শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়াম
শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়াম ঢাকার মিরপুরে অবস্থিত। স্টেডিয়ামটি মিরপুরের ৬ নং সেক্টরে অবস্থিত। এটি বর্তমানে শুধুমাত্র ক্রিকেট মাঠ হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। ২৬,০০০ দর্শক ধারণক্ষমতার এই স্টেডিয়ামটি স্থাপিত হয় ২০০৬ সালে। শুরুতে এটি মিরপুর স্টেডিয়াম হিসেবে পরিচিত ছিল। পরবর্তীতে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার স্টেডিয়ামটির নাম পরিবর্তন করে বর্তমান নাম শের-ই-বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়াম রাখে। ২০০৬ সালে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের নিজস্ব মাঠ বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম থেকে শের-ই-বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামকে করা হয়। এটি বাংলাদেশের অধিকাংশ প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট, টেস্ট, এক-দিনের, টুয়েন্টি২০ এবং বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা ক্রিকেট দলের নিজস্ব মাঠ।
মিরপুর স্টেডিয়াম | |
![]() | |
স্টেডিয়ামের তথ্যাবলি | |
---|---|
অবস্থান | মিরপুর, ঢাকা |
দেশ | বাংলাদেশ |
প্রতিষ্ঠা | ২০০৬ |
ধারণক্ষমতা | ২৬,০০০ |
স্বত্ত্বাধিকারী | বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড |
পরিচালক | বিসিবি |
ভাড়াটে | বাংলাদেশ ক্রিকেট দল, ঢাকা প্লাটুন |
প্রান্তসমূহ | |
বিউটিফুল বাংলাদেশ এন্ড ইস্টার্ন হাউজিং এন্ড | |
আন্তর্জাতিক খেলার তথ্য | |
প্রথম পুরুষ টেস্ট | ২৫–২৭ মে ২০০৭: বাংলাদেশ ![]() ![]() |
সর্বশেষ পুরুষ টেস্ট | ২২–২৫ অক্টোবর ২০২০: বাংলাদেশ ![]() ![]() |
প্রথম পুরুষ ওডিআই | ৮ ডিসেম্বর ২০০৬: বাংলাদেশ ![]() ![]() |
সর্বশেষ পুরুষ ওডিআই | ০৪ ডিসেম্বর ২০২২: বাংলাদেশ ![]() ![]() |
প্রথম পুরুষ টি২০আই | ১১ অক্টোবর ২০১১: বাংলাদেশ ![]() ![]() |
সর্বশেষ পুরুষ টি২০আই | ১১ মার্চ ২০২০: বাংলাদেশ ![]() ![]() |
২৭ জানুয়ারি ২০১৪ অনুযায়ী উৎস: ক্রিকইনফো; টাইগার ক্রিকেট |
২০১১ সালের বিশ্বকাপ ক্রিকেটের অন্যতম ভেন্যু হিসেবে এটি ব্যবহৃত হয়।
সুবিধাসমূহসম্পাদনা
এই মাঠটি বিশ্বমানের সুবিধাসমূহের সমন্বয়ে তৈরি একটি আধুনিক স্টেডিয়াম। এই স্টেডিয়ামটি উপমহাদেশের সেরা মাঠগুলোর একটি। এই মাঠের মূল বৈশিষ্ট্য হল এর আধুনিক পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা। মুলতঃ ফুটবল এবং এথলেটিকসের জন্য তৈরি করায় এই মাঠটি আয়তক্ষেত্রাকার। ক্রিকেট খেলার উপযুক্ত হিসেবে গড়ে তোলার জন্য অনেক পুণঃনির্মাণ কাজ করতে হয়েছে। এমনকি তিনফুট মাটি খুঁড়ে লাল এথলেটিকস ট্র্যাক তুলে ফেলা হয়েছিল। কংকর, মাটি আর ঘাস বিছানোর পূর্বেই পিভিসি পাইপ বসিয়ে নেওয়া হয়েছিল। উইকেট থেকে বাউন্ডারি পর্যন্ত ঢাল চমৎকার এবং সমান হয় ২৯ ইঞ্চির সমান ব্যবধানের দ্বারা। ২০০৯ সালে ফ্লাডলাইট লাগানোর পর থেকে শের-ই-বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দিবা-রাত্রি ক্রিকেট ম্যাচ-ও আয়োজন করা সম্ভব হয়।
প্রথম টেস্ট এবং এক-দিনের ম্যাচসম্পাদনা
২৫শে মে ২০০৭, এই মাঠে প্রথম টেস্ট ম্যাচ খেলা হয়। যা ছিল বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সাথে ভারত জাতীয় ক্রিকেট দলের। এই মাঠে প্রথম এক-দিনের ম্যাচ খেলা হয় ১৮-ই ডিসেম্বর ২০০৫ বাংলাদেশ বনাম স্কটল্যান্ডের ম্যাচ দিয়ে।
ক্রিকেট বিশ্বকাপ ২০১১সম্পাদনা
১৯শে ফেব্রুয়ারি থেকে ২রা এপ্রিল পর্যন্ত বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা এবং ভারত - এই তিন দেশে যৌথভাবে আয়োজিত ২০১১ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপে এই স্টেডিয়ামে গ্রুপ পর্বের ম্যাচ ৪টি এবং কোয়ার্টার ফাইনালের ২টি ম্যাচ খেলা হয়। জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়াম ছিল এই বিশ্বকাপে বাংলাদেশের দ্বিতীয় ভেন্যু। বিশ্বকাপ প্রতিযোগিতাকে মাথায় রেখে এই স্টেডিয়ামে অনেক নতুনত্বের কাজ করা হয়। এর মধ্যে ছিল একটি দানবীয় স্ক্রিন এবং একটি ইলেকট্রনিক স্কোরবোর্ড স্থাপনা, পুরাতন সাধারণ দৃশ্যপর্দাকে ইলেকট্রনিক পর্দা দ্বারা পরিবর্তন, উন্নত ফ্লাডলাইট লাগানো, ১৬,০০০ ইউএস ডলার খরচের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র থেকে একটি হোভার-কভার ক্রয়, গ্যালারীতে প্লাস্টিক সিট বসানো, ২০০ জন গণমাধ্যম কর্মীর ধারণক্ষমতার একটি নতুন মিডিয়া কেন্দ্র তৈরি এবং নতুন ড্রেসিং রুম তৈরি। মূল মাঠের সাথে সংলগ্ন করে একটি নতুন ক্রিকেট একাডেমী শুরু করা হয়।
গ্রুপ পর্বের খেলাসম্পাদনা
ব
|
||
- বাংলাদেশ টসে জিতে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেয়।
ব
|
||
- বাংলাদেশ টসে জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয়।
ব
|
||
- বাংলাদেশ টসে জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয়।
ব
|
||
- দক্ষিণ আফ্রিকা টসে জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয়।
কোয়ার্টার ফাইনালসম্পাদনা
ব
|
||
- নিউজিল্যান্ড টসে জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয়।
২০১২ এশিয়া কাপসম্পাদনা
বাংলাদেশ ২০১২ এশিয়া কাপ আয়োজন করে। যার একমাত্র ভেন্যু ছিল শের-ই-বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়াম, মিরপুর, ঢাকা। ১৯৮৮ এবং ২০০০ সালে বাংলাদেশ এই কাপ আয়োজন করে। ১১ থেকে ২২ মার্চ পর্যন্ত এই টুর্নামেন্ট চলে। ফাইনাল পাকিস্তান ফাইনালে বাংলাদেশ দলকে ২ রানে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়। এশিয়া কাপ মূলত এশিয়ার চারটি টেস্টখেলুড়ে দেশের প্রতিনিধিত্ব করে। সেই চারটি দেশ হল: বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান এবং শ্রীলঙ্কা।
বাংলাদেশ এই টুর্নামেন্ট আয়জনের পাশাপাশি অসাধারণ পারফরম্যান্সের মাধ্যমে প্রথমবারের মত ভারত এবং শ্রীলঙ্কাকে গ্রুপ পর্বে হারিয়ে ফাইনালে খেলার যোগ্যতা অর্জন করে। কিন্তু ফাইনালে অল্পের জন্য হেরে যায়।
গ্রুপ পর্যায়ের খেলাগুলোসম্পাদনা
সকল খেলাই স্থানীয় সময় (ইউটিসি+০৬:০০)
খেলা নং | তারিখ | পক্ষ | বিপক্ষ | ফলাফল |
১ | ১১ মার্চ, ২০১২ইং,১৪:০০, দিবা-রাত্রি আম্পায়ার: ইয়ান গোল্ড (ইংল্যান্ড) এবং পল রিফেল (অস্ট্রেলিয়া) টস: বাংলাদেশ (ফিল্ড) |
পাকিস্তান ২৬২/৮ মোহাম্মদ হাফিজ ৮৯ শাহাদাত হোসেন ৩/৫৩ |
বাংলাদেশ ২৪১ (৪৮.১ ওভার) সাকিব আল-হাসান ৬৪ উমর গুল ৩/৫৮ |
পাকিস্তান ২১ রানে জয়ী[১] ম্যান অব দ্য ম্যাচ: মোহাম্মদ হাফিজ |
২ | ১৩ মার্চ, ২০১২ইং,১৪:০০, দিবা-রাত্রি আম্পায়ার: স্টিভ ডেভিস (অস্ট্রেলিয়া) এবং ইয়ান গোল্ড (ইংল্যান্ড) টস: শ্রীলঙ্কা (ফিল্ড) |
ভারত ৩০৪/৩ বিরাট কোহলি ১০৮ পারভেজ মাহারুফ ২/৫৭ |
শ্রীলঙ্কা ২৫৪ (৪৫.১ ওভার) মাহেলা জয়াবর্ধনে ৭৮ ইরফান পাঠান ৪/৩২ |
ভারত ৫০ রানে জয়ী[২] ম্যান অব দ্য ম্যাচ: বিরাট কোহলি |
৩ | ১৫ মার্চ, ২০১২ইং,১৪:০০, দিবা-রাত্রি আম্পায়ার: স্টিভ ডেভিস (অস্ট্রেলিয়া) এবং পল রিফেল (অস্ট্রেলিয়া) টস: শ্রীলঙ্কা (ব্যাট) |
শ্রীলঙ্কা ১৮৮ (৪৫.৪ ওভার) কুমার সাঙ্গাকারা ৭১ আইজাজ চীমা ৪/৪৩ |
পাকিস্তান ১৮৯/৪ (৩৯.৫ ওভার) উমর আকমল ৭৭ সুরঙ্গা লকমল ২/৩৭ |
পাকিস্তান ৬ উইকেটে জয়ী[৩] ম্যান অব দ্য ম্যাচ: আইজাজ চীমা (পাকিস্তানের বোনাস পয়েন্ট অর্জন) |
৪ | ১৬ মার্চ, ২০১২ইং,১৪:০০, দিবা-রাত্রি আম্পায়ার: ইয়ান গোল্ড (ইংল্যান্ড) এবং পল রিফেল (অস্ট্রেলিয়া) টস: বাংলাদেশ (ফিল্ড) |
ভারত ২৮৯/৫ সচিন তেন্ডুলকর ১১৪ মাশরাফি বিন মর্তুজা ২/৪৪ |
বাংলাদেশ ২৯৩/৫ (৪৯.২ ওভার) তামিম ইকবাল ৭০ প্রবীণ কুমার ৩/৫৬ |
বাংলাদেশ ৫ উইকেটে জয়ী[৪] ম্যান অব দ্য ম্যাচ: সাকিব আল-হাসান (সচিন তেন্ডুলকর ১ম ব্যাটসম্যান হিসেবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১০০তম সেঞ্চুরি হাকান)[১][২] |
৫ | ১৮ মার্চ, ২০১২ইং,১৪:০০, দিবা-রাত্রি আম্পায়ার: স্টিভ ডেভিস (অস্ট্রেলিয়া) এবং ইয়ান গোল্ড (ইংল্যান্ড) টস: পাকিস্তান (ব্যাট) |
পাকিস্তান ৩২৯/৬ নাসির জামশেদ ১১২ অশোক দিন্দা ২/৪৭ |
ভারত ৩৩০/৪ (৪৭.৫ ওভার) বিরাট কোহলি ১৮৩ মোহাম্মদ হাফিজ ১/৪২ |
ভারত ৬ উইকেটে জয়ী[৫] ম্যান অব দ্য ম্যাচ: বিরাট কোহলি (এশিয়া কাপে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংস গড়েন বিরাট কোহলী)[৩][৪] |
৬ | ২০ মার্চ, ২০১২ইং,১৪:০০, দিবা-রাত্রি আম্পায়ার: স্টিভ ডেভিস (অস্ট্রেলিয়া) এবং পল রিফেল (অস্ট্রেলিয়া) টস: বাংলাদেশ (ফিল্ড) |
শ্রীলঙ্কা ২৩২ (৪৯.৫) চামারা কাপুগেদেরা ৬২ নাজমুল হোসেন ৩/৩২ |
বাংলাদেশ ২১২/৫ (৩৭.১ ওভার) তামিম ইকবাল ৫৯ নুয়ান কুলাসেকারা ২/৩০ |
বাংলাদেশ ৫ উইকেটে জয়ী (ডাকওয়ার্থ-লুইস পদ্ধতিতে)[৬] ম্যান অব দ্য ম্যাচ: সাকিব আল-হাসান (বৃষ্টিজনিত কারণে ডি/এল মেথডে ২১২ রানের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ)[৫] (ভারতের বিপক্ষে জয়ী হবার সুবাদে বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো চূড়ান্ত খেলায় যোগ্যতা অর্জন)[৬][৭] |
চূড়ান্ত খেলাসম্পাদনা
তারিখ | পক্ষ | বিপক্ষ | ফলাফল | সংক্ষিপ্ত বিবরণ |
২২ মার্চ, ২০১২ইং,১৪:০০, দিবা-রাত্রি আম্পায়ার: স্টিভ ডেভিস (অস্ট্রেলিয়া) এবং ইয়ান গোল্ড (ইংল্যান্ড) টিভি আম্পায়ার: রবি শাস্ত্রী সংরক্ষিত আম্পায়ার: মাসুদুর রহমান ম্যাচ রেফারি: ডেভিড বুন টস: বাংলাদেশ (ফিল্ড) |
পাকিস্তান ২৩৬/৯ সরফরাজ আহমেদ ৪৬* আব্দুর রাজ্জাক ২/২৬ |
বাংলাদেশ ২৩৪/৮ সাকিব আল-হাসান ৬৮ আইজাজ চীমা ৩/৪৬ |
পাকিস্তান ২ রানে বিজয়ী[৭] | ম্যান অব দ্য ম্যাচ: শহীদ আফ্রিদি প্লেয়ার অব দ্য টুর্নামেন্ট: সাকিব আল-হাসান পাকিস্তান ২য়বারের মতো শিরোপা জয়লাভ করে এশিয়া কাপে রানার্স-আপের মাধ্যমে বাংলাদেশের বৃহৎ সাফল্য অর্জন |
আরও দেখুনসম্পাদনা
তথ্যসূত্রসম্পাদনা
- ↑ "Tendulkar scores his 100th international century"। ESPN Cricinfo। ১৬ মার্চ ২০১২। সংগ্রহের তারিখ ১৬ মার্চ ২০১২।
- ↑ "Sachin Tendulkar finally hits 100th international century"। The Times of India। ১৬ মার্চ ২০১২। সংগ্রহের তারিখ ১৬ মার্চ ২০১২।
- ↑ Gupta, Rajneesh (১৮ মার্চ ২০১২)। "Statistical highlights, Ind vs Pak, Asia Cup"। Cricketnext.in.com। ২০ মার্চ ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৮ মার্চ ২০১২।
- ↑ Ramakrishnan, Madhusudhan (১৮ মার্চ ২০১২)। "Kohli's mastery of chases"। ESPN Cricinfo। সংগ্রহের তারিখ ১৮ মার্চ ২০১২।
- ↑ "Cricket-Rain delays start of Bangladesh innings v Sri Lanka"। Reuters। ২০ মার্চ ২০১২। ৫ মে ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২১ মার্চ ২০১২।
- ↑ "Tamim, Shakib lead Bangladesh into final"। Stabroek News। ২১ মার্চ ২০১২। সংগ্রহের তারিখ ২১ মার্চ ২০১২।
- ↑ Balachandran, Kanishkaa (২০ মার্চ ২০১২)। "Team effort takes Bangladesh to historic final"। ESPN Cricinfo। সংগ্রহের তারিখ ২১ মার্চ ২০১২।