জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট
জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট, ঢাকা বাংলাদেশে দগ্ধ রোগীদের চিকিৎসার জন্য প্রথম পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান।[১][২][৩] বিশ্বের সর্ববৃহৎ এ বার্ন ইনস্টিটিউটে বার্ন ইউনিট, প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিট এবং একাডেমিক উইংসহ তিনটি ব্লক রয়েছে।[৪][৫]
জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট, ঢাকা | |
---|---|
ভৌগোলিক অবস্থান | |
অবস্থান | ৬৩, এ এইচ এম কামরুজ্জামান সরণি, চানখারপুল, ঢাকা, বাংলাদেশ |
স্থানাঙ্ক | ২৩°৪৩′২৭″ উত্তর ৯০°২৪′০৫″ পূর্ব / ২৩.৭২৪০৭° উত্তর ৯০.৪০১৩২° পূর্ব |
সংস্থা | |
তহবিল | বাংলাদেশ সরকার |
ধরন | বিশেষায়িত হাসপাতাল |
পরিষেবা | |
শয্যা | ৫০০ |
ইতিহাস | |
সাবেক নাম | শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইন্সটিটিউট |
চালু | এপ্রিল ৬, ২০১৬ |
ইতিহাস
সম্পাদনাবাংলাদেশে ১৯৮৬ সালে দেশের প্রথম প্লাস্টিক সার্জন অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ শহীদুল্লাহর উদ্যোগে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বার্ন ইউনিট চালু করা হয়। তখন এর শয্যার সংখ্যা ছিল মাত্র ছয়টি। পরে অধ্যাপক ডা. সামন্ত লালের সেন প্রচেষ্টায় ২০০৩ সালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চত্বরে স্বতন্ত্র ৬-তলা ভবনে ৫০ শয্যার পূর্ণাঙ্গ ইউনিট হিসেবে কার্যক্রম শুরু করে।[৬] পরবর্তীকালে এর শয্যাসংখ্যা আরও ৫০ বাড়িয়ে ১০০ শয্যায় উন্নীত করা হয়।[৭] ২০১০ সালের ৩রা জুন পুরাতন ঢাকার নিমতলীতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ১২৭ জনের মৃত্যুর পর এবং পরবর্তীতে নির্বাচনী সংহিংসতা ও দেশের বিভিন্ন কলকারখানায় অগ্নিকাণ্ডজনিত দূর্ঘটনাজনিত কারণে বার্ন ইউনিটের গুরুত্ব জোরালো হয়। ২০১৩ সালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের শয্যাসংখ্যা ৩০০-এ উন্নীতকরণ ও জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইন্সটিটিউট এর উদ্যোগ নেয়া হয়।[৭]
এর ধারাবাহিকতায় চানখারপুলের টিবি হাসপাতালকে মহাখালী বক্ষব্যাধি হাসপাতালের সাথে সংযুক্ত করে ওই জমিতে ৫০০ শয্যার এই ইন্সটিটিউট গড়ে তোলার পরিকল্পনা করা হয়।[৮] ২০১৫ সালের ২৭শে ফেব্রুয়ারি ঢাকায় আয়োজিত প্লাস্টিক সার্জারি বিষয়ক এক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে বাংলাদেশের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আন্তর্জাতিক মানের একটি বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট স্থাপনের ঘোষণা দেন যা ২০১৫ সালের নভেম্বর মাসে একনেকের সভায় অনুমোদন দেওয়া হয়। ২০১৬ সালের ৬ই এপ্রিল ঢাকার চাঁনখারপুলে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয় এবং একই বছরের ২৭শে এপ্রিল বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং কোর এর নির্মাণ কাজ শুরু করে।[৯][১০] ২০১৮ সালের ২৪শে অক্টোবর তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এর উদ্বোধন করেন[৮][১১][১২] আর আনুষ্ঠানিকভাবে পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসাসেবা চালু হয় ৪ঠা জুলাই ২০১৯ থেকে।[৯][১০][১৩][১৪]
২০২৪-এর ৩ নভেম্বর এটির নাম জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট-এ পরিবর্তন করা হয়।[১৫]
পরিষেবা ও অবকাঠামো
সম্পাদনাএতে রয়েছে ৫০০ শয্যা, ২২ শয্যা বিশিষ্ট নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ), রোগীর উন্নত চিকিৎসা নিশ্চিত করার জন্য ২২ শয্যা বিশিষ্ট হাই ডেফিসিয়েন্সি ইউনিট (এইচডিইউ), ১২টি অপারেশন থিয়েটার এবং একটি অত্যাধুনিক পোস্ট অপারেটিভ ওয়ার্ড। দগ্ধ রোগীদের চিকিৎসার পাশাপাশি এখানে জন্মগত ঠোঁটকাটা, তালুকাটাসহ বিভিন্ন রোগীদের প্লাস্টিক ও রিকন্সট্রাক্টিভ সার্জারিরও ব্যবস্থা আছে।
প্রতিষ্ঠানে রোগীকে দ্রুত আনা নেওয়ার জন্য ভবনের ছাদে হেলিপ্যাড রয়েছে। হাসপাতালের গাড়ি রাখার স্থানে ১৮০টি গাড়ি রাখার ব্যবস্থা আছে।
রাজধানীর চাঁনখারপুলে ১.৭৬ একর জমির উপর নির্মিত ১২ তলাবিশিষ্ট এ ইনস্টিটিউটটির নির্মাণ কাজ পরিচালনা করে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। নির্মাণ খরচ হয়েছে ৯১২ কোটি টাকা।[৩][১০] ইনস্টিটিউটের প্রকল্প পরিচালকের দায়িত্বে ছিলেন অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম। তিনি পরবর্তীতে ইন্সটিটিউটের প্রথম পরিচালকের দায়িত্বে নিয়োগ পান।[১৬] মন্ত্রী হওয়ার আগ পর্যন্ত ডাঃ সামন্ত লাল সেন ইন্সটিটিউটের প্রধান সমন্বয়কের দায়িত্বে নিযুক্ত ছিলেন।[১১]
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "শেখ হাসিনা বার্নসহ ১৪ হাসপাতালের নাম পরিবর্তন"। ইত্তেফাক। ৩ নভেম্বর ২০২৪।
- ↑ "বিশ্বের সর্ববৃহৎ বার্ন ইনস্টিটিউটের যাত্রা শুরু"। Dhakatimes24.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৭-২৯।
- ↑ ক খ "চালু হলো বিশ্বের বৃহত্তম বার্ন ইনস্টিটিউট"। দৈনিক যুগান্তর। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৭-২৯।
- ↑ "Sheikh Hasina Burn Institute launched | Bangladesh Sangbad Sangstha (BSS)" (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৭-২৯।
- ↑ "শেখ হাসিনা বার্নসহ ১৪ সরকারি হাসপাতালের নাম পরিবর্তন"। যুগান্তর। ৪ নভেম্বর ২০২৪। Archived from the original on ৬ নভেম্বর ২০২৪। সংগ্রহের তারিখ ৬ নভেম্বর ২০২৪।
- ↑ "পোড়া রোগীদের যন্ত্রণা"। প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৮-০২।
- ↑ ক খ "পোড়া রোগীদের পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসা নেই ঢাকার বাইরে"। প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৮-০২।
- ↑ ক খ "দেশের প্রথম বার্ন ইনস্টিটিউটের যাত্রা শুরু"। bangla.bdnews24.com। ২০১৮-১১-০৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৮-০২।
- ↑ ক খ বার্ন প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের কার্যক্রম শুরু হচ্ছে আজ, ইত্তেফাক অনলাইন ডেস্ক, ০৪ জুলাই ২০১৯
- ↑ ক খ গ "আজ চালু হচ্ছে শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট | banglatribune.com"। Bangla Tribune। ২০২০-০২-২৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৮-০২।
- ↑ ক খ "শেখ হাসিনা বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের উদ্বোধন বুধবার"। প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৭-২৯।
- ↑ "দেশের প্রথম বার্ন ইনস্টিটিউটের যাত্রা শুরু"। bangla.bdnews24.com। ২০১৮-১১-০৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৭-২৯।
- ↑ "শেখ হাসিনা বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের যাত্রা শুরু কাল | কালের কণ্ঠ"। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৭-২৯।
- ↑ "চালু হলো শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউট"। www.m.mzamin.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৭-২৯।
- ↑ প্রতিবেদক, জ্যেষ্ঠ (২০২৪-১১-০৩)। "শেখ হাসিনা বার্নসহ নাম পরিবর্তন হলো যে ১৪ হাসপাতালের"। dhakapost.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-১১-০৩।
- ↑ "শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউটের পরিচালক আবুল কালাম"। banglanews24.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৮-০২।