধ্বংস হয়েছিল।[১][২][৩][৪] হাদিসেও সমকামী ও রুপান্তরকামী আচরণকে অপরাধ সাব্যস্ত করা হয়েছে[১][৫][৬][৭] এবং পুরুষ সমকামীদের জন্য মৃত্যুদণ্ড[৮] ও রুপান্তরিত লিঙ্গের ব্যক্তিদের নির্বাসনের আদেশ দেওয়া হয়েছে।[৭] সমকামী আচরণ প্রচলিত ইসলামী নিয়মশাস্ত্রে নিষিদ্ধ এবং পরিস্থিতি ও ফিকহী মাজহাব অনুসারে মৃতুদণ্ডসহ বিভিন্নভাবে শাস্তিযোগ্য। তবে উত্তর-আধুনিক ইসলামী সমাজে সমকামী সম্পর্ক সহনীয় ছিল,[৯][১০] এবং ঐতিহাসিক তথ্যসূত্র হতে বোঝা যায় যে, এই আইনগুলোর প্রয়োগ ছিল অপ্রতুল, প্রধানত ধর্ষণ ও সামাজিক নৈতিকতার অন্যান্য বিশেষ ব্যতিক্রমের ক্ষেত্রে।[৮] ইসলামী যুগের প্রথম দেড় শতাব্দী যাবৎ ইসলামী সমাজে সমকামী চর্চার কথা তেমন একটা পাওয়া যায় না।[৮]

অষ্টম শতাব্দী হতে আধুনিক যুগ অবধি বিভিন্ন ভাষায় রচিত ইসলামী কবিতা ও অন্যান্য ইসলামী সাহিত্যধারায় সমকামোদ্দীপক ভাবধারা গড়ে ওঠে।[১০][১১] প্রাচীন ইসলামী রচনায় প্রাপ্ত সমকামিতার ধারণা গ্রিক-রোমান পৌরানিক ঐতিহ্যের সঙ্গে মিলে যায়, যা যৌন অভিমুখিতার আধুনিক পাশ্চাত্য ধারণা হতে আলাদা।[৮][১২] উসমানীয় সাম্রাজ্যে ও মুসলিম বিশ্বের অন্যত্র সমকামিতার প্রতি সামাজিক আচরণ ১৯ শতকের পর থেকে সমসামযিক ইউরোপে প্রচলিত যৌনতার ধারণা ও সামাজিকতার প্রভাব এবং ওয়াহাবিবাদের ন্যায় বিভিন্ন ইসলামী মৌলবাদী মতবাদের বিস্তারের কারণে নেতিবাচক পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে গমন করে, এবং সমকামিতাকে অস্বাভাবিক ও লজ্জাজনক বলে মনে করা হতে থাকে।[১৩][১৪] বহু ইসলামী দেশ ঔপনিবেশিক শাসনাধীন থাকাকালে সমকামিতার জন্য অপরাধমূলক শাস্তির প্রবর্তন করে।[১৫][১৬]

সাম্প্রতিক সময়ে, ইসলামী বিশ্বের অধিকাংশ স্থানে সমকামীদের বিরুদ্ধে চরম বিদ্বেষ বিরাজ করছে সামাজিক ও আইনগতভাবে, যা ক্রমবর্ধমান রক্ষণশীল আচরণ এবং ইসলামপন্থী আন্দোলনসমূহের উত্থানের কারণে ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। [১৬] আফগানিস্তান, ব্রুনাই, ইরান, মৌরিতানিয়া, নাইজেরিয়া, সৌদি আরব, সোমালিয়ার কিছু অংশ,[note ১] সুদান, সংযুক্ত আরব আমিরাতইয়েমেনে, সমকামী কর্মকাণ্ডের ফলে মৃত্যুদণ্ড] বা কারাদণ্ড ভোগ করতে হয়। [১৭][১৮][১৯][২০][২১][২২] অন্যান্য দেশ, যেমন, আলজেরিয়া, বাংলাদেশ, চাঁদ,[২৩] মালয়েশিয়া, মালদ্বীপ, পাকিস্তান, কাতার, সোমালিয়াসিরিয়াতে এটি অবৈধ, এবং এর জন্য শাস্তি দেওয়া হতে পারে।[২৪][২৫][২৬][২৭][২৮][২৯] সমলিঙ্গীয় যৌনসঙ্গম আলবেনিয়া, আজারবাইজান, বাহরাইন, বসনিয়া ও হার্জেগোভিনা, বুর্কিনা ফাসো, জিবুতি, গিনি-বিসাউ, ইরাক, জর্ডান, কাজাখস্তান, কসোভো, কিরগিজস্তান, মালি, নাইজার, তাজিকিস্তান, তুরস্ক, ইন্দোনেশিয়ার সিংহভাগ,[note ২] এবং উত্তর সাইপ্রাসে বৈধ।[৩০][৩১][৩২][৩৩] কুয়েত, তুর্কমেনিস্তানউজবেকিস্তানে নারীদের মধ্যে সমকামী সম্পর্ক বৈধ কিন্তু পুরুষদের মধ্যে সমকামী সম্পর্ক অবৈধ।[৩০][৩৪][৩৫][৩৬]

অধিকাংশ মুসলিম-সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ ও ইসলামী সহযোগিতা সংস্থা (ওআইসি) জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে অথবা উএনএইচআরসির সভায় এলজিবিটি অধিকার বাস্তবায়নের বিরোধিতা করে। ২০১৬ এর মে মাসে, ৫১টি মুসলিম দেশের একটি দল ১১টি সমকামী ও রুপান্তরকামী সংস্থার ২০১৬ সালের এইডস প্রতিরোধের উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে অংশগ্রহণ নিষিদ্ধ করে।[৩৭][৩৮][৩৯][৪০] তবে, আলবেনিয়া, গিনি-বিসাউসিয়েরা লিয়ন এলজিবিটি অধিকারের সমর্থনে জাতিসংঘের একটি ঘোষণায় স্বাক্ষর করে।[৪১][৪২] আলবেনিয়া, কসোভো ও উত্তর সাইপ্রাসে এলজিবিটি বৈষম্যবিরোধী আইন প্রনয়ন করা হয়েছে।[৪৩] এছাড়াও বেশ কিছু মুসলিম সংগঠন রয়েছে যে গুলো এলজিবিটি মুসলিমদের যৌন অভিমুখিতা পুনর্গঠনে অথবা তাদের জন্য এলজিবিটি অধিকার সমর্থনে কাজ করে।

ধর্মীয় পাণ্ডুলিপি ও ফিকহ সম্পাদনা

কুরআনে সম্পাদনা

লূতের বার্তাবাহকগণ সম্পাদনা

কুরআনে সমকামী কর্মকাণ্ডের ইঙ্গিতে বহু আয়াত রয়েছে, যা বহু শতাব্দী ব্যাপী উল্লেখযোগ্য ব্যাখ্যাগত ও আইনি ভাষ্যের অবতারণা করেছে। [১] বিষয়টি কুরআনের সাতটি পৃথক আয়াতে সডোম ও গোমরাহর কাহিনীর মাধ্যমে সবচেয়ে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে, যেখানে শহরের অধিবাসীরা নবী লূতের কাছে ঈশ্বর কর্তৃক প্রেরিত বার্তাবাবাহকদের নিকট যৌন প্রবেশাধিকার দাবি করেছিল।[১] কুরআনের একটি অংশে বলা হয়েছে যে পুরুষরা "তার (লুতের) অতিথিদেরকে পাওয়ার জন্য অনুরোধ করেছিল" (কোরআন ৫৪::৩৭),[৪৪] যেখানে ইউসুফকে প্রলুব্ধ করার চেষ্টার বর্ণনায় ব্যবহৃত কুরআনের শব্দগুচ্ছের অনুরূপ অভিব্যক্তিকে ব্যবহার করা হয়ছে, এবং একাধিক অনুচ্ছেদে তাদের বিরুদ্ধে মহিলা (বা তাদের স্ত্রীদের) পরিবর্তে পুরুষদের কাছে "অভিলাষ নিয়ে আসার" অভিযোগ করা হয়েছে।[১] কুরআন এটিকে বিশ্বের ইতিহাসে একটি নজিরবিহীন ঘৃণ্য কর্ম বা ফাহিশা বলে অভিহিত করেছে:

"এবং আমি লূতকে প্রেরণ করেছি। যখন সে স্বীয় সম্প্রদায়কে বললঃ তোমরা কি এমন অশ্লীল কাজ করছ, যা তোমাদের পূর্বে সারা বিশ্বের কেউ করেনি ? তোমরা তো কামবশতঃ পুরুষদের কাছে গমন কর নারীদেরকে ছেড়ে। বরং তোমরা সীমা অতিক্রম করেছ। তাঁর সম্প্রদায় এ ছাড়া কোন উত্তর দিল না যে, বের করে দাও এদেরকে শহর থেকে। এরা খুব সাধু থাকতে চায়। অতঃপর আমি তাকে ও তাঁর পরিবার পরিজনকে বাঁচিয়ে দিলাম, কিন্তু তার স্ত্রী। সে তাদের মধ্যেই রয়ে গেল, যারা রয়ে গিয়েছিল। আমি তাদের উপর প্রস্তর বৃষ্টি বর্ষণ করলাম। অতএব, দেখ গোনাহগারদের পরিণতি কেমন হয়েছে।"[৭:৮০–৮৪ (অনুবাদ করেছেন মুহিউদ্দীন খান)]

পরবর্তীতে, এই আয়াতগুলির উপর ভিত্তি করে তাফসির সাহিত্য রচনা করা হয়েছে এবং লেখকরা সেখানে কী ঘটেছিল সে সম্পর্কে তাদের নিজস্ব মতামত দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন; এবং তাফসিরলেখকদের মধ্যে সাধারণ ঐক্যমত্য ছিল যে, কুরআনীয় অনুচ্ছেদে যে "ঘৃণিত কর্ম" দ্বারা যা বোঝানো হয়েছে তা ছিল পুরুষদের মধ্যে লিওয়াত বা পায়ূপথে সহবাস করার চেষ্টা।[৪৫][৪৬]:১৯৪–১৯৫

পরবর্তীতে লূতের সম্প্রদায়েরর পাপ কথাটি একটি প্রবাদবাক্য হয়ে ওঠে এবং পুরুষদের মধ্যে পায়ুসঙ্গম বোঝানো আরবি শব্দগুলি যেমন লিওয়াত (আরবি: لواط, প্রতিবর্ণীকৃত: লিওয়াত) এবং এমন ব্যক্তি যারা এই জাতীয় আচরণ করে তাদের নাম (আরবি: لوطي, প্রতিবর্ণীকৃত: লুতি) এই ঘটনা থেকে উদ্ভূত হয়, যদিও লুত নিজে কখনোই উক্ত যৌনকর্মের দাবিদারদের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত ছিলেন না।[৪৭]

জিনার আয়াত সম্পাদনা

কুরআনে কেবলমাত্র একটি অনুচ্ছেদে কঠোরভাবে এ ব্যাপারে আইনগত অবস্থান নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে, এটি মূলত সমকামী আচরণের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয় বরং সামগ্রিকভাবে জিনা (অবৈধ যৌন মিলন) এর প্রতি নির্দেশ করে :[৪৮]

"আর তোমাদের নারীদের মধ্যে যারা ব্যভিচারিণী তাদের বিরুদ্ধে তোমাদের মধ্য থেকে চার জন পুরুষকে সাক্ষী হিসেবে তলব কর। অতঃপর যদি তারা সাক্ষ্য প্রদান করে তবে সংশ্লিষ্টদেরকে গৃহে আবদ্ধ রাখ, যে পর্যন্ত মৃত্যু তাদেরকে তুলে না নেয় অথবা আল্লাহ তাদের জন্য অন্য কোন পথ নির্দেশ না করেন। তোমাদের মধ্য থেকে যে দু’জন সেই কুকর্মে লিপ্ত হয়, তাদেরকে শাস্তি প্রদান কর। অতঃপর যদি উভয়ে তওবা করে এবং নিজেদের সংশোধন করে, তবে তাদের থেকে হাত গুটিয়ে নাও। নিশ্চয় আল্লাহ তওবা কবুলকারী, দয়ালু।"[৪:১৫–১৬ (অনুবাদ করেছেন মুহিউদ্দীন খান)]

বেশিরভাগ তাফসিরে বলা হয়েছে যে, এই আয়াতগুলো দ্বারা অবৈধ বিষমকামী সম্পর্ককে বোঝানো হয়, যদিও মুতাজিলা পণ্ডিত আবু মুসলিম আল-ইসফাহানী হতে প্রাপ্ত একটি সংখ্যালঘু অভিমতে এগুলোকে সমকামী সম্পর্কের উল্লেখ হিসাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। এই দৃষ্টিভঙ্গিটি মধ্যযুগীয় পণ্ডিতদের দ্বারা ব্যাপকভাবে প্রত্যাখ্যাত হয়েছিল, তবে আধুনিক সময়ে এই ব্যাখ্যাটি কিছুটা গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে।[১]

জান্নাতে পেয়ালাবহনকারী সম্পাদনা

কুরআনের কিছু আয়াতে জান্নাতের বর্ণনা বর্ণনায় "অমর বালক" (৫৬:১৭, ৭৬:১৯) বা "যুবক"দের (৫২:২৪) বর্ণনা করে যারা আশীর্বাদপূষ্ট জান্নাতীদের সুরা পরিবেশন করবে। যদিও তাফসীরে সমকামী অনুভূতি হিসাবে এর ব্যাখ্যা করা হয় না, সম্পর্কটি অন্যান্য সাহিত্যিক ধারাতে তৈরি হয়েছিল, যার বেশিরভাগই হাস্যরসাত্মকভাবে।[১] প্রকৃতপক্ষে সেসব বালকেরা সমকামিতার জন্য নয়। কেননা কুরআনে সমকামিতাকে সবচে ঘৃণ্য কাজ বলা হয়েছে। এরা শুধু পানীয় বা খাদ্য পরিবেশনের সেবক হবে।

হাদীসশাস্ত্রে সম্পাদনা

হাদীস (নবী মুহাম্মাদের বাণী এবং কর্ম) হতে পাওয়া যায় যে, সমকামী আচরণ সপ্তম শতাব্দীর আরবে একেবারে অপ্রতূল ছিল না।[৫] তবে কুরআনে সমকামিতার শাস্তির কথা নির্দেশ না করলেও ইসলামী আইনবিদগণ যথাযথ শাস্তির নিয়ম খুজে পাওয়ার প্রয়াসে "অধিক সুস্পষ্ট" বেশ কিছু হাদীসের দিকে [১][৬] ক্রমবর্ধমানভাবে ফিরে গিয়েছেন।[৫][৬]

আবু মুসা আল আশআরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত, নবী (সাঃ) বলেছেন: "যদি কোন মহিলার উপর কোন মহিলার উপবিষ্ট হয়, তবে তারা উভয়ই ব্যভিচারীনী, যদি কোনও পুরুষ কোন পুরুষের উপরে উপবিষ্ট হয় তবে তারা উভয়ই ব্যভিচারী।"

— আল-তাবারানী (আল-মু‘আযাম আল-আওয়াত): ৪১৫৭, আল-বায়হাকী, সু‘আব আল-ইমান: ৫০৭৫

যদিও [[মুহাম্মদ আল বুখারী] বুখারী]] এবং মুসলিম এর সর্বাধিক পরিচিত হাদীস সংগ্রহগুলিতে সমকামিতার সাথে সম্পর্কিত কোনও বর্ণনা নেই, তবে অন্যান্য হাদিসশাস্ত্রের সংগ্রহগুলোতে " লুতের সম্প্রদায়ের কর্মকাণ্ডের" (পুরুষে পুরুষে মলদ্বারে সহবাস) দণ্ডাদেশের বহু বর্ণনা রয়েছে।[৮] উদাহরণস্বরূপ, আবু-ইসা মুহাম্মদ ইবনে ইস-আত-তিরমিযী (৮৮৪ খ্রিস্টাব্দের কাছাকাছি সময়ে [[[সুনান আল-তিরমিযী]]তে সংকলিত) লিখেছেন যে, মুহাম্মদ সমলিংগীয় সংগমকারীদের উভয় সঙ্গীর জন্য মৃত্যুদণ্ডাদেশের বিধান দিয়েছেন।:

আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস বর্ণনা করেন: মুহাম্মদ বলেছেন: তোমরা যদি লূতের সম্প্রদায়ের কর্মে লিপ্ত কাওকে খুঁজে পাও,[৪৯] হত্যা কর তাকে যে এটি করে, এবং তাকে যার উপর এটি করা হয়।

আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস বর্ণনা করেন, মুহাম্মদ বলেছেন: কোন অবিবাহিত পুরুষ যদি লিওয়াত/সডোমিতে (পায়ুমৈথুনে/পুংমৈথুনে) লিপ্ত অবস্থায় ধরা পড়ে, তাকে পাথর নিক্ষেপ করে হত্যা করা হবে।

ইবনে আল-জাওজি (১১১৪-১২০০) ১২-শতাব্দীতে লিখিত তাঁর বইয়ে বলেছেন যে নবী মুহাম্মদ (স.) বেশ কয়েকটি হাদীসে "লুতি"দেরকে অভিশাপ দিয়েছেন এবং সমকামী আচরণে উভয় সক্রিয় ব্যক্তির জন্য মৃত্যুদণ্ডের সুপারিশ করেছেন।[৫০]

হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত হয়েছে যে: "নবী (সাঃ) বলেছেন:" ...লূতের সম্প্রদায়ের কাজ যে করে সে অভিশপ্ত। "

— Musnad Ahmad:1878

আহমদ ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, আল্লাহর নবী (সাঃ) বলেছেন: "যে ব্যক্তি লূতের সম্প্রদায়কে আমল করে, আল্লাহ তাকে অভিসম্পাত করুন, যিনি লূতের সম্প্রদায়ের ক্রিয়া করেন, আল্লাহ তাকে অভিশাপ দিন" তিনি তিনবার অভিশাপ দিয়েছিলেন।

— মুসনাদে আহ্মাদ: ২৯১৫

আল-নুয়ায়রি (১২৭২–১৩৩২) তার নিহায়া গ্রন্থে উদ্ধৃত করেন যে মুহাম্মাদ বলেছেন তিনি তার সম্প্রদায়ের জন্য লুতের জণগণের কর্মের ব্যাপারে সবচেয়ে বেশি ভয় করেন (মদ ও নারীর ছলনার ব্যাপারে তিনি সমতুল্য ধারণা পোষণ করেছেন বলে মনে করা হয়।)।[৫]

আবদুল্লাহ ইবনু মুহাম্মাদ ইবনু আকীল হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, জাবিরকে আমি বলতে শুনেছি, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ আমি যে কুকর্মটি আমার উম্মাতের মাঝে ছড়িয়ে পড়ার সর্বাধিক ভয় করি তা হল লুত সম্প্রদায়ের কুকর্ম।


রুপান্তরিত লিঙ্গ সম্পাদনা

ইসলামে, মুখান্নাস শব্দটি লিঙ্গ-বৈচিত্র্যপূর্ণ ব্যক্তিদের, সাধারণত পুরুষ থেকে মহিলায় রূপান্তরিত লিঙ্গের ব্যক্তিদের বোঝাতে ব্যবহৃত হয়। পণ্ডিত ও হাদিস সংগ্রাহক আন-নববীর মতানুযায়ী:

একজন মুখান্নাস হল সেই ব্যক্তি ("পুরুষ") যে তার চলনে বলনে এবং বেশভূষায় নারীর বৈশিষ্ট্য বহন করে। এঁরা দুই ধরনের; প্রথমটি হল যাদের মধ্যে এই স্বভাব অন্তর্নিহিত, সে নিজে নিজেই এগুলো নিজের মাঝে ধারণ করে নি, এতে কোন দোষ, কোন দোষারোপ বা কোন লজ্জা নেই, যতক্ষণ না সে কোন অনৈতিক কাজ করে বা টাকা উপার্জনের নিমিত্তে এই বৈশিষ্ট্যের সুবিধা নেয় (পতিতাবৃত্তি ইত্যাদি)। দ্বিতীয় ধরনের লোকটি অনৈতিক কারণে মহিলাদের মত আচরণ করে এবং সে পাপী ও দোষারোপের যোগ্য।[৫১]

হাদিস ও সুন্নতে, প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ উভয়পন্থায় মুখান্নাস বিষয়ক তথ্যসূত্র রয়েছে।

একটি হাদিস হল সুনান আবু দাউদ ৪১, ৪৯১০:

হাতে পায়ে মেহেদি রাঙানো একজন মুখান্নাসকে নবীর কাছে নিয়ে আসা হল। তিনি জিজ্ঞেস করলেন: এই লোকের কি হয়েছে? তাঁকে বলা হল: আল্লাহর রাসূল! সে নারীদের চলন বলনের অনুকরণ করে। তাই তিনি তার ব্যাপারে আদেশ জারি করলেন এবং তাকে আন-নাক্বি' নামক স্থানে নির্বাসন দেওয়া হল। লোকে বলল: আল্লাহর রাসূল! আমাদের কি তাকে হত্যা করা উচিত নয়? তিনি বললেন: যারা নামাজ পড়ে তাদেরকে হত্যা করতে আমাকে নিষেধ করা হয়েছে। আবু উসামা বলেন: নাক্বি মদিনার নিকটবর্তী একটি এলাকা এবং তা বাক্বি নামক স্থান নয়।[৫২]

আরেকটি তথ্যসূত্র রয়েছে সুনান আবু দাউদে ৩২, ৪০৯৫, যেখানে নবীর স্ত্রী আয়িশা বলেন:

এক মুখান্নাস নবীর স্ত্রীদের ঘরে যাতায়াত করত। তারা (লোকজন) তাকে শারীরিক চাহিদামুক্ত লোকদের একজন হিসেবে গণ্য করত। এক দিন নবী সে লোকটি তার এক স্ত্রীর ঘরে থাকা অবস্থায় সেই ঘরে গেলেন, সে সময় লোকটি মহিলাদের গুণের বর্ণনা দিচ্ছিল, এই বলে: যখন সে সামনে আসে, সে চারটি (পেটের ভাঁজ) নিয়ে সামনে আসে, আর যখন সে চলে যায়, সে আটটি (পেটের ভাঁজ) নিয়ে চলে যায়। নবী বললেন: আমি কি দেখতে পাচ্ছি না যে সে এখানে যা আছে তা সম্পর্কে জানে। তথন থেকে তাঁরা (স্ত্রীগণ) লোকটির কাছ থেকে পর্দা করতো।[৫৩]

আরও দেখুন সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

টীকা সম্পাদনা

  1. দক্ষিণাঞ্চলের কিছু অংশে
  2. আচেহদক্ষিণ সুমাত্রা প্রদেশ ব্যতীত, যেখানে এলজিবিটি অধিকারের বিরুদ্ধে আইন পাশ হয়েছে।

উদ্ধৃতি সম্পাদনা

  1. Everett K. Rowson (২০০৬)। "Homosexuality"। Jane Dammen McAuliffe। Encyclopaedia of the Qurʾān2। Brill। পৃষ্ঠা 444–445। 
  2. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; QL1 নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  3. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; dr নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  4. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; MC নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  5. Bearman, P.; Bianquis, Th.; Bosworth, C.E.; van Donzel, E.; Heinrichs, W.P., সম্পাদকগণ (১৯৮৩)। "Liwāṭ"। Encyclopaedia of Islam (2nd সংস্করণ)। Brill। ডিওআই:10.1163/1573-3912_islam_SIM_4677 
  6. Mohd Izwan bin Md Yusof; Muhd. Najib bin Abdul Kadir; Mazlan bin Ibrahim; Khader bin Ahmad; Murshidi bin Mohd Noor; Saiful Azhar bin Saadon। "Hadith Sahih on Behaviour of LGBT" (পিডিএফ)islam.gov.my (English ভাষায়)। Government of Malaysia। সংগ্রহের তারিখ ২৬ জুলাই ২০১৯ 
  7. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; effeminates নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  8. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; iranica-law নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  9. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; EI2 নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  10. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; ia601301.us.archive.org নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  11. Khaled El-Rouayheb। Before Homosexuality in the Arab-Islamic World 1500–1800। পৃষ্ঠা 12 ff। 
  12. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; ali-105 নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  13. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; lapidus নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  14. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; beckers নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  15. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; ahmadi নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  16. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; economist নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  17. "Lesbian and Gay Rights in the World" (পিডিএফ)ILGA। মে ২০০৯। ১১ আগস্ট ২০১১ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। 
  18. "UK party leaders back global gay rights campaign"BBC Online। ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১১। সংগ্রহের তারিখ ৭ নভেম্বর ২০১৩At present, homosexuality is illegal in 76 countries, including 38 within the Commonwealth. At least five countries - the Yemen, Saudi Arabia, Iran, Mauritania and Sudan - have used the death penalty against gay people. 
  19. "United Arab Emirates"। সংগ্রহের তারিখ ২৭ অক্টোবর ২০১৫Facts as drug trafficking, homosexual behaviour, and apostasy are liable to capital punishment. 
  20. "Man Accused of "Gay Handshake" Stands Trial in Dubai"। ৩০ অক্টোবর ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৭ অক্টোবর ২০১৫ 
  21. Ottosson, Daniel। "State-Sponsored Homophobia: A World Survey of Laws Prohibiting Same-Sex Activity Between Consenting Adults" (পিডিএফ)। ২০১০-১১-২২ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। 
  22. Bearak, Max; Cameron, Darla (১৬ জুন ২০১৬)। "Analysis - Here are the 10 countries where homosexuality may be punished by death" – www.washingtonpost.com-এর মাধ্যমে। 
  23. The official text of Article 354 in French (Code Pénal Tchad, page 20):

    Est puni d'un emprisonnement de trois mois à deux ans et d'une amende e 50.000 à 500.000 francs, quiconque a des rapports sexuels avec les personnes de son sexe.

  24. "Maldives Penal Code, s411"University of Pennsylvania। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৩-০৭ 
  25. Anderson, Ben (২০০৭)। "The Politics of Homosexuality in Africa" (পিডিএফ)Africana1 (1)। ২৪ জুলাই ২০১১ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। 
  26. Ottosson, Daniel (২০১৩)। "State-sponsored Homophobia: A world survey of laws prohibiting same sex activity between consenting adults" (পিডিএফ)। International Lesbian and Gay Association (ILGA)। পৃষ্ঠা Page 7। ২৭ জুন ২০১৩ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ 
  27. Ready, Freda. The Cornell Daily Sun article [১] Retrieved on December 4, 2002
  28. "Syria: Treatment and human rights situation of homosexuals" (পিডিএফ)। সংগ্রহের তারিখ ২০ জানুয়ারি ২০১১ 
  29. "Pakistan Penal Code (Act XLV of 1860)"। Pakistani। সংগ্রহের তারিখ ২০১৪-০২-১২ 
  30. "In response to anti-LGBT fatwa, Jokowi urged to abolish laws targeting minorities"The Jakarta Post। ১৮ মার্চ ২০১৫। সংগ্রহের তারিখ ৭ এপ্রিল ২০১৫ 
  31. "Indonesia: Situation of sexual minorities, including legislation, treatment by society and authorities, state protection and support services available (2013- June 2015)"Immigration and Refugee Board of Canada। ৮ জুলাই ২০১৫। সংগ্রহের তারিখ ১৮ মে ২০১৬ 
  32. Utah, The University of। "Global Justice Project: Iraq » Archive » Homosexuality and the Criminal Law in Iraq: UPDATED"। সংগ্রহের তারিখ ৪ আগস্ট ২০১৭ 
  33. Ottosson, Daniel (মে ২০০৯)। "State-sponsored Homophobia: A world survey of laws prohibiting same sex activity between consenting adults" (পিডিএফ)। International Lesbian, Gay, Bisexual, Trans and Intersex Association (ILGA)। পৃষ্ঠা Page 23। ২০০৯-১০-২৯ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৫-১৯ 
  34. Lucas Paoli Itaborahy; Jingshu Zhu (মে ২০১৪)। "State-sponsored Homophobia - A world survey of laws: Criminalisation, protection and recognition of same-sex love" (পিডিএফ)। International Lesbian, Gay, Bisexual, Trans and Intersex Association। ২৯ জুন ২০১৫ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ 
  35. "Kuwait Law"ILGA Asia। ২০০৯। ১৯ জুলাই ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। 
  36. "Law of the Republic of Uzbekistan On Enactment of the Criminal Code of the Republic of Uzbekistan"। Legislationline.org। ১৮ জানুয়ারি ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ মার্চ ২০১৬ 
  37. Nichols, Michelle; Von Ahn, Lisa (১৭ মে ২০১৬)। "Muslim states block gay groups from U.N. AIDS meeting; U.S. protests"Reuters। সংগ্রহের তারিখ ১৮ মে ২০১৬ 
  38. Evans, Robert (৮ মার্চ ২০১২)। "Islamic states, Africans walk out on UN gay panel"Reuters। ২২ অক্টোবর ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৮ জুলাই ২০১২ 
  39. Solash, Richard (৭ মার্চ ২০১২)। "Historic UN Session On Gay Rights Marked By Arab Walkout"Radio Free Europe/Radio Liberty। Agence France-Presse। সংগ্রহের তারিখ ১৮ জুলাই ২০১২ 
  40. "South Africa leads United Nations on gay rights"MG.co.za। সংগ্রহের তারিখ ৫ এপ্রিল ২০১৭ 
  41. "Documento"। সংগ্রহের তারিখ এপ্রিল ২৫, ২০১৪ 
  42. "Over 80 Nations Support Statement at Human Rights Council on LGBT Rights » US Mission Geneva"। Geneva.usmission.gov। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-০৪-২২ 
  43. "2016 Plan of Actions for LGBTI rights." (পিডিএফ)। ৪ এপ্রিল ২০২২ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৭ জুলাই ২০১৯ 
  44. "Quran 54:37"Islam Awakened। ১৮ মার্চ ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৮ মার্চ ২০২০ 
  45. Kuggle, Scott; Hunt, Stephen (২০১২)। "Masculinity, Homosexuality and the Defence of Islam: A Case Study of Yusuf al-Qaradawi's Media Fatwa"। Religion and Gender2 (2): 271–272। 
  46. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; kugle নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  47. Wayne Dynes, Encyclopaedia of Homosexuality, New York, 1990.
  48. Wafer, Jim (১৯৯৭)। "Muhammad and Male Homosexuality"। Stephen O. Murray and Will Roscoe। Islamic Homosexualities: Culture, History and Literature। New York University Press। পৃষ্ঠা 88। আইএসবিএন 9780814774687। সংগ্রহের তারিখ ২৪ জুলাই ২০১০ 
  49. কুরআনহাদিস-এ লুতের সম্প্রদায়কে সমকামী ও পায়ুমৈথুনকারী হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে।
  50. Wafer, Jim (১৯৯৭)। "Muhammad and Male Homosexuality"। Stephen O. Murray and Will Roscoe। Islamic Homosexualities: Culture, History and Literature। New York University Press। পৃষ্ঠা 89। আইএসবিএন 9780814774687। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-০৭-২৪ 
  51. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; TEOEM নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  52. "General Behavior (Kitab al-Adab)"www.usc.edu। Center for Muslim-Jewish Engagement। ৪ মে ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২১ মার্চ ২০১৮ 
  53. "Partial Translation of Sunan Abu-Dawud, Book 32: Clothing (Kitab al-Libas)"www.usc.edu। Center for Muslim-Jewish Engagement। ১২ মে ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২১ মার্চ ২০১৮ 

উৎস্য সম্পাদনা

আরও পড়ুন সম্পাদনা

টেমপ্লেট:Religion and LGBT people