শ্রীশচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়

শ্রীশচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় (জন্ম: ১১ সেপ্টেম্বর, ১৮৭৩ - মৃত্যু: ?, ১৯৬৬) ছিলেন তদানীন্তন পাকিস্তান গণ-পরিষদের সদস্য। একাধারে তিনি ছিলেন শিক্ষক, আইনজীবী, ভারতবিভাগ প্রস্তাবের ঘোরবিরোধী। ঢাকার চুরাইন (সম্ভবতঃ জুরাইন) এলাকায় জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম ছিল নবীনচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়। ১৯৬২ সালে পাকিস্তান ত্যাগ করে ভারতবর্ষে চলে যান। তিনি জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের ভাবধারায় প্রভাবান্বিত ছিলেন।

শ্রীশচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
জন্ম১১ সেপ্টেম্বর, ১৮৭৩
মৃত্যু?, ১৯৬৬
আন্দোলনভারত ছাড়ো আন্দোলন, জাতীয়তাবাদী আন্দোলন

হিন্দু জাতিভেদ প্রথা ও ছুঁৎমার্গের ঘোর বিরোধী ছিলেন। বিভিন্ন সময়ে বন্যা, দুর্ভিক্ষ এবং মহামারীতে সেবাকাজে জড়িয়েছেন নিজেকে। প্রাথমিক শিক্ষাবিস্তার তথা গান্ধীজীর পরিকল্পিত বুনিয়াদী শিক্ষা-প্রসারে ব্যাপক উৎসাহী ব্যক্তিত্ব ছিলেন তিনি।

প্রারম্ভিক জীবন সম্পাদনা

১৮৯৩ সালে নারায়ণগঞ্জ স্কুল থেকে এন্ট্রান্স পাস করে ঢাকা জগন্নাথ কলেজে ভর্তি হন। সেখান থেকে ১৮৯৫ সালে এফ.এ., ১৮৯৭ সালে ঢাকা কলেজ থেকে বি.এ. ও ১৯০৪ সালে বি.এল. পাশ করেন। কলেজ জীবনে বিপ্লবী অনুশীলন দলের ব্যায়াম সমিতিতে যোগ দিয়েছিলেন। অতঃপর ১৮৯৭ সাল থেকে ১৯০৫ সাল পর্যন্ত সময়কালে নারায়ণগঞ্জ স্কুলে শিক্ষকতা করেছেন। সেখানে তিনি ইতিহাসগণিত বিষয় পড়াতেন। তারপর থেকে জাতীয়তাবাদী আন্দোলনে সক্রিয় হন।

ঢাকা ষড়যন্ত্র, বরিশাল ষড়যন্ত্রগৌহাটি গুলিবর্ষণ মামলায় উকিলরূপে আসামীপক্ষ সমর্থন করেন। অসহযোগ আন্দোলনে যোগ দিয়ে আইন ব্যবসায় ছেড়ে দেন। দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাসকে স্বরাজ্য দল গঠনে প্রভূতঃ সাহায্য করেন।

রাজনৈতিক জীবন সম্পাদনা

১৯২৬ সালে একটি বক্তৃতার জন্য তিনি কারাদণ্ডে দণ্ডিত হন। ১৯২৮ সালে কলকাতা কংগ্রেসে গান্ধীজীর ডোমিনিয়ন স্ট্যাটাস দাবি প্রস্তাবের প্রবল বিরোধিতা করেন। ১৯৩২ সালে পুনরায় ডুর্নো গুলিবর্ষণ মামলায় তাকে আবারো কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়। ১৯৩৫ সালে ঢাকা জেলা কংগ্রেসের সভাপতি হিসেবে মনোনীত হন। ১৯৪২ সালে ভারত-ছাড় আন্দোলনে যোগ দেন তিনি। ভারতবিভাগ প্রস্তাবের ঘোরতর বিরোধিতা করেছেন। ভারত বিভাজনের পর তিনি পাকিস্তানে থেকে যান। ১৯৪৮ থেকে ১৯৫৫ সাল পর্যন্ত পাকিস্তান গণ-পরিষদের সদস্য ছিলেন।[১] পাকিস্তানের প্রতিনিধিরূপে বিভিন্ন বৈদেশিক সম্মেলনে যোগ দেন।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান, সম্পাদকঃ অঞ্জলি বসু, ৪র্থ সংস্করণ, ১ম খণ্ড, ২০০২, সাহিত্য সংসদ, কলকাতা, পৃ. ৫৪০