সত্যব্রত সামশ্রমী

সত্যব্রত সামশ্রমী ( ২৮ মে, ১৮৪৬ - ১ জুন, ১৯১১) একজন বাঙালি ভাষাবিদ, সংস্কৃত পণ্ডিত ও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে বেদ বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ছিলেন।

প্রারম্ভিক জীবন সম্পাদনা

১৮৪৬ সাল তাঁর জন্ম হয়। তাঁর আসল নাম কালিদাস চট্টোপাধ্যায়। পিতা রামদাস চট্টোপাধ্যায় ছিলেন পটনার বিচারক। পাঁচ বছর বয়সে কাশীর সরস্বতী মঠে সংস্কৃত শিক্ষার জন্য তাকে পাঠানো হয়। দুই দশক সেখানে সংস্কৃত সাহিত্য, চতুর্বেদ, স্মৃতি, বেদান্ত, উপনিষদ, ইত্যাদি অধ্যয়নের পরে পায়ে হেঁটে সমস্ত ভারত ভ্রমণ করেন। রাজস্থানের বুন্দি রাজ্যে যাওয়ার পর তাঁর মেধা ও বেদ সংক্রান্ত পান্ডিত্যে চমৎকৃত হয়ে বুন্দিরাজ তাঁকে ‘সামশ্রমী’ উপাধি দেন।[১]

কর্মকাণ্ড সম্পাদনা

কলকাতায় আসার পরে তিনি একটি টোল চালু করেন যেখানে ছাত্রদের বিনা পয়সায় থাকাখাওয়া ও সংস্কৃত পঠন পাঠন চলত। এসময় নিজ উদ্যোগে তিনি দুটি পত্রিকা প্রকাশ ও সম্পাদনা করতেন। সংস্কৃত ভাষায় লেখা প্রত্নকম্রনন্দিনী আর বাংলা ও সংস্কৃত ভাষায় লেখা পত্রিকা ঊষা।[২] এইসময় তার যোগাযোগ হয় জার্মান পণ্ডিত ফ্রেডরিখ ম্যাক্সমুলারের সঙ্গে। কলকাতা ফিলোলজিকাল সোসাইটির সদস্য সামশ্রমী জানতেন ফারসি, ইংরেজি ভাষাও। বেদ সংহিতা, ব্রাহ্মণ, আরণ্যক ও উপনিষদ, শ্রৌত, গৃহ ও ধৰ্ম্মসূত্র ইত্যাদির ওপর নিবন্ধ লিখেছেন রমেশচন্দ্র দত্তের সাথে।[৩] ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের সঙ্গে নিয়মিত পত্র যোগাযোগ ছিল তাঁর। বিধবা বিবাহের স্বপক্ষে থাকলেও, তিনি বহুবিবাহের সমর্থক ছিলেন। কলিকাতা ছাড়াও ভারতের নয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের বেদের পরীক্ষক ছিলেন তিনি। ১৯১০ সালে ভাষাচার্য ডঃ মুহম্মদ শহীদুল্লাহকে অহিন্দু হওয়ার কারণে বেদপাঠে অনুমতি দিতে চাননি সামশ্রমী। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই বিতর্কিত ঘটনাটি কলিকাতা উচ্চ আদালতের নির্দেশে মীমাংসিত হয়।[৪][৫]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. সান্যাল, রামকৃষ্ণ ভট্টাচার্য। "বেদ থেকে দেখিয়েছিলেন, সমুদ্রযাত্রায় জাত যায় না"anandabazar.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৪-০৫ 
  2. শতরূপা চক্রবর্তী। "সামবেদ ও ভারতীয় মার্গসঙ্গীত" (পিডিএফ)। সংগ্রহের তারিখ ৫ এপ্রিল ২০২০ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  3. "পাতা:সাহিত্য-সাধক-চরিতমালা পঞ্চম খণ্ড.pdf/৫৪০ - উইকিসংকলন একটি মুক্ত পাঠাগার"bn.wikisource.org। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৪-০৫ 
  4. ঘোষ, শুভজ্যোতি (২০১৯-১১-২০)। "সংস্কৃত পড়াতে মুসলিম শিক্ষক নিয়োগের পর বিক্ষোভ"BBC News বাংলা। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৪-০৫ 
  5. "ভাঙতে হলে জানতে হয় - Anandabazar"anandabazar.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৪-০৫