শাহ মাহমুদ কোরেশী

মাখদুম শাহ মাহমুদ হোসেন কোরেশী ( উর্দু: مخدوم شاہ محمود حسین قریشی‎‎; জন্ম: ২২ জুন, ১৯৫৬) একজন পাকিস্তানি রাজনীতিবিদ যিনি ২০ আগস্ট ২০১৮ সাল থেকে পাকিস্তান ফেডারেল সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বর্তমান মন্ত্রী। তিনি ২০১৮ সালের আগস্ট থেকে পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন এবং বর্তমানে ২০১১ সালের ডিসেম্বর থেকে পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের ভাইস চেয়ারম্যান হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন।

শাহ মাহমুদ কোরেশী
পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী
দায়িত্বাধীন
অধিকৃত কার্যালয়
২০ আগস্ট ২০১৮
রাষ্ট্রপতিমামনুন হুসাইন
আরিফ আলভী
প্রধানমন্ত্রীইমরান খান
পূর্বসূরীAbdullah Hussain Haroon (caretaker)
কাজের মেয়াদ
৩১ মার্চ ২০০৮ – ৯ ফেব্রুয়ারি ২০১১
রাষ্ট্রপতিপারভেজ আশরাফ
আসিফ আলী জারদারি
প্রধানমন্ত্রীইউসুফ রাজা গিলানি
পূর্বসূরীInam-ul-Haq (caretaker)
উত্তরসূরীHina Rabbani Khar
Vice Chairman of Pakistan Tehreek-e-Insaf
দায়িত্বাধীন
অধিকৃত কার্যালয়
4 December 2011
ChairmanImran Khan
Provincial Minister of Punjab for Finance
কাজের মেয়াদ
1990–1993
রাষ্ট্রপতিগোলাম ইসহাক খান
প্রধানমন্ত্রীনওয়াজ শরীফ
গভর্নরMian Muhammad Azhar
Chaudhry Altaf Hussain
Provincial Minister of Punjab for Planning and Development
কাজের মেয়াদ
1988–1990
রাষ্ট্রপতিGhulam Ishaq Khan
প্রধানমন্ত্রীBenazir Bhutto
গভর্নরTikka Khan
ব্যক্তিগত বিবরণ
জন্ম (1956-06-22) ২২ জুন ১৯৫৬ (বয়স ৬৮)
Murree, Punjab, Pakistan
রাজনৈতিক দলPakistan Tehreek-e-Insaf (2011–present)
অন্যান্য
রাজনৈতিক দল
Islami Jamhoori Ittehad (1988–1990)
Pakistan Peoples Party (1990–2011)
পিতাSajjad Hussain Qureshi
আত্মীয়স্বজনZain Hussain Qureshi (son)
প্রাক্তন শিক্ষার্থীAitchison College
Forman Christian College
University of Cambridge
University of Punjab

পূর্বে, তিনি ২০০২ থেকে ২০১৮ সালের মে পর্যন্ত জাতীয় পরিষদের সদস্য ছিলেন এবং ২০০৮ থেকে ২০১১সাল পর্যন্ত পররাষ্ট্র বিষয়ক মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

প্রাথমিক জীবন এবং শিক্ষা

সম্পাদনা

কোরেশী ১৯৫৬ সালের ২২ জুন[][] পাঞ্জাবের মুরিতে এক প্রভাবশালী রাজনৈতিক ও সুফি মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।[] তার পরিবার সুফি বাহাউদ্দিন জাকারিয়ার বংশধর[] ও মাজারের তত্বাবধায় হওয়ায় তার পরিবার মাজার থেকে প্রচুর আয় করে।

কোরেশী উর্দু, ইংরেজি, সারাইকি ও পাঞ্জাবি ভাষায় অনর্গল কথা বলতে পারেন। কোরেশীর পিতা মাখদুম সাদ্দাম হোসেন কোরেশী পাকিস্তান সেনেটের সাবেক সদস্য ছিলেন এবং ১৯৮৫ থেকে ১৯৮৮ পাঞ্জাবের ১৫তম গভর্নর ছিলেন, তিনি পাকিস্তানের সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউল হক জিয়ার ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন, যিনি তাকে গভর্নর হিসেবে নিয়োগ করেছিলেন। কোরেশী লাহোরের আইতচিসন কলেজ থেকে প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণ করেন, এরপর ফরমান ক্রিশ্চিয়ান কলেজ থেকে স্নাতক এবং কেমব্রিজের কর্পাস ক্রিসি কলেজ থেকে আইনে এমএ ও পরে ইতিহাসে এমএ ডিগ্রি নেন। তিনি পাঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয় থেকেও বিএ ডিগ্রি নিয়েছেন।

রাজনৈতিক জীবন

সম্পাদনা

কোরেশী প্রথমবার মুহাম্মদ জিয়াউল হকের সামরিক সরকারের আমলে রাজনৈতিক দলহীনের ভিত্তিতে অনুষ্ঠিত ১৯৮৫ পাকিস্তান সাধারণ নির্বাচনে মুলতান থেকে পাঞ্জাব প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন।[] ১৯৮৬ সালে তিনি পাকিস্তান মুসলিম লীগে (পিএমএল) যোগ দেন।[][][]

১৯৮৮ সালে জিয়াউল হকের মৃত্যুর পর মুসলিম লীগ বিভক্ত হলে, তিনি নওয়াজ শরীফের নেতৃত্বের অংশটিতে যোগ দেন, যা পরে মুসলীগ লীগ (এন) নামে পরিচিত হয়।[] তিনি ১৯৮৮ সালের পাকিস্তান সাধারণ নির্বাচনে পুনরায় মুলতান থেকে পাঞ্জাব প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি ১৯৮৮ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত পাঞ্জাবের প্রাদেশিক সরকারের নওয়াজ শরীফ মন্ত্রীসভার পরিকল্পনা ও উন্নয়ন মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন।[][]

কোরেশী ১৯৯০ পাকিস্তান সাধারণ নির্বাচনে তৃতীয়বারের মত মুলতান থেকে পাঞ্জাব প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৯০ থেকে ১৯৯৩ সালে তিনি মুখ্যমন্ত্রী মানজুর ওয়াত্তু নেতৃত্বে পাঞ্জাব প্রাদেশিক সরকারের অর্থ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ছিলেন।[][]

জানা যায়, ১৯৯৩ সালের পাকিস্তান সাধারণ নির্বাচনে নওয়াজ শরীফ কোরেশীকে জাতীয় পরিষদের নমিনেশন দিতে অস্বীকার করেছিলেন।

পরে, কোরেশী মুসলীগ লীগ (এন) ছেড়ে পাকিস্তান পিপলস পার্টিতে যোগ দেন এবং ১৯৯৩ পাকিস্তান সাধারণ নির্বাচনে মুলতান থেকে পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী বেনজির ভুট্টো অধীনে পাকিস্তানের সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী হিসেবে নিযুক্ত হন। ১৯৯৬ সালের নভেম্বররে তিনি পাকিস্তান পিপলস পার্টির মুখপাত্র হিসেবে নিয়োগ পান।

১৯৯৭ সালের সাধারণ নির্বাচনে কোরেশী পিএমএল-এন এর মাখদুম জাভেদ হাশমির নিকট পরাজিত হন। তাকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রপতি পারভেজ মোশাররফের অর্থনৈতিক উপদেষ্টা পরিষদের একটি পদ দেওয়া হয়েছিল, যা তিনি প্রত্যাখ্যান করেছিলেন।

কোরিশি ২০০০ থেকে ২০০২ সাল পর্যন্ত মুলতানের জেলা নাজিম (মেয়র) হিসাবে কাজ করেন। তার আমলে তিনি মুলতান জেলা সুষ্ঠুভাবে প্রশাসিত করেন এবং বেশ কয়েকটি উন্নয়ন প্রকল্পেরও তত্ত্বাবধান করেছিলেন।

২০০২ সালের সাধারণ নির্বাচনে তিনি মাখদুম জাভেদ হাশমিকে পরাজিত করে দ্বিতীয় বারের মত মুলতান থেকে পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। কথিত আছে, ২০০২ সালের নির্বাচনে জয়লাভ করার জন্য তিনি মুলতানের মেয়র হিসেবে তার প্রভাব ব্যবহার করেছিলেন। ২০০৬ সালে, দক্ষিণ পাঞ্জাবের পিপিপি জনপ্রিয়তার পুনরুজ্জীবিত করার জন্য বেনজির ভুট্টো পাকিস্তান পিপলস পার্টির পাঞ্জাবের প্রেসিডেন্ট হিসেবে কোরেশীকে নিযুক্ত করেছিলেন। কথিত আছে যে, ২০০৬ সালে পিপিপি পার্টির কর্মীকে মারধর করার জন্য কোরেশী একজন কর্মকর্তাকে চর মেরেছিলেন।

২০০৮ পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচনে কোরেশী তৃতীয় মেয়াদে পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন, মুলতান থেকে।[]

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. "If elections are held on time…"www.thenews.com.pk (ইংরেজি ভাষায়)। ৫ ডিসেম্বর ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৪ ডিসেম্বর ২০১৭ 
  2. "Detail Information"। ২১ এপ্রিল ২০১৪। ২১ এপ্রিল ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৯ জুলাই ২০১৭ 
  3. Romero, Frances (২৯ ডিসেম্বর ২০০৮)। "Shah Mahmood Qureshi"Time। ১৫ আগস্ট ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ জানুয়ারি ২০১৭ 
  4. Buchen, Huma Imtiaz and Charlotte (৬ জানুয়ারি ২০১১)। "The Islam That Hard-Liners Hate"At War Blog। New York Times। ১৪ আগস্ট ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ জানুয়ারি ২০১৭ 
  5. "Qureshi's departure: dent in PPP unrealistic"। Daily Times। ১৫ নভেম্বর ২০১১। ১২ জুন ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। 
  6. "Profile: Shah Mehmood Qureshi, from PML, to PPP to PTI – The Express Tribune"The Express Tribune। ২৭ নভেম্বর ২০১১। ২ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ জানুয়ারি ২০১৭ 

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা