শোভা

ভারতীয় অভিনেত্রী

মহালক্ষ্মী মেনন (২৩ সেপ্টেম্বর ১৯৬২ - ১ মে ১৯৮০), যিনি তার পর্দানাম শোভা নামে পরিচিত, ছিলেন একজন ভারতীয় অভিনেত্রী। তিনি মালয়ালম ও তামিল চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য সর্বাধিক পরিচিত। ১৭ বছর বয়সে তিনি তামিল চলচ্চিত্র পাসি (১৯৭৯)-এ অভিনয় করে শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন। তিনি তিনবার কেরালা রাজ্য চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন: ১৯৭১ সালে শ্রেষ্ঠ শিশুশিল্পী বিভাগে, ১৯৭৭ সালে শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেত্রী বিভাগে এবং ১৯৭৮ সালে শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী বিভাগে। এছাড়া তিনি দুটি ফিল্মফেয়ার পুরস্কার দক্ষিণ লাভ করেন: শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী কন্নড় (১৯৭৭) ও শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী তামিল (১৯৭৯)। ভারতের চলচ্চিত্র শিল্পে অন্যতম প্রতিভাসম্পন্ন অভিনেত্রী হিসেবে বিবেচিত শোভার কর্মজীবনের ইতি ঘটে ১৯৮০ সালে তার অপ্রত্যাশিত আত্মহত্যার মধ্য দিয়ে।[১]

শোভা
জন্ম
মহালক্ষ্মী মেনন

(১৯৬২-০৯-২৩)২৩ সেপ্টেম্বর ১৯৬২
মৃত্যু১ মে ১৯৮০(1980-05-01) (বয়স ১৭)
মৃত্যুর কারণআত্মহত্যা
অন্যান্য নামবেবি মহালক্ষ্মী, বেবি শোভা, শোভা মহেন্দ্র,[১] ঊর্বশী শোভা
পেশাঅভিনেত্রী
কর্মজীবন১৯৬৫-১৯৮০
দাম্পত্য সঙ্গীবালু মহেন্দ্র (বি. ১৯৭৮)
পিতা-মাতাকে. পি. মেনন (পিতা)
প্রেমা মেনন (মাতা)

প্রারম্ভিক জীবন সম্পাদনা

শোভা ১৯৬২ সালের ২৩শে সেপ্টেম্বর মাদ্রাজে এক মালায়লি পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা পি. কে. মেনন এবং মাতা প্রেমা। প্রেমা ১৯৫০-এর দশকে মালয়ালম চলচ্চিত্রে অভিনয় করতেন।

কর্মজীবন সম্পাদনা

শোভা তামিল চলচ্চিত্রে শিশুশিল্পী হিসেবে তার অভিনয় জীবন শুরু করেন। জে. পি. চন্দ্রবাবু পরিচালিত ঠাট্টুঙ্গাল ঠিরাক্কাপ্পাডুম (১৯৬৬) চলচ্চিত্রে শিশুশিল্পী হিসেবে তার অভিষেক হয়। এই ছবিতে তার পর্দানাম ছিল বেবি মহালক্ষ্মী, এতে তিনি আর. এস. মনোহর, কে. আর. বিজয়, ও চন্দ্রবাবুর সাথে অভিনয় করেন।[২] পরের বছর পি. ভেনুর উদ্যোগাস্থ চলচ্চিত্রে দিয়ে তার মালয়ালম চলচ্চিত্রে অভিষেক ঘট, এতে তিনি বেবি শোভা নামে অভিনয় করেন। মালয়ালম চলচ্চিত্রের প্রথম একাধিক তারকা সমৃদ্ধ চলচ্চিত্র হিসেবে খ্যাত[৩] এই ছবিতে সে সময়ের মালয়ালম চলচ্চিত্রের শীর্ষ পাঁচ অভিনয়শিল্পী সত্যন, প্রেম নাজির, কে. পি. উমার, শারদা, ও শীলা অভিনয় করেন।[৪] চলচ্চিত্রটি হিট হয় এবং শোভা শিশুশিল্পী হিসেবে দক্ষিণ ভারতীয় চলচ্চিত্রে খ্যাতি অর্জন করেন। ১৯৭১ সালে তিনি যোগম্মুল্লাভালআভাল আল্পম ভাইকিপ্পোয়ি চলচ্চিত্রে অভিনয় করে শ্রেষ্ঠ শিশুশিল্পী বিভাগে কেরালা রাজ্য চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন।

১৯৭৭ সালে তিনি ওর্মাকাল মারিক্কুমো চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য শ্রেষ্ঠ দ্বিতীয় অভিনেত্রী বিভাগে কেরালা রাজ্য চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন। পরের বছর শোভা বলচন্দ্র মেননের উত্রড়া রাত্রি চলচ্চিত্রে নায়িকা চরিত্রে আত্মপ্রকাশ করেন। একই বছর তিনি বন্ধনমএন্তে নীলাকাশম চলচ্চিত্রে অভিনয় করে কেরালা রাজ্য চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন। এছাড়া তিনি কন্নড় ভাষার অপরিচিতা (১৯৭৮) চলচ্চিত্রে অভিনয় করে শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী বিভাগে ফিল্মফেয়ার পুরস্কার দক্ষিণ অর্জন করেন। শোভা তামিল চলচ্চিত্র পাসি (১৯৭৯)-এ অভিনয় করে শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন ও শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী (তামিল) বিভাগে ফিল্মফেয়ার পুরস্কার দক্ষিণ লাভ করেন।

মৃত্যু সম্পাদনা

শোভা ১৯৭৮ সালে পরিচালক বালু মহেন্দ্রের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। শোভা ১৯৮০ সালের ১লা মে ১৭ বছর বয়সে আত্মহত্যা করেন।[৫][৬][৭] ১৯৮৩ সালে মালয়ালম চলচ্চিত্র লেখায়ুদে মরনম ওরু ফ্ল্যাশব্যাক চলচ্চিত্রে তার জীবন ও বালু মহেন্দ্রের সাথে তার সম্পর্ক চিত্রায়িত হয়েছে।[৮]

পুরস্কার সম্পাদনা

জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার
কেরালা রাজ্য চলচ্চিত্র পুরস্কার
  • ১৯৭১: শ্রেষ্ঠ শিশুশিল্পী - যোগম্মুল্লাভালআভাল আল্পম ভাইকিপ্পোয়ি
  • ১৯৭৭: শ্রেষ্ঠ দ্বিতীয় অভিনেত্রী - ওর্মাকাল মারিক্কুমো
  • ১৯৭৮: শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী - এন্তে নীলাকাশম
ফিল্মফেয়ার পুরস্কার দক্ষিণ
  • ১৯৭৮: শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী (কন্নড়) - অপরিচিতা
  • ১৯৭৯: শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী (তামিল) - পাসি

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "Top Indian actress found hanged"দ্য মন্ট্রিয়ল গেজেট (ইংরেজি ভাষায়)। ২ মে ১৯৮০। সংগ্রহের তারিখ ১৭ মে ২০১৯ – গুগল নিউজ-এর মাধ্যমে। 
  2. "A voice that mesmerised"দ্য হিন্দু (ইংরেজি ভাষায়)। ২ অক্টোবর ২০০৯। সংগ্রহের তারিখ ১৭ মে ২০১৯ 
  3. "P Venu dies of heart attack in Chennai"ফিল্মিবিট (ইংরেজি ভাষায়)। ২৬ মে ২০১১। সংগ্রহের তারিখ ১৭ মে ২০১৯ 
  4. "Film director P. Venu dead" (ইংরেজি ভাষায়)। দ্য হিন্দু। ২৬ মে ২০১১। ৮ আগস্ট ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৭ মে ২০১৯ 
  5. এস. আর. অশোক কুমার (৩ মে ২০০২)। "It's a heavy price to pay" (ইংরেজি ভাষায়)। দ্য হিন্দু। ৪ জুলাই ২০০৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৮ মে ২০১৯ 
  6. "A story on suicides and actresses" (ইংরেজি ভাষায়)। বিহাইন্ড উডস। ৪ জানুয়ারি ২০০৭। সংগ্রহের তারিখ ১৮ মে ২০১৯ 
  7. "Why South Indian heroines are embracing death" (ইংরেজি ভাষায়)। মিড ডে। ২০ এপ্রিল ২০০২। সংগ্রহের তারিখ ১৮ মে ২০১৯ 
  8. জয়, প্রতিভা (১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৪)। "Veteran director Balu Mahendra no more - Times of India"দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়া (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ১৮ মে ২০১৯ 

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা